নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
নিউমার্কেটে সোমবার রাত ১১টার দিকে ঢাকা কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী খাবার খেতে গেলে বিল বেশি করায় দোকানির কর্মীদের সঙ্গে বিতণ্ডা হয়। এর জেরে সেখানে তাঁদের মারধর করেন ব্যবসায়ীরা। পরে মারধরের কারণ জানতে গেলে ১০-১২ জন ছাত্রকে আটকে রাখা হয়। দোকানে থাকা ছুরি দিয়ে এক ছাত্রকে আহত করার অভিযোগও পাওয়া গেছে। নিউমার্কেটে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত এভাবেই।
এই খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে ঢাকা কলেজের আবাসিক শিক্ষার্থীরা নিউমার্কেট এলাকায় এসে ভাঙচুর চালান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে একাধিক টিয়ারগ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পুলিশ। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।
দ্রুতই সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। উভয় পক্ষে ইটপাটকেল নিক্ষেপ, লাঠিসোঁটা নিয়ে আক্রমণ চলতে থাকে। সোমবার দিবাগত রাত ১২টায় শুরু হওয়া এই সংঘর্ষ আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত গড়িয়েছে। থেমে থেমে সংঘর্ষ চলেছে।
ঘটনা শুরুর পর টানা প্রায় তিন ঘণ্টা সংঘর্ষ চলার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় পুলিশ। তবে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা রাস্তা থেকে সরেনি। পুলিশের টিয়ারগ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপের বিরুদ্ধে তাঁরা নানা স্লোগান দিতে থাকেন। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শিক্ষার্থীরা।
রাতে পরিস্থিতি থমথমে ছিল। চাপা উত্তেজনা বিরাজ করলেও সংঘাতের ঘটনা ঘটেনি। তবে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আবার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। এ সময় অন্তত ছয়জন সংবাদকর্মী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সংঘর্ষে জড়ানো শিক্ষার্থী এবং উভয়ের বিরুদ্ধেই সাংবাদিকদের মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন তাঁরা। নীলক্ষেত মোড় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ এলাকা অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। বেলা ১টার দিকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের একটি দল বাইক শোডাউন নিয়ে নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করেন। সেখানে পুলিশ এসে প্রথমে বাধা দিলে তাঁরা চলে যান।
এরপর বেলা ৩টার দিকে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা জানান ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা। এই শিক্ষার্থীদের একটি দল মিছিল নিয়ে নিউমার্কেটের দিকে যেতে থাকলে ব্যবসায়ীরা ধাওয়া দেন। পরে তাঁরা নীলক্ষেত মোড়ে এসে অবস্থান নেন।
নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করার পর নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীরা হামলা করতে এলে তাঁদের ধাওয়া দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে নীলক্ষেতের বিভিন্ন দোকানে হামলা করেন। এর আগে পলাশী-কাঁটাবন রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বন্ধ করে দেন।
অবশ্য ঘটনার পর আজ সকাল থেকেই নিউমার্কেট এলাকা অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। নিউমার্কেটের সব দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়। সড়কের উভয় পাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গোটা রাজধানীতে যানজট ছড়িয়ে পড়ে। রাজধানীজুড়ে চরম ভোগান্তিতে পড়ে মানুষ।
দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা কমিটির বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, কিছুক্ষণের মধ্যেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনবে।
এ সময় উপস্থিত ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাটিতে পুলিশ সাবধানতা অবলম্বন করছে। টেকনিক্যাল কারণে ছাত্রদের ওপর পুলিশ রাবার বুলেট চালাচ্ছে না। ছাত্ররা বিভিন্ন ১০ তলা ভবনের ওপরে উঠে বৃষ্টির মতো ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করছে।’
এদিকে সোমবার দিবাগত রাতে নিউমার্কেট এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ থাকলেও, আজ সকাল থেকে সংঘর্ষ তীব্র হলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সদস্যদের সেভাবে মাঠে দেখা যায়নি। দুপুরে মহানগর পুলিশ কমিশনারের বক্তব্য দেওয়ার আগে পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহত শিক্ষার্থী, সাংবাদিক ও ব্যবসায়ীদের সংখ্যা ৪০ ছাড়িয়ে যায়।
এমন পরিস্থিতিতে দুপুর ১টা পর্যন্ত কোনো পুলিশ সদস্যদের দেখা মেলেনি ওই এলাকায়। পরে দুপুরের পর পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। গিয়েই কাঁদানে গ্যাস ছুড়লে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বক্তব্য দেওয়ার পরপরই ঢাকা কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এটিএম মইনুল হোসেন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) থেকে মে মাসের ৫ তারিখ (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত ঢাকা কলেজের সব হল বন্ধ থাকবে। বিকেল ৫টার মধ্যে ছাত্রাবাস খালি করার নির্দেশও দেওয়া হয়।
এ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে একাডেমিক ভবনে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক এটিএম মইনুল হোসেনকে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকা কলেজে আসেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। এ সময় শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন তিনিও। তাঁকে উদ্দেশ করে শিক্ষার্থীরা বলেন, ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই ঢাকা কলেজে, তাই ব্যবসায়ীরা আমাদের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে। তোপের মুখে লেখক অধ্যক্ষের সঙ্গে মিটিংয়ে বসেন বলে জানা যায়।
ঈদের এই ভরা মৌসুমে পুরো একদিন নিউমার্কেটের একটা দোকানও খুলতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ শুরুর পর থেকেই বন্ধ রয়েছে সেখানকার অন্তত ২০টি মার্কেটের বেচাকেনা।
নিউমার্কেট দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম শাহীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই এলাকায় প্রায় ১০ হাজার দোকান আছে। ঈদের আগের এই সময়টাতে প্রতি দিন দোকানগুলোতে গড়ে কম বেশি ১ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি হয়। সে হিসেবে ক্ষতির পরিমাণ দিনে শত কোটি টাকা। আর ফুটপাতের দোকানগুলোকেই হিসাব করলে ক্ষতিটা আরও বেশি।’
এই ব্যবসায়ী নেতা জানান, ফুটপাতে তিন-চার হাজার দোকান রয়েছে। তাঁর ধারণা, ফুটপাতের একেকটি দোকানে দিনে অন্তত ৪০-৫০ হাজার টাকার ব্যবসা হয়। সোমবার রাতে ফুটপাতের অনেক দোকানে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের অনেকেই সর্বস্ব হারিয়েছেন।
ইফতারের পর সার্বিক ক্ষতিসহ সামগ্রিক বিষয় নিয়ে ব্যবসায়ী নেতাদের আলোচনায় বসার কথা রয়েছে। বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন জানান, সার্বিক ক্ষতিসহ সামগ্রিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে আজ ইফতারের পর ব্যবসায়ী নেতারা বৈঠকে বসবেন। তাঁদের পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তবে ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও উভয় পক্ষ আলোচনায় বসার কোনো ইঙ্গিত মিলছে না। এ নিয়ে সরকারের পদক্ষেপও স্পষ্ট করা হয়নি।
আরও পড়ুন:
নিউমার্কেট এলাকায় শিক্ষার্থী-ব্যবসায়ী সংঘর্ষ
শিক্ষার্থী-ব্যবসায়ী সংঘর্ষ থেমেছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে: এডিসি হারুন
নিউমার্কেটে আবারও সংঘর্ষ শুরু
নিউমার্কেটে সংঘর্ষে ৬ সংবাদকর্মী আহত
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঢাবি শিক্ষার্থীদের একাত্মতা
নিউমার্কেট এলাকার সংঘর্ষ কিছুক্ষণের মধ্যেই নিয়ন্ত্রণে আসবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
‘সাবধানতা অবলম্বন’ করতে গিয়ে মাঠে ছিল না পুলিশ
ঢাকা কলেজ বন্ধ ঘোষণা, শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ
নিউমার্কেটে সংঘর্ষে আহত ৪০ জন ঢামেকে চিকিৎসাধীন
ইফতারের পর আলোচনায় বসবেন ব্যবসায়ীরা
বন্ধ ঘোষণার পর অবরুদ্ধ ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষ ও ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক
সংঘর্ষে দিনে ক্ষতি শত কোটি টাকা, দাবি ব্যবসায়ীদের
ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা জানাল ইডেন কলেজ
নিউমার্কেটে সোমবার রাত ১১টার দিকে ঢাকা কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী খাবার খেতে গেলে বিল বেশি করায় দোকানির কর্মীদের সঙ্গে বিতণ্ডা হয়। এর জেরে সেখানে তাঁদের মারধর করেন ব্যবসায়ীরা। পরে মারধরের কারণ জানতে গেলে ১০-১২ জন ছাত্রকে আটকে রাখা হয়। দোকানে থাকা ছুরি দিয়ে এক ছাত্রকে আহত করার অভিযোগও পাওয়া গেছে। নিউমার্কেটে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত এভাবেই।
এই খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে ঢাকা কলেজের আবাসিক শিক্ষার্থীরা নিউমার্কেট এলাকায় এসে ভাঙচুর চালান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে একাধিক টিয়ারগ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পুলিশ। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।
দ্রুতই সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। উভয় পক্ষে ইটপাটকেল নিক্ষেপ, লাঠিসোঁটা নিয়ে আক্রমণ চলতে থাকে। সোমবার দিবাগত রাত ১২টায় শুরু হওয়া এই সংঘর্ষ আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত গড়িয়েছে। থেমে থেমে সংঘর্ষ চলেছে।
ঘটনা শুরুর পর টানা প্রায় তিন ঘণ্টা সংঘর্ষ চলার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় পুলিশ। তবে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা রাস্তা থেকে সরেনি। পুলিশের টিয়ারগ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপের বিরুদ্ধে তাঁরা নানা স্লোগান দিতে থাকেন। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শিক্ষার্থীরা।
রাতে পরিস্থিতি থমথমে ছিল। চাপা উত্তেজনা বিরাজ করলেও সংঘাতের ঘটনা ঘটেনি। তবে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আবার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। এ সময় অন্তত ছয়জন সংবাদকর্মী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সংঘর্ষে জড়ানো শিক্ষার্থী এবং উভয়ের বিরুদ্ধেই সাংবাদিকদের মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন তাঁরা। নীলক্ষেত মোড় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ এলাকা অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। বেলা ১টার দিকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের একটি দল বাইক শোডাউন নিয়ে নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করেন। সেখানে পুলিশ এসে প্রথমে বাধা দিলে তাঁরা চলে যান।
এরপর বেলা ৩টার দিকে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা জানান ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা। এই শিক্ষার্থীদের একটি দল মিছিল নিয়ে নিউমার্কেটের দিকে যেতে থাকলে ব্যবসায়ীরা ধাওয়া দেন। পরে তাঁরা নীলক্ষেত মোড়ে এসে অবস্থান নেন।
নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করার পর নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীরা হামলা করতে এলে তাঁদের ধাওয়া দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে নীলক্ষেতের বিভিন্ন দোকানে হামলা করেন। এর আগে পলাশী-কাঁটাবন রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বন্ধ করে দেন।
অবশ্য ঘটনার পর আজ সকাল থেকেই নিউমার্কেট এলাকা অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। নিউমার্কেটের সব দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়। সড়কের উভয় পাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গোটা রাজধানীতে যানজট ছড়িয়ে পড়ে। রাজধানীজুড়ে চরম ভোগান্তিতে পড়ে মানুষ।
দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা কমিটির বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, কিছুক্ষণের মধ্যেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনবে।
এ সময় উপস্থিত ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাটিতে পুলিশ সাবধানতা অবলম্বন করছে। টেকনিক্যাল কারণে ছাত্রদের ওপর পুলিশ রাবার বুলেট চালাচ্ছে না। ছাত্ররা বিভিন্ন ১০ তলা ভবনের ওপরে উঠে বৃষ্টির মতো ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করছে।’
এদিকে সোমবার দিবাগত রাতে নিউমার্কেট এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ থাকলেও, আজ সকাল থেকে সংঘর্ষ তীব্র হলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সদস্যদের সেভাবে মাঠে দেখা যায়নি। দুপুরে মহানগর পুলিশ কমিশনারের বক্তব্য দেওয়ার আগে পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহত শিক্ষার্থী, সাংবাদিক ও ব্যবসায়ীদের সংখ্যা ৪০ ছাড়িয়ে যায়।
এমন পরিস্থিতিতে দুপুর ১টা পর্যন্ত কোনো পুলিশ সদস্যদের দেখা মেলেনি ওই এলাকায়। পরে দুপুরের পর পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। গিয়েই কাঁদানে গ্যাস ছুড়লে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বক্তব্য দেওয়ার পরপরই ঢাকা কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এটিএম মইনুল হোসেন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) থেকে মে মাসের ৫ তারিখ (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত ঢাকা কলেজের সব হল বন্ধ থাকবে। বিকেল ৫টার মধ্যে ছাত্রাবাস খালি করার নির্দেশও দেওয়া হয়।
এ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে একাডেমিক ভবনে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক এটিএম মইনুল হোসেনকে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকা কলেজে আসেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। এ সময় শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন তিনিও। তাঁকে উদ্দেশ করে শিক্ষার্থীরা বলেন, ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই ঢাকা কলেজে, তাই ব্যবসায়ীরা আমাদের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে। তোপের মুখে লেখক অধ্যক্ষের সঙ্গে মিটিংয়ে বসেন বলে জানা যায়।
ঈদের এই ভরা মৌসুমে পুরো একদিন নিউমার্কেটের একটা দোকানও খুলতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ শুরুর পর থেকেই বন্ধ রয়েছে সেখানকার অন্তত ২০টি মার্কেটের বেচাকেনা।
নিউমার্কেট দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম শাহীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই এলাকায় প্রায় ১০ হাজার দোকান আছে। ঈদের আগের এই সময়টাতে প্রতি দিন দোকানগুলোতে গড়ে কম বেশি ১ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি হয়। সে হিসেবে ক্ষতির পরিমাণ দিনে শত কোটি টাকা। আর ফুটপাতের দোকানগুলোকেই হিসাব করলে ক্ষতিটা আরও বেশি।’
এই ব্যবসায়ী নেতা জানান, ফুটপাতে তিন-চার হাজার দোকান রয়েছে। তাঁর ধারণা, ফুটপাতের একেকটি দোকানে দিনে অন্তত ৪০-৫০ হাজার টাকার ব্যবসা হয়। সোমবার রাতে ফুটপাতের অনেক দোকানে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের অনেকেই সর্বস্ব হারিয়েছেন।
ইফতারের পর সার্বিক ক্ষতিসহ সামগ্রিক বিষয় নিয়ে ব্যবসায়ী নেতাদের আলোচনায় বসার কথা রয়েছে। বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন জানান, সার্বিক ক্ষতিসহ সামগ্রিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে আজ ইফতারের পর ব্যবসায়ী নেতারা বৈঠকে বসবেন। তাঁদের পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তবে ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও উভয় পক্ষ আলোচনায় বসার কোনো ইঙ্গিত মিলছে না। এ নিয়ে সরকারের পদক্ষেপও স্পষ্ট করা হয়নি।
আরও পড়ুন:
নিউমার্কেট এলাকায় শিক্ষার্থী-ব্যবসায়ী সংঘর্ষ
শিক্ষার্থী-ব্যবসায়ী সংঘর্ষ থেমেছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে: এডিসি হারুন
নিউমার্কেটে আবারও সংঘর্ষ শুরু
নিউমার্কেটে সংঘর্ষে ৬ সংবাদকর্মী আহত
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঢাবি শিক্ষার্থীদের একাত্মতা
নিউমার্কেট এলাকার সংঘর্ষ কিছুক্ষণের মধ্যেই নিয়ন্ত্রণে আসবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
‘সাবধানতা অবলম্বন’ করতে গিয়ে মাঠে ছিল না পুলিশ
ঢাকা কলেজ বন্ধ ঘোষণা, শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ
নিউমার্কেটে সংঘর্ষে আহত ৪০ জন ঢামেকে চিকিৎসাধীন
ইফতারের পর আলোচনায় বসবেন ব্যবসায়ীরা
বন্ধ ঘোষণার পর অবরুদ্ধ ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষ ও ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক
সংঘর্ষে দিনে ক্ষতি শত কোটি টাকা, দাবি ব্যবসায়ীদের
ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা জানাল ইডেন কলেজ
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে যৌথবাহিনী রাতভর অভিযান চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি, ককটেল, দেশীয় অস্ত্রসহ যুবদল, ছাত্রদল ও যুবলীগের তিন নেতাকে আটক করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ২টা থেকে আজ শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত উপজেলার পিয়ারপুর ও জগন্নাথপুর গ্রামে এই অভিযান চালানো হয়।
৬ মিনিট আগেবগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় গৃহবধূ উম্মে সালমাকে হত্যার পর ডিপ ফ্রিজে রাখার ঘটনাটি নতুন মোড় নিয়েছে। উম্মে সালমার ছেলে সাদ বিন আজিজুর রহমানকে গ্রেপ্তারের পর এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে দাবি করেছিল র্যাব। তবে পুলিশ বলছে, ওই বাড়ির ভাড়াটিয়ারা এ হত্যা ঘটিয়েছেন।
২৫ মিনিট আগেনিহত ফয়সাল খান শুভ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার কাশিপুর এলাকার মো. সেলিম খানের ছেলে। তিনি কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ সম্পন্ন করে নগরীর কেওয়াটখালী পাওয়ার হাউজ রোডে বোন জামাইয়ের বাসায় থেকে চাকরির জন্য চেষ্টা করছিলেন।
৩৫ মিনিট আগেরাজধানীর ধানমন্ডিতে নিজ বাসায় তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার সময় ছুরিকাঘাতে যুক্তরাজ্যপ্রবাসী এ কে এম আব্দুর রশিদকে হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় হাজারীবাগ মডেল থানায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে এ মামলা করেছেন।
২ ঘণ্টা আগে