খাল দখল ও পাহাড় কাটা স্থান পরিদর্শনের সময় বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রতিনিধিদলের ওপর হামলা ও দেশীয় অস্ত্র প্রদর্শনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। চট্টগ্রামের স্থানীয় কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিমের লোকজন তাঁদের আটকে রেখে ইটপাটকেল ছোড়েন। এ ঘটনায় পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রাম নগরের আকবর শাহ থানার উত্তর পাহাড়তলীর সুপারিবাগান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ বলছে, এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটেছে। মোবাইল টিম ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয় সূত্র বলছে, চট্টগ্রাম নগরের আকবর শাহ থানার উত্তর পাহাড়তলীর সুপারিবাগান এলাকায় অবৈধভাবে পাহাড় কেটে খালের ওপর স্থানীয় কাউন্সিলরের গড়ে তোলা খামার এবং ওই এলাকায় পাহাড় কাটার দৃশ্য সরেজমিন দেখতে যায় বেলার একটি প্রতিনিধিদল।

আজ দুপুর ১২টার দিকে বেলার নির্বাহী প্রধান সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের নেতৃত্বে পরিদর্শনে যাওয়া প্রতিনিধিদলটি ঘটনাস্থলে গেলে তাদের মাইক্রোবাসটি এক ঘণ্টা আটকে রাখেন কাউন্সিলরের লোকজন। পরে আকবর শাহ থানা-পুলিশের একটি দল তাদের উদ্ধার করে। এ ঘটনায় সিএমপি কমিশনারের কাছে একটি মামলার আরজি জমা দিয়েছেন রিজওয়ানা হাসান। ঘটনার সময় কেউ আহত না হলেও প্রতিনিধিদল ও তাদের বহনকারী গাড়িতে ইটপাটকেল ছোড়েন হামলাকারীরা।

আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়ালি উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটেছে। আমি মোবাইল টিম পাঠিয়েছিলাম। এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে বেলার নেটওয়ার্কিং মেম্বার আলিউর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা রিজওয়ানা আপার নেতৃত্বে ওই এলাকায় খাল দখল ও পাহাড় নিধনের চিত্র দেখতে গিয়েছিলাম। হঠাৎ স্থানীয় কাউন্সিলরের ২০-২৫ জন লোক দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমাদের ওপর হামলা করতে আসলে দৌড়ে কোনো রকমে প্রাণে রক্ষা পাই।’

আলিউর রহমান আরও বলেন, ‘ঘটনার ভয়াবহতায় আমরা ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ফোনে জানালে ঘটনাস্থলে মোবাইল টিম আসে। এর আগে আমাদের পার্কিং করা মাইক্রোবাসকে এক ঘণ্টা আটকে রাখে হামলাকারীরা।’

এ বিষয়ে বেলার প্রতিনিধিদলে থাকা সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনার পর বেলার নির্বাহী প্রধান রিজওয়ানা আপা বাদী হয়ে একটি আরজি সিএমপি কমিশনারের কাছে জমা দিয়েছেন।’

সিএমপি কমিশনারের কাছে দেওয়া আরজিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. জহুরুল আলম জসিমের নেতৃত্বে মো. হৃদয়, আবু নোমান (কালা নোমান), সাইফুদ্দিন ভূঁইয়া, আনিস চৌধুরী রাজন, শাকিল, সাঈদসহ বেশ কয়েকজন প্রতিনিধিদলকে বাধা দেন এবং আক্রমণাত্মক অঙ্গভঙ্গি করেন। এ সময় তাঁরা বারবার পরিদর্শনকারীদের কেন এসেছেন, কোথা থেকে এসেছেন ইত্যাদি প্রশ্ন করতে থাকেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার এলাকায় কোনো ধরনের ঘটনা ঘটেনি। কোথাকার বেলা নাকি এসেছিল। আমি তো আমার অফিসেই ছিলাম। সফিক্যা নামে এক সাংবাদিক আছে, সেই-ই এসব করাচ্ছে।’