প্রমথ চৌধুরী
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সমালোচক প্রমথ চৌধুরী। তাঁর অনেক অগ্রন্থিত লেখা এখানে ওখানে ছড়িয়ে থাকা লেখাপত্র বিভিন্ন পত্রিকা থেকে সংগ্রহ করেছেন মলয়েন্দু দিন্দা। তাঁর সংগৃহীত লেখাগুলো মন ফকিরা থেকে, প্রথম প্রকাশ পেয়েছে প্রমথ চৌধুরীর দুটি বই অগ্রন্থিত রচনা-১, অগ্রন্থিত রচনা-২ নামে। সেখান থেকেই প্রমথ চৌধুরীর প্রয়াণ দিবসে দুষ্প্রাপ্য ৩টি লেখা আজও প্রাসঙ্গিক মনে হওয়ায় পুনঃপাঠ হিসেবে তুলে দেওয়া হলো আজকের পত্রিকার সাহিত্য পাতায়।
সুহৃদ্বর শ্রীযুক্ত রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় অসুস্থ শরীরে পুণা থেকে কলিকাতায় প্রত্যাগমন করে বাংলা সাহিত্যের সুস্থ শরীর কিঞ্চিৎ ব্যস্ত করে তুলেছেন।
তাঁর লেখনীর স্পর্শে আমাদের সাহিত্য সমাজে গুটি-তিনেক কলহের সৃষ্টি হয়েছে। ব্যাপার দেখে আমার একটু হাসি পায়। বন্ধুবরের মতো সদালাপী ও সদানন্দ লোক আমাদের সমাজে অতি বিরল। এমন ধীর প্রকৃতির লোক যে আর পাঁচ জনকে অস্থির করে তুলেছেন, তার থেকে মনে হয় যে পৃথিবীর যত শান্ত লোকই আসলে যত অশান্তির কারণ। আর যিনি যত শান্ত, তিনি তত অশান্তির সৃষ্টি করেন।
শুনতে পাই যে শ্রীযুক্ত শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাসের গুণাগুণ নিয়ে যে মতভেদ আজকের দিনে কাগজে-পত্রে গর্জে উঠেছে, সে বাকবিতণ্ডার মূলে নাকি আছে রাখালদাসের প্রতিকূল সমালোচনা।
পৃথিবীতে এমন কোন মত জন্মাতে পারে না-যার পিঠ-পিঠ তার উলটো মত না-জন্মায়। আস্তিকের পিঠ-পিঠ নাস্তিক জন্মাতে বাধ্য এবং আস্তিকতার বাড়া-বাড়ির সঙ্গে নাস্তিকতারও বাড়াবাড়ি হয়। এই হচ্ছে সংসারের নিয়ম। শরৎবাবুর নভেলের সপক্ষ ও বিপক্ষের দলকে কাগজওয়ালারা যে সমান ঝাঁকিয়ে ও ঝাঝিয়ে তুলেছেন, তার প্রমাণ আমি সেদিন হাবড়া সহরে পেয়েছি। উক্ত সহরের একটি সাহিত্য-সভায় আমি সশরীরে উপস্থিত ছিলুম। সে সভায় জনৈক নবীন সমালোচক শরৎবাবুর উপন্যাসের চরিত্রের বিশেষ পরিচয় আমাদের দিলেন। তাঁর মোদ্দা কথা হচ্ছে ও-সাহিত্য ‘চরিত্রহীন’। শরৎ-সাহিত্যের এ রূপ নিন্দায় ক্ষুব্ধ হয়ে জনৈক নবীন প্রফেসর তার দীর্ঘ প্রতিবাদ করতে উদ্যত হয়েছিলেন। আমি তাঁকে নিরস্ত করি। কেন জানেন? সমালোচক মহাশয়ের প্রবন্ধের ভিতর থেকে একটি সত্য দিব্যি ফুটে বেরিয়েছিল। তিনি যে শরৎবাবুর গ্রন্থাবলী আদ্যোপান্ত তন্ন তন্ন করে পড়েছেন, তার পরিচয় উক্ত প্রবন্ধের পত্রে-পত্রে ছত্রে ছত্রে ছিল। লেখক পাঠকের কাছ থেকে এর চেয়ে আর কী বড় সার্টিফিকেট পেতে পারেন? সমাজের উপর সাহিত্যের সুফল-কুফলের বিচার একেবারে নিষ্ফল। সাহিত্যও সমাজকে মারতে পারে না, সমাজও সাহিত্যকে মারতে পারে না। এই দুই পারে কেবল পরস্পরের সঙ্গে প্রাণের আদান-প্রদান করতে। তবে মরা সমাজ অবশ্য জ্যান্ত সাহিত্যকে দূরে রাখতে চায়, পাছে তার স্পর্শে সে বেঁচে ওঠে এই ভয়ে।
সে যাই হোক, রাখালবাবু যদি সত্য সত্যই এই সাহিত্যিক বিবাদের সৃষ্টি করে থাকেন, তা হলে তিনি বাঙলা সাহিত্যের মহা উপকার করেছেন। এই সব আলোচনার ফলে আমাদের নিন্দা-প্রশংসা দুই critical হয়ে উঠবে। আর critical faculty-র অভাব যে বঙ্গ-সাহিত্যের প্রধান অভাব, এ কথা অস্বীকার করা চলে না।
রাখালবাবু দ্বিতীয় বিবাদের সৃষ্টি করেছেন, রাজা গণেশ ও দনুজমর্দনের কুল-শীল নিয়ে। এ বিষয়ে যে প্রচণ্ড আলোচনা শুরু হয়েছে, সেটা ষোল আনা পণ্ডিতের বিচার। এ বিচারের পূর্বপক্ষ কি উত্তরপক্ষ কোন পক্ষই অবলম্বন করবার আমার অধিকার নেই। আমি আর যাই হই না কেন, অতীত-পণ্ডিত নই। দাবা খেলার দর্শকদের পক্ষে উপর চাল দেবার লোভ সম্বরণ করা অসম্ভব। আমি বাঙলার ঐতিহাসিক দাবা খেলার একজন অনুরক্ত দর্শক এবং সেই হিসেবেই এ বিষয়ে দুটো-একটা উপর চাল না দিয়ে থাকতে পারছি নে।
কোন নতুন লোকের প্রথম সাক্ষাৎ পেলে, আমরা জিজ্ঞাসা করি, মহাশয়ের নাম কী? বাড়ি কোথায়? কী জাত? ঐতিহাসিকও ইতিহাসের কাছে সে কালের লোক সম্বন্ধে ঐ একই প্রশ্ন করেন। এখন ইতিহাস গণেশ ও দনুজমর্দনের নাম আমাদের বলেছেন। কিন্তু তাঁদের কোথায় বাড়ি ও তাঁরা কী জাত, এ প্রশ্নর উত্তর প্রাচীন দলিল হয়ত দেয় না, নয়ত উলটোপালটা জবাব দেয়। এ অবস্থায় গণেশের ও দনুজমর্দনের কুল-শীল সম্বন্ধে যার যা পছন্দ তিনি সেই উত্তরই সত্য বলে মেনে নেবেন, আর কেউ তা মিথ্যা প্রমাণ করতে পারবেন না। এ ক্ষেত্রে বারেন্দ্র ব্রাহ্মণ ঐতিহাসিক যদি গণেশকে নিজের দলে টানতে চান, অথবা পূর্ববঙ্গের ঐতিহাসিকেরা যদি বলেন যে দনুজমর্দনের জন্মস্থান সপ্তগ্রাম নয়, সুবর্ণগ্রাম, তবে তাতে রাখালবাবুর কী যায় আসে, আর ইতিহাসেরই বা কী যায় আসে?
আমার ধ্রুববিশ্বাস যে, গণেশ ছিলেন বারেন্দ্র ব্রাহ্মণ। যে-লোক পাড়াগেঁয়ে জমিদার থেকে, গৌড়ের বাদসাহীতে প্রমোশন পেতে পারে তার যে পাকা বিষয়-বুদ্ধি ছিল, সে কথা বলাই বাহুল্য। আর বারেন্দ্রর আর কোন বুদ্ধি থাক আর নাই থাক, বিষয়-বুদ্ধি যে নেই এমন কথা কেউ বলে না। গণেশের পুত্র যদু ওরফে জালালুদ্দিন; তাকে যে-ব্রাহ্মণেরা প্রায়শ্চিত্ত করিয়েছিল সে ব্রাহ্মণদের তিনি যে কী রূপ বিদায় দেন, সে বিবরণও রাখালবাবুর বাংলার ইতিহাসেই আছে। সে বিদায়ে যদু পুরো বারেন্দ্রবৃদ্ধির পরিচয় দিয়েছেন, সে বিষয়ে ত আর কোন সন্দেহ নেই।
সে যাই হোক, এই সূত্রে বারেন্দ্র ব্রাহ্মণ যে বাঙলার সমগ্র পতিত অতীতটাকে আত্মসাৎ করে নিলে, এই বলে কোন অ-বারেন্দ্রের দুঃখ করবার কোনই কারণ নেই। আমি যদি অ-বারেন্দ্র হতুম আর বারেন্দ্ররা যদি এত নির্বোধ হত তা হলে আমি অতীতটাকে সেই মূর্খদের হাতে ছেড়ে দিয়ে, এই ফাঁকে বাঙলার সমগ্র ভবিষ্যৎটা দখল করতে বসে যেতুম।
আসল কথা ও-দুই ব্যক্তির কোন জাত নেই। উভয়েই ছিলেন রাজা এবং রাজার যে কোন জাত নেই, সে কথা শাস্ত্রেও বলে; আর তাঁর কোন দেশও নেই, যে-দেশ তিনি ছলে বলে কৌশলে নিতে পারেন সেই দেশই তার স্বদেশ। সে যাই হোক, এ বিষয়ে যে ঐতিহাসিকেরা দলাদলি করবেন-সে ত স্বাভাবিক। কারণ এঁরা হচ্ছেন দু’-দল। এক দল লিখবেন গণেশ—আর এক দল লড়বেন দনুজমর্দন। বন্ধুবর হচ্ছেন একাধারে ও-দুই। বোধ হয় সেই কারণে লোকে মনে করে যে এ কলহের সৃষ্টি তিনি করেছেন। কিন্তু এ অনুমান সম্পূর্ণ ভুল। ইতিহাসের সঙ্গে-সঙ্গেই ঐতিহাসিক বিবাদের সৃষ্টি হতে বাধ্য। সৃষ্টির অর্থ যে প্রকৃতির শান্তিভঙ্গ—এ সত্য সাংখ্য দর্শন পড়লেই বুঝতে পারবেন।
রাখালবাবু যে প্রথম বিবাদের সৃষ্টি করেছেন, সেটি হচ্ছে পুরো সাহিত্যিক, আর তৎকর্তৃক সৃষ্ট দ্বিতীয় বিবাদটি হচ্ছে পুরো ঐতিহাসিক। অতঃপর তিনি যে তৃতীয় বিবাদের সৃষ্টি করেছেন—সেটি হচ্ছে আধা সাহিত্যিক, আধা ঐতিহাসিক।
বন্ধুবর বলেছেন যে বাঙলার ঐতিহাসিক নাটক ঐতিহাসিক নয়। এর উত্তরে অবশ্য অনেকে বলছেন যে তা ঐতিহাসিক না হোক, নাটক। এ তর্কের যে শেষ নেই, তা বলাই বাহুল্য। নাটক যে নাটক আর ইতিহাস যে ইতিহাস, এ বিষয়ে কোনই তর্ক নেই আর যে-বিষয়ে কোন তর্ক নেই, সে বিষয়ে তর্কের শেষও নেই। তবে ও-দুই একসঙ্গে মেশালেই যত গোলযোগ ঘটে। এ গোল সহজে মেটে যদি নাটককারেরা ইতিহাসকে ঐতিহাসিকের হাতে সঁপে দিয়ে নিরুপাধিক নাটক লেখেন। অন্যথা ঐতিহাসিকের হাত থেকে নাটককারের নিস্তার নেই।
’আলমগীর’-এর যে-সব ঐতিহাসিক ত্রুটি রাখালবাবু দেখিয়েছেন, তাতে করে শিশিরবাবুর অভিনয় কেউ বয়কট করবে না। তহব্বর খাঁ’র নাম’ দিলির খাঁ’ বলায় ইতিহাসের পান থেকে চুন খসলেও লোকে বলবে যে তাতে কিছু আসে যায় না। আর নাটক-রচয়িতা বলবেন যে, বেশ, ‘আলমগীর’-এর তৃতীয় সংস্করণে ‘দিলির’ বদলে ‘তহার’ করা যাবে। ও-নাটকের নাকি আর একটি কলঙ্ক এই যে কাম্ বখ্স কখনই প্রেম করতে যাননি, কারণ তখন তাঁর বয়স ছিল সবে বারো। এর উত্তরে অনেকে বলবে যে কাম্ বখ্স নিশ্চয়ই প্রেম করতে গিয়েছিল কারণ সে ছেলে ছিল ইঁচড়ে পাকা, নয়ত তারা বলবে যে কাম্ বখ্স আর দশ বৎসর আগে জন্মানো উচিত ছিল। তারপর রাখালবাবু বলেছেন যে ‘আলমগীর’ নাটকের অনেক পাত্র-পাত্রী বর্ণিত ঘটনার আগেই যে মারা গিয়েছিলেন সে কথা ‘আলমগীর’-এর লেখক জানেন না। এর সহজ উত্তর ইতিহাসকে যে ব্যক্তি শুধু একটা প্রকাণ্ড জন্ম-মৃত্যুর রেজিষ্টার মনে করেন সে ব্যক্তি নাটক রচনা করতে পারেন না। অতএব নাটককার কে কবে মারা গেল, তার খবর রাখতে বাধ্য নন।
আমি যখন ঐতিহাসিকও নই নাটককারও নই, তখন আমি যে এ দলাদলির কোন দলে যোগ দিতে পারিনে, সে কথা বলাই বেশি। তবে এ সব বকাবকি শুনে আমার যা মনে হয়েছে, তা বলছি। তবে এ সব বক বক শুনে আমার যা মনে হয়েছে, তা বলছি।
যদি ইতিহাসকে একেবারেই আমল না দিই তবে ঐতিহাসিক নাটক লেখবার কী প্রয়োজন? যিনি ঐতিহাসিক নাটক লিখতে চান, তাঁর নাটক সৃষ্টি করবার অধিকার আছে, কিন্তু ইতিহাস সৃষ্টি করবার অধিকার নেই। ইতিহাসে নাটকের অনেক মালমসলা আছে, পক্ষান্তরে অনেক dramatic ঘটনা আছে। সেই সব ঘটনার মৃত পাত্র-পাত্রীদের পুনর্জীবন দিতে পারলেই যথার্থ ঐতিহাসিক নাটক সৃষ্টি করা হয়। কাব্যের রং নাটকে যতই চড়াও না কেন, ইতিহাসের কাঠামো তাতে বজায় রাখতে হবে। সোমেন্দ্র তাঁর রচিত ‘কথাসরিৎসাগর’-এর প্রথমেই বলেছেন, তিনি কথাবস্তুর স্বরূপ রক্ষা করে তার ভিতর কাব্যরস ঢুকিয়েছেন। এই ত চাই। পুরো ঐতিহাসিক সত্য বজায় রেখেও যে অপূর্ব সুন্দর নাটক গড়া যায় তার প্রমাণ শেক্সপিয়ারের ‘Julius Caesar’ ও ‘Antony Cleopatra’ আমাদের কবি-কল্পনা যতই উদ্দাম হোক না কেন, সে কল্পনা ইতিহাস ও দূরে থাক, পুরাণকেও উলটে ফেলতে পারে না। আমরা যদি রামায়ণের কোন ঘটনা অবলম্বন করে নাটক লিখতে বসি, তা হলে আমরা রামকে লঙ্কেশ্বর ও রাবণকে লক্ষ্মণের সহোদর কিছুতেই বলতে পারি নে, যেমন আমরা কবিতায় দিনে চন্দ্র ও রাত্তিরে সূর্য উঠাতে পারি নে। কল্পনাও যে নানা রকম শৃঙ্খলাবদ্ধ, এ সত্য ভুললে সে কল্পনাকে মুক্ত করা যায় না।
বাঙলার ঐতিহাসিক নাটকগুলির ইতিহাস সব উপন্যাস কি না তা আমি বলতে পারি নে। কারণ ইতিহাসের সঙ্গে আমার পরিচয় অতি সামান্য। ফলে নাটক-নভেলের বর্ণিত ঘটনা ইতিহাস বলে মেনে নেওয়াটা আমার পক্ষে স্বাভাবিক। নাটক-নভেলের শিক্ষায় ইতিহাস সম্বন্ধে মত্তুল্য লোকের মনে নানা রকম আজগুবি ঐতিহাসিক ধারণা জন্মানো খুবই সম্ভব। বাংলা নাটক নভেল পড়ে প্রতাপাদিত্য, মিরকাশিম প্রভৃতির যে-ছবি আমার মানসপটে আমি অঙ্কিত করেছিলুম, তারপর ইতিহাস পড়তে গিয়ে দেখি যে সে সব ছবি আর যারই হোক প্রতাপাদিত্যেরও নয়, মিরকাশিমেরও নয়। নাটক নভেলের উদ্দেশ্য অবশ্য লোককে ইতিহাস শেখানো নয়, তবে ভুল ইতিহাস শেখানোও নয়! আর নাটক দেখে ও নভেল পড়ে আমরা যে ক্ষণিক আনন্দ পাই শুধু তাই নয়; সেই পড়ার ও সেই দেখার রেশ আমাদের মনে রয়ে যায়। যার চর্চা করেছিলুম—শুধু আনন্দ লাভের জন্য, পরে দেখা যায়, তার থেকে পেয়েছি আমরা চিরস্থায়ী ভুল শিক্ষা।
এই সব কারণে আমি বলি, ‘ঐতিহাসিক নাটক’ লেখা যদি কিছু দিনের জন্য বন্ধ হয়, তা হলে সেটা সুখের বিষয়ই হয়। কারণ বস্তুত তা হলে বাঙলার বর্তমান নাটকের ভিতর ঢোকবার অবসর পাবে। আমাদের জীবনে কি ট্রাজেডি ও কমেডি নেই, আছে শুধু প্রহসন?
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সমালোচক প্রমথ চৌধুরী। তাঁর অনেক অগ্রন্থিত লেখা এখানে ওখানে ছড়িয়ে থাকা লেখাপত্র বিভিন্ন পত্রিকা থেকে সংগ্রহ করেছেন মলয়েন্দু দিন্দা। তাঁর সংগৃহীত লেখাগুলো মন ফকিরা থেকে, প্রথম প্রকাশ পেয়েছে প্রমথ চৌধুরীর দুটি বই অগ্রন্থিত রচনা-১, অগ্রন্থিত রচনা-২ নামে। সেখান থেকেই প্রমথ চৌধুরীর প্রয়াণ দিবসে দুষ্প্রাপ্য ৩টি লেখা আজও প্রাসঙ্গিক মনে হওয়ায় পুনঃপাঠ হিসেবে তুলে দেওয়া হলো আজকের পত্রিকার সাহিত্য পাতায়।
সুহৃদ্বর শ্রীযুক্ত রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় অসুস্থ শরীরে পুণা থেকে কলিকাতায় প্রত্যাগমন করে বাংলা সাহিত্যের সুস্থ শরীর কিঞ্চিৎ ব্যস্ত করে তুলেছেন।
তাঁর লেখনীর স্পর্শে আমাদের সাহিত্য সমাজে গুটি-তিনেক কলহের সৃষ্টি হয়েছে। ব্যাপার দেখে আমার একটু হাসি পায়। বন্ধুবরের মতো সদালাপী ও সদানন্দ লোক আমাদের সমাজে অতি বিরল। এমন ধীর প্রকৃতির লোক যে আর পাঁচ জনকে অস্থির করে তুলেছেন, তার থেকে মনে হয় যে পৃথিবীর যত শান্ত লোকই আসলে যত অশান্তির কারণ। আর যিনি যত শান্ত, তিনি তত অশান্তির সৃষ্টি করেন।
শুনতে পাই যে শ্রীযুক্ত শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাসের গুণাগুণ নিয়ে যে মতভেদ আজকের দিনে কাগজে-পত্রে গর্জে উঠেছে, সে বাকবিতণ্ডার মূলে নাকি আছে রাখালদাসের প্রতিকূল সমালোচনা।
পৃথিবীতে এমন কোন মত জন্মাতে পারে না-যার পিঠ-পিঠ তার উলটো মত না-জন্মায়। আস্তিকের পিঠ-পিঠ নাস্তিক জন্মাতে বাধ্য এবং আস্তিকতার বাড়া-বাড়ির সঙ্গে নাস্তিকতারও বাড়াবাড়ি হয়। এই হচ্ছে সংসারের নিয়ম। শরৎবাবুর নভেলের সপক্ষ ও বিপক্ষের দলকে কাগজওয়ালারা যে সমান ঝাঁকিয়ে ও ঝাঝিয়ে তুলেছেন, তার প্রমাণ আমি সেদিন হাবড়া সহরে পেয়েছি। উক্ত সহরের একটি সাহিত্য-সভায় আমি সশরীরে উপস্থিত ছিলুম। সে সভায় জনৈক নবীন সমালোচক শরৎবাবুর উপন্যাসের চরিত্রের বিশেষ পরিচয় আমাদের দিলেন। তাঁর মোদ্দা কথা হচ্ছে ও-সাহিত্য ‘চরিত্রহীন’। শরৎ-সাহিত্যের এ রূপ নিন্দায় ক্ষুব্ধ হয়ে জনৈক নবীন প্রফেসর তার দীর্ঘ প্রতিবাদ করতে উদ্যত হয়েছিলেন। আমি তাঁকে নিরস্ত করি। কেন জানেন? সমালোচক মহাশয়ের প্রবন্ধের ভিতর থেকে একটি সত্য দিব্যি ফুটে বেরিয়েছিল। তিনি যে শরৎবাবুর গ্রন্থাবলী আদ্যোপান্ত তন্ন তন্ন করে পড়েছেন, তার পরিচয় উক্ত প্রবন্ধের পত্রে-পত্রে ছত্রে ছত্রে ছিল। লেখক পাঠকের কাছ থেকে এর চেয়ে আর কী বড় সার্টিফিকেট পেতে পারেন? সমাজের উপর সাহিত্যের সুফল-কুফলের বিচার একেবারে নিষ্ফল। সাহিত্যও সমাজকে মারতে পারে না, সমাজও সাহিত্যকে মারতে পারে না। এই দুই পারে কেবল পরস্পরের সঙ্গে প্রাণের আদান-প্রদান করতে। তবে মরা সমাজ অবশ্য জ্যান্ত সাহিত্যকে দূরে রাখতে চায়, পাছে তার স্পর্শে সে বেঁচে ওঠে এই ভয়ে।
সে যাই হোক, রাখালবাবু যদি সত্য সত্যই এই সাহিত্যিক বিবাদের সৃষ্টি করে থাকেন, তা হলে তিনি বাঙলা সাহিত্যের মহা উপকার করেছেন। এই সব আলোচনার ফলে আমাদের নিন্দা-প্রশংসা দুই critical হয়ে উঠবে। আর critical faculty-র অভাব যে বঙ্গ-সাহিত্যের প্রধান অভাব, এ কথা অস্বীকার করা চলে না।
রাখালবাবু দ্বিতীয় বিবাদের সৃষ্টি করেছেন, রাজা গণেশ ও দনুজমর্দনের কুল-শীল নিয়ে। এ বিষয়ে যে প্রচণ্ড আলোচনা শুরু হয়েছে, সেটা ষোল আনা পণ্ডিতের বিচার। এ বিচারের পূর্বপক্ষ কি উত্তরপক্ষ কোন পক্ষই অবলম্বন করবার আমার অধিকার নেই। আমি আর যাই হই না কেন, অতীত-পণ্ডিত নই। দাবা খেলার দর্শকদের পক্ষে উপর চাল দেবার লোভ সম্বরণ করা অসম্ভব। আমি বাঙলার ঐতিহাসিক দাবা খেলার একজন অনুরক্ত দর্শক এবং সেই হিসেবেই এ বিষয়ে দুটো-একটা উপর চাল না দিয়ে থাকতে পারছি নে।
কোন নতুন লোকের প্রথম সাক্ষাৎ পেলে, আমরা জিজ্ঞাসা করি, মহাশয়ের নাম কী? বাড়ি কোথায়? কী জাত? ঐতিহাসিকও ইতিহাসের কাছে সে কালের লোক সম্বন্ধে ঐ একই প্রশ্ন করেন। এখন ইতিহাস গণেশ ও দনুজমর্দনের নাম আমাদের বলেছেন। কিন্তু তাঁদের কোথায় বাড়ি ও তাঁরা কী জাত, এ প্রশ্নর উত্তর প্রাচীন দলিল হয়ত দেয় না, নয়ত উলটোপালটা জবাব দেয়। এ অবস্থায় গণেশের ও দনুজমর্দনের কুল-শীল সম্বন্ধে যার যা পছন্দ তিনি সেই উত্তরই সত্য বলে মেনে নেবেন, আর কেউ তা মিথ্যা প্রমাণ করতে পারবেন না। এ ক্ষেত্রে বারেন্দ্র ব্রাহ্মণ ঐতিহাসিক যদি গণেশকে নিজের দলে টানতে চান, অথবা পূর্ববঙ্গের ঐতিহাসিকেরা যদি বলেন যে দনুজমর্দনের জন্মস্থান সপ্তগ্রাম নয়, সুবর্ণগ্রাম, তবে তাতে রাখালবাবুর কী যায় আসে, আর ইতিহাসেরই বা কী যায় আসে?
আমার ধ্রুববিশ্বাস যে, গণেশ ছিলেন বারেন্দ্র ব্রাহ্মণ। যে-লোক পাড়াগেঁয়ে জমিদার থেকে, গৌড়ের বাদসাহীতে প্রমোশন পেতে পারে তার যে পাকা বিষয়-বুদ্ধি ছিল, সে কথা বলাই বাহুল্য। আর বারেন্দ্রর আর কোন বুদ্ধি থাক আর নাই থাক, বিষয়-বুদ্ধি যে নেই এমন কথা কেউ বলে না। গণেশের পুত্র যদু ওরফে জালালুদ্দিন; তাকে যে-ব্রাহ্মণেরা প্রায়শ্চিত্ত করিয়েছিল সে ব্রাহ্মণদের তিনি যে কী রূপ বিদায় দেন, সে বিবরণও রাখালবাবুর বাংলার ইতিহাসেই আছে। সে বিদায়ে যদু পুরো বারেন্দ্রবৃদ্ধির পরিচয় দিয়েছেন, সে বিষয়ে ত আর কোন সন্দেহ নেই।
সে যাই হোক, এই সূত্রে বারেন্দ্র ব্রাহ্মণ যে বাঙলার সমগ্র পতিত অতীতটাকে আত্মসাৎ করে নিলে, এই বলে কোন অ-বারেন্দ্রের দুঃখ করবার কোনই কারণ নেই। আমি যদি অ-বারেন্দ্র হতুম আর বারেন্দ্ররা যদি এত নির্বোধ হত তা হলে আমি অতীতটাকে সেই মূর্খদের হাতে ছেড়ে দিয়ে, এই ফাঁকে বাঙলার সমগ্র ভবিষ্যৎটা দখল করতে বসে যেতুম।
আসল কথা ও-দুই ব্যক্তির কোন জাত নেই। উভয়েই ছিলেন রাজা এবং রাজার যে কোন জাত নেই, সে কথা শাস্ত্রেও বলে; আর তাঁর কোন দেশও নেই, যে-দেশ তিনি ছলে বলে কৌশলে নিতে পারেন সেই দেশই তার স্বদেশ। সে যাই হোক, এ বিষয়ে যে ঐতিহাসিকেরা দলাদলি করবেন-সে ত স্বাভাবিক। কারণ এঁরা হচ্ছেন দু’-দল। এক দল লিখবেন গণেশ—আর এক দল লড়বেন দনুজমর্দন। বন্ধুবর হচ্ছেন একাধারে ও-দুই। বোধ হয় সেই কারণে লোকে মনে করে যে এ কলহের সৃষ্টি তিনি করেছেন। কিন্তু এ অনুমান সম্পূর্ণ ভুল। ইতিহাসের সঙ্গে-সঙ্গেই ঐতিহাসিক বিবাদের সৃষ্টি হতে বাধ্য। সৃষ্টির অর্থ যে প্রকৃতির শান্তিভঙ্গ—এ সত্য সাংখ্য দর্শন পড়লেই বুঝতে পারবেন।
