চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় স্কুলছাত্রী হত্যা মামলায় একজনকে ১০ বছরের আটকাদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার চাঁদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আবদুল হান্নান এই রায় দেন। 

আটকাদেশ প্রাপ্ত সাইফুদ্দিন উপজেলার সুজাতপুর (বর্তমান মমরুজকান্দি) গ্রামের মো. রাসেল পাটওয়ারীর ছেলে। হত্যাকাণ্ডের শিকার স্কুলছাত্রী একই উপজেলার উত্তর ইসলামাবাদ গ্রামের বজলু বেপারীর মেয়ে। ঘটনার সময় সে স্থানীয় মমরুজকান্দি সপ্তগ্রাম স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল এবং আটকাদেশ প্রাপ্ত আসামির বয়স ছিল ১৭ বছর। 

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০২০ সালের ২৮ মার্চ সকালে কাকুলী বাড়ি থেকে স্কুলের উদ্দেশ্যে বের হয়। নির্ধারিত সময়ে সে বাড়িতে না আসায় বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে তাকে পাওয়া যায়নি। এরপর ২৯ মার্চ পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় জিডি করা হয়। ২২ এপ্রিল স্থানীদের মাধ্যমে জানতে পেরে বিদ্যালয়ের পাশে অক্সফোর্ড একাডেমির টিনের ঘরে মাথাবিহীন একটি দেহ পাওয়া যায়। ওই দেহ কাকুলীর অভিভাবক সন্তান বলে শনাক্ত করেন। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। 

এই ঘটনায় কাকুলীর মা রোকেয়া বেগম মতলব উত্তর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় তিনি ২৮ মার্চ থেকে ২২ এপ্রিলের মধ্যে যে কোনো সময় তার মেয়েকে হত্যা করে মরদেহ গুম করে এবং তার মাথা কেটে অজ্ঞাত স্থানে লুকিয়ে রাখেন বলে উল্লেখ করেন। 

মামলাটির তদন্ত করেন থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) নাহিদ হোসেন। তিনি কিশোর মো. সাইফুদ্দিনকে ওই এলাকা থেকে ২৩ এপ্রিল গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করেন। এরপর মামলাটির তদন্ত করেন থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. মামুন। তিনি মামলাটি তদন্ত শেষে ৩০২১ সালের ৩১ আগস্ট আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। 

এ ছাড়া এই মামলায় ২০২২ সালের ২৬ জুলাই পিবিআই এর পুলিশ পরিদর্শক মীর মাহবুবুর রহমান পৃথক আরেকটি তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেন। 

মামলাটি চলমান অবস্থায় আদালত ২১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। সাক্ষ্য গ্রহণ এবং আসামি তার অপরাধ স্বীকার করায় মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে এই রায় দেন। রায়ে বলা হয়, আসামির বর্তমানে বয়স ১৮ এর ওপরে হওয়ায় তাকে জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হোক। 

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) ছিলেন সাইয়েদুল ইসলাম বাবু ও আইনজীবী খোরশেদ আলম শাওন। আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন নাজিমুল্লাহ বাপ্পি।