চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল হত্যার প্রতিবাদে ঢাবিতে মশাল মিছিল

ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০০: ৫৪
চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল হত্যার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল হত্যার প্রতিবাদে মশাল মিছিল ও বিক্ষোভ করেছে ইনকিলাব মঞ্চ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) বিক্ষোভের পর রাত ১০টার দিকে টিএসসিতে গায়েবানা জানাজার নামাজও আদায় করা হয়।

রাত ৯টার দিকে ঢাবির আবাসিক হল থেকে মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। একই সময়ে ইনকিলাব মঞ্চ নামক একটি সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন মশাল মিছিল বের করে। ইনকিলাব মঞ্চের মশাল মিছিল ও শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল ক্যাম্পাসের বিভিন্ন দিক প্রদক্ষিণ করে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে গিয়ে শেষ হয়।

আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের বাড়ি চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি গ্রামে। সাইফুলকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করে লোহাগাড়া-সাতকানিয়া থেকে আগত ঢাবি শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ঢাকা ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস অব লোহাগাড়া-সাতকানিয়া (ডুসালস)।

রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমাবেশে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বিন হাদি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আমাদের হিন্দু ভাইদেরকে কাজে লাগিয়ে দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করছে। চট্টগ্রামে প্রকাশ্যে আইনজীবী আলিফ ভাইকে ইসকনের সদস্যরা কুপিয়ে হত্যা করেছে। হিন্দুদের বলতে চাই, আপনাদের সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই। হিন্দু-মুসলিম ভাই ভাই। তবে ইসকনের সদস্যরা সীমালঙ্ঘন করেছে, এ সীমালঙ্ঘনের বিচার করতে হবে।’ অবিলম্বে ইসকনের সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবি জানান শরীফ ওসমান হাদি।

টিএসসিতে গায়েবানা জানাজার নামাজও আদায় করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
টিএসসিতে গায়েবানা জানাজার নামাজও আদায় করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিক্ষোভকারীরা শিক্ষার্থীরা সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার, ইসকনকে নিষিদ্ধ করা, ইসকনের টাকার উৎস খুঁজে বের করা এবং সকল সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান।

ঢাবির আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সাখাওয়াত জাকারিয়া বলেন, ‘আমাদের কাছে পরিষ্কার, কারা আইনজীবী সাইফুলকে হত্যা করেছে। তারা কোনো মুসলিমকে নয় বরং একজন সরকারি আইনজীবীকে হত্যা করেছে। কোনো ধর্মীয় সংগঠন এটা করতে পারে না। এই সংগঠনের সঙ্গে উগ্র হিন্দুত্ববাদ জড়িত। আর সনাতনীরাও কোনোভাবে ইসকনকে সমর্থন করতে পারে না।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক তাহমিদ আল মুদ্দাসসির বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো সরকারি আইনজীবীকে হত্যা করার নজির নেই। কিন্তু ইসকন সেটা করেছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করে বিশেষ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচার করতে হবে। ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে হবে এবং তাঁদের ফান্ডিংয়ের উৎস কী তা বের করতে হবে। বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। যারা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করার চেষ্টা করবে শেখ হাসিনার মতো তাদেরকেও প্রতিহত করা হবে।’

মশাল মিছিল ও বিক্ষোভ শেষে গায়েবানা জানাজার নামাজ আদায় করেন শিক্ষার্থীরা। জানাজার নামাজে ইমামতি করেন আরবি বিভাগ ও হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের শিক্ষার্থী আহম্মদ উল্লাহ নোমান। এদিকে সাইফুল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বুধবার (২৬ নভেম্বর) দুপুর ২টায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শোক ও সম্প্রীতি সমাবেশের ডেকেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত