উত্তরা (ঢাকা) প্রতিনিধি
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের দাওয়াতি শাখার প্রধানসহ ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব। গতকাল সোমবার র্যাব-১ ও ডিজিএফআইয়ের যৌথ অভিযানে উত্তরা, বনানী, বনশ্রী ও যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছেন র্যাব-১-এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) মো. পারভেজ রানা।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের ঢাকা অঞ্চলের দাওয়াতি শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী ওরফে আবু মাসরুর (৫০), সদস্য শেখ আশিকুর রহমান ওরফে আবু আফিফা (৪৯), সাদি মো. জুলকার নাইন (৩৫), মো. কামরুল হাসান সাব্বির (৪০), মো. মাসুম রানা ওরফে মাসুম বিল্লাহ (২৬) এবং সাঈদ মো. রিজভী (৩৫)।
গ্রেপ্তারকালে তাঁদের কাছ থেকে জঙ্গি কার্যক্রমে ব্যবহৃত ২টি ল্যাপটপ, ৬টি মোবাইল, উগ্রবাদে সহায়ক পুস্তিকা ও সাংগঠনিক কার্যক্রম সংক্রান্ত ডায়েরি ও নোট বই জব্দ করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাব-১-এর সিনিয়র এএসপি পারভেজ রানা বলেন, ‘আফগানিস্তানে তালেবানের উত্থানে উদ্বুদ্ধ হয়ে আল কায়েদা মতাদর্শে কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন তাঁরা। বিভিন্ন সময় তাঁরা অনলাইনে বিভিন্ন উগ্রবাদী নেতাদের বক্তব্য শুনে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংগঠনের সদস্যদের মাধ্যমে উক্ত সংগঠনে যোগদান করেন। পরবর্তীতে তাঁরা সংগঠনের সদস্য সংগ্রহে দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন।’
পারভেজ রানা আরও বলেন, ‘পাশের বিভিন্ন দেশে মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের বিষয়ে ধর্মীয় অপব্যাখ্যা দিয়ে সংগঠনের সদস্যদের জিহাদের মাধ্যমে ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী করে তোলেন। এ উদ্দেশ্যে সংগঠনের সদস্যদের তারা বিভিন্ন উগ্রবাদী পুস্তিকা, মুসলমানদের ওপর নির্যাতন ও উগ্রবাদী নেতাদের বক্তব্যের ভিডিও সরবরাহ করতেন। এ ছাড়া তাঁরা সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ভুল তথ্য দিয়ে তাঁদের আত্মীয়-স্বজন, বিভিন্ন মাদ্রাসা ও সদস্যদের কাছ থেকে নিয়মিত অর্থ সংগ্রহ করতেন।’
তা ছাড়া বিভিন্ন সময়ে তাঁরা মসজিদ, বাসা বা বিভিন্ন স্থানে সদস্যদের নিয়ে গোপন সভা পরিচালনা করতেন বলে জানা যায়। তাঁরা বিভিন্ন অপব্যাখ্যা ও মিথ্যা তথ্যের মাধ্যমে দেশের বিচার ও শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কে বিতৃষ্ণা তৈরি করে ইসলামি রাষ্ট্র কায়েম করার জন্য সদস্যদের উগ্রবাদী করে তুলতেন।
এ ছাড়া তাঁরা পাশের বিভিন্ন দেশের সমমনা ব্যক্তিদের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যোগাযোগ বজায় রাখতেন এবং বিভিন্ন উগ্রবাদী গ্রুপের সদস্য বলেও জানান তিনি।
র্যাব কর্মকর্তা পারভেজ বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া মিজবাহ ওরফে আবু মাসরুর দেশের একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষার জন্য ২০০৪ সালে ইউরোপের একটি দেশে গমন করেন এবং ফিন্যান্সে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করে দেশে ফিরে আসেন। ২০১০ সালে গ্রিন কার্ড স্কিমের মাধ্যমে স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে সপরিবারে ইউরোপীয় একটি দেশে স্থায়ী বসবাস শুরু করেন।
কিন্তু একপর্যায়ে তিনি আশিক ওরফে আবু আফিফার মাধ্যমে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে আনসার আল ইসলামে যোগদান করেন এবং দাওয়াতি কার্যক্রম শুরু করেন। তিনি ইউরোপীয় একটি দেশে অবস্থানকালে কোনো সংগঠনের নাম না বলে বিভিন্ন দেশের মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের ভিডিও দেখিয়ে ও ধর্মীয় বিষয়ে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ করে নতুন সদস্য সংগ্রহ করতেন। সেই সঙ্গে নতুন সদস্যদের নিয়ে বিভিন্ন স্থানে গোপন সভা করতেন।
পরে ২০২২ সালের অক্টোবরে সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের নির্দেশে বাংলাদেশে এসে সংগঠনের দাওয়াতি কার্যক্রম করতে থাকেন। পরবর্তীতে সেই সংগঠনের ঢাকা অঞ্চলের দাওয়াতি শাখার প্রধানের দায়িত্ব পান মিজবাহ। তিনি দেশে ও দেশের বাইরে থেকে সংগঠনের জন্য চাঁদা সংগ্রহ করতেন।
এ ছাড়া তিনি ঢাকা, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, লক্ষ্মীপুর, ভোলা এবং খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাংগঠনিক সফর, সভায় অংশগ্রহণ এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ ও চাঁদা আদায় করতেন বলে জানা গেছে।
অপর দিকে শেখ আশিকুর রহমান ওরফে আবু আফিফা একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএস সম্পন্ন করেন। তিনি একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরির পাশাপাশি এয়ারকন্ডিশনের ব্যবসাও করতেন। আশিকুর সপরিবারে ইউরোপীয় একটি দেশে বসবাসকালীন মিসবাহর সঙ্গে পরিচয় ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
তিনি ইউরোপীয় একটি দেশে থাকাকালীন সংগঠনের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতার মাধ্যমে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংগঠনে যোগদান করে দাওয়াতি কার্যক্রম করতে থাকেন। তিনি সংগঠনটির ঢাকা অঞ্চলের অন্যতম উপদেষ্টা ও অর্থের জোগানদাতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি বিভিন্ন সময় উগ্রবাদী ভিডিও কনটেন্ট সংগঠনের সদস্যদের পাঠাতেন।
গ্রেপ্তার সাদি মো. জুলকারনাইন একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করে গার্মেন্টস সেক্টরে চাকরিরত ছিলেন। তিনি গ্রেপ্তার মিজবাহর মাধ্যমে আনসার আল ইসলামের সঙ্গে যুক্ত হন এবং ঢাকা অঞ্চলের বিভিন্ন দাওয়াতি কার্যক্রমের পাশাপাশি সংগঠনের নতুন সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিতেন। তিনি সংগঠনে নিয়মিত চাঁদা দিতেন বলেও জানা যায়।
এ ছাড়া তিনি মেজবাহর কাছ থেকে বিভিন্ন উগ্রবাদী পুস্তিকা, মুসলমানদের ওপর নির্যাতন ও উগ্রবাদী নেতাদের বক্তব্যের ভিডিও সংগ্রহ করতেন। তিনি পাশের বিভিন্ন দেশের সমমনা ব্যক্তিদের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচিত ছিলেন। তিনি তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তথাকথিত জিহাদের নামে হিজরত করে সেসব দেশে গমনের পরিকল্পনা ও চেষ্টা করছিলেন বলেও জানিয়েছে র্যাব।
গ্রেপ্তার মো. কামরুল হাসান সাব্বির একটি পাবলিক ইউনিভার্সিটি থেকে আইটিতে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করে একটি আইটি ফার্মে কর্মরত ছিলেন। তিনি গ্রেপ্তার শেখ আশিকুর রহমান ওরফে আবু আফিফার মাধ্যমে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে দাওয়াতি কার্যক্রম করছিলেন। তিনি সংগঠনে নিয়মিত চাঁদা দিতেন। তিনি মেজবাহ ও আশিকের কাছ থেকে বিভিন্ন উগ্রবাদী পুস্তিকা ও অন্যান্য কনটেন্ট সংগ্রহ করতেন। তথ্যপ্রযুক্তিতে তাঁর দক্ষতা থাকায় বিভিন্ন সময় তিনি ইন্টারনেট থেকে মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের ভিডিওসহ বিভিন্ন ধরনের উগ্রবাদী কনটেন্ট সংগ্রহ করে মেজবাহকে সরবরাহ করতেন। এ ছাড়া তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন উগ্রবাদী কনটেন্ট প্রচার প্রচারণা করতেন এবং সংগঠনের নতুন সদস্যদের আইটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতেন।
গ্রেপ্তার সাঈদ মো. রিজভী পেশায় একজন চিকিৎসক। ২০২১ সালে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে অবস্থানকালে উগ্রবাদী মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হন। পরে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মেজবাহর সঙ্গে পরিচয় হয় এবং তাঁর মাধ্যমে সংগঠনে যোগ দেন। তিনি সংগঠনে নিয়মিত চাঁদা দিতেন। তাঁর বাসায় প্রতি দুই মাস অন্তর অন্তর সংগঠনের সভা অনুষ্ঠিত হতো এবং নতুন সদস্যদের সংগঠনে যুক্ত করার আনুষ্ঠানিকতাও সেখানে সম্পন্ন হতো। এ ছাড়া তাঁর বাসায় সংগঠনের নতুন সদস্যদের শারীরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো বলে জানা গেছে।
গ্রেপ্তার মো. মাসুম রানা ওরফে মাসুম বিল্লাহ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত। তিনি সাদি জুলকার নাইনের মাধ্যমে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হন। তিনি নিজ এলাকায় দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন। তিনি সংগঠনে নিয়মিত চাঁদা দিতেন এবং সংগঠনের অন্য সদস্যদের কাছ থেকে চাঁদা সংগ্রহ করতেন বলেও জানিয়েছেন র্যাব কর্মকর্তা পারভেজ।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার জঙ্গিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের দাওয়াতি শাখার প্রধানসহ ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব। গতকাল সোমবার র্যাব-১ ও ডিজিএফআইয়ের যৌথ অভিযানে উত্তরা, বনানী, বনশ্রী ও যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছেন র্যাব-১-এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) মো. পারভেজ রানা।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের ঢাকা অঞ্চলের দাওয়াতি শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী ওরফে আবু মাসরুর (৫০), সদস্য শেখ আশিকুর রহমান ওরফে আবু আফিফা (৪৯), সাদি মো. জুলকার নাইন (৩৫), মো. কামরুল হাসান সাব্বির (৪০), মো. মাসুম রানা ওরফে মাসুম বিল্লাহ (২৬) এবং সাঈদ মো. রিজভী (৩৫)।
গ্রেপ্তারকালে তাঁদের কাছ থেকে জঙ্গি কার্যক্রমে ব্যবহৃত ২টি ল্যাপটপ, ৬টি মোবাইল, উগ্রবাদে সহায়ক পুস্তিকা ও সাংগঠনিক কার্যক্রম সংক্রান্ত ডায়েরি ও নোট বই জব্দ করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাব-১-এর সিনিয়র এএসপি পারভেজ রানা বলেন, ‘আফগানিস্তানে তালেবানের উত্থানে উদ্বুদ্ধ হয়ে আল কায়েদা মতাদর্শে কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন তাঁরা। বিভিন্ন সময় তাঁরা অনলাইনে বিভিন্ন উগ্রবাদী নেতাদের বক্তব্য শুনে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংগঠনের সদস্যদের মাধ্যমে উক্ত সংগঠনে যোগদান করেন। পরবর্তীতে তাঁরা সংগঠনের সদস্য সংগ্রহে দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন।’
পারভেজ রানা আরও বলেন, ‘পাশের বিভিন্ন দেশে মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের বিষয়ে ধর্মীয় অপব্যাখ্যা দিয়ে সংগঠনের সদস্যদের জিহাদের মাধ্যমে ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী করে তোলেন। এ উদ্দেশ্যে সংগঠনের সদস্যদের তারা বিভিন্ন উগ্রবাদী পুস্তিকা, মুসলমানদের ওপর নির্যাতন ও উগ্রবাদী নেতাদের বক্তব্যের ভিডিও সরবরাহ করতেন। এ ছাড়া তাঁরা সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ভুল তথ্য দিয়ে তাঁদের আত্মীয়-স্বজন, বিভিন্ন মাদ্রাসা ও সদস্যদের কাছ থেকে নিয়মিত অর্থ সংগ্রহ করতেন।’
তা ছাড়া বিভিন্ন সময়ে তাঁরা মসজিদ, বাসা বা বিভিন্ন স্থানে সদস্যদের নিয়ে গোপন সভা পরিচালনা করতেন বলে জানা যায়। তাঁরা বিভিন্ন অপব্যাখ্যা ও মিথ্যা তথ্যের মাধ্যমে দেশের বিচার ও শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কে বিতৃষ্ণা তৈরি করে ইসলামি রাষ্ট্র কায়েম করার জন্য সদস্যদের উগ্রবাদী করে তুলতেন।
এ ছাড়া তাঁরা পাশের বিভিন্ন দেশের সমমনা ব্যক্তিদের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যোগাযোগ বজায় রাখতেন এবং বিভিন্ন উগ্রবাদী গ্রুপের সদস্য বলেও জানান তিনি।
র্যাব কর্মকর্তা পারভেজ বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া মিজবাহ ওরফে আবু মাসরুর দেশের একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষার জন্য ২০০৪ সালে ইউরোপের একটি দেশে গমন করেন এবং ফিন্যান্সে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করে দেশে ফিরে আসেন। ২০১০ সালে গ্রিন কার্ড স্কিমের মাধ্যমে স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে সপরিবারে ইউরোপীয় একটি দেশে স্থায়ী বসবাস শুরু করেন।
কিন্তু একপর্যায়ে তিনি আশিক ওরফে আবু আফিফার মাধ্যমে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে আনসার আল ইসলামে যোগদান করেন এবং দাওয়াতি কার্যক্রম শুরু করেন। তিনি ইউরোপীয় একটি দেশে অবস্থানকালে কোনো সংগঠনের নাম না বলে বিভিন্ন দেশের মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের ভিডিও দেখিয়ে ও ধর্মীয় বিষয়ে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ করে নতুন সদস্য সংগ্রহ করতেন। সেই সঙ্গে নতুন সদস্যদের নিয়ে বিভিন্ন স্থানে গোপন সভা করতেন।
পরে ২০২২ সালের অক্টোবরে সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের নির্দেশে বাংলাদেশে এসে সংগঠনের দাওয়াতি কার্যক্রম করতে থাকেন। পরবর্তীতে সেই সংগঠনের ঢাকা অঞ্চলের দাওয়াতি শাখার প্রধানের দায়িত্ব পান মিজবাহ। তিনি দেশে ও দেশের বাইরে থেকে সংগঠনের জন্য চাঁদা সংগ্রহ করতেন।
এ ছাড়া তিনি ঢাকা, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, লক্ষ্মীপুর, ভোলা এবং খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাংগঠনিক সফর, সভায় অংশগ্রহণ এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ ও চাঁদা আদায় করতেন বলে জানা গেছে।
অপর দিকে শেখ আশিকুর রহমান ওরফে আবু আফিফা একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএস সম্পন্ন করেন। তিনি একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরির পাশাপাশি এয়ারকন্ডিশনের ব্যবসাও করতেন। আশিকুর সপরিবারে ইউরোপীয় একটি দেশে বসবাসকালীন মিসবাহর সঙ্গে পরিচয় ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
তিনি ইউরোপীয় একটি দেশে থাকাকালীন সংগঠনের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতার মাধ্যমে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংগঠনে যোগদান করে দাওয়াতি কার্যক্রম করতে থাকেন। তিনি সংগঠনটির ঢাকা অঞ্চলের অন্যতম উপদেষ্টা ও অর্থের জোগানদাতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি বিভিন্ন সময় উগ্রবাদী ভিডিও কনটেন্ট সংগঠনের সদস্যদের পাঠাতেন।
গ্রেপ্তার সাদি মো. জুলকারনাইন একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করে গার্মেন্টস সেক্টরে চাকরিরত ছিলেন। তিনি গ্রেপ্তার মিজবাহর মাধ্যমে আনসার আল ইসলামের সঙ্গে যুক্ত হন এবং ঢাকা অঞ্চলের বিভিন্ন দাওয়াতি কার্যক্রমের পাশাপাশি সংগঠনের নতুন সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিতেন। তিনি সংগঠনে নিয়মিত চাঁদা দিতেন বলেও জানা যায়।
এ ছাড়া তিনি মেজবাহর কাছ থেকে বিভিন্ন উগ্রবাদী পুস্তিকা, মুসলমানদের ওপর নির্যাতন ও উগ্রবাদী নেতাদের বক্তব্যের ভিডিও সংগ্রহ করতেন। তিনি পাশের বিভিন্ন দেশের সমমনা ব্যক্তিদের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচিত ছিলেন। তিনি তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তথাকথিত জিহাদের নামে হিজরত করে সেসব দেশে গমনের পরিকল্পনা ও চেষ্টা করছিলেন বলেও জানিয়েছে র্যাব।
গ্রেপ্তার মো. কামরুল হাসান সাব্বির একটি পাবলিক ইউনিভার্সিটি থেকে আইটিতে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করে একটি আইটি ফার্মে কর্মরত ছিলেন। তিনি গ্রেপ্তার শেখ আশিকুর রহমান ওরফে আবু আফিফার মাধ্যমে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে দাওয়াতি কার্যক্রম করছিলেন। তিনি সংগঠনে নিয়মিত চাঁদা দিতেন। তিনি মেজবাহ ও আশিকের কাছ থেকে বিভিন্ন উগ্রবাদী পুস্তিকা ও অন্যান্য কনটেন্ট সংগ্রহ করতেন। তথ্যপ্রযুক্তিতে তাঁর দক্ষতা থাকায় বিভিন্ন সময় তিনি ইন্টারনেট থেকে মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের ভিডিওসহ বিভিন্ন ধরনের উগ্রবাদী কনটেন্ট সংগ্রহ করে মেজবাহকে সরবরাহ করতেন। এ ছাড়া তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন উগ্রবাদী কনটেন্ট প্রচার প্রচারণা করতেন এবং সংগঠনের নতুন সদস্যদের আইটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতেন।
গ্রেপ্তার সাঈদ মো. রিজভী পেশায় একজন চিকিৎসক। ২০২১ সালে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে অবস্থানকালে উগ্রবাদী মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হন। পরে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মেজবাহর সঙ্গে পরিচয় হয় এবং তাঁর মাধ্যমে সংগঠনে যোগ দেন। তিনি সংগঠনে নিয়মিত চাঁদা দিতেন। তাঁর বাসায় প্রতি দুই মাস অন্তর অন্তর সংগঠনের সভা অনুষ্ঠিত হতো এবং নতুন সদস্যদের সংগঠনে যুক্ত করার আনুষ্ঠানিকতাও সেখানে সম্পন্ন হতো। এ ছাড়া তাঁর বাসায় সংগঠনের নতুন সদস্যদের শারীরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো বলে জানা গেছে।
গ্রেপ্তার মো. মাসুম রানা ওরফে মাসুম বিল্লাহ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত। তিনি সাদি জুলকার নাইনের মাধ্যমে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হন। তিনি নিজ এলাকায় দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন। তিনি সংগঠনে নিয়মিত চাঁদা দিতেন এবং সংগঠনের অন্য সদস্যদের কাছ থেকে চাঁদা সংগ্রহ করতেন বলেও জানিয়েছেন র্যাব কর্মকর্তা পারভেজ।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার জঙ্গিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী পূর্ব থানার হাজতখানার ভেতরে আপসের শর্তে বাদী ও আসামির টাকা লেনদেনের ভিডিও নিয়ে মহানগর পুলিশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক কনস্টেবলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া দায়িত্বে অবহেলার কারণে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে শোকজ ও বদলি এবং ডিউটি অফিসারকে শোকজ করা হয়েছ
৩৪ মিনিট আগেরাজধানীর হাজারীবাগের ট্যানারিগুলোকে সাভারের হেমায়েতপুরের চামড়া শিল্পনগরে স্থানান্তর করা হয়েছে প্রায় সাত বছর আগে। কিন্তু ট্যানারির দূষণ এখনো রয়ে গেছে হাজারীবাগে। ওই এলাকায় চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতে ব্যবহৃত রাসায়নিকের উৎকট গন্ধ আর খালে প্রবাহিত ট্যানারি বর্জ্য জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তুলছে।
৩৪ মিনিট আগেপিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার ভিটাবাড়িয়া ইউনিয়নের শিয়ালকাঠী গ্রামে লোকালয়ে গড়ে ওঠা একটি খামারের কারণে হুমকিতে পড়েছে জনস্বাস্থ্য। গরু, ছাগল ও মুরগির সমন্বয়ে খামারটি করেছেন পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক অ্যাডভোকেট শহীদুল হক খান পান্না।
৩৫ মিনিট আগেবাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশে অভিবাসন, শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে যাত্রা করা নাগরিকদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। ইউরোপীয় বিভিন্ন দেশের কনস্যুলেট এবং দূতাবাস কার্যক্রম না থাকায় নাগরিকদের অন্য দেশ অভিমুখী হতে হচ্ছে।
১ ঘণ্টা আগে