বরুড়া (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
সফিউল্লাহ মিয়া। ষাট ছুঁই ছুঁই বয়স। এলাকায় মৃত্যুর খবর শুনলেই ছুটে যান তিনি। গিয়েই প্রথমে মৃতদেহের মাপজোখ নেন। এরপর গোরস্থানে গিয়ে শুরু করেন কবর খোঁড়া। রাত-দিন ২৪ ঘণ্টাই তিনি প্রস্তুত। রোগ-শোকও যেন কোনো বাধা নয়। প্রায় নেশার মতো পেয়ে বসেছে তাঁকে। ৪০ বছর ধরে বিনা পারিশ্রমিকে গোরখোদকের কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।
সফিউল্লাহ কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের নলুয়া চাঁদপুর গ্রামের মৃত সূর্যাত আলীর ছেলে। এ পর্যন্ত দেড় হাজারের বেশি কবর খুঁড়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
স্থানীয় স্কুলশিক্ষক শাহ আলম বলেন, ‘সফিউল্লাহ ভাই আমাদের এলাকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ করেন। প্রায় ৪০ বছর ধরে শিশু থেকে বৃদ্ধ, এলাকার সবার কবরই তিনিই খুঁড়েছেন। আমার বাবার কবরও খুঁড়েছেন। কোনো টাকা নেননি। পরে জোর করে সামান্য কিছু খরচ দিয়েছি। তাতেও রাগ করেন তিনি। তাঁর এই কাজের বিনিময়ে আমরা এলাকাবাসী তাঁকে কিছুই দিতে পারিনি।’
সফিউল্লাহর ছেলে মাদ্রাসা শিক্ষক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বাবার কাজ আমাদের কাছে খুবই ভালো লাগে। ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি, তিনি অন্যের বাড়ি, কৃষি জমিতে কাজ করতেন। সেই টাকা দিয়ে আমাদের তিন বোন আর দুই ভাই ও মাসহ ছয়জনের সংসার চালাতেন। অনেক কষ্ট করতেন। অনেক সময় সকালে কাজ শুরু করতেন সন্ধ্যায় বাজার নিয়ে বাড়ি ফিরতেন। কেউ মারা গেলেই কবর খুঁড়তে যেতেন। এখনো যান। সবাই আমার বাবাকে টাকা দিতে চাইলে তিনি নেন না।’
গোরখোদক হিসেবে দীর্ঘ অভিজ্ঞতার কথা জানতে চাইলে সফিউল্লাহ মিয়া বলেন, ১৮-১৯ বছর বয়স থেকেই কবর খোঁড়ার কাজ করছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘প্রথম দিকে আমি আগ্রহী ছিলাম না। তখন আমার মামা মহব্বত আলী এই কাজে আগ্রহী করে তোলেন। এরপর এলাকার কবর খুঁড়তে জানা প্রত্যেকেই এক এক করে পৃথিবী ছেড়ে চলে যান। একটা সময় শুধু আমিই এলাকায় একমাত্র গোরখোদক ছিলাম।’
৪০ বছরে হাজার দেড়েক কবর খুঁড়েছেন সফিউল্লাহ। সুস্থ থাকলে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত এ কাজ করে যেতে চান। এই হাতে নিজের বাবা-মার কবরও খুঁড়েছেন তিনি।
সফিউল্লাহ বলেন, ‘আপন মানুষের শেষ ঠিকানা নিজের হাতে তৈরি করার মতো কষ্টের অনুভূতি হয়তো আর নেই। বাবা-মা, ভাই ও ফুফুর কবর খুঁড়তে গিয়ে নিজেকে সবচেয়ে বেশি নিষ্ঠুর মনে হয়েছে। কারণ আমি আমার আপন মানুষদের একটা অন্ধকার বিছানাহীন ঘরে রেখে এসেছিলাম। যেটা আমি নিজেই বানিয়েছি।’
কবর খুঁড়তে গিয়ে মনে রাখার মতো অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে সফিউল্লাহর। তিনি বলেন, ‘একবার বাড়ির পাশে একটি কবর করতে গেলে কাজ অর্ধেকের পর গোটা একটা মানুষের কঙ্কাল পেয়েছিলাম। যা আমার জীবনের এক ভিন্ন অভিজ্ঞতা। যখন বর্ষায় কেউ মারা যায়, তখন কবরে পানি উঠে যায়। ওই পানিতেই ভাসমান অবস্থায় আমি অনেক লাশ রেখে এসেছিলাম। আবার অনেক সময় কবর খুঁড়তে খুঁড়তে বেরিয়ে আসে সাপ বা বিষাক্ত কোনো প্রাণী। সেগুলো মোকাবিলা করে জীবনের ৪০ বছর পার করেছি। আর আমার সবচেয়ে কষ্ট হয়, যখন শিশু বাচ্চাদের কবর খুঁড়ি। বুক ভারী হয়ে কান্না আসে। কাউকে এই কষ্ট বলা যায় না। ৪০ বছরে আমার একটা কথাই বেশি মনে এসেছে। এত মানুষের কবর আমার হাতে হয়েছে। আমার কবর জানি কার হাতে হয়! এই চিন্তা থেকে অনেক যুবককে এই কাজে আগ্রহী করতে চাচ্ছি, কিন্তু এই কাজে এগিয়ে আসা যুবকের সংখ্যা খুবই কম।’
সফিউল্লাহর প্রশংসা করলেন লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামও। এমন সাদা মনের মানুষ আর হয় না! চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার অনেক আত্মীয়-স্বজনের কবর খুঁড়েছেন সফিউল্লাহ। তিনি অত্যন্ত ভালো মানুষ। উনি গরিব মানুষ, কিন্তু কবর করার জন্য কারও কাছ থেকে টাকা-পয়সা নেন না। জোর করে দিতে গেলেও রাগারাগি করেন। ওনার জন্য সবাই দোয়া করেন।’
সফিউল্লাহ মিয়া। ষাট ছুঁই ছুঁই বয়স। এলাকায় মৃত্যুর খবর শুনলেই ছুটে যান তিনি। গিয়েই প্রথমে মৃতদেহের মাপজোখ নেন। এরপর গোরস্থানে গিয়ে শুরু করেন কবর খোঁড়া। রাত-দিন ২৪ ঘণ্টাই তিনি প্রস্তুত। রোগ-শোকও যেন কোনো বাধা নয়। প্রায় নেশার মতো পেয়ে বসেছে তাঁকে। ৪০ বছর ধরে বিনা পারিশ্রমিকে গোরখোদকের কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।
সফিউল্লাহ কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের নলুয়া চাঁদপুর গ্রামের মৃত সূর্যাত আলীর ছেলে। এ পর্যন্ত দেড় হাজারের বেশি কবর খুঁড়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
স্থানীয় স্কুলশিক্ষক শাহ আলম বলেন, ‘সফিউল্লাহ ভাই আমাদের এলাকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ করেন। প্রায় ৪০ বছর ধরে শিশু থেকে বৃদ্ধ, এলাকার সবার কবরই তিনিই খুঁড়েছেন। আমার বাবার কবরও খুঁড়েছেন। কোনো টাকা নেননি। পরে জোর করে সামান্য কিছু খরচ দিয়েছি। তাতেও রাগ করেন তিনি। তাঁর এই কাজের বিনিময়ে আমরা এলাকাবাসী তাঁকে কিছুই দিতে পারিনি।’
সফিউল্লাহর ছেলে মাদ্রাসা শিক্ষক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বাবার কাজ আমাদের কাছে খুবই ভালো লাগে। ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি, তিনি অন্যের বাড়ি, কৃষি জমিতে কাজ করতেন। সেই টাকা দিয়ে আমাদের তিন বোন আর দুই ভাই ও মাসহ ছয়জনের সংসার চালাতেন। অনেক কষ্ট করতেন। অনেক সময় সকালে কাজ শুরু করতেন সন্ধ্যায় বাজার নিয়ে বাড়ি ফিরতেন। কেউ মারা গেলেই কবর খুঁড়তে যেতেন। এখনো যান। সবাই আমার বাবাকে টাকা দিতে চাইলে তিনি নেন না।’
গোরখোদক হিসেবে দীর্ঘ অভিজ্ঞতার কথা জানতে চাইলে সফিউল্লাহ মিয়া বলেন, ১৮-১৯ বছর বয়স থেকেই কবর খোঁড়ার কাজ করছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘প্রথম দিকে আমি আগ্রহী ছিলাম না। তখন আমার মামা মহব্বত আলী এই কাজে আগ্রহী করে তোলেন। এরপর এলাকার কবর খুঁড়তে জানা প্রত্যেকেই এক এক করে পৃথিবী ছেড়ে চলে যান। একটা সময় শুধু আমিই এলাকায় একমাত্র গোরখোদক ছিলাম।’
৪০ বছরে হাজার দেড়েক কবর খুঁড়েছেন সফিউল্লাহ। সুস্থ থাকলে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত এ কাজ করে যেতে চান। এই হাতে নিজের বাবা-মার কবরও খুঁড়েছেন তিনি।
সফিউল্লাহ বলেন, ‘আপন মানুষের শেষ ঠিকানা নিজের হাতে তৈরি করার মতো কষ্টের অনুভূতি হয়তো আর নেই। বাবা-মা, ভাই ও ফুফুর কবর খুঁড়তে গিয়ে নিজেকে সবচেয়ে বেশি নিষ্ঠুর মনে হয়েছে। কারণ আমি আমার আপন মানুষদের একটা অন্ধকার বিছানাহীন ঘরে রেখে এসেছিলাম। যেটা আমি নিজেই বানিয়েছি।’
কবর খুঁড়তে গিয়ে মনে রাখার মতো অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে সফিউল্লাহর। তিনি বলেন, ‘একবার বাড়ির পাশে একটি কবর করতে গেলে কাজ অর্ধেকের পর গোটা একটা মানুষের কঙ্কাল পেয়েছিলাম। যা আমার জীবনের এক ভিন্ন অভিজ্ঞতা। যখন বর্ষায় কেউ মারা যায়, তখন কবরে পানি উঠে যায়। ওই পানিতেই ভাসমান অবস্থায় আমি অনেক লাশ রেখে এসেছিলাম। আবার অনেক সময় কবর খুঁড়তে খুঁড়তে বেরিয়ে আসে সাপ বা বিষাক্ত কোনো প্রাণী। সেগুলো মোকাবিলা করে জীবনের ৪০ বছর পার করেছি। আর আমার সবচেয়ে কষ্ট হয়, যখন শিশু বাচ্চাদের কবর খুঁড়ি। বুক ভারী হয়ে কান্না আসে। কাউকে এই কষ্ট বলা যায় না। ৪০ বছরে আমার একটা কথাই বেশি মনে এসেছে। এত মানুষের কবর আমার হাতে হয়েছে। আমার কবর জানি কার হাতে হয়! এই চিন্তা থেকে অনেক যুবককে এই কাজে আগ্রহী করতে চাচ্ছি, কিন্তু এই কাজে এগিয়ে আসা যুবকের সংখ্যা খুবই কম।’
সফিউল্লাহর প্রশংসা করলেন লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামও। এমন সাদা মনের মানুষ আর হয় না! চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার অনেক আত্মীয়-স্বজনের কবর খুঁড়েছেন সফিউল্লাহ। তিনি অত্যন্ত ভালো মানুষ। উনি গরিব মানুষ, কিন্তু কবর করার জন্য কারও কাছ থেকে টাকা-পয়সা নেন না। জোর করে দিতে গেলেও রাগারাগি করেন। ওনার জন্য সবাই দোয়া করেন।’
রাজধানীর উত্তরার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ১১ হাজার ৬০ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত তুরাগের বাউনিয়া, বিমানবন্দরের সিভিল অ্যাভিয়েশনের স্টাফ কোয়ার্টার ও উত্তরা ৯ নম্বর সেক্টর এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়।
৪ মিনিট আগেগোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ১০ টাকার একটি চিতই পিঠার সঙ্গে বিনা মূল্যে মিলছে ৩০ রকমের ভর্তা। সুস্বাদু ভর্তার টানে বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পিঠার দোকানে ভিড় লেগে থাকে। আর ভোজন রসিকেরা পরম তৃপ্তির সঙ্গে পিঠার স্বাদ নেন।
৭ মিনিট আগেলক্ষ্মীপুর-ঢাকা মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাসচাপায় আহনাফ হোসেন (৭) নামের এক শিশু নিহত হয়েছে। আজ শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে মহাসড়কে জকসিন বাজার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত শিশু সদর উপজেলার যাদৈয়া এলাকার সফিকুল আলমের ছেলে।
৮ মিনিট আগেরাজধানীর হাজারীবাগ পার্কের পাশে ছুরিকাঘাতে শাহদাত হোসেন আকবর ওরফে শান্ত (১৭) নামে এক কিশোর খুন হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে হাজারীবাগ পার্কের পাশে মাদ্রাসার গলিতে গিয়াস উদ্দিনের বাড়ির সামনে এই ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে।
২ ঘণ্টা আগে