রাখালবাবু যে প্রথম বিবাদের সৃষ্টি করেছেন, সেটি হচ্ছে পুরো সাহিত্যিক, আর তৎকর্তৃক সৃষ্ট দ্বিতীয় বিবাদটি হচ্ছে পুরো ঐতিহাসিক। অতঃপর তিনি যে তৃতীয় বিবাদের সৃষ্টি করেছেন—সেটি হচ্ছে আধা সাহিত্যিক, আধা ঐতিহাসিক।
বন্ধুবর বলেছেন যে বাঙলার ঐতিহাসিক নাটক ঐতিহাসিক নয়। এর উত্তরে অবশ্য অনেকে বলছেন যে তা ঐতিহাসিক না হোক, নাটক। এ তর্কের যে শেষ নেই, তা বলাই বাহুল্য। নাটক যে নাটক আর ইতিহাস যে ইতিহাস, এ বিষয়ে কোনই তর্ক নেই আর যে-বিষয়ে কোন তর্ক নেই, সে বিষয়ে তর্কের শেষও নেই। তবে ও-দুই একসঙ্গে মেশালেই যত গোলযোগ ঘটে। এ গোল সহজে মেটে যদি নাটককারেরা ইতিহাসকে ঐতিহাসিকের হাতে সঁপে দিয়ে নিরুপাধিক নাটক লেখেন। অন্যথা ঐতিহাসিকের হাত থেকে নাটককারের নিস্তার নেই।
’আলমগীর’-এর যে-সব ঐতিহাসিক ত্রুটি রাখালবাবু দেখিয়েছেন, তাতে করে শিশিরবাবুর অভিনয় কেউ বয়কট করবে না। তহব্বর খাঁ’র নাম’ দিলির খাঁ’ বলায় ইতিহাসের পান থেকে চুন খসলেও লোকে বলবে যে তাতে কিছু আসে যায় না। আর নাটক-রচয়িতা বলবেন যে, বেশ, ‘আলমগীর’-এর তৃতীয় সংস্করণে ‘দিলির’ বদলে ‘তহার’ করা যাবে। ও-নাটকের নাকি আর একটি কলঙ্ক এই যে কাম্ বখ্স কখনই প্রেম করতে যাননি, কারণ তখন তাঁর বয়স ছিল সবে বারো। এর উত্তরে অনেকে বলবে যে কাম্ বখ্স নিশ্চয়ই প্রেম করতে গিয়েছিল কারণ সে ছেলে ছিল ইঁচড়ে পাকা, নয়ত তারা বলবে যে কাম্ বখ্স আর দশ বৎসর আগে জন্মানো উচিত ছিল। তারপর রাখালবাবু বলেছেন যে ‘আলমগীর’ নাটকের অনেক পাত্র-পাত্রী বর্ণিত ঘটনার আগেই যে মারা গিয়েছিলেন সে কথা ‘আলমগীর’-এর লেখক জানেন না। এর সহজ উত্তর ইতিহাসকে যে ব্যক্তি শুধু একটা প্রকাণ্ড জন্ম-মৃত্যুর রেজিষ্টার মনে করেন সে ব্যক্তি নাটক রচনা করতে পারেন না। অতএব নাটককার কে কবে মারা গেল, তার খবর রাখতে বাধ্য নন।
আমি যখন ঐতিহাসিকও নই নাটককারও নই, তখন আমি যে এ দলাদলির কোন দলে যোগ দিতে পারিনে, সে কথা বলাই বেশি। তবে এ সব বকাবকি শুনে আমার যা মনে হয়েছে, তা বলছি। তবে এ সব বক বক শুনে আমার যা মনে হয়েছে, তা বলছি।
যদি ইতিহাসকে একেবারেই আমল না দিই তবে ঐতিহাসিক নাটক লেখবার কী প্রয়োজন? যিনি ঐতিহাসিক নাটক লিখতে চান, তাঁর নাটক সৃষ্টি করবার অধিকার আছে, কিন্তু ইতিহাস সৃষ্টি করবার অধিকার নেই। ইতিহাসে নাটকের অনেক মালমসলা আছে, পক্ষান্তরে অনেক dramatic ঘটনা আছে। সেই সব ঘটনার মৃত পাত্র-পাত্রীদের পুনর্জীবন দিতে পারলেই যথার্থ ঐতিহাসিক নাটক সৃষ্টি করা হয়। কাব্যের রং নাটকে যতই চড়াও না কেন, ইতিহাসের কাঠামো তাতে বজায় রাখতে হবে। সোমেন্দ্র তাঁর রচিত ‘কথাসরিৎসাগর’-এর প্রথমেই বলেছেন, তিনি কথাবস্তুর স্বরূপ রক্ষা করে তার ভিতর কাব্যরস ঢুকিয়েছেন। এই ত চাই। পুরো ঐতিহাসিক সত্য বজায় রেখেও যে অপূর্ব সুন্দর নাটক গড়া যায় তার প্রমাণ শেক্সপিয়ারের ‘Julius Caesar’ ও ‘Antony Cleopatra’ আমাদের কবি-কল্পনা যতই উদ্দাম হোক না কেন, সে কল্পনা ইতিহাস ও দূরে থাক, পুরাণকেও উলটে ফেলতে পারে না। আমরা যদি রামায়ণের কোন ঘটনা অবলম্বন করে নাটক লিখতে বসি, তা হলে আমরা রামকে লঙ্কেশ্বর ও রাবণকে লক্ষ্মণের সহোদর কিছুতেই বলতে পারি নে, যেমন আমরা কবিতায় দিনে চন্দ্র ও রাত্তিরে সূর্য উঠাতে পারি নে। কল্পনাও যে নানা রকম শৃঙ্খলাবদ্ধ, এ সত্য ভুললে সে কল্পনাকে মুক্ত করা যায় না।
বাঙলার ঐতিহাসিক নাটকগুলির ইতিহাস সব উপন্যাস কি না তা আমি বলতে পারি নে। কারণ ইতিহাসের সঙ্গে আমার পরিচয় অতি সামান্য। ফলে নাটক-নভেলের বর্ণিত ঘটনা ইতিহাস বলে মেনে নেওয়াটা আমার পক্ষে স্বাভাবিক। নাটক-নভেলের শিক্ষায় ইতিহাস সম্বন্ধে মত্তুল্য লোকের মনে নানা রকম আজগুবি ঐতিহাসিক ধারণা জন্মানো খুবই সম্ভব। বাংলা নাটক নভেল পড়ে প্রতাপাদিত্য, মিরকাশিম প্রভৃতির যে-ছবি আমার মানসপটে আমি অঙ্কিত করেছিলুম, তারপর ইতিহাস পড়তে গিয়ে দেখি যে সে সব ছবি আর যারই হোক প্রতাপাদিত্যেরও নয়, মিরকাশিমেরও নয়। নাটক নভেলের উদ্দেশ্য অবশ্য লোককে ইতিহাস শেখানো নয়, তবে ভুল ইতিহাস শেখানোও নয়! আর নাটক দেখে ও নভেল পড়ে আমরা যে ক্ষণিক আনন্দ পাই শুধু তাই নয়; সেই পড়ার ও সেই দেখার রেশ আমাদের মনে রয়ে যায়। যার চর্চা করেছিলুম—শুধু আনন্দ লাভের জন্য, পরে দেখা যায়, তার থেকে পেয়েছি আমরা চিরস্থায়ী ভুল শিক্ষা।
এই সব কারণে আমি বলি, ‘ঐতিহাসিক নাটক’ লেখা যদি কিছু দিনের জন্য বন্ধ হয়, তা হলে সেটা সুখের বিষয়ই হয়। কারণ বস্তুত তা হলে বাঙলার বর্তমান নাটকের ভিতর ঢোকবার অবসর পাবে। আমাদের জীবনে কি ট্রাজেডি ও কমেডি নেই, আছে শুধু প্রহসন?
চারুশিল্প হচ্ছে মানুষের অনুভূতি প্রকাশের মাধ্যম। একটি ছবি একটি বিপ্লবের উন্মেষ ঘটাতে পারে। ছবি শুধু বিনোদনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি বিপ্লবের বার্তাও নিয়ে আসে।
৬ দিন আগেআপনি যে বয়সেরই হোন না কেন, এই বই পড়লে তারুণ্যশক্তিকে অনুভব করবেন, অনুপ্রাণিত হবেন। নতুন শুরুর একটা তাগিদ পাবেন। এই তরুণদের প্রত্যেকের মতো আপনিও বলে উঠবেন—সব সম্ভব! এই বইয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে জন্ম নেওয়া অবহেলিত অবস্থা থেকে সাফল্যের শীর্ষে যাওয়ার পথচলার গল্প উঠে এসেছে। প্রায় চার শ পৃষ্ঠার বইটির দাম
১৩ দিন আগেপ্রকাশনা সংস্থা ‘ঐতিহ্য’ তার দুই যুগের পথচলা (২০০০-২০২৪) স্মরণীয় করে রাখতে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে দশ দিনব্যাপী ‘ঐতিহ্য বই উৎসব ২০২৪’ আয়োজন করেছে। আজ ২ নভেম্বর শনিবার বেলা ১১টায় যৌথভাবে উৎসব উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, বিশিষ্ট লেখক-গবেষক শারমিন আহমদ এবং তরুণ
১৩ দিন আগেদ্য ভেজিটেরিয়ানের পর হান কাঙের পরের উপন্যাস ছিল ‘দ্য উইন্ড ব্লোজ, গো’। এই উপন্যাস লেখার সময়ই ঘটে বিপত্তি! হান অনুভব করেন তিনি আর লিখতে পারছেন না। গত বছর নিজের পঞ্চম উপন্যাস ‘গ্রিক লেসন’ ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত হলে স্পেনের এল-পাইস পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেই অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছিলেন তিনি।
১০ অক্টোবর ২০২৪