লোপা মমতাজ
নদীতে ঝাঁপ দিয়ে মরার চেয়ে আত্মহত্যার আরও কোনো সহজতর উপায় আছে কি না,
তা জানতে গুগল করেছিল মেয়েটি।
গত রাতে এই রকমের একটা হেডলাইন পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে পড়েছি ।
ঘুমের ঘোরে যেন জীবনানন্দকে দেখলাম!
শুধু কাঁধটা দেখা যাচ্ছে আর মুখটা আবছা আলোয়।
ভাঙা ঊরু আর পাঁজরের ব্যথা নিয়ে
ট্রামের ক্যাচার থেকে শরীরটা টেনে বার করছেন নিজেই।
কি আশ্চর্য, ট্রামটা আবার চলতে শুরু করেছে!
উনিও ভাঙা শরীর নিয়ে
ট্রামের লাইন ধরেই হেঁটে চলেছেন...
২
যারা
বেঁচে থাকার খড়কুটোও হারিয়ে ফেলেছে
ভেবে,
পৃথিবীর
গভীরতম
বেদনা বুকে নিয়ে
মৃত্যুর ঠোঁটে ঠোঁট রাখে,
তাদের সেই ঘোর লাগা বেদনা কি চোখে দেখা যায়!
বেদনার ভার কত ভারী হলে কেউ নিজেকেই শেষ করে দিতে চায়?
৩
ভেবে দেখেছি
আত্মমগ্ন হয়ে, ট্রাম বা ট্রেনের লাইন ধরে
কখনোই হাঁটা ঠিক নয়।
ট্রেনের লাইন বড়ই প্রপঞ্চময়!
আপনি হয়তো কিছু একটা ভাবছেন,
এই যে ভেবে ভেবে হাঁটছেন আর ভাবছেন,
এই ভাবনা আপনাকে নিমগ্নতার আরও গভীরে নিয়ে ফেলবে,
ফলে, আপনি, ট্রামের অবিরাম ঘণ্টা বাজানো
বা চুনিলালের বারংবার সতর্ক উচ্চারণের
কিছুই শুনতে পাবেন না… মাঝেমধ্যে আমিও পাই না…
৪
কী অদ্ভুত এ জীবন!
কী দুঃখময় এ জীবন!
৫
কবি সিলভিয়া প্লাথ
মৃত্যুর আগমুহূর্তে
বাচ্চাদের খাওয়ার জন্য রুটি, মাখন
আর দুই মগ দুধ রেখে গিয়েছিল টেবিলে,
যেন প্রিয় শিশুরা ঘুম থেকে উঠে
কিছু খেতে পারে।
তারপর রান্নাঘরে ফিরে
তোয়ালে দিয়ে দরজা আর জানলার ফাঁকগুলো
বন্ধ করে, চুলার গ্যাসটি চালু করে দিলে
তারপর… তারপর… তারপর আর ভাবতে পারছি না...
৬
প্রিয় শিল্পী
ভিনসেন্ট ভ্যান গগ
রিভলবারের গুলি চালিয়ে দিয়েছিল নিজের দিকে।
মৃত্যুর সময় কেবল একটি কথাই লিখেছিলে—‘দুঃখ সব সময়ই টিকে থাকবে!’
ভ্যান গগ!
আহা প্রিয়, তুমি তবে বুঝেছিলে কি,
বেঁচে থাকার চেয়ে নির্মম ব্যথা বুঝি পৃথিবীতে নেই!
৭
কথাসাহিত্যিক
অ্যাডেলাইন ভার্জিনিয়া উলফ,
নিজের ওভারকোটটির পকেটে নুড়িপাথর ভরে
বাড়ির পাশে ওউজ নদীতে ডুব দিলে,
আর ফিরে এলে না।
তোমার নুড়িপকেটে একটা ছোট্ট চিঠি-
‘প্রিয়তম, আমি বুঝতে পারছি, আমি আবারও পাগল হয়ে যাচ্ছি। আমি বুঝতে পারছি এবার হয়তো আমাদের এই কঠিন সময় অতিক্রান্ত হবে না। আমি নানা রকম স্বর শুনতে পাচ্ছি, কিছুতেই মনঃসংযোগ করতে পারছি না। তাই যা সবচেয়ে ভালো মনে হচ্ছে তা-ই করতে যাচ্ছি আমি…’
মাঝে মাঝে আমিও কি শুনতে পাই নানা রকম স্বর!
ওউজ নদী কি আমাকেও ডাকে!
৮
মিষ্টি মেয়ে
এভিলিন ম্যাকহেল
বিখ্যাত কোনো ব্যক্তি ছিলে না তুমি।
১৯৪৭ সালের পহেলা মে, এভিলিন নিউইয়র্ক শহরের
এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংয়ের
৮৬তম ফ্লোরে পৌঁছে, ঝাঁপিয়ে পড়লে মাটিতে!
অথচ কী আশ্চর্য!
মনে হচ্ছে তুমি মৃত নও, মাত্রই ঘুমিয়েছ...
৯
ঔপন্যাসিক
আর্নেস্ট হেমিংওয়ে,
সেদিন ভোরের পৃথিবী দেখে
তুমি কী ভাবছিলে তা কে জানে!
নিজের প্রিয় শটগানে
নিজের খুলি উড়িয়ে দিলে...
কোথাও কোনো নোট রেখে যাওনি!
এখন হরহামেশাই তুমি মগজে ঢুকে
নানা রকমের নোট লিখছ …
আমি যেন বা তোমার লেখার টেবিলে ফেলে রাখা সাদা খাতা...
১০
মেহেকানন্দার কবি
মুনিরা চৌধুরী।
এই পৃথিবীর মায়া থেকে মুখ ফেরালে!
সত্য কি?
মায়া কি ছিল না কোথাও!
‘ক্রমে পালক ঝরছে, পাতা ঝরছে, শিশির ঝরছে…’
‘কতিপয় মানুষ পাখিদের শরীরে প্লাস্টিকের পালক লাগিয়ে দিয়ে যায়’
আহ্ মুনিরা! তুমি সমুদ্রের ফেনায় ডুবে ডুবে খোঁজো কার মুখ?
জানি থাকে, ভালোবাসলে থাকে, হারাবার কতশত ভয়!
১১
কেবল ইশ্বরই জানেন,
ভালোবাসা আর ভয় ভুলে
লাশকাটা ঘরে শুয়ে আছে যিনি
তার চোখে চোখ রেখে
কেউ কি তাকে বলেছে
এই পৃথিবীতে তুমি ভীষণরকম জরুরি!
নদীতে ঝাঁপ দিয়ে মরার চেয়ে আত্মহত্যার আরও কোনো সহজতর উপায় আছে কি না,
তা জানতে গুগল করেছিল মেয়েটি।
গত রাতে এই রকমের একটা হেডলাইন পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে পড়েছি ।
ঘুমের ঘোরে যেন জীবনানন্দকে দেখলাম!
শুধু কাঁধটা দেখা যাচ্ছে আর মুখটা আবছা আলোয়।
ভাঙা ঊরু আর পাঁজরের ব্যথা নিয়ে
ট্রামের ক্যাচার থেকে শরীরটা টেনে বার করছেন নিজেই।
কি আশ্চর্য, ট্রামটা আবার চলতে শুরু করেছে!
উনিও ভাঙা শরীর নিয়ে
ট্রামের লাইন ধরেই হেঁটে চলেছেন...
২
যারা
বেঁচে থাকার খড়কুটোও হারিয়ে ফেলেছে
ভেবে,
পৃথিবীর
গভীরতম
বেদনা বুকে নিয়ে
মৃত্যুর ঠোঁটে ঠোঁট রাখে,
তাদের সেই ঘোর লাগা বেদনা কি চোখে দেখা যায়!
বেদনার ভার কত ভারী হলে কেউ নিজেকেই শেষ করে দিতে চায়?
৩
ভেবে দেখেছি
আত্মমগ্ন হয়ে, ট্রাম বা ট্রেনের লাইন ধরে
কখনোই হাঁটা ঠিক নয়।
ট্রেনের লাইন বড়ই প্রপঞ্চময়!
আপনি হয়তো কিছু একটা ভাবছেন,
এই যে ভেবে ভেবে হাঁটছেন আর ভাবছেন,
এই ভাবনা আপনাকে নিমগ্নতার আরও গভীরে নিয়ে ফেলবে,
ফলে, আপনি, ট্রামের অবিরাম ঘণ্টা বাজানো
বা চুনিলালের বারংবার সতর্ক উচ্চারণের
কিছুই শুনতে পাবেন না… মাঝেমধ্যে আমিও পাই না…
৪
কী অদ্ভুত এ জীবন!
কী দুঃখময় এ জীবন!
৫
কবি সিলভিয়া প্লাথ
মৃত্যুর আগমুহূর্তে
বাচ্চাদের খাওয়ার জন্য রুটি, মাখন
আর দুই মগ দুধ রেখে গিয়েছিল টেবিলে,
যেন প্রিয় শিশুরা ঘুম থেকে উঠে
কিছু খেতে পারে।
তারপর রান্নাঘরে ফিরে
তোয়ালে দিয়ে দরজা আর জানলার ফাঁকগুলো
বন্ধ করে, চুলার গ্যাসটি চালু করে দিলে
তারপর… তারপর… তারপর আর ভাবতে পারছি না...
৬
প্রিয় শিল্পী
ভিনসেন্ট ভ্যান গগ
রিভলবারের গুলি চালিয়ে দিয়েছিল নিজের দিকে।
মৃত্যুর সময় কেবল একটি কথাই লিখেছিলে—‘দুঃখ সব সময়ই টিকে থাকবে!’
ভ্যান গগ!
আহা প্রিয়, তুমি তবে বুঝেছিলে কি,
বেঁচে থাকার চেয়ে নির্মম ব্যথা বুঝি পৃথিবীতে নেই!
৭
কথাসাহিত্যিক
অ্যাডেলাইন ভার্জিনিয়া উলফ,
নিজের ওভারকোটটির পকেটে নুড়িপাথর ভরে
বাড়ির পাশে ওউজ নদীতে ডুব দিলে,
আর ফিরে এলে না।
তোমার নুড়িপকেটে একটা ছোট্ট চিঠি-
‘প্রিয়তম, আমি বুঝতে পারছি, আমি আবারও পাগল হয়ে যাচ্ছি। আমি বুঝতে পারছি এবার হয়তো আমাদের এই কঠিন সময় অতিক্রান্ত হবে না। আমি নানা রকম স্বর শুনতে পাচ্ছি, কিছুতেই মনঃসংযোগ করতে পারছি না। তাই যা সবচেয়ে ভালো মনে হচ্ছে তা-ই করতে যাচ্ছি আমি…’
মাঝে মাঝে আমিও কি শুনতে পাই নানা রকম স্বর!
ওউজ নদী কি আমাকেও ডাকে!
৮
মিষ্টি মেয়ে
এভিলিন ম্যাকহেল
বিখ্যাত কোনো ব্যক্তি ছিলে না তুমি।
১৯৪৭ সালের পহেলা মে, এভিলিন নিউইয়র্ক শহরের
এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংয়ের
৮৬তম ফ্লোরে পৌঁছে, ঝাঁপিয়ে পড়লে মাটিতে!
অথচ কী আশ্চর্য!
মনে হচ্ছে তুমি মৃত নও, মাত্রই ঘুমিয়েছ...
৯
ঔপন্যাসিক
আর্নেস্ট হেমিংওয়ে,
সেদিন ভোরের পৃথিবী দেখে
তুমি কী ভাবছিলে তা কে জানে!
নিজের প্রিয় শটগানে
নিজের খুলি উড়িয়ে দিলে...
কোথাও কোনো নোট রেখে যাওনি!
এখন হরহামেশাই তুমি মগজে ঢুকে
নানা রকমের নোট লিখছ …
আমি যেন বা তোমার লেখার টেবিলে ফেলে রাখা সাদা খাতা...
১০
মেহেকানন্দার কবি
মুনিরা চৌধুরী।
এই পৃথিবীর মায়া থেকে মুখ ফেরালে!
সত্য কি?
মায়া কি ছিল না কোথাও!
‘ক্রমে পালক ঝরছে, পাতা ঝরছে, শিশির ঝরছে…’
‘কতিপয় মানুষ পাখিদের শরীরে প্লাস্টিকের পালক লাগিয়ে দিয়ে যায়’
আহ্ মুনিরা! তুমি সমুদ্রের ফেনায় ডুবে ডুবে খোঁজো কার মুখ?
জানি থাকে, ভালোবাসলে থাকে, হারাবার কতশত ভয়!
১১
কেবল ইশ্বরই জানেন,
ভালোবাসা আর ভয় ভুলে
লাশকাটা ঘরে শুয়ে আছে যিনি
তার চোখে চোখ রেখে
কেউ কি তাকে বলেছে
এই পৃথিবীতে তুমি ভীষণরকম জরুরি!
চারুশিল্প হচ্ছে মানুষের অনুভূতি প্রকাশের মাধ্যম। একটি ছবি একটি বিপ্লবের উন্মেষ ঘটাতে পারে। ছবি শুধু বিনোদনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি বিপ্লবের বার্তাও নিয়ে আসে।
৬ দিন আগেআপনি যে বয়সেরই হোন না কেন, এই বই পড়লে তারুণ্যশক্তিকে অনুভব করবেন, অনুপ্রাণিত হবেন। নতুন শুরুর একটা তাগিদ পাবেন। এই তরুণদের প্রত্যেকের মতো আপনিও বলে উঠবেন—সব সম্ভব! এই বইয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে জন্ম নেওয়া অবহেলিত অবস্থা থেকে সাফল্যের শীর্ষে যাওয়ার পথচলার গল্প উঠে এসেছে। প্রায় চার শ পৃষ্ঠার বইটির দাম
১৩ দিন আগেপ্রকাশনা সংস্থা ‘ঐতিহ্য’ তার দুই যুগের পথচলা (২০০০-২০২৪) স্মরণীয় করে রাখতে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে দশ দিনব্যাপী ‘ঐতিহ্য বই উৎসব ২০২৪’ আয়োজন করেছে। আজ ২ নভেম্বর শনিবার বেলা ১১টায় যৌথভাবে উৎসব উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, বিশিষ্ট লেখক-গবেষক শারমিন আহমদ এবং তরুণ
১৩ দিন আগেদ্য ভেজিটেরিয়ানের পর হান কাঙের পরের উপন্যাস ছিল ‘দ্য উইন্ড ব্লোজ, গো’। এই উপন্যাস লেখার সময়ই ঘটে বিপত্তি! হান অনুভব করেন তিনি আর লিখতে পারছেন না। গত বছর নিজের পঞ্চম উপন্যাস ‘গ্রিক লেসন’ ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত হলে স্পেনের এল-পাইস পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেই অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছিলেন তিনি।
১০ অক্টোবর ২০২৪