খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবদুস সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের বাড়ি নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় মূল নকশা দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ৭ দিনের মধ্যে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (রাজউক) এই নকশা দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে কোর্টের কার্যক্রম ছাড়া মামলার বিষয়বস্তু নিয়ে কোনো প্রকার প্রচার না চালাতে উভয় পক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আজ বুধবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আর এই বিষয়ে চলা অনুসন্ধানের অগ্রগতি আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনকে জানাতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে এই বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত। 

সালাম মুর্শেদীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা। আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।

এর আগে গুলশানের ওই বাড়ি নিয়ে দুই রকম তথ্য দেয় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-রাজউক ও গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। রাজউকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সালাম মুর্শেদীর গুলশানের বাড়ি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকায় নেই। তাই বাড়িটি অবমুক্ত করার প্রশ্নই ওঠে না। বাড়িটি রাজউকের সম্পত্তি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। 

অন্যদিকে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দেওয়া প্রতিবেদন দাখিল করে দুদক। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই এলাকায় রাজউকের লে-আউট নকশায় কথিত বাড়িটির অস্তিত্ব নেই। সুকৌশলে ওই এলাকার ১০৪ নম্বর রোডে অবস্থিত ওই বাড়িটি ১০৩ নম্বর রোড দেখিয়ে জাল-কাগজপত্র সৃষ্টির মাধ্যমে হস্তান্তর-নামজারিসহ অন্যান্য কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। সৃষ্টি করা কাগজ–পত্রের মাধ্যমে ওই বাড়িটির হস্তান্তর প্রক্রিয়া বিধিসম্মত হয়নি। 

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অবৈধভাবে দখলভুক্ত প্লটটি অবিলম্বে সরকারের দখলে আনা যেতে পারে। একই সঙ্গে তৎকালীন সময়ে জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। আর সরকারের দুই সংস্থার দুই ধরনের তথ্য আসায় দুর্নীতি দমন কমিশন নিরপেক্ষ অনুসন্ধানের জন্য কমিটি গঠন করেছে বলে গত ৩০ জানুয়ারি আদালতকে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

রাজধানীর গুলশানে সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে পরিত্যক্ত বাড়ি দখলের অভিযোগ তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে গত বছরের ৩০ অক্টোবর রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।