ইতালিতে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে, লাশ কোথায় আছে জানি না: প্রবাসীর বাবা

ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ২১: ২৬

সংসারের হাল ধরতে এক বছর আগে ভূমধ্যসাগর পথে ইতালি পাড়ি জমিয়েছিলেন ফরিদপুরের সালথা উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের বড়খারদিয়া গ্রামের সেলিম শেখ (৩২)। ৬ অক্টোবর রাতে পরিবার তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়েছে। 

ইতালি থেকে সেলিম শেখের প্রতিবেশী সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত খবর পরিবারকে জানান। কিন্তু কোথায় কীভাবে আছে লাশ, তা জানেন না স্বজনেরা। লাশ ফিরিয়ে আনতে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। 

আজ বুধবার বিকেলে সেলিমের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যদুনন্দী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম। 

তিনি বলেন, ‘সেলিম আমার প্রতিবেশী। তিনি ইতালিতে থাকতেন। গত সোমবার (৬ অক্টোবর) ইতালির একটি শহরে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন বলে জানতে পেরেছি। তাঁর মুত্যুর খবরে পরিবারের সদস্যরা শোকে পাথর হয়ে আছে। দুদিন ধরে সেলিমের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য ইতালিতে থাকা প্রবাসী ভাইদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।’

নিহত সেলিম শেখ ওই গ্রামের সেখেন শেখের বড় ছেলে। মা-বাবাসহ তাঁর স্ত্রী ও দুটি ছেলেসন্তান রয়েছে। সেলিমের এমন মৃত্যুর খবরে দুদিন ধরে মরদেহ ফিরে পাওয়ার প্রহর গুনছেন স্বজনেরা। 

স্বজনেরা জানান, তিন ভাই, এক বোনের মধ্যে সবার বড় সেলিম। তাঁর স্ত্রী ও দুটি শিশু ছেলেসন্তান রয়েছে। যে কারণে সংসারের দায়িত্ব ছিল তাঁর বেশি। তিনি স্থানীয় ময়েনদিয়া বাজারে একটি মুদিদোকান করতেন। তবে দোকান করে পোষাতে পারছিলেন না। তাই স্ত্রী-সন্তানদের ভালো রাখতে ও উন্নত জীবনের আশায় ইতালি যাওয়ার পরিকল্পনা নেন তিনি। কিন্তু সরাসরি ইতালি যাওয়ার মতো অর্থ ছিল না তাঁর। 

এক বছর আগে দালালদের মাধ্যমে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাগরপথে লিবিয়া হয়ে ইতালিতে যান তিনি। সেখানে গিয়ে অন্তত পাঁচ মাস শরণার্থী ক্যাম্পে আটকে ছিলেন। পরে দীর্ঘ কয়েক মাস চেষ্টার পর অনুমতি পেয়ে সেখানে কাজ শুরু করেন তিনি। 

সেলিমের বাবা সেকেন শেখ বলেন, ‘আমার ছেলে ইতালিতে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে, এটাই শুধু জানি। এখন তার লাশ কোথায় আছে, তা–ও জানি না। আমার সন্তানের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের সহযোগিতা চাই।’ 

তিনি আরও বলেন, ৬ অক্টোবর রাতে তাঁদের বাড়িতে ফোন আসে। ছেলের এলাকার এক প্রতিবেশী ফোন করে সড়ক দুর্ঘটনায় ছেলের নিহতের খবর জানান। 

এ বিষয়ে সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিচুর রহমান বালী বলেন, সেলিমের লাশ দেশের ফিরিয়ে আনার জন্য যদি তাঁর পরিবার প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন, তাহলে সর্বোচ্চ সহযোগিতা পাবেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত