মেঘনায় ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ, কমছে দাম

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ২২: ৩৩

লক্ষ্মীপুরে গত সপ্তাহের তুলনায় ইলিশের সরবরাহ বেড়েছে। প্রতি কেজি ইলিশের দাম দুইশ থেকে তিনশ টাকা কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ১৪ শ থেকে ১৫শ টাকায়। যা গত সপ্তাহে ছিল ১৭ শ থেকে ১৮শ টাকা। 

দীর্ঘদিন পর জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়ায় আবারও সরগরম হয়ে উঠছে মাছঘাটগুলো। জালে ইলিশ ধরা পড়ায় খুশি জেলে ও আড়তদারেরা। জেলা মৎস্য কর্মকর্তার দাবি, গত কয়েক দিনের তুলনায় সাগরের পাশাপাশি মেঘনায় ইলিশ মাছ পাওয়া যাচ্ছে বেশি। সামনে আরও বাড়বে বলে আশা করছেন তিনি। ইলিশের সরবরাহ বাড়লে দামও কমে আসবে বলে আশা। 

জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুরের আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল এলাকার ১০০ কিলোমিটার ইলিশের অভয়াশ্রম। এইখানে জেলার ৫টি উপজেলার প্রায় ৫২ হাজার জেলে মেঘনায় ইলিশ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এখন চলছে ইলিশের ভরা মৌসুম। এই মৌসুমে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ার কথা। কিন্তু সে পরিমাণ মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। দীর্ঘদিন পর কয়েক দিন ধরে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ায় ব্যস্ত মৎস্যপল্লীগুলো। তবে মাছের আকার ছোট। 

গত সপ্তাহের তুলনায় ইলিশের সরবরাহ বাড়ায় কমছে দামও। এক কেজি ওজনের ইলিশের হালি বিক্রি হচ্ছে ৭ থেকে সাড়ে ৭ হাজার টাকা। গত সপ্তাহ ছিল ৮ হাজার থেকে সাড়ে ৮ হাজার টাকা। অর্থাৎ, হালিতে কমেছে ১ হাজার টাকা। একইভাবে প্রকারভেদে প্রতি হালি মাছের দাম কমেছে দুইশ টাকা থেকে তিনশ টাকা। 

এদিকে সাগরের ইলিশে সামলাতে হচ্ছে ইলিশের চাহিদা। লক্ষ্মীপুরে প্রায় ৩০টি মাছঘাটে সরবরাহ বাড়ায় ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলে ও আড়তদারেরা। কয়েক দিন ধরে মাছের সরবরাহ বাড়ছে। মাছ পাওয়ায় খুশি জেলেরা। গত দুই দিনে মজু চৌধুরীর হাট মাছঘাট থেকে প্রায় ৩০০ মণ ইলিশ বেচাকেনা হয়েছে বলে জানান মৎস্য ব্যবসায়ীরা। 

আজ শুক্রবার বিকেলে মজুচৌধুরীর হাট ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, নৌকায় করে ঘাটে মাছ নিয়ে আসছেন জেলেরা। সবার চোখে–মুখে আনন্দ। ক্রেতা–বিক্রেতার সরগমর জমে উঠছে মাছঘাট। সবাই ব্যস্ত সময় পার করছেন। ঘাটে এক কেজি ওজনের এক হালি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৭ হাজার টাকা। তিন দিন আগেও এই মাছের দাম ছিল সাড়ে ৮ হাজার টাকা। এক কেজির কম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকায়। 

মতিরহাটের নুরুল হক মাঝি বলেন, নদীতে মাছ না পাওয়ায় দুই মাস ধরে নদীর পাড়ে অলস সময় পার করছি। সংসার চালাতে অনেক কষ্ট হয়েছে। তিন দিন ধরে জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে। ফলে ঘাটে মাছ বিক্রি করে আবারও নদীতে মাছ শিকারে নামতে হচ্ছে। এইভাবে মাছ পেলে আর কোনো কষ্ট থাকবে না। 

মজুচৌধুরীহাট মাছঘাটের জেলে কালাম মাঝি ও মিন্টু জানান, এখন ইলিশের ভরা মৌসুম। এই মৌসুমে প্রচুর পরিমাণ ইলিশ পাওয়ার কথা। কিন্তু সে পরিমাণ মাছ মিলছে না। দীর্ঘদিন ধরে জেলেরা ইলিশ না পেলেও কয়েক দিন ধরে মাছ পাওয়ায় খুশি জেলেরা। 

ক্রেতা মো. মফিজ উল্যাহ ও ফেরদৌস আলম বলেন, মাছের সরবরাহ বাড়ায় দাম কিছুটা কমছে। সামনে আরও কমবে আশা করা যায়। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, ভারতে রপ্তানি করায় প্রভাব পড়েছে প্রত্যেকটি ঘাটে। প্রকারভেদে প্রতিটি এক কেজি ওজনের এক হালি ইলিশের দাম কমছে দুইশ থেকে তিনশ টাকা। আর সিন্ডিকেটের কারণে ঘাটে মাছের দাম বেড়ে যায়। কোনো তদারকি না থাকায় প্রতিনিয়ত বাড়ছে ইলিশের দাম। 

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, এবার অনেক বৃষ্টি হয়েছে। নদীতে পানিও বাড়ছে। মেঘনায় ইলিশের সরবরাহ কিছুটা বেড়েছে। দামও কমছে। সামনে আরও বাড়বে আশা করা যায়। এবার ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২৮ হাজার ৫০০ টন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরাসরি সমুদ্রপথে বাণিজ্যিক সম্পর্কের ঐতিহাসিক যুগে বাংলাদেশ-পাকিস্তান, শঙ্কায় ভারত

হাসিনা ক্ষমতা ছাড়ার পর দেশ ‘মবের মুল্লুক’: সামিনা লুৎফা

বাংলাদেশের বন্দরে পাকিস্তানের কার্গো জাহাজ, ‘ঐতিহাসিক’ বলা হচ্ছে যে কারণে

পরশুরামে ছুরিকাঘাতে তরুণ নিহত

নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সংলাপ শুরু কাল, চলবে পুরো নভেম্বর

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত