অনলাইন ডেস্ক
তেল উৎপাদনে শীর্ষস্থানে থাকা দেশগুলো এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসতে যাচ্ছে আগামীকাল বুধবার। এই বৈঠকেই নির্ধারিত হতে পারে আগামী সেপ্টেম্বর থেকে এসব দেশ জ্বালানি তেলের উৎপাদন কতটা বাড়াবে। জ্বালানি সংকটে থাকা বিশ্ব অধীর আগ্রহে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির পর থেকেই বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেল ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলারেরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। ফলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে গেছে। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সৌদি আরবে গিয়ে দেশটির নেতৃবৃন্দকে তেল উৎপাদন বাড়ানোর অনুরোধ করেছিলেন। সে হিসেবে আসন্ন এ সভায় জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে আলোচনার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
এই বৈঠক কেন গুরুত্বপূর্ণ
হোয়াইট হাউসের আশা—তেল রপ্তানিকারী ১৩ দেশের জোট ওপেক এই বৈঠকে তেল উৎপাদন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তবে বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নয়। ১৯৬০ সালে বিশ্বের তেলের সরবরাহ ও বাজার নিয়ন্ত্রণের উদ্দ্যেশ্য নিয়েই ওপেক গঠিত হয়। সৌদি আরব এককভাবে এই জোটের সবচেয়ে বড় উৎপাদনকারী।
সৌদি সফরের সময় বাইডেন দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক শেষে বাইডেন বলেছিলেন, তিনি আশা করছেন—সৌদি আরব তেলের উৎপাদন বাড়াবে। তবে সৌদি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন—তাঁরা এখনো উৎপাদন বাড়ানোর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেননি। ওপেক প্লাস জোটের সঙ্গে পরামর্শ করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জ্বালানি তেল উৎপাদন ও রপ্তানিকারক ২৩ দেশের জোট ওপেক প্লাসের সদস্য দেশ রাশিয়াও। জোটের সদস্যরা প্রতি মাসে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় মিলিত হয়—বিশ্ব বাজারে কী পরিমাণ তেল উৎপাদন করা হবে, সেই সিদ্ধান্ত নিতে। ফলে, ওপেক এবং ওপেক প্লাসে সৌদি আরব ও রাশিয়ার অংশগ্রহণ থাকায় বুধবারের বৈঠকটি স্বাভাবিকভাবেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে যাচ্ছে।
তেলের দাম কমবে কি
২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ওপেক প্লাস বেশ কয়েকবার তেলের উৎপাদন কমিয়েছিল। করোনা মহামারির কারণে বিশ্বজুড়ে জ্বালানির চাহিদা কমায় ওপেক প্লাস এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে ২০২১ সালে আবারও তেলের উৎপাদন বাড়ানো শুরু হয়। জোটের সর্বশেষ বৈঠকে চলতি আগস্ট মাস থেকে তেলের উৎপাদন কিঞ্চিৎ বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তবে কেবল কাগজে-কলমেই সিদ্ধান্ত নিলে হচ্ছে না। বাস্তবতা হলো—ওপেক প্লাসের সদস্য দেশ অ্যাঙ্গোলা, নাইজেরিয়া ও মালয়েশিয়া এখনো তাদের মাসিক উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে। একইভাবে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার উৎপাদনও যথেষ্ট কমেছে। অবশ্য মস্কো চীন-ভারতসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশগুলোতে তেল বিক্রি বৃদ্ধি করছে। তবে সেটা যথেষ্ট নয়।
সব মিলিয়ে কেবল সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতই বাড়তি তেল জোগানোর সক্ষমতা রাখে। চলতি আগস্টে সৌদি প্রতিদিন ১১ মিলিয়ন ব্যারেল তেল উত্তোলনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। জ্বালানি বিশ্লেষকেরা বলছেন, সৌদি আরব এরই মধ্যে সর্বোচ্চ মাত্রায় তেল উৎপাদন করছে। ফলে দেশটি অনুরোধে ঢেঁকি গিললেও খুব বেশি উৎপাদন বাড়াতে পারবে বলে মনে হয় না।
এই দুই দেশ এগিয়ে না এলে আগামী মাসগুলোতে জ্বালানি সংকট আরও তীব্র হতে পারে। ফলে বিশ্বজুড়েই অর্থনৈতিক সংকট হ্রাসে সুদহার বৃদ্ধি এবং ইউক্রেন সংকটের কারণে ইউরোপের দেশগুলোতে মহামন্দার ঝুঁকি আরও বাড়তে পারে। এর সরাসরি ফলাফল হিসেবে তেলের চাহিদা আবারও কমে যেতে পারে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা—এসব শর্তের কারণে ওপেক এবং ওপেক প্লাসকে উৎপাদন বাড়াতে অনাগ্রহী করে তুলতে পারে।
ওয়াশিংটন ডিসির মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো কারেন ইয়াং বলেছেন, ‘সৌদি আরব ও ওপেক প্লাসের জন্য উদ্বেগের বিষয় হলো—সামনে কী হতে যাচ্ছে, তা অজানা। ছয় মাস বা এক বছর পর তেলের বাজার কোথায় থাকবে, তা কেউ জানে না। এর মানে হলো, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত উদ্বৃত্ত তেল বাজারে ছাড়ার ব্যাপারে খুব সতর্কতা ও বিচক্ষণতার সঙ্গেই সিদ্ধান্ত নেবে।’
ইয়াং কারেন আরও বলেন, ‘দেশ দুটো এমন কোনো পরিস্থিতিতে থাকতে চায় না, যেখানে তারা তাদের আপাত বাড়তি কিন্তু সীমিত সক্ষমতা ব্যবহার করে জ্বালানি উৎপাদন বাড়িয়ে ভবিষ্যতে হঠাৎ জ্বালানি চাহিদা বেড়ে বা কমে গেলে বিশ্ব বাজারের সঙ্গে তাল মেলাতে পারবে না।’
ইউক্রেন সংকট শুরুর আগে রাশিয়া বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ তেল উৎপাদনকারী দেশ ছিল। দেশটি বিশ্বের তেল সরবরাহের ৮ থেকে ১০ শতাংশ একাই সরবরাহ করত। বাজার বিশ্লেষকদের ধারণা, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চান বিশ্ব বাজারে তেলের এই উচ্চমূল্য অব্যাহত থাক। যাতে রাশিয়া পশ্চিমা অবরোধ কাটিয়ে ইউক্রেন যুদ্ধের ব্যয় সংকুলানে সমর্থ হন। আর সৌদি আরবের কাছেও ওপেক প্লাস জোটের ঐক্যই সর্বোচ্চ প্রাধান্য পাবে। দেশটি কোনোভাবেই এমন কোনো সিদ্ধান্ত নিতে চাইবে না, যার ফলে জোটের ঐক্যে ফাটল ধরে।
তেলের দামের এখন কী হবে
এত সব শর্ত পেরিয়ে বিশ্বের জ্বালানি বাজারের কী হবে—এই প্রশ্নই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ওপেক নিজেই পূর্বাভাস দিয়েছে, চলতি বছরের তুলনায় ২০২৩ সালে তেলের দাম বাড়বে ধীর গতিতে হলেও। তবে দাম কতটা বাড়বে, তা আংশিকভাবে নির্ভর করবে চীনের করোনা পরিস্থিতি কোনদিকে মোড় নেয়, তার ওপর।
তবে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইইএ) এবং ইউএস এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের অনুমান, বিশ্বের একাধিক দেশে মুদ্রাস্ফীতির ক্রমবর্ধমান আশঙ্কা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দুর্বল হওয়ার পরও জ্বালানি তেলের চাহিদা জোরালোভাবে বাড়তে থাকবে। ওয়াশিংটনের সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের সিনিয়র ফেলো বেন কাহিলের বক্তব্য, ‘বাজারে প্রচুর অস্থিরতা থাকলেও তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১০০ ডলারের নিচে নামবে—এমনটা কেউই আশা করে না।’
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে গ্যাসোলিনের দাম বিগত ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। সংকট মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র গত এপ্রিল থেকে দেশটির কৌশলগত পেট্রোলিয়াম রিজার্ভ (এসপিআর) থেকে প্রতিদিন প্রায় ১ মিলিয়ন ব্যারেল বাজারে ছাড়ছে। যদিও বেন কাহিল সতর্ক করে বলেছিলেন, একবার সুসময় শেষ হয়ে গেলে নিয়মিত সরবরাহ আরও কঠিন হয়ে যাবে। ফলে দাম বাড়তে থাকবে।
বেন কাহিল বলেছেন, ‘উৎপাদন বাড়ানোর জন্য আমরা এখনো বড় কোনো বিনিয়োগের সম্ভাবনা দেখছি না। তাই চাহিদা বাড়লেও বাজারের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকবে না।’
ফলে সৌদি আরব ও আরব আমিরাত তুলনামূলক কিছু অতিরিক্ত সক্ষমতা রাখলেও দেশ দুটো উৎপাদন বাড়াবে কিনা এবং বাড়ালেও কী পরিমাণে বাড়াবে, তা নির্ভর করবে অনেকগুলো যদি-কিন্তুর ওপর। তাই, খুব শিগগিরই জ্বালানি সংকট কাটছে এই আশাও করা যাচ্ছে না।
তেল উৎপাদনে শীর্ষস্থানে থাকা দেশগুলো এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসতে যাচ্ছে আগামীকাল বুধবার। এই বৈঠকেই নির্ধারিত হতে পারে আগামী সেপ্টেম্বর থেকে এসব দেশ জ্বালানি তেলের উৎপাদন কতটা বাড়াবে। জ্বালানি সংকটে থাকা বিশ্ব অধীর আগ্রহে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির পর থেকেই বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেল ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলারেরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। ফলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে গেছে। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সৌদি আরবে গিয়ে দেশটির নেতৃবৃন্দকে তেল উৎপাদন বাড়ানোর অনুরোধ করেছিলেন। সে হিসেবে আসন্ন এ সভায় জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে আলোচনার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
এই বৈঠক কেন গুরুত্বপূর্ণ
হোয়াইট হাউসের আশা—তেল রপ্তানিকারী ১৩ দেশের জোট ওপেক এই বৈঠকে তেল উৎপাদন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তবে বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নয়। ১৯৬০ সালে বিশ্বের তেলের সরবরাহ ও বাজার নিয়ন্ত্রণের উদ্দ্যেশ্য নিয়েই ওপেক গঠিত হয়। সৌদি আরব এককভাবে এই জোটের সবচেয়ে বড় উৎপাদনকারী।
সৌদি সফরের সময় বাইডেন দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক শেষে বাইডেন বলেছিলেন, তিনি আশা করছেন—সৌদি আরব তেলের উৎপাদন বাড়াবে। তবে সৌদি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন—তাঁরা এখনো উৎপাদন বাড়ানোর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেননি। ওপেক প্লাস জোটের সঙ্গে পরামর্শ করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জ্বালানি তেল উৎপাদন ও রপ্তানিকারক ২৩ দেশের জোট ওপেক প্লাসের সদস্য দেশ রাশিয়াও। জোটের সদস্যরা প্রতি মাসে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় মিলিত হয়—বিশ্ব বাজারে কী পরিমাণ তেল উৎপাদন করা হবে, সেই সিদ্ধান্ত নিতে। ফলে, ওপেক এবং ওপেক প্লাসে সৌদি আরব ও রাশিয়ার অংশগ্রহণ থাকায় বুধবারের বৈঠকটি স্বাভাবিকভাবেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে যাচ্ছে।
তেলের দাম কমবে কি
২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ওপেক প্লাস বেশ কয়েকবার তেলের উৎপাদন কমিয়েছিল। করোনা মহামারির কারণে বিশ্বজুড়ে জ্বালানির চাহিদা কমায় ওপেক প্লাস এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে ২০২১ সালে আবারও তেলের উৎপাদন বাড়ানো শুরু হয়। জোটের সর্বশেষ বৈঠকে চলতি আগস্ট মাস থেকে তেলের উৎপাদন কিঞ্চিৎ বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তবে কেবল কাগজে-কলমেই সিদ্ধান্ত নিলে হচ্ছে না। বাস্তবতা হলো—ওপেক প্লাসের সদস্য দেশ অ্যাঙ্গোলা, নাইজেরিয়া ও মালয়েশিয়া এখনো তাদের মাসিক উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে। একইভাবে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার উৎপাদনও যথেষ্ট কমেছে। অবশ্য মস্কো চীন-ভারতসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশগুলোতে তেল বিক্রি বৃদ্ধি করছে। তবে সেটা যথেষ্ট নয়।
সব মিলিয়ে কেবল সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতই বাড়তি তেল জোগানোর সক্ষমতা রাখে। চলতি আগস্টে সৌদি প্রতিদিন ১১ মিলিয়ন ব্যারেল তেল উত্তোলনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। জ্বালানি বিশ্লেষকেরা বলছেন, সৌদি আরব এরই মধ্যে সর্বোচ্চ মাত্রায় তেল উৎপাদন করছে। ফলে দেশটি অনুরোধে ঢেঁকি গিললেও খুব বেশি উৎপাদন বাড়াতে পারবে বলে মনে হয় না।
এই দুই দেশ এগিয়ে না এলে আগামী মাসগুলোতে জ্বালানি সংকট আরও তীব্র হতে পারে। ফলে বিশ্বজুড়েই অর্থনৈতিক সংকট হ্রাসে সুদহার বৃদ্ধি এবং ইউক্রেন সংকটের কারণে ইউরোপের দেশগুলোতে মহামন্দার ঝুঁকি আরও বাড়তে পারে। এর সরাসরি ফলাফল হিসেবে তেলের চাহিদা আবারও কমে যেতে পারে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা—এসব শর্তের কারণে ওপেক এবং ওপেক প্লাসকে উৎপাদন বাড়াতে অনাগ্রহী করে তুলতে পারে।
ওয়াশিংটন ডিসির মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো কারেন ইয়াং বলেছেন, ‘সৌদি আরব ও ওপেক প্লাসের জন্য উদ্বেগের বিষয় হলো—সামনে কী হতে যাচ্ছে, তা অজানা। ছয় মাস বা এক বছর পর তেলের বাজার কোথায় থাকবে, তা কেউ জানে না। এর মানে হলো, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত উদ্বৃত্ত তেল বাজারে ছাড়ার ব্যাপারে খুব সতর্কতা ও বিচক্ষণতার সঙ্গেই সিদ্ধান্ত নেবে।’
ইয়াং কারেন আরও বলেন, ‘দেশ দুটো এমন কোনো পরিস্থিতিতে থাকতে চায় না, যেখানে তারা তাদের আপাত বাড়তি কিন্তু সীমিত সক্ষমতা ব্যবহার করে জ্বালানি উৎপাদন বাড়িয়ে ভবিষ্যতে হঠাৎ জ্বালানি চাহিদা বেড়ে বা কমে গেলে বিশ্ব বাজারের সঙ্গে তাল মেলাতে পারবে না।’
ইউক্রেন সংকট শুরুর আগে রাশিয়া বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ তেল উৎপাদনকারী দেশ ছিল। দেশটি বিশ্বের তেল সরবরাহের ৮ থেকে ১০ শতাংশ একাই সরবরাহ করত। বাজার বিশ্লেষকদের ধারণা, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চান বিশ্ব বাজারে তেলের এই উচ্চমূল্য অব্যাহত থাক। যাতে রাশিয়া পশ্চিমা অবরোধ কাটিয়ে ইউক্রেন যুদ্ধের ব্যয় সংকুলানে সমর্থ হন। আর সৌদি আরবের কাছেও ওপেক প্লাস জোটের ঐক্যই সর্বোচ্চ প্রাধান্য পাবে। দেশটি কোনোভাবেই এমন কোনো সিদ্ধান্ত নিতে চাইবে না, যার ফলে জোটের ঐক্যে ফাটল ধরে।
তেলের দামের এখন কী হবে
এত সব শর্ত পেরিয়ে বিশ্বের জ্বালানি বাজারের কী হবে—এই প্রশ্নই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ওপেক নিজেই পূর্বাভাস দিয়েছে, চলতি বছরের তুলনায় ২০২৩ সালে তেলের দাম বাড়বে ধীর গতিতে হলেও। তবে দাম কতটা বাড়বে, তা আংশিকভাবে নির্ভর করবে চীনের করোনা পরিস্থিতি কোনদিকে মোড় নেয়, তার ওপর।
তবে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইইএ) এবং ইউএস এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের অনুমান, বিশ্বের একাধিক দেশে মুদ্রাস্ফীতির ক্রমবর্ধমান আশঙ্কা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দুর্বল হওয়ার পরও জ্বালানি তেলের চাহিদা জোরালোভাবে বাড়তে থাকবে। ওয়াশিংটনের সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের সিনিয়র ফেলো বেন কাহিলের বক্তব্য, ‘বাজারে প্রচুর অস্থিরতা থাকলেও তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১০০ ডলারের নিচে নামবে—এমনটা কেউই আশা করে না।’
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে গ্যাসোলিনের দাম বিগত ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। সংকট মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র গত এপ্রিল থেকে দেশটির কৌশলগত পেট্রোলিয়াম রিজার্ভ (এসপিআর) থেকে প্রতিদিন প্রায় ১ মিলিয়ন ব্যারেল বাজারে ছাড়ছে। যদিও বেন কাহিল সতর্ক করে বলেছিলেন, একবার সুসময় শেষ হয়ে গেলে নিয়মিত সরবরাহ আরও কঠিন হয়ে যাবে। ফলে দাম বাড়তে থাকবে।
বেন কাহিল বলেছেন, ‘উৎপাদন বাড়ানোর জন্য আমরা এখনো বড় কোনো বিনিয়োগের সম্ভাবনা দেখছি না। তাই চাহিদা বাড়লেও বাজারের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকবে না।’
ফলে সৌদি আরব ও আরব আমিরাত তুলনামূলক কিছু অতিরিক্ত সক্ষমতা রাখলেও দেশ দুটো উৎপাদন বাড়াবে কিনা এবং বাড়ালেও কী পরিমাণে বাড়াবে, তা নির্ভর করবে অনেকগুলো যদি-কিন্তুর ওপর। তাই, খুব শিগগিরই জ্বালানি সংকট কাটছে এই আশাও করা যাচ্ছে না।
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গর্ভমেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গ
২ দিন আগেপরিশেষে বলা যায়, হাসিনার চীনা ধাঁচের স্বৈরশাসক শাসিত রাষ্ট্র গড়ে তোলার প্রয়াস ব্যর্থ হয় একাধিক কারণে। তাঁর বৈষম্যমূলক এবং এলিটপন্থী বাঙালি-আওয়ামী আদর্শ জনসাধারণ গ্রহণ করেনি, যা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির গণমুখী আদর্শের বিপরীত। ২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক মন্দা তাঁর শাসনকে দুর্বল করে দেয়, পাশাপাশি
৬ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় মোটামুটি সারা বিশ্বকেই নাড়িয়ে দিয়েছে। বাদ যায়নি তাঁর প্রতিবেশী দেশগুলো। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের এই জয়ের বড় প্রভাব পড়বে প্রতিবেশী দেশগুলোয়।
৮ দিন আগেমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পর বিশ্বের অনেক অঞ্চলে নতুন উদ্বেগ ও প্রত্যাশার সৃষ্টি হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সতর্কভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, ইউক্রেন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, আর ইসরায়েল অনেকটা খুশিতে উদ্বেলিত। তবে বিশেষ নজরে আছে পারস্য উপসাগরীয় তেলসমৃদ্ধ দেশগুলো।
৯ দিন আগে