মিনার মনসুর
ভেবেছিলাম এ গল্প একটি বটবৃক্ষের। টুঙ্গিপাড়ার ছায়া-সুনিবিড় গ্রাম থেকে তুলে এনে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের আবহমান জনসমুদ্রসৈকতে অলৌকিক ছাতার মতো পেতে দিলেই গল্পটি দাঁড়িয়ে যাবে নিজের পায়ে। আর সমুদ্রপিপাসু পথশ্রান্ত পর্যটকেরা নিশ্চিন্তে মাথা এলিয়ে দেবে তার সুশীতল ছায়াতলে। এরিনমোরের ঘ্রাণে ম-ম করবে চারপাশ। তার বিপুল সম্মোহনে সুবোধ বালকের মতো ছুটে আসবে সমুদ্র। খুনসুটি করবে রাসেল নামের ঝাঁকড়া চুলের মায়াবী বৃক্ষটির সঙ্গে।
২. বাংলা একাডেমির প্রবীণ বটবৃক্ষটি কীভাবে যেন জেনে যায় আমার গোপন অভিসন্ধি। মাথা ঝাঁকিয়ে আকাশ কাঁপিয়ে আবেগরুদ্ধ কণ্ঠে তিনি বললেন: ‘মহাশয়, আপনার পায়ে পড়ি, এমন গর্হিত কাজ করবেন না। আমাদের মাথা কাটা যাবে। কেননা, আমরা পিতার নিমক খেয়েছি। জননী তো চির জঙ্গম! তাঁর কি তুলনা চলে এই স্থবির অধমের সাথে?’ এ কথা শুনে লাফাতে লাফাতে ছুটে আসে মধুমতি-বাইগার—যেন অভিন্নহৃদয় দুই কিশোর-কিশোরী। মাথা নাড়ে। ঢের কথা ঢের ব্যথা জমে আছে ক্ষুদ্র দুই হৃদয়ে তাদের।
৩. গল্পটি তাহলে মধুমতির—সহস্র নাগিনীর ক্রোধ পায়ে দলে বেহুলার মতো পরম মমতায় যিনি বাইগারকে বয়ে নিয়ে যান বঙ্গোপসাগরে। হাহাকার করে ওঠে মধুমতি। ‘আমরা তাঁর নখেরও যোগ্য নই। তুমুল তিমির রাতে লখিন্দরের খোঁজে যখন ভাসাতেন তরী এই পথে—সবিস্ময়ে আমি তাঁর পায়ে লুটিয়ে পড়েছি কতবার। বলেছি সসম্ভ্রমে, ‘রেখো মা দাসীরে মনে।’ যেনবা মাতৃবিয়োগ শোকে বুক চাপড়ে কাঁদে মধুমতি। সেই কান্নার ঢেউ আছড়ে পড়ে প্রমত্ত পদ্মার বুকে। পদ্মার প্রসারিত দশ হাত শুশ্রূষার মেঘ হয়ে ঝরতে থাকে মধুমতির বিদীর্ণ হৃদয়ে।
৪. ‘পেয়ে গেছি পেয়ে গেছি’ বলে আনন্দে চিৎকার করে উঠি আমি। গল্পটি নিশ্চিতভাবে পদ্মার। হাঁটু মুড়ে বসি পদতলে তাঁর। বিনম্র শ্রদ্ধায় তাঁকে বলি: ‘আপনাকেই শিরোধার্য করে নিয়ে যাব ধানমন্ডির বত্রিশ নম্বরে। জাতীয় সংগীতের মতো আপনি বয়ে যাবেন আপামর বাঙালির ভস্মীভূত হৃদয়ে হৃদয়ে। এরিনমোরের সুঘ্রাণ আপনাকে সঙ্গ দেবে সারাক্ষণ। পদ্মা ফুঁসে ওঠে। ‘মশাই, এমন সর্বনাশ করবেন না আমার! আমি যাঁরে চিরকাল মা বলে জানি, হাজার জনমের তপস্যায় পেয়েছি যাঁর দর্শন, আমি ধন্য হই যদি মেলে ঠাঁই পবিত্র চরণে তাঁর।’
৫. মাঝি, পড়েছি অগাধ জলে—কোথায় উদ্ধার? গিরিবাজ কবুতরের মতো ঠা ঠা শব্দে মাঝি হাসে আর বলে: ‘সাগররে শুধান, এত যে তর্জনগর্জন করে—দেখি কেমুন বুকের পাটা তার!’ শোনা মাত্র সটান মাটিতে লুটিয়ে পড়ে বঙ্গোপসাগর—যেন এক্ষুনি তার মুণ্ডুচ্ছেদ হবে কলমের এক খোঁচায়। ‘বেয়াদবি মাফ করবেন হুজুর, যাঁর অঙ্গুলিহেলনে নবজন্ম নেয় ইতিহাস—সেই মহাকালের মহাতর্জনী যিনি ধারণ করেন পরম মমতায়—তাঁকে ধারণ করবে এমন সাগর কোথায়?’
ভেবেছিলাম এ গল্প একটি বটবৃক্ষের। টুঙ্গিপাড়ার ছায়া-সুনিবিড় গ্রাম থেকে তুলে এনে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের আবহমান জনসমুদ্রসৈকতে অলৌকিক ছাতার মতো পেতে দিলেই গল্পটি দাঁড়িয়ে যাবে নিজের পায়ে। আর সমুদ্রপিপাসু পথশ্রান্ত পর্যটকেরা নিশ্চিন্তে মাথা এলিয়ে দেবে তার সুশীতল ছায়াতলে। এরিনমোরের ঘ্রাণে ম-ম করবে চারপাশ। তার বিপুল সম্মোহনে সুবোধ বালকের মতো ছুটে আসবে সমুদ্র। খুনসুটি করবে রাসেল নামের ঝাঁকড়া চুলের মায়াবী বৃক্ষটির সঙ্গে।
২. বাংলা একাডেমির প্রবীণ বটবৃক্ষটি কীভাবে যেন জেনে যায় আমার গোপন অভিসন্ধি। মাথা ঝাঁকিয়ে আকাশ কাঁপিয়ে আবেগরুদ্ধ কণ্ঠে তিনি বললেন: ‘মহাশয়, আপনার পায়ে পড়ি, এমন গর্হিত কাজ করবেন না। আমাদের মাথা কাটা যাবে। কেননা, আমরা পিতার নিমক খেয়েছি। জননী তো চির জঙ্গম! তাঁর কি তুলনা চলে এই স্থবির অধমের সাথে?’ এ কথা শুনে লাফাতে লাফাতে ছুটে আসে মধুমতি-বাইগার—যেন অভিন্নহৃদয় দুই কিশোর-কিশোরী। মাথা নাড়ে। ঢের কথা ঢের ব্যথা জমে আছে ক্ষুদ্র দুই হৃদয়ে তাদের।
৩. গল্পটি তাহলে মধুমতির—সহস্র নাগিনীর ক্রোধ পায়ে দলে বেহুলার মতো পরম মমতায় যিনি বাইগারকে বয়ে নিয়ে যান বঙ্গোপসাগরে। হাহাকার করে ওঠে মধুমতি। ‘আমরা তাঁর নখেরও যোগ্য নই। তুমুল তিমির রাতে লখিন্দরের খোঁজে যখন ভাসাতেন তরী এই পথে—সবিস্ময়ে আমি তাঁর পায়ে লুটিয়ে পড়েছি কতবার। বলেছি সসম্ভ্রমে, ‘রেখো মা দাসীরে মনে।’ যেনবা মাতৃবিয়োগ শোকে বুক চাপড়ে কাঁদে মধুমতি। সেই কান্নার ঢেউ আছড়ে পড়ে প্রমত্ত পদ্মার বুকে। পদ্মার প্রসারিত দশ হাত শুশ্রূষার মেঘ হয়ে ঝরতে থাকে মধুমতির বিদীর্ণ হৃদয়ে।
৪. ‘পেয়ে গেছি পেয়ে গেছি’ বলে আনন্দে চিৎকার করে উঠি আমি। গল্পটি নিশ্চিতভাবে পদ্মার। হাঁটু মুড়ে বসি পদতলে তাঁর। বিনম্র শ্রদ্ধায় তাঁকে বলি: ‘আপনাকেই শিরোধার্য করে নিয়ে যাব ধানমন্ডির বত্রিশ নম্বরে। জাতীয় সংগীতের মতো আপনি বয়ে যাবেন আপামর বাঙালির ভস্মীভূত হৃদয়ে হৃদয়ে। এরিনমোরের সুঘ্রাণ আপনাকে সঙ্গ দেবে সারাক্ষণ। পদ্মা ফুঁসে ওঠে। ‘মশাই, এমন সর্বনাশ করবেন না আমার! আমি যাঁরে চিরকাল মা বলে জানি, হাজার জনমের তপস্যায় পেয়েছি যাঁর দর্শন, আমি ধন্য হই যদি মেলে ঠাঁই পবিত্র চরণে তাঁর।’
৫. মাঝি, পড়েছি অগাধ জলে—কোথায় উদ্ধার? গিরিবাজ কবুতরের মতো ঠা ঠা শব্দে মাঝি হাসে আর বলে: ‘সাগররে শুধান, এত যে তর্জনগর্জন করে—দেখি কেমুন বুকের পাটা তার!’ শোনা মাত্র সটান মাটিতে লুটিয়ে পড়ে বঙ্গোপসাগর—যেন এক্ষুনি তার মুণ্ডুচ্ছেদ হবে কলমের এক খোঁচায়। ‘বেয়াদবি মাফ করবেন হুজুর, যাঁর অঙ্গুলিহেলনে নবজন্ম নেয় ইতিহাস—সেই মহাকালের মহাতর্জনী যিনি ধারণ করেন পরম মমতায়—তাঁকে ধারণ করবে এমন সাগর কোথায়?’
চারুশিল্প হচ্ছে মানুষের অনুভূতি প্রকাশের মাধ্যম। একটি ছবি একটি বিপ্লবের উন্মেষ ঘটাতে পারে। ছবি শুধু বিনোদনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি বিপ্লবের বার্তাও নিয়ে আসে।
৬ দিন আগেআপনি যে বয়সেরই হোন না কেন, এই বই পড়লে তারুণ্যশক্তিকে অনুভব করবেন, অনুপ্রাণিত হবেন। নতুন শুরুর একটা তাগিদ পাবেন। এই তরুণদের প্রত্যেকের মতো আপনিও বলে উঠবেন—সব সম্ভব! এই বইয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে জন্ম নেওয়া অবহেলিত অবস্থা থেকে সাফল্যের শীর্ষে যাওয়ার পথচলার গল্প উঠে এসেছে। প্রায় চার শ পৃষ্ঠার বইটির দাম
১৩ দিন আগেপ্রকাশনা সংস্থা ‘ঐতিহ্য’ তার দুই যুগের পথচলা (২০০০-২০২৪) স্মরণীয় করে রাখতে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে দশ দিনব্যাপী ‘ঐতিহ্য বই উৎসব ২০২৪’ আয়োজন করেছে। আজ ২ নভেম্বর শনিবার বেলা ১১টায় যৌথভাবে উৎসব উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, বিশিষ্ট লেখক-গবেষক শারমিন আহমদ এবং তরুণ
১৩ দিন আগেদ্য ভেজিটেরিয়ানের পর হান কাঙের পরের উপন্যাস ছিল ‘দ্য উইন্ড ব্লোজ, গো’। এই উপন্যাস লেখার সময়ই ঘটে বিপত্তি! হান অনুভব করেন তিনি আর লিখতে পারছেন না। গত বছর নিজের পঞ্চম উপন্যাস ‘গ্রিক লেসন’ ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত হলে স্পেনের এল-পাইস পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেই অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছিলেন তিনি।
১০ অক্টোবর ২০২৪