দীপংকর গৌতম
কবি আসাদ চৌধুরী নেই—তিনি লোকান্তরিত হয়েছেন। খবর পেয়েছিলাম অফিসে বসেই। সংবাদপত্র অফিসে মৃত্যুর খবরগুলো শোক হওয়ার সুযোগ পায় না। কারণ, শোক যাদের ছড়াতে হয়, তাদের শোক করার সময় কোথায়? কিন্তু আসাদ চৌধুরীর মৃত্যু আমার কাছে অত সহজ বিষয় নয়। আসাদ চৌধুরীর সঙ্গে আমি ঘুরে বেড়িয়েছি নারায়ণগঞ্জ যেতে হাকিমাবাদের পীরের খানকা শরিফ, বরদেশ্বরী কালীবাড়ি-মানসিংহ যাত্রাবাড়ীতে যাত্রা বিরতি দিয়ে যে দিঘিটা তাঁর সেনাবাহিনী দিয়ে কাটিয়ে ছিলেন, তার পাড়ে বসে ইতিহাস শুনেছি। ইতিহাসের পাঠ নিতে নিতে তাঁর ঝোলা ব্যাগের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসত ‘তবক দেওয়া পান’। একটা স্টিলের বাক্স। সেটার যে কত তলা, তা বোঝা দায়। একেক পার্ট থেকে একেক রকমের সুগন্ধি মসলা। আমি খুব পছন্দ করতাম তাঁর পান খেতে। একবার এক ঘটনা ঘটল—তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা কমিটির হরতাল। আমি শাহবাগ মোড়ে, পিকেটিং চলছে। হঠাৎ দেখি আসাদ চৌধুরী যাচ্ছেন। আমি দৌড়ে গিয়ে স্বভাবসুলভভাবে বললাম, ‘পান খাব তো।’
তিনি বললেন, ‘এখন পুলিশ তাড়া করলে?’
আমি বললাম, ‘আসাদ চৌধুরীকে পুলিশ কিছু বলবে না।’
তিনি শিশুতোষ হাসি দিয়ে ঝোলা ব্যাগ থেকে বের করে আনলেন স্টিলের হাজার দুয়ারি বাক্স। তারপর পান বানানো শুরু হতে হতে টিয়ার গ্যাস। পুলিশ এসে বলছেন, ‘আপনারা কী করছেন?’
আসাদ চৌধুরী শান্ত গলায় বললেন, ‘একটু পান দিয়েই চলে যাব।’
পান দিয়ে আমার হাত ধরে বললেন, এখন ওদিকে যাবে না। চলো পিজি মার্কেটে। আমি ওনার সঙ্গে গিয়ে আবার পিকেটিংয়ে ফিরে এলাম।
আসাদ চৌধুরীর সাধারণ জীবনযাপন দেখে মনে হতো না কত বড় মাপের মানুষ ছিলেন তিনি। উর্দু ও ফারসি ভাষা নিয়ে তাঁর আগ্রহ ছিল অসীম। তাঁর মাধ্যমেই জানতে পারি ঢাকায় উর্দু কবিদের একটি সোসাইটি আছে। তাঁদের মধ্যে অনেক ভালো কবি আছেন। মোহাম্মদপুর, পুরান ঢাকায় আমি গিয়েছি কয়েকবার। কবি আসাদ চৌধুরী ছিলেন তাঁদের আত্মীয়। কবি আসাদ চৌধুরী তাঁদের সঙ্গে উর্দুতে বাতচিত করতেন। কাঁধে ঝোলা, ঝাঁকড়া চুল। অনেক মসলা দিয়ে পান খাওয়ায় ঠোঁট থাকত লাল। আর সদা হাস্যোজ্জ্বল মুখশ্রী ছাড়া তাঁকে ভাবা যায়? চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি ঢাকা শহরে কবি, বাংলাদেশে মাটির মানুষের কবি আসাদ চৌধুরী হেঁটে যাচ্ছেন।
নিরাবেগ বোঝাপড়া নিয়ে হাঁটছেন। সেই ঢিলেঢালা রঙিন শার্ট বা পাঞ্জাবি পরা প্রেম, দ্রোহ ও প্রতিবাদের কবি আসাদ চৌধুরী হাঁটছেন, শহরজুড়ে তাঁর পদধ্বনির মুখরতা। শুদ্ধ বাংলায় দরাজ কণ্ঠে কথা বলতে বলতে হেঁটে যাচ্ছেন কবি আসাদ চৌধুরী। জীবনে কবি আসাদ চৌধুরীর পরিচয়ের অন্ত ছিল না। আধুনিক বাংলা কবিতার অন্যতম প্রধান কবি। সাহিত্যে তিনি গণমুখী, নান্দনিক ও রোমান্টিক বিন্যাস গড়েছেন। পরিচয় উঠে এসেছে প্রাজ্ঞ, আলোচক, উপস্থাপক, আবৃত্তিকার, টেলিভিশনের অনুষ্ঠানের উপস্থাপক, আরও কত কী। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অংশগ্রহণ কোনো ছোট ঘটনা নয়। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তাঁর কবিতায় যে দহন, যে প্রতিবাদ, পাকিস্তানি হায়েনাদের বিরুদ্ধে যে ঘৃণা, কবিতায় তিনি তা লিখেছেন। স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে বাংলার লোকায়ত জীবন—সবই তাঁর লেখায় স্পষ্ট করে ফুটিয়ে তুলেছেন। তাঁর লেখা ‘বারবারা বিডলারকে’ কবিতা পড়লে বোঝা যায়, মুক্তিযুদ্ধে নিরীহ বাঙালির ওপর কী ভয়াবহ অত্যাচার হয়েছে, কবিতায় সে কথা লিখতে লিখতে না জানি এই মানুষটি কতবার কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। ‘আমার ভীষণ জানতে ইচ্ছে করে বারবারা/তোমাদের কাগজে নিশ্চয়ই ইয়াহিয়া খাঁর ছবি ছাপা হয়/বিবেকের বোতামগুলো খুলে হৃদয় দিয়ে দেখো/ওটা একটা জল্লাদের ছবি/পনেরো লক্ষ নিরস্ত্র লোককে ঠান্ডা মাথায় সে হত্যা করেছে/মানুষের কষ্টার্জিত সভ্যতাকে সে গলা টিপে হত্যা করেছে/অদ্ভুত জাদুকরকে দেখ/বিংশ শতাব্দীকে সে কৌশলে টেনে হিঁচড়ে মধ্যযুগে নিয়ে যায়/দেশলাইয়ের বাক্সর মতো সহজে ভাঙে/গ্রন্থাগার, উপাসনালয়, ছাত্রাবাস, মানুষের সাধ্যমত ঘরবাড়ি/সাত কোটি মানুষের আকাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের ফুলকে সে বুট জুতোয় থেঁতলে দেয়।’
ঠিক একইভাবে এই কবিতায় যখন আরেক ছত্রে যাই, তখন বুকটা শীতল হয়ে আসে। হাত চলে না। কবিতার কত শক্তি, ভাষা ব্যবহারে কী মুনশিয়ানা, মাটি ও মানুষের প্রতি কতটা ভালোবাসা বহন করতেন তিনি, তা তাঁর কবিতায় বোঝা যায়—‘টু উইমেন ছবিটা দেখেছ বারবারা?
গির্জার ধর্ষিতা সোফিয়া লোরেনকে দেখে নিশ্চয়ই কেঁদেছিলে/আমি কাঁদিনি, বুকটা শুধু খাঁ খাঁ করেছিল/সোফিয়া লোরেনকে পাঠিয়ে দিয়ো বাংলাদেশে/তিরিশ হাজার রমণীর নির্মম অভিজ্ঞতা শুনে তিনি শিউরে উঠবেন/অভিধান থেকে নয় আশি লক্ষ শরণার্থীর কাছে জেনে নাও, নির্বাসনের অর্থ কী/জর্জ ওয়াশিংটনের ছবিওলা ডাকটিকেটে খোঁজ থাকবে না স্বাধীনতার/আমাদের মুক্তিযুদ্ধের কাছে এসো।’ এর প্রতিটি লাইন যেকোনো মানুষকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানিয়ে দেবে। তাঁর কবিতার শাণিত তেজ কয়েক লক্ষ বুলেটের চেয়েও শক্তিশালী। প্রতিটি কবিতার কাঠামো-বিন্যাস, ভাষার সজীবতা, উৎপ্রেক্ষা অনবদ্য। বাঙালির জন্ম জড়ুল মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে যত সেরা কবিতা লেখা হয়েছে, আসাদ চৌধুরীর সব কবিতাই সে তালিকায় পড়বে বলে বিশ্বাস করি। আরেকটি কবিতা ‘তখন সত্যি মানুষ ছিলাম’ তার কাঠামোটাই আলাদা। তিনি লিখেছেন, ‘কুকুর বেড়াল থাবা হাঁকায়/ফোঁসে সাপের ফণা/শিং কৈ মাছ রুখে দাঁড়ায় জ্বলে বালির কণা/আগুন ছিলো মুক্তি সেনার/স্বপ্ন ঢলের বন্যায়/প্রতিবাদের প্রবল ঝড়ে/কাঁপছিলো সব অন্যায়।’ মুক্তিযোদ্ধা কবি তাঁর কবিতায় পশুপাখি, মাছ, বালুর কণা সবই যে যুদ্ধে শামিল হয়েছে, সেটা বোঝাতে গিয়ে যেসব উপমা-উৎপ্রেক্ষা ব্যবহার করছেন, সেটাই ফুটে উঠেছে কবিতায়। তাঁর কবিতা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগানিয়া অনন্য সম্পদ। কবিতা যে সাহিত্যে কত বড় শক্তিশালী হাতিয়ার, তা ভালো কবিতা পড়লে বোঝা যায়। চেতনা জাগানিয়া কবিতা পড়লে বোঝা যায়। ভাষা ব্যবহারের কৌশল শক্তি কতটা, সেটা নিবিষ্ট চিত্তে বোঝা সহজ হয়। কবিতার মধ্য দিয়ে ইতিহাস-দুঃসময়ের কালপর্ব কত মোহনীয় শব্দের মাধ্যমে তুলে ধরা যায়, সেটা আসাদ চৌধুরীর কবিতায় প্রতীয়মান।
একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি ১৯৯২ সালের ১৯ জানুয়ারি শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় সংঘটিত গণহত্যার বিচারের জন্য ১০১ জন বাংলাদেশি কর্মী দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ওই সময় সম্ভবত প্রজন্ম’৭১ নামে সংগঠনটি একটা পোস্টার প্রকাশ করেছিল। ‘তোমাদের যা বলার ছিল/বলছে কি তা বাংলাদেশ?’ এ দুটো লাইন ছিল সেই পোস্টারের গায়ে লেখা। কী শক্তিশালী দুটি লাইন, এর মধ্য দিয়ে যে অস্ফুট আর্তনাদ লুকানো, তা তাঁরাই জানে, একাত্তরের পাকিস্তানি বর্বরতা যাদের সামান্যও ছুঁয়েছে। এই লাইন দুটো আর পোস্টারটি যেন চেতনার গহিনে আজও গেঁথে আছে।
পরে জেনেছি, আসাদ চৌধুরীর ‘শহীদদের প্রতি’ কবিতা থেকে লাইন দুটি নেওয়া হয়েছিল। সেই কবিতার লাইনগুলো ছিল, ‘তোমাদের যা বলার ছিল/বলছে কি তা বাংলাদেশ? শেষ কথাটি সুখের ছিল? ঘৃণার ছিল? নাকি ক্রোধের, প্রতিশোধের, কোনটা ছিল?’
বাংলার সূর্যসন্তানদের হত্যা করে একেকটি পরিবারের সদস্যদের বুকে স্বজন হারানোর দগদগে ক্ষতই শুধু ঢুকিয়ে দেওয়া হয়নি, দেশকে করা হয়েছিল মেধাশূন্য। পরিকল্পিত এই হত্যার পেছনে ছিল পাকিস্তানি জেনারেল রাও ফরমান আলী আর কার্যকর করেছে এদেশীয় দালালেরা। যাদের ফাঁসির দাবিতে জেগে উঠেছিল বাংলাদেশ। গড়ে তোলা হয়েছিল গণজাগরণ মঞ্চ। তারপরও শহীদ পরিবারগুলোর খবর কে রাখে? কেউ কি রাখে? রায়ের বাজারের একাত্তরের বধ্যভূমি দেখলে কি মনে হয় না একদম ভেতর থেকে কথাটি লিখেছেন আসাদ চৌধুরী। তাঁর আরেকটি কবিতায় উঠে এসেছে বাংলাদেশের নারীদের চিরায়ত স্বভাব। আর তাঁদের ওপর হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়া পাকিস্তানি হার্মাদদের নারকীয়তা। ‘রিপোর্ট ১৯৭১’ নামে এ কবিতায় তিনি লিখেছেন—‘প্রাচ্যের গানের মতো শোকাহত, কম্পিত, চঞ্চল/বেগবতী তটিনীর মতো স্নিগ্ধ, মনোরম/আমাদের নারীদের কথা বলি, শোনো।/এসব রহস্যময়ী রমণীরা পুরুষের কণ্ঠস্বর শুনে/বৃক্ষের আড়ালে স’রে যায়/বেড়ার ফোঁকড় দিয়ে নিজের রন্ধনে/তৃপ্ত অতিথির প্রসন্ন ভোজন দেখে শুধু মুখ টিপে হাসে/প্রথম পোয়াতী লজ্জায় অনন্ত হ’য়ে/কোঁচরে ভরেন অনুজের সংগৃহীত কাঁচা আম, পেয়ারা, চালিতা/সূর্য্যকেও পর্দা করে এ-সব রমণী/অথচ যোহরা ছিলো নির্মম শিকার/সকৃতজ্ঞ লম্পটেরা/সঙ্গীনের সুতীব্র চুম্বন গেঁথে গেছে/আমি তার সুরকার তার রক্তে স্বরলিপি লিখি/মরিয়ম, যীশুর জননী নয় অবুঝ কিশোরী/গরীবের চৌমুহনী বেথেলহেম নয়/মগরেবের নামাজের শেষে মায়ে ঝিয়ে/খোদার কালামে শান্তি খুঁজেছিলো, অস্ফুট গোলাপকলি লহুতে রঞ্জিত হ’লে/কার কী বা আসে যায়।’ আমাদের মুক্তিযুদ্ধে দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম লুণ্ঠনের কাহিনি আর কত বলা যায়? একজন কবি কতটা বেদনা নিয়ে এই ইতিহাস লিখেছেন কাব্যের ধারাকে অক্ষুণ্ন রেখে। এই ইতিহাসের কথাকার, গণযুদ্ধের জনযোদ্ধা কবি আসাদ চৌধুরীর সব কবিতাই হৃদয়ের গহিন থেকে উৎসারিত। প্রাণবান চিরতরুণ এই কবি। কবি আসাদ চৌধুরী কয়েক বছর ধরে পরিবার নিয়ে টরন্টোতে বসবাস করছিলেন। দুই ছেলে ও এক মেয়ে থাকেন অটোয়ায়। মাসখানেক আগে কবি আসাদ চৌধুরীর এনজিওগ্রাম করে দুটি ব্লকের ৯৯ ও ৮৮ শতাংশ সারানো হয়। এরপর তিনি বাসায় ছিলেন। হঠাৎ তাঁর শরীর খারাপ করলে কানাডার ওসোয়ার হাসপাতালটিতে তাঁকে ভর্তি করা হয়। ফুসফুস ও হার্ট দুটিরই খুব জটিল অবস্থা ছিল কিন্তু তারপরে? বুধবার স্থানীয় সময় দিবাগত রাত ৩টায় কানাডার টরন্টোর আসোয়া শহরের লেকরিচ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি লোকান্তরিত হন। বাংলাদেশে এ খবর আসার পরে শোকে যেন মুষড়ে ওঠে গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। তাঁর কবিতা ‘সত্য ফেরারী’র মতো বলতে ইচ্ছে করে—‘কোথায় পালালো সত্য?
দুধের বোতলে, ভাতের হাঁড়িতে! নেই তো? রেষ্টুরেন্টে, হোটেলে, সেলুনে, গ্রন্থাগারের গভীর গন্ধে,
টেলিভিশনে বা সিনেমা, বেতারে, নৌকার খোলে, সাপের ঝাঁপিতে নেই তো।’ মানুষ তাকে অতিক্রম করে তার কাজ দিয়ে। মানুষ মারা যাবে, এটাই সত্য। কিন্তু বেঁচে থাকে তার কাজের মধ্য দিয়ে। সেদিক থেকে আসাদ ভাইকে ভুলবে না কেউ। দুহাতে লিখেছেন তিনি বহুমাত্রিক লেখা। তাঁকে ভোলার নয়। কবি আসাদ চৌধুরী বেঁচে থাকবেন তাঁর অনন্য সৃষ্টির মধ্যে।
কবি আসাদ চৌধুরী নেই—তিনি লোকান্তরিত হয়েছেন। খবর পেয়েছিলাম অফিসে বসেই। সংবাদপত্র অফিসে মৃত্যুর খবরগুলো শোক হওয়ার সুযোগ পায় না। কারণ, শোক যাদের ছড়াতে হয়, তাদের শোক করার সময় কোথায়? কিন্তু আসাদ চৌধুরীর মৃত্যু আমার কাছে অত সহজ বিষয় নয়। আসাদ চৌধুরীর সঙ্গে আমি ঘুরে বেড়িয়েছি নারায়ণগঞ্জ যেতে হাকিমাবাদের পীরের খানকা শরিফ, বরদেশ্বরী কালীবাড়ি-মানসিংহ যাত্রাবাড়ীতে যাত্রা বিরতি দিয়ে যে দিঘিটা তাঁর সেনাবাহিনী দিয়ে কাটিয়ে ছিলেন, তার পাড়ে বসে ইতিহাস শুনেছি। ইতিহাসের পাঠ নিতে নিতে তাঁর ঝোলা ব্যাগের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসত ‘তবক দেওয়া পান’। একটা স্টিলের বাক্স। সেটার যে কত তলা, তা বোঝা দায়। একেক পার্ট থেকে একেক রকমের সুগন্ধি মসলা। আমি খুব পছন্দ করতাম তাঁর পান খেতে। একবার এক ঘটনা ঘটল—তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা কমিটির হরতাল। আমি শাহবাগ মোড়ে, পিকেটিং চলছে। হঠাৎ দেখি আসাদ চৌধুরী যাচ্ছেন। আমি দৌড়ে গিয়ে স্বভাবসুলভভাবে বললাম, ‘পান খাব তো।’
তিনি বললেন, ‘এখন পুলিশ তাড়া করলে?’
আমি বললাম, ‘আসাদ চৌধুরীকে পুলিশ কিছু বলবে না।’
তিনি শিশুতোষ হাসি দিয়ে ঝোলা ব্যাগ থেকে বের করে আনলেন স্টিলের হাজার দুয়ারি বাক্স। তারপর পান বানানো শুরু হতে হতে টিয়ার গ্যাস। পুলিশ এসে বলছেন, ‘আপনারা কী করছেন?’
আসাদ চৌধুরী শান্ত গলায় বললেন, ‘একটু পান দিয়েই চলে যাব।’
পান দিয়ে আমার হাত ধরে বললেন, এখন ওদিকে যাবে না। চলো পিজি মার্কেটে। আমি ওনার সঙ্গে গিয়ে আবার পিকেটিংয়ে ফিরে এলাম।
আসাদ চৌধুরীর সাধারণ জীবনযাপন দেখে মনে হতো না কত বড় মাপের মানুষ ছিলেন তিনি। উর্দু ও ফারসি ভাষা নিয়ে তাঁর আগ্রহ ছিল অসীম। তাঁর মাধ্যমেই জানতে পারি ঢাকায় উর্দু কবিদের একটি সোসাইটি আছে। তাঁদের মধ্যে অনেক ভালো কবি আছেন। মোহাম্মদপুর, পুরান ঢাকায় আমি গিয়েছি কয়েকবার। কবি আসাদ চৌধুরী ছিলেন তাঁদের আত্মীয়। কবি আসাদ চৌধুরী তাঁদের সঙ্গে উর্দুতে বাতচিত করতেন। কাঁধে ঝোলা, ঝাঁকড়া চুল। অনেক মসলা দিয়ে পান খাওয়ায় ঠোঁট থাকত লাল। আর সদা হাস্যোজ্জ্বল মুখশ্রী ছাড়া তাঁকে ভাবা যায়? চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি ঢাকা শহরে কবি, বাংলাদেশে মাটির মানুষের কবি আসাদ চৌধুরী হেঁটে যাচ্ছেন।
নিরাবেগ বোঝাপড়া নিয়ে হাঁটছেন। সেই ঢিলেঢালা রঙিন শার্ট বা পাঞ্জাবি পরা প্রেম, দ্রোহ ও প্রতিবাদের কবি আসাদ চৌধুরী হাঁটছেন, শহরজুড়ে তাঁর পদধ্বনির মুখরতা। শুদ্ধ বাংলায় দরাজ কণ্ঠে কথা বলতে বলতে হেঁটে যাচ্ছেন কবি আসাদ চৌধুরী। জীবনে কবি আসাদ চৌধুরীর পরিচয়ের অন্ত ছিল না। আধুনিক বাংলা কবিতার অন্যতম প্রধান কবি। সাহিত্যে তিনি গণমুখী, নান্দনিক ও রোমান্টিক বিন্যাস গড়েছেন। পরিচয় উঠে এসেছে প্রাজ্ঞ, আলোচক, উপস্থাপক, আবৃত্তিকার, টেলিভিশনের অনুষ্ঠানের উপস্থাপক, আরও কত কী। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অংশগ্রহণ কোনো ছোট ঘটনা নয়। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তাঁর কবিতায় যে দহন, যে প্রতিবাদ, পাকিস্তানি হায়েনাদের বিরুদ্ধে যে ঘৃণা, কবিতায় তিনি তা লিখেছেন। স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে বাংলার লোকায়ত জীবন—সবই তাঁর লেখায় স্পষ্ট করে ফুটিয়ে তুলেছেন। তাঁর লেখা ‘বারবারা বিডলারকে’ কবিতা পড়লে বোঝা যায়, মুক্তিযুদ্ধে নিরীহ বাঙালির ওপর কী ভয়াবহ অত্যাচার হয়েছে, কবিতায় সে কথা লিখতে লিখতে না জানি এই মানুষটি কতবার কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। ‘আমার ভীষণ জানতে ইচ্ছে করে বারবারা/তোমাদের কাগজে নিশ্চয়ই ইয়াহিয়া খাঁর ছবি ছাপা হয়/বিবেকের বোতামগুলো খুলে হৃদয় দিয়ে দেখো/ওটা একটা জল্লাদের ছবি/পনেরো লক্ষ নিরস্ত্র লোককে ঠান্ডা মাথায় সে হত্যা করেছে/মানুষের কষ্টার্জিত সভ্যতাকে সে গলা টিপে হত্যা করেছে/অদ্ভুত জাদুকরকে দেখ/বিংশ শতাব্দীকে সে কৌশলে টেনে হিঁচড়ে মধ্যযুগে নিয়ে যায়/দেশলাইয়ের বাক্সর মতো সহজে ভাঙে/গ্রন্থাগার, উপাসনালয়, ছাত্রাবাস, মানুষের সাধ্যমত ঘরবাড়ি/সাত কোটি মানুষের আকাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের ফুলকে সে বুট জুতোয় থেঁতলে দেয়।’
ঠিক একইভাবে এই কবিতায় যখন আরেক ছত্রে যাই, তখন বুকটা শীতল হয়ে আসে। হাত চলে না। কবিতার কত শক্তি, ভাষা ব্যবহারে কী মুনশিয়ানা, মাটি ও মানুষের প্রতি কতটা ভালোবাসা বহন করতেন তিনি, তা তাঁর কবিতায় বোঝা যায়—‘টু উইমেন ছবিটা দেখেছ বারবারা?
গির্জার ধর্ষিতা সোফিয়া লোরেনকে দেখে নিশ্চয়ই কেঁদেছিলে/আমি কাঁদিনি, বুকটা শুধু খাঁ খাঁ করেছিল/সোফিয়া লোরেনকে পাঠিয়ে দিয়ো বাংলাদেশে/তিরিশ হাজার রমণীর নির্মম অভিজ্ঞতা শুনে তিনি শিউরে উঠবেন/অভিধান থেকে নয় আশি লক্ষ শরণার্থীর কাছে জেনে নাও, নির্বাসনের অর্থ কী/জর্জ ওয়াশিংটনের ছবিওলা ডাকটিকেটে খোঁজ থাকবে না স্বাধীনতার/আমাদের মুক্তিযুদ্ধের কাছে এসো।’ এর প্রতিটি লাইন যেকোনো মানুষকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানিয়ে দেবে। তাঁর কবিতার শাণিত তেজ কয়েক লক্ষ বুলেটের চেয়েও শক্তিশালী। প্রতিটি কবিতার কাঠামো-বিন্যাস, ভাষার সজীবতা, উৎপ্রেক্ষা অনবদ্য। বাঙালির জন্ম জড়ুল মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে যত সেরা কবিতা লেখা হয়েছে, আসাদ চৌধুরীর সব কবিতাই সে তালিকায় পড়বে বলে বিশ্বাস করি। আরেকটি কবিতা ‘তখন সত্যি মানুষ ছিলাম’ তার কাঠামোটাই আলাদা। তিনি লিখেছেন, ‘কুকুর বেড়াল থাবা হাঁকায়/ফোঁসে সাপের ফণা/শিং কৈ মাছ রুখে দাঁড়ায় জ্বলে বালির কণা/আগুন ছিলো মুক্তি সেনার/স্বপ্ন ঢলের বন্যায়/প্রতিবাদের প্রবল ঝড়ে/কাঁপছিলো সব অন্যায়।’ মুক্তিযোদ্ধা কবি তাঁর কবিতায় পশুপাখি, মাছ, বালুর কণা সবই যে যুদ্ধে শামিল হয়েছে, সেটা বোঝাতে গিয়ে যেসব উপমা-উৎপ্রেক্ষা ব্যবহার করছেন, সেটাই ফুটে উঠেছে কবিতায়। তাঁর কবিতা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগানিয়া অনন্য সম্পদ। কবিতা যে সাহিত্যে কত বড় শক্তিশালী হাতিয়ার, তা ভালো কবিতা পড়লে বোঝা যায়। চেতনা জাগানিয়া কবিতা পড়লে বোঝা যায়। ভাষা ব্যবহারের কৌশল শক্তি কতটা, সেটা নিবিষ্ট চিত্তে বোঝা সহজ হয়। কবিতার মধ্য দিয়ে ইতিহাস-দুঃসময়ের কালপর্ব কত মোহনীয় শব্দের মাধ্যমে তুলে ধরা যায়, সেটা আসাদ চৌধুরীর কবিতায় প্রতীয়মান।
একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি ১৯৯২ সালের ১৯ জানুয়ারি শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় সংঘটিত গণহত্যার বিচারের জন্য ১০১ জন বাংলাদেশি কর্মী দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ওই সময় সম্ভবত প্রজন্ম’৭১ নামে সংগঠনটি একটা পোস্টার প্রকাশ করেছিল। ‘তোমাদের যা বলার ছিল/বলছে কি তা বাংলাদেশ?’ এ দুটো লাইন ছিল সেই পোস্টারের গায়ে লেখা। কী শক্তিশালী দুটি লাইন, এর মধ্য দিয়ে যে অস্ফুট আর্তনাদ লুকানো, তা তাঁরাই জানে, একাত্তরের পাকিস্তানি বর্বরতা যাদের সামান্যও ছুঁয়েছে। এই লাইন দুটো আর পোস্টারটি যেন চেতনার গহিনে আজও গেঁথে আছে।
পরে জেনেছি, আসাদ চৌধুরীর ‘শহীদদের প্রতি’ কবিতা থেকে লাইন দুটি নেওয়া হয়েছিল। সেই কবিতার লাইনগুলো ছিল, ‘তোমাদের যা বলার ছিল/বলছে কি তা বাংলাদেশ? শেষ কথাটি সুখের ছিল? ঘৃণার ছিল? নাকি ক্রোধের, প্রতিশোধের, কোনটা ছিল?’
বাংলার সূর্যসন্তানদের হত্যা করে একেকটি পরিবারের সদস্যদের বুকে স্বজন হারানোর দগদগে ক্ষতই শুধু ঢুকিয়ে দেওয়া হয়নি, দেশকে করা হয়েছিল মেধাশূন্য। পরিকল্পিত এই হত্যার পেছনে ছিল পাকিস্তানি জেনারেল রাও ফরমান আলী আর কার্যকর করেছে এদেশীয় দালালেরা। যাদের ফাঁসির দাবিতে জেগে উঠেছিল বাংলাদেশ। গড়ে তোলা হয়েছিল গণজাগরণ মঞ্চ। তারপরও শহীদ পরিবারগুলোর খবর কে রাখে? কেউ কি রাখে? রায়ের বাজারের একাত্তরের বধ্যভূমি দেখলে কি মনে হয় না একদম ভেতর থেকে কথাটি লিখেছেন আসাদ চৌধুরী। তাঁর আরেকটি কবিতায় উঠে এসেছে বাংলাদেশের নারীদের চিরায়ত স্বভাব। আর তাঁদের ওপর হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়া পাকিস্তানি হার্মাদদের নারকীয়তা। ‘রিপোর্ট ১৯৭১’ নামে এ কবিতায় তিনি লিখেছেন—‘প্রাচ্যের গানের মতো শোকাহত, কম্পিত, চঞ্চল/বেগবতী তটিনীর মতো স্নিগ্ধ, মনোরম/আমাদের নারীদের কথা বলি, শোনো।/এসব রহস্যময়ী রমণীরা পুরুষের কণ্ঠস্বর শুনে/বৃক্ষের আড়ালে স’রে যায়/বেড়ার ফোঁকড় দিয়ে নিজের রন্ধনে/তৃপ্ত অতিথির প্রসন্ন ভোজন দেখে শুধু মুখ টিপে হাসে/প্রথম পোয়াতী লজ্জায় অনন্ত হ’য়ে/কোঁচরে ভরেন অনুজের সংগৃহীত কাঁচা আম, পেয়ারা, চালিতা/সূর্য্যকেও পর্দা করে এ-সব রমণী/অথচ যোহরা ছিলো নির্মম শিকার/সকৃতজ্ঞ লম্পটেরা/সঙ্গীনের সুতীব্র চুম্বন গেঁথে গেছে/আমি তার সুরকার তার রক্তে স্বরলিপি লিখি/মরিয়ম, যীশুর জননী নয় অবুঝ কিশোরী/গরীবের চৌমুহনী বেথেলহেম নয়/মগরেবের নামাজের শেষে মায়ে ঝিয়ে/খোদার কালামে শান্তি খুঁজেছিলো, অস্ফুট গোলাপকলি লহুতে রঞ্জিত হ’লে/কার কী বা আসে যায়।’ আমাদের মুক্তিযুদ্ধে দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম লুণ্ঠনের কাহিনি আর কত বলা যায়? একজন কবি কতটা বেদনা নিয়ে এই ইতিহাস লিখেছেন কাব্যের ধারাকে অক্ষুণ্ন রেখে। এই ইতিহাসের কথাকার, গণযুদ্ধের জনযোদ্ধা কবি আসাদ চৌধুরীর সব কবিতাই হৃদয়ের গহিন থেকে উৎসারিত। প্রাণবান চিরতরুণ এই কবি। কবি আসাদ চৌধুরী কয়েক বছর ধরে পরিবার নিয়ে টরন্টোতে বসবাস করছিলেন। দুই ছেলে ও এক মেয়ে থাকেন অটোয়ায়। মাসখানেক আগে কবি আসাদ চৌধুরীর এনজিওগ্রাম করে দুটি ব্লকের ৯৯ ও ৮৮ শতাংশ সারানো হয়। এরপর তিনি বাসায় ছিলেন। হঠাৎ তাঁর শরীর খারাপ করলে কানাডার ওসোয়ার হাসপাতালটিতে তাঁকে ভর্তি করা হয়। ফুসফুস ও হার্ট দুটিরই খুব জটিল অবস্থা ছিল কিন্তু তারপরে? বুধবার স্থানীয় সময় দিবাগত রাত ৩টায় কানাডার টরন্টোর আসোয়া শহরের লেকরিচ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি লোকান্তরিত হন। বাংলাদেশে এ খবর আসার পরে শোকে যেন মুষড়ে ওঠে গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। তাঁর কবিতা ‘সত্য ফেরারী’র মতো বলতে ইচ্ছে করে—‘কোথায় পালালো সত্য?
দুধের বোতলে, ভাতের হাঁড়িতে! নেই তো? রেষ্টুরেন্টে, হোটেলে, সেলুনে, গ্রন্থাগারের গভীর গন্ধে,
টেলিভিশনে বা সিনেমা, বেতারে, নৌকার খোলে, সাপের ঝাঁপিতে নেই তো।’ মানুষ তাকে অতিক্রম করে তার কাজ দিয়ে। মানুষ মারা যাবে, এটাই সত্য। কিন্তু বেঁচে থাকে তার কাজের মধ্য দিয়ে। সেদিক থেকে আসাদ ভাইকে ভুলবে না কেউ। দুহাতে লিখেছেন তিনি বহুমাত্রিক লেখা। তাঁকে ভোলার নয়। কবি আসাদ চৌধুরী বেঁচে থাকবেন তাঁর অনন্য সৃষ্টির মধ্যে।
চারুশিল্প হচ্ছে মানুষের অনুভূতি প্রকাশের মাধ্যম। একটি ছবি একটি বিপ্লবের উন্মেষ ঘটাতে পারে। ছবি শুধু বিনোদনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি বিপ্লবের বার্তাও নিয়ে আসে।
৬ দিন আগেআপনি যে বয়সেরই হোন না কেন, এই বই পড়লে তারুণ্যশক্তিকে অনুভব করবেন, অনুপ্রাণিত হবেন। নতুন শুরুর একটা তাগিদ পাবেন। এই তরুণদের প্রত্যেকের মতো আপনিও বলে উঠবেন—সব সম্ভব! এই বইয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে জন্ম নেওয়া অবহেলিত অবস্থা থেকে সাফল্যের শীর্ষে যাওয়ার পথচলার গল্প উঠে এসেছে। প্রায় চার শ পৃষ্ঠার বইটির দাম
১৩ দিন আগেপ্রকাশনা সংস্থা ‘ঐতিহ্য’ তার দুই যুগের পথচলা (২০০০-২০২৪) স্মরণীয় করে রাখতে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে দশ দিনব্যাপী ‘ঐতিহ্য বই উৎসব ২০২৪’ আয়োজন করেছে। আজ ২ নভেম্বর শনিবার বেলা ১১টায় যৌথভাবে উৎসব উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, বিশিষ্ট লেখক-গবেষক শারমিন আহমদ এবং তরুণ
১৩ দিন আগেদ্য ভেজিটেরিয়ানের পর হান কাঙের পরের উপন্যাস ছিল ‘দ্য উইন্ড ব্লোজ, গো’। এই উপন্যাস লেখার সময়ই ঘটে বিপত্তি! হান অনুভব করেন তিনি আর লিখতে পারছেন না। গত বছর নিজের পঞ্চম উপন্যাস ‘গ্রিক লেসন’ ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত হলে স্পেনের এল-পাইস পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেই অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছিলেন তিনি।
১০ অক্টোবর ২০২৪