বিকেলে হামলার ঘটনায় বৈষম্যবিরোধীদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, সংবাদ সম্মেলনে হট্টগোল

 নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ০০: ৫০
Thumbnail image
বিকেলে চট্টগ্রাম ওয়াসা মোড়ে একটি অফিসে আলোচনার জন্য বসলে একপক্ষ সেখানে হামলা করে। ছবি: আজকের পত্রিকা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পথসভা শেষে নগরের ওয়াসা মোড়ে সমন্বয়কদের ওপর হামলার ঘটনার পর রাতে সংবাদ সম্মেলন করে নেতারা পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন। শনিবার (১১ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগরের প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে সংবাদ সম্মেলন চলাকালে হট্টগোল বেঁধে যায়।

এর আগে বিকেলে নগরীর দুই নম্বর গেটে বিপ্লব উদ্যানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে পথসভা ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এই কর্মসূচি দুই নম্বর গেট থেকে জিইসি মোড়ে এসে শেষ হয়। অনুষ্ঠান শেষে আবদুল হান্নান মাসউদ ও রাসেল আহমেদের অনুসারী এবং তালাত মাহমুদ রাফির অনুসারীরা চট্টগ্রাম ওয়াসা মোড়ে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অফিসের মধ্যে সমন্বয়কদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।

ঘটবার পর সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রিত ‘ডট গ্যাং’–এর সদস্যরা এ হামলা চালিয়েছে।

ওই ঘটনার জেরে রাতে প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ রাসেল আহমেদ বলেন, বিকেলে জুলাইয়ের ঘোষণাপত্রের পক্ষে নগরের বিভিন্ন এলাকায় জনসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। পরে ওয়াসায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অফিসকক্ষে আলোচনার জন্য তাঁরা বসেছিলেন। সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সমন্বয়ক রিজাউর রহমান এসে মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। রিজাউর রহমানের সঙ্গে ‘ডট গ্যাং’ নেতা সাদিক আরমানসহ অনেকেই ছিলেন। একপর্যায়ে খান তালাত মাহমুদ, রিজাউর ও সাদিক আরমানের নেতৃত্বে তাঁদের প্রায় এক ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখা। কয়েকজন নেতা–কর্মীকে মারধর করা হয়। তাঁরা এ ঘটনার বিচার চান।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সংগঠনের চট্টগ্রাম জেলার সমন্বয়ক তানভীর শরিফ। তিনি বলেন, তিনি আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। শরীরের যে অংশে গুলি লেগেছিল, ঠিক সেখানেই আজ আঘাত করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলন চলাকালে প্রেসক্লাবে হাজির হন কেন্দ্রীয় সহসমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি ও রিজাউর রহমান। এ সময় দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে হট্টগোল শুরু হয়। রাসেল আহমেদের সমর্থকেরা রিজাউর ও রাফিকে দেখে ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ স্লোগান দেয়। রিজাউর ও রাফির সমর্থকেরাও পাল্টা স্লোগান দেয়।

একপর্যায়ে ‘হামলাকারীদের সঙ্গে বসে সংবাদ সম্মেলন হবে না’ বলে উঠে দাঁড়ান মোহাম্মদ রাসেল আহমেদ ও তাঁর সমর্থকেরা। তাঁরা কনফারেন্স হল ত্যাগ করেন।

রাসেল গণমাধ্যম কর্মীদের উদ্দেশে তাঁর বক্তব্য উপস্থাপন করতে চাইলে আবদুল হান্নান মাসউদেরা তাঁকে বাধা দেন। এমন অবস্থায় তিনি প্রেসক্লাবের বাইরে ফেসবুক লাইভে আসেন। রাফি অভিযোগে বলেন, কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেলের নেতৃত্বে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য ও ছাত্রদলের ওমর ফারুকসহ নেতা–কর্মীরা তাঁদের ওপর হামলা করেছে। হামলায় জোনায়েদ, স্বপন, ফাতেমা খানম লিজাসহ বেশ কয়েকজন সংগঠক আহত হয়েছেন। আহত কয়েকজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

রাফি অভিযোগ করেন, পরিকল্পিতভাবে তাঁদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। তাঁরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত