নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে প্রথম বর্ষে পড়াকালীন ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিলেন সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকী। সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার পর আম্মান তাঁকে উত্ত্যক্ত করতে থাকেন। ক্যাম্পাস চত্বরে, ক্লাসে, করিডরে এবং বিভিন্ন স্থানে তিনি উত্ত্যক্ত করতেন। গত বছরের নভেম্বরে বিভাগের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগও দিয়েছিলেন অবন্তিকা। কিন্তু সে অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘গত নভেম্বরে অবন্তিকা সাবেক প্রক্টর বরাবর একটি অভিযোগপত্র দিয়েছিল। কিন্তু অভিযোগপত্রে কী রয়েছে তা পড়তে পারিনি। অভিযোগপত্রের বিষয়ে আমাকে অবহিতও করা হয়নি। গতকাল (শুক্রবার) ঘটনা ঘটার পর আমি জানি এবং এরপর সেই ফাইলটা খুঁজে বের করতে হয়েছে।’
এ বিষয়ে আইন বিভাগে চেয়ারম্যান আক্কাস আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার কাছে অবন্তিকা অভিযোগ নিয়ে আসলে আমি তাতে স্বাক্ষর করি, এরপর সে নিজে সেই অভিযোগপত্র নিয়ে প্রক্টরের কাছে যায়।’
কুমিল্লায় নিজ বাড়িতে গতকাল শুক্রবার রাত ১০টার দিকে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা। আত্মহত্যার আগে এক দীর্ঘ ফেসবুক পোস্টে সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকী এবং সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে দায়ী করেছেন তিনি।
আম্মানের বিরুদ্ধে বিভাগের চেয়ারম্যানের কাছে দেওয়া অবন্তিকার সেই লিখিত অভিযোগের কপি আজকের পত্রিকার হাতে এসেছে। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘দীর্ঘদিন আমার ব্যাচের আমারই বিভাগের আম্মান সিদ্দিকী আমার সঙ্গে হয়রানিমূলক আচরণ ও উত্ত্যক্ত করে আসছে।
প্রথম বর্ষে প্রেমের প্রস্তাব দিলে প্রত্যাখ্যান করলে সে ব্যক্তিগত জীবনে এগিয়ে যায়। কিন্তু তার কিছুদিন পরেই লিফটের কাছে দাঁড়িয়ে থাকলে আমাকে দেখে সে কুরুচিপূর্ণ ও অশ্লীল মন্তব্য করে এবং আমি এরূপ মন্তব্যের প্রতিবাদ করায় বিপত্তি বাধে। সে অপমানিত বোধ করে এবং আমাকে বলে, আমার একদিন এমন অবস্থা করবে বা এমনভাবে ফাঁসাবে যাতে আমি মেয়ে হয়ে সমাজে মুখ দেখাতে না পারি এবং সুইসাইডে বাধ্য হই।’
এরপর আম্মানের আচরণ আরও আগ্রাসী হতে থাকে। তখন অবন্তিকার বাবা অসুস্থ থাকায় এ বিষয়গুলো যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জানাতে পারেননি বলে অভিযোগে উল্লেখ করেছেন তিনি। তবে আম্মানকে তাঁর সঙ্গে কোনো ধরনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যোগাযোগ না করার অনুরোধ করেন তিনি।
এরপর আম্মান কিছুদিন শান্ত থাকেন উল্লেখ করে অভিযোগে অবন্তিকা বলেন, ‘এরপর কিছুদিন বন্ধ থাকে। হঠাৎ ছেলেটি মেসেঞ্জারে আমাকে বলে, সে এমন কিছু তথ্য ছড়াবে মানুষের কাছে যাতে আমি অপদস্থ হই এবং সে কবর থেকে একদম মুর্দা তুলে ফেলবে ওর সঙ্গে কিছু করলে! সম্প্রতি আমার বাবা মারা গেলে তার হুমকি-ধমকি এবং উৎপাত মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন সময় আমি ডিপার্টমেন্টের করিডরে একা থাকলে সে আমাকে বিবিএ ফ্যাকাল্টির ছাদে কিংবা সম্পূর্ণ ফাঁকা ক্লাসরুমে তার সঙ্গে কথা বলার জন্য ডাকে এবং সরাসরি কথা বললে আমি রেকর্ড করব এই ভয়ে সে (আম্মান) সেখান থেকে দ্রুত চলে যায়। কয়েক মাস আগে সে আমাকে আবারও ডেকে, আমাদের ডিপার্টমেন্টের ওপরের ফ্লোরে নিয়ে কথা বলতে চাইলে আমি প্রতিবাদ করি এবং সে আমাকে তখন ভয় দেখায় এই বলে যে, ‘আমার নামে প্রক্টর স্যারের কাছে নালিশ দিবি? দে, দেখি কী করতে পারস। প্রক্টর স্যারকে একটা কল দিলেই স্যার ধরে, কারণ আমি সাংবাদিক। তুই জানোস, কোতোয়ালি থানাতেও আমার কেমন লিংক। এক সেকেন্ড লাগবে তোকে ফাঁসাতে।’
এসব ঘটনার পর অবন্তিকা ক্লাস বাদ দিয়ে নিজ শহর কুমিল্লায় চলে যান। মিডটার্ম পরীক্ষার সময় আবার ক্যাম্পাসে এলে আম্মান তাঁকে আবার হুমকি-ধমকি দিতে থাকেন। এসব উল্লেখ করে অভিযোগে অবন্তিকা লিখেছেন, ‘যখনই আমার বন্ধু-বান্ধবেরা আমার থেকে চলে যেত, তখনই সে আমাকে সেদিন একা পেয়ে বিকেল ৩টা ২৬ মিনিটে আবার ফাঁকা ক্লাসরুমে ডাকে, তখন আমি ইগনোর করে যেতে চাইলে সে আমার পথ আটকায় এবং তার ডাকে ক্লাসরুমে না যাওয়ায় ধমক দেয়। আমি ঠিক তখনই তাকে বিভাগের অফিস রুমে নিয়ে যাই, যাতে আমার কোনো ক্ষতি না হয়। আমি প্রচণ্ড ভীতসন্ত্রস্ত, এমনকি পরিবার ছাড়া ঢাকায় থাকায় রাস্তাঘাটে চলাচলেও অনিরাপদ বোধ করি!’
অভিযোগে এসব উল্লেখ করে সুষ্ঠু বিচার চেয়েছিলেন ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা।
এই সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে প্রথম বর্ষে পড়াকালীন ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিলেন সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকী। সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার পর আম্মান তাঁকে উত্ত্যক্ত করতে থাকেন। ক্যাম্পাস চত্বরে, ক্লাসে, করিডরে এবং বিভিন্ন স্থানে তিনি উত্ত্যক্ত করতেন। গত বছরের নভেম্বরে বিভাগের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগও দিয়েছিলেন অবন্তিকা। কিন্তু সে অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘গত নভেম্বরে অবন্তিকা সাবেক প্রক্টর বরাবর একটি অভিযোগপত্র দিয়েছিল। কিন্তু অভিযোগপত্রে কী রয়েছে তা পড়তে পারিনি। অভিযোগপত্রের বিষয়ে আমাকে অবহিতও করা হয়নি। গতকাল (শুক্রবার) ঘটনা ঘটার পর আমি জানি এবং এরপর সেই ফাইলটা খুঁজে বের করতে হয়েছে।’
এ বিষয়ে আইন বিভাগে চেয়ারম্যান আক্কাস আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার কাছে অবন্তিকা অভিযোগ নিয়ে আসলে আমি তাতে স্বাক্ষর করি, এরপর সে নিজে সেই অভিযোগপত্র নিয়ে প্রক্টরের কাছে যায়।’
কুমিল্লায় নিজ বাড়িতে গতকাল শুক্রবার রাত ১০টার দিকে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা। আত্মহত্যার আগে এক দীর্ঘ ফেসবুক পোস্টে সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকী এবং সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে দায়ী করেছেন তিনি।
আম্মানের বিরুদ্ধে বিভাগের চেয়ারম্যানের কাছে দেওয়া অবন্তিকার সেই লিখিত অভিযোগের কপি আজকের পত্রিকার হাতে এসেছে। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘দীর্ঘদিন আমার ব্যাচের আমারই বিভাগের আম্মান সিদ্দিকী আমার সঙ্গে হয়রানিমূলক আচরণ ও উত্ত্যক্ত করে আসছে।
প্রথম বর্ষে প্রেমের প্রস্তাব দিলে প্রত্যাখ্যান করলে সে ব্যক্তিগত জীবনে এগিয়ে যায়। কিন্তু তার কিছুদিন পরেই লিফটের কাছে দাঁড়িয়ে থাকলে আমাকে দেখে সে কুরুচিপূর্ণ ও অশ্লীল মন্তব্য করে এবং আমি এরূপ মন্তব্যের প্রতিবাদ করায় বিপত্তি বাধে। সে অপমানিত বোধ করে এবং আমাকে বলে, আমার একদিন এমন অবস্থা করবে বা এমনভাবে ফাঁসাবে যাতে আমি মেয়ে হয়ে সমাজে মুখ দেখাতে না পারি এবং সুইসাইডে বাধ্য হই।’
এরপর আম্মানের আচরণ আরও আগ্রাসী হতে থাকে। তখন অবন্তিকার বাবা অসুস্থ থাকায় এ বিষয়গুলো যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জানাতে পারেননি বলে অভিযোগে উল্লেখ করেছেন তিনি। তবে আম্মানকে তাঁর সঙ্গে কোনো ধরনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যোগাযোগ না করার অনুরোধ করেন তিনি।
এরপর আম্মান কিছুদিন শান্ত থাকেন উল্লেখ করে অভিযোগে অবন্তিকা বলেন, ‘এরপর কিছুদিন বন্ধ থাকে। হঠাৎ ছেলেটি মেসেঞ্জারে আমাকে বলে, সে এমন কিছু তথ্য ছড়াবে মানুষের কাছে যাতে আমি অপদস্থ হই এবং সে কবর থেকে একদম মুর্দা তুলে ফেলবে ওর সঙ্গে কিছু করলে! সম্প্রতি আমার বাবা মারা গেলে তার হুমকি-ধমকি এবং উৎপাত মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন সময় আমি ডিপার্টমেন্টের করিডরে একা থাকলে সে আমাকে বিবিএ ফ্যাকাল্টির ছাদে কিংবা সম্পূর্ণ ফাঁকা ক্লাসরুমে তার সঙ্গে কথা বলার জন্য ডাকে এবং সরাসরি কথা বললে আমি রেকর্ড করব এই ভয়ে সে (আম্মান) সেখান থেকে দ্রুত চলে যায়। কয়েক মাস আগে সে আমাকে আবারও ডেকে, আমাদের ডিপার্টমেন্টের ওপরের ফ্লোরে নিয়ে কথা বলতে চাইলে আমি প্রতিবাদ করি এবং সে আমাকে তখন ভয় দেখায় এই বলে যে, ‘আমার নামে প্রক্টর স্যারের কাছে নালিশ দিবি? দে, দেখি কী করতে পারস। প্রক্টর স্যারকে একটা কল দিলেই স্যার ধরে, কারণ আমি সাংবাদিক। তুই জানোস, কোতোয়ালি থানাতেও আমার কেমন লিংক। এক সেকেন্ড লাগবে তোকে ফাঁসাতে।’
এসব ঘটনার পর অবন্তিকা ক্লাস বাদ দিয়ে নিজ শহর কুমিল্লায় চলে যান। মিডটার্ম পরীক্ষার সময় আবার ক্যাম্পাসে এলে আম্মান তাঁকে আবার হুমকি-ধমকি দিতে থাকেন। এসব উল্লেখ করে অভিযোগে অবন্তিকা লিখেছেন, ‘যখনই আমার বন্ধু-বান্ধবেরা আমার থেকে চলে যেত, তখনই সে আমাকে সেদিন একা পেয়ে বিকেল ৩টা ২৬ মিনিটে আবার ফাঁকা ক্লাসরুমে ডাকে, তখন আমি ইগনোর করে যেতে চাইলে সে আমার পথ আটকায় এবং তার ডাকে ক্লাসরুমে না যাওয়ায় ধমক দেয়। আমি ঠিক তখনই তাকে বিভাগের অফিস রুমে নিয়ে যাই, যাতে আমার কোনো ক্ষতি না হয়। আমি প্রচণ্ড ভীতসন্ত্রস্ত, এমনকি পরিবার ছাড়া ঢাকায় থাকায় রাস্তাঘাটে চলাচলেও অনিরাপদ বোধ করি!’
অভিযোগে এসব উল্লেখ করে সুষ্ঠু বিচার চেয়েছিলেন ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা।
এই সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
বরগুনা সদরের ঘটবাড়িয়া গ্রামের আবদুল লতিফ ফরায়েজীর স্ত্রী জাহানারা বেগমকে (৬০) প্রায় ২৫ বছর পর খুঁজে পেয়েছে তাঁর স্বজনেরা। আজ শুক্রবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার জাঙ্গালিয়া বাজার এলাকা থেকে তাঁকে নিয়ে যান স্বজনেরা। ১৯৯৯ সালে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন তিনি।
৬ মিনিট আগেসিলেটে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলা-গুলির অভিযোগে করা মামলায় সিলেট মহানগর যুবলীগের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৯)। গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
২১ মিনিট আগেকবির বলেন, ‘আমার ছেলে তো কোনো রাজনীতি করত না। কোনো অন্যায় করেনি। তাহলে কেন এভাবে তাকে হত্যা করা হলো? সায়েম দেশের জন্য শহীদ হলেও সরকার থেকে বা অন্য কেউ কোনো খবর নিতে আসেনি।’
৩১ মিনিট আগেরাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে চলমান আমরণ অনশন কর্মসূচি স্থগিত করেছেন শিক্ষার্থীরা। প্রায় ১৮ ঘণ্টা পর আজ শুক্রবার বেলা ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের আশ্বাসে আগামী সোমবার পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি স্থগিত করেছেন শিক্ষার্থীরা।
৪৩ মিনিট আগে