হৃদয় হোসেন মুন্না, বেতাগী (বরগুনা) প্রতিনিধি
দুচোখে নেই আলো। তবে হার মানতে শেখেননি। ব্রত নিয়েছেন অন্যদের জীবনে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার। জীবনের সব প্রতিকূলতা জয় করে এগিয়ে গেছেন নিজের মতো। দৃষ্টিহীন হওয়ার পরও শিক্ষার আলো জ্বেলে যাচ্ছেন তিনি।
বলছিলাম বেতাগী উপজেলার দক্ষিণ ভোলানাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. খায়রুল ইসলামের কথা। সাধারণ শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণার উৎস তিনি। নিজে দৃষ্টিহীন হওয়ার পরও আর পাঁচজনের মতোই শিক্ষকতা করেন; একেবারেই সাবলীলভাবেই।
খায়রুল ইসলামের বাড়ি বেতাগী উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাসন্ডা গ্রামে। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। বাবা মোহাম্মদ সিকদার সাধারণ কৃষক। জন্মগতভাবেই খায়রুল দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। ভগ্নিপতির সহযোগিতায় বরিশালের সরকারি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণি পাস করার পর বরিশালের নূরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০০১ সালে মাধ্যমিক পাস করেন।
এরপর সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং বিএসএস পাস করার পর বরগুনার লালমিয়া টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে শিক্ষক প্রশিক্ষণ নিয়ে ২০১৬ সালে সহকারী শিক্ষক হিসেবে দক্ষিণ ভোলানাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগ দেন। সেখানেই ব্রেইল পদ্ধতিতে পাঠদান করছেন ছাত্র-ছাত্রীদের।
খায়রুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হয়েই আমার জন্ম। ছোট থেকে পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ ছিল। কিন্তু দৃষ্টিহীনতাকে প্রতিবন্ধকতা হতে দিইনি। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ব্রেইল পদ্ধতিতে পড়াশোনা করতে কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় মাধ্যমিকে ওঠার পর। তখন অনেক বই এবং গাইড বই ব্রেইলে পাওয়াতে যেত না। তখন টেপরেকর্ডার ব্যবহার করে লেখাপড়া করতে হয়েছে। বিএসএস পাস করার পর আমি ২০১৬ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে চাকরির জন্য আবেদন করি। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হিসেবে বিশেষ ব্যবস্থায় (শ্রুতিলেখক নিয়ে) লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হই। এরপর মৌখিক পরীক্ষার মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত নিয়োগ পেয়ে চাকরিতে যোগদান করি।’
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে দক্ষিণ ভোলানাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, মো. খায়রুল ইসলাম পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পড়াচ্ছেন। শ্রেণিকক্ষে ব্রেইল বইয়ের পাতায় দুহাত রেখে সাবলীলভাবেই শিক্ষার্থীদের পড়াচ্ছিলেন তিনি। ছাত্র-ছাত্রীরাও মনোযোগ দিয়ে স্যারের পড়া শুনছে, মাঝে মাঝে প্রশ্ন করছে। প্রত্যুত্তরে তিনি হাতের ইশারায় ছাত্র-ছাত্রীদের পড়া বুঝিয়ে দিচ্ছেন।
বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী হাফিজা আক্তার বলে, ‘খাইরুল স্যার চোখে দেখেন না। তবু তিনি আমাদের অন্যান্য স্যার-ম্যামের মতোই ভালোভাবে পড়ান। তাঁর ক্লাসে আমাদের কোনো সমস্যা হয় না।’
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা নাদিরা পারভীন বলেন, ‘আমাদের সহকর্মী খায়রুল স্যার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হওয়ার পরও শ্রেণিকক্ষে অনেক সুন্দরভাবে পাঠদান করান। তিনি নিজ উদ্যোগে বরিশালের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয় থেকে বিষয়ভিত্তিক ব্রেইল বই এনে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ান। তবে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হওয়ায় তিনি পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করতে পারেন না। এ ক্ষেত্রে আমরা সবাই মিলে তাঁকে সহযোগিতা করি।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভবরঞ্জন সিকদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী খায়রুল ইসলাম আট বছর যাবৎ এই বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। প্রবল ইচ্ছাশক্তি আজ তাঁকে এই অবস্থানে নিয়ে এসেছে। খায়রুলকে দেখে উৎসাহী হয়ে বিগত কয়েক বছরে এই বিদ্যালয় থেকে তিনজন বাক্প্রতিবন্ধী ছাত্র শিক্ষা গ্রহণ করে এখন কলেজে লেখাপড়া করছে। তাঁকে অনুসরণ করে এলাকার অন্য প্রতিবন্ধীরাও সামনে এগিয়ে যাবে। খায়রুল এখন বহু মানুষের অনুপ্রেরণা।’
দুচোখে নেই আলো। তবে হার মানতে শেখেননি। ব্রত নিয়েছেন অন্যদের জীবনে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার। জীবনের সব প্রতিকূলতা জয় করে এগিয়ে গেছেন নিজের মতো। দৃষ্টিহীন হওয়ার পরও শিক্ষার আলো জ্বেলে যাচ্ছেন তিনি।
বলছিলাম বেতাগী উপজেলার দক্ষিণ ভোলানাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. খায়রুল ইসলামের কথা। সাধারণ শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণার উৎস তিনি। নিজে দৃষ্টিহীন হওয়ার পরও আর পাঁচজনের মতোই শিক্ষকতা করেন; একেবারেই সাবলীলভাবেই।
খায়রুল ইসলামের বাড়ি বেতাগী উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাসন্ডা গ্রামে। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। বাবা মোহাম্মদ সিকদার সাধারণ কৃষক। জন্মগতভাবেই খায়রুল দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। ভগ্নিপতির সহযোগিতায় বরিশালের সরকারি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণি পাস করার পর বরিশালের নূরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০০১ সালে মাধ্যমিক পাস করেন।
এরপর সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং বিএসএস পাস করার পর বরগুনার লালমিয়া টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে শিক্ষক প্রশিক্ষণ নিয়ে ২০১৬ সালে সহকারী শিক্ষক হিসেবে দক্ষিণ ভোলানাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগ দেন। সেখানেই ব্রেইল পদ্ধতিতে পাঠদান করছেন ছাত্র-ছাত্রীদের।
খায়রুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হয়েই আমার জন্ম। ছোট থেকে পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ ছিল। কিন্তু দৃষ্টিহীনতাকে প্রতিবন্ধকতা হতে দিইনি। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ব্রেইল পদ্ধতিতে পড়াশোনা করতে কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় মাধ্যমিকে ওঠার পর। তখন অনেক বই এবং গাইড বই ব্রেইলে পাওয়াতে যেত না। তখন টেপরেকর্ডার ব্যবহার করে লেখাপড়া করতে হয়েছে। বিএসএস পাস করার পর আমি ২০১৬ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে চাকরির জন্য আবেদন করি। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হিসেবে বিশেষ ব্যবস্থায় (শ্রুতিলেখক নিয়ে) লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হই। এরপর মৌখিক পরীক্ষার মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত নিয়োগ পেয়ে চাকরিতে যোগদান করি।’
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে দক্ষিণ ভোলানাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, মো. খায়রুল ইসলাম পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পড়াচ্ছেন। শ্রেণিকক্ষে ব্রেইল বইয়ের পাতায় দুহাত রেখে সাবলীলভাবেই শিক্ষার্থীদের পড়াচ্ছিলেন তিনি। ছাত্র-ছাত্রীরাও মনোযোগ দিয়ে স্যারের পড়া শুনছে, মাঝে মাঝে প্রশ্ন করছে। প্রত্যুত্তরে তিনি হাতের ইশারায় ছাত্র-ছাত্রীদের পড়া বুঝিয়ে দিচ্ছেন।
বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী হাফিজা আক্তার বলে, ‘খাইরুল স্যার চোখে দেখেন না। তবু তিনি আমাদের অন্যান্য স্যার-ম্যামের মতোই ভালোভাবে পড়ান। তাঁর ক্লাসে আমাদের কোনো সমস্যা হয় না।’
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা নাদিরা পারভীন বলেন, ‘আমাদের সহকর্মী খায়রুল স্যার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হওয়ার পরও শ্রেণিকক্ষে অনেক সুন্দরভাবে পাঠদান করান। তিনি নিজ উদ্যোগে বরিশালের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয় থেকে বিষয়ভিত্তিক ব্রেইল বই এনে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ান। তবে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হওয়ায় তিনি পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করতে পারেন না। এ ক্ষেত্রে আমরা সবাই মিলে তাঁকে সহযোগিতা করি।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভবরঞ্জন সিকদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী খায়রুল ইসলাম আট বছর যাবৎ এই বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। প্রবল ইচ্ছাশক্তি আজ তাঁকে এই অবস্থানে নিয়ে এসেছে। খায়রুলকে দেখে উৎসাহী হয়ে বিগত কয়েক বছরে এই বিদ্যালয় থেকে তিনজন বাক্প্রতিবন্ধী ছাত্র শিক্ষা গ্রহণ করে এখন কলেজে লেখাপড়া করছে। তাঁকে অনুসরণ করে এলাকার অন্য প্রতিবন্ধীরাও সামনে এগিয়ে যাবে। খায়রুল এখন বহু মানুষের অনুপ্রেরণা।’
যশোর হর্টিকালচার সেন্টারে বিক্রির তালিকায় থাকা সব গাছ সেন্টারে নেই। উদ্যানে নিজস্বভাবে চারা উৎপাদনের জন্য ‘রিভলভিং’ ফান্ডের মাধ্যমে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া থাকলেও সেটি করা হচ্ছে না। চারা উৎপাদন না করে বাইরে থেকে কম দামে মানহীন চারা এনে উদ্যানে রেখে বিক্রি করা হচ্ছে। সেন্টারে একটি ভার্মি কম্পোস্ট প্ল্যান্ট
২ মিনিট আগেচট্টগ্রামের রাউজানে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় মাসুদ নামের এক পথচারী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার নোয়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
৮ মিনিট আগেগতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত আড়াইটার দিকে ধানমন্ডি–১৫–এর একটি পাঁচতলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় ঘটনাটি ঘটে। আহত অবস্থায় বাসার ভাড়াটিয়ারা তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক ভোর পৌনে ৪টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।
১৮ মিনিট আগেকিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে প্রথম স্ত্রীর বাসায় যাওয়ায় স্বামীকে তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার গভীর রাতে পৌর এলাকার পশ্চিমপাড়ার ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
৩৪ মিনিট আগে