আশুগঞ্জে বিস্ফোরক মামলার আসামিকে ছেড়ে দিল পুলিশ, ওসিসহ ৩ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ২২: ০৬

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলায় বাদীর অনাপত্তিতে বিস্ফোরক আইনের মামলার আসামি রোমান মিয়াকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। সেনাবাহিনী সদস্যরা ওই মামলায় গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে আটক করে তাকে আশুগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করে। 
 
স্থানীয় লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার সময় জেলার আশুগঞ্জ বাজারের ভাড়া বাসা থেকে রোমান মিয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা। রোমান গত ২০ আগস্ট আশুগঞ্জ থানায় হওয়া একটি মামলার ৬ নম্বর আসামি। 
 
রাত থেকেই তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের লোকজন থানায় চাপ দিতে থাকেন। তাকে ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য আজ বৃহস্পতিবার সকালে থানার সামনে অনেকেই অবস্থান নেন। একপর্যায়ে দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়। পরে থানার বাইরে থাকা লোকজন তাকে ফুলের মালা পড়িয়ে নিয়ে যান। 
 
মামলার এজাহার সূত্রে থেকে জানা যায়, গত ৪ আগস্ট সকাল ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত সময়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ গোল চত্বরসহ বিভিন্ন এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। সে সময় রোমান মিয়াসহ আরও অনেকেই তাদের হাতে থাকা ককটেল বিস্ফোরণ করে এলাকায় ব্যাপক জানমালের ক্ষতি করে। 
 
একপর্যায়ে রোমান মিয়াসহ আরও অনেকেই তাদের কাছে থাকা পিস্তল দিয়ে ছাত্রদের ওপর গুলি ছোড়েন। এ সময় একজন গুলিবিদ্ধ হয়। পরে আসামিরা পেট্রল দিয়ে অন্তত ২০টি মোটরসাইকেল আগুনে পুড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় ২০ আগস্ট মো. রমজান মিয়া নামে একজন বাদী হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের সাবেক সাংসদ মঈন উদ্দিনসহ ৪৮ জনকে আসামি করে আশুগঞ্জ থানায় একটি বিস্ফোরক ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। 
 
ওই মামলায় রোমান মিয়া ৬ নম্বর আসামি। মামলায় রোমানের আপন ছোট ভাই দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাসেল মিয়া ৫ নম্বর আসামি। তবে আদালত তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছে, এমন প্রমাণ দিতে পারেনি। 
 
মামলার বাদী রমজান মিয়া জানান, ভুল করে রোমান মিয়াকে মামলায় আসামি করা হয়েছে। রোমানের বিষয়ে তার কোনো অভিযোগ নেই। এ ছাড়াও উপজেলা বিএনপি দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়ার কারণে বিভিন্ন সমস্যা হচ্ছে। 
 
এদিকে আজ বৃহস্পতিবার আসামি ছেড়ে দেওয়ার ঘটনার পর দুপুরে আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকবাল হোসেনসহ পুলিশের তিন সদস্যকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। প্রত্যাহার করা পুলিশের অপর দুই সদস্য হলেন আশুগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দীপক কুমার ও প্রদ্যুত ঘোষ চৌধুরী। 
 
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান বলেন, গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাকে আটক করে আশুগঞ্জ থানায় নিয়ে যায়। পরে মামলার বাদী থানায় পৌঁছে ওই ব্যক্তিকে ভুলক্রমে মামলায় আসামি করা হয়েছে বলে পুলিশকে জানান। এ বিষয়ে তিনি আদালতে একটি অ্যাফিডেভিট (হলফনামা) দিয়েছেন এবং পুলিশকে তার কপি দিয়েছেন। 
বাদীর কোনো অভিযোগ না থাকায় ওই ব্যক্তির বিষয়ে আইনগত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি। প্রশাসনিক কারণে তিনি পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরাসরি সমুদ্রপথে বাণিজ্যিক সম্পর্কের ঐতিহাসিক যুগে বাংলাদেশ-পাকিস্তান, শঙ্কায় ভারত

হাসিনা ক্ষমতা ছাড়ার পর দেশ ‘মবের মুল্লুক’: সামিনা লুৎফা

বাংলাদেশের বন্দরে পাকিস্তানের কার্গো জাহাজ, ‘ঐতিহাসিক’ বলা হচ্ছে যে কারণে

পরশুরামে ছুরিকাঘাতে তরুণ নিহত

নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সংলাপ শুরু কাল, চলবে পুরো নভেম্বর

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত