অনলাইন ডেস্ক
ইয়াহিয়া সিনওয়ার, গাজায় হামাসের শীর্ষ নেতা। যাকে গত বছরে ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার অন্যতম স্থপতি বলা হয়। সেই হামলার পর হামাস ধরেই নিয়েছিল যে, ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে ইসরায়েল ছাড়বে না। কিন্তু যুদ্ধের সাত মাস শেষে ইসরায়েল গাজাকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিলেও সিনওয়ারসহ হামাসের সব শীর্ষ নেতাই বহাল তবিয়তে আছেন। এটি গাজা অভিযানে ইসরায়েলের ব্যর্থতাই তুলে ধরছে। আর সিনওয়ার সেই ব্যর্থতার জলজ্যান্ত প্রতীক হয়ে উঠেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরও বলছে, গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েল যে কৌশল অনুসরণ করছে, তাতে চূড়ান্ত বিজয় পাওয়া সম্ভব নয়। হামাসের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই সন্দেহের কথা জানিয়ে আসছে।
ইসরায়েলি নীতিনির্ধারকেরা সিনওয়ারকে হত্যা করাসহ হামাসকে নির্মূল করার অঙ্গীকার করলেও সেই আশা পূরণ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র বলেছে, ‘ইসরায়েলিরা তাঁকে হত্যার প্রতিজ্ঞা করলেও তাঁর সঙ্গেই (যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি–বন্দী বিনিময় নিয়ে) দর–কষাকষি করতে বাধ্য হয়েছে।’
বিগত সাত মাসের যুদ্ধ–বাস্তবতায় সিনওয়ার কেবল ইস্পাতদৃঢ় মনোবলের নেতাই নন, একজন কৌশলী আলোচক হিসেবেও আবির্ভূত হয়েছেন। তিনি একই সঙ্গে আলোচনার টেবিল সামলেছেন এবং গাজায় ইসরায়েলি বিজয়কে ঠেকিয়ে দিয়েছেন। সূত্রটি এ বিষয়ে বলেছে, ‘হামাস, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলি সূত্রগুলো বলছে, ইসরায়েলিরা এখনো আলোচনার টেবিলে আছে’। যা মূলত সিনওয়ারেরই অবদান।
হামাস–ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি আলোচনার সঙ্গে জড়িত একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, যদিও কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতিসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু এর মূল চাবিকাঠি সিনওয়ারের হাতে। এমনকি কাতারে থাকা হামাসের শীর্ষ নেতাদেরও এ বিষয়ে কিছু করার নেই। সূত্রগুলো বলছে, হামাস নেতারা এই আলোচনার ক্ষেত্রে যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে সিনওয়ারের অনুমতি বা সম্মতি তালাশ করছেন।
হামাস নেতারা বলছেন, দলের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে সিনওয়ারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত নয় এবং টেকনিক্যালি সিনওয়ার হামাসের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষও নন। কিন্তু গাজায় হামাসের ওপর তাঁর নিয়ন্ত্রণ ও দৃঢ় ব্যক্তিত্ব তাঁকে গোষ্ঠীটির ভেতরে এক অনন্য–অসাধারণ ভাবমূর্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। ফলে তাঁকে উপেক্ষা করার জো নেই। এই বিষয়টি হামাসের শত্রু–মিত্র নির্বিশেষে স্বীকার করে।
হামাস সদস্য, রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং সিনওয়ারের বন্ধু সালাহ–আল–দ্বীন আল–আওদা বলেন, ‘সিনওয়ারের সঙ্গে পরামর্শ না করে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। তিনি সাধারণ কোনো নেতা নন। তিনি শক্তিশালী ব্যক্তিত্ব এবং ঘটনার স্থপতি। তিনি কোনো সাধারণ ব্যবস্থাপক বা পরিচালক নন, তিনি একজন নেতা।’
উল্লেখ্য, আল–আওদা এবং সিনওয়ার ১৯৯০ থেকে ২০০০–এর দশক পর্যন্ত একসঙ্গে ইসরায়েলি কারাগারে ছিলেন। সে সময় তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের মতে, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি অভিযান শুরুর পর থেকে সিনওয়ারের তরফ থেকে কোনো মন্তব্য সে অর্থে শোনা যায়নি। কিন্তু হামাসের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের চেয়ে বয়সে ছোট হয়েও সিনওয়ার গত বছরের নভেম্বরে সাময়িক যুদ্ধবিরতির পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।
যুদ্ধবিরতি আলোচনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আরব ও পশ্চিমা কর্মকর্তা এবং বিশ্লেষকেরা বলছেন, অনেক সময় সিনওয়ারের অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকার কারণে যুদ্ধবিরতি আলোচনার প্রক্রিয়া অনেক ধীর গতির হয়ে গিয়েছিল। ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে গাজার যোগাযোগ অবকাঠামো পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় সিনওয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করা কঠিন হয়ে পড়ে। কখনো কখনো তাঁর কাছে বার্তা পৌঁছানোর জন্য একদিন এবং প্রতিক্রিয়া পাওয়ার জন্য আরও একদিন লেগে যেত।
ইসরায়েলি ও মার্কিন কর্মকর্তাদের মতে, সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি আলোচনা চলার সময়ে সিনওয়ার একজন দক্ষ আলোচক ও রাজনৈতিক খেলোয়াড় হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। যিনি ইসরায়েলি সমাজের মনস্তত্ত্ব বুঝতে সক্ষম এবং সেই অনুসারে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে পারঙ্গম। ইসরায়েলি ও মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বিগত কয়েক মাস সিনওয়ারের উদ্দেশ্য সম্পর্কে ধারণা পাওয়ার চেষ্টা করেছেন। ইসরায়েলি ও মার্কিন বিশ্লেষকদের বিশ্বাস, সিনওয়ারের মূল উদ্দেশ্য হলো—ইসরায়েলকে দুর্বল করে প্রতিশোধ নেওয়া। ফিলিস্তিনি জনগণের কল্যাণ বা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা তাঁর কাছে গৌণ বিষয়।
ইয়াহিয়া সিনওয়ার ১৯৬২ সালে গাজায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পরিবার উচ্ছেদের শিকার হয়ে গাজায় স্থানান্তরিত হয়। তাঁদের মূল ভিটেমাটি এখন ইসরায়েলের দখলে। ১৯৮০–এর দশকে সিনওয়ার হামাসে যোগ দেন। পরে ধর্মত্যাগী ও ইসরায়েলের সহযোগীদের হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তাঁকে কারাদণ্ড দেয় ইসরায়েলি আদালত। প্রায় দুই দশক কারাগারে থাকার পর সিনওয়ার ২০১১ সালে মুক্তি পান। মূলত হামাসের হাতে বন্দী ইসরায়েলি সেনাদের মুক্তির বিনিময়ে সিনওয়ার মুক্তি পান। ২০১৭ সালে সিনওয়ার হামাসের গাজা প্রধান নির্বাচিত হন।
ইসরায়েলি কর্মকর্তা ও সহবন্দীরা বলছেন, ইসরায়েলি কারাগারে বন্দী থাকার সময় সিনওয়ার হিব্রু শিখেছিলেন এবং ইসরায়েলি সংস্কৃতি ও সমাজ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পাওয়া চেষ্টা করেছিলেন। ইসরায়েলি ও মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, সিনওয়ার এখন ইসরায়েলি সমাজে বিভাজনের বীজ বপন করতে ও দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ওপর চাপ বাড়াতে সেই বোঝাপড়া ব্যবহার করছেন। তাঁদের বিশ্বাস, যুদ্ধবিরতি আলোচনার গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে নেতানিয়াহুর প্রতি জনগণের ক্ষোভ উসকে দিতেই সিনওয়ারের নির্দেশে ইসরায়েলি জিম্মিদের ভিডিও প্রকাশ করেছিলেন।
অনেক ইসরায়েলি চান, যেকোনো মূল্যে বাকি জিম্মিদের মুক্ত করতে, এমনকি হামাসের দাবি অনুসারে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির বাস্তবায়ন করে হলেও। কিন্তু নেতানিয়াহু যুদ্ধ শেষ করতে নারাজ, মূলত জোট সরকারের কট্টর ডানপন্থী অংশীদারদের চাপের কারণে তাঁর এই অবস্থান। এই অবস্থায় বিশ্লেষকেরা বলছেন, নেতানিয়াহুকে যদি যুদ্ধবিরতির বিষয়টি ঝুলিয়ে দেওয়ার জন্য দায়ী করা হয় তবে একই অভিযোগের আঙুল উঠবে তাঁর প্রতিপক্ষ সিনওয়ারের বিরুদ্ধেও।
ইসরায়েলি ও মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের মতে, সিনওয়ার চান গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন আরও প্রলম্বিত করতে। যাতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইসরায়েলের যে ভাবমূর্তি আছে তা ধসে পড়ে এবং দেশটির প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয়। এ কারণেই হয়তো, রাফাহে ইসরায়েলের তীব্র অভিযানের মুখেও গত রোববার হামাস ইসরায়েলের অভ্যন্তরে বিপুল পরিমাণ রকেট হামলা চালিয়েছে। যে হামলায় চার ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে।
এটি যদি সত্যিই হামাসের যুদ্ধকৌশল হয়ে থাকে তবে সম্ভবত তা কাজে দিয়েছে। গত সপ্তাহে ইসরায়েল রাফাহে অভিযান শুরুর পর বাইডেন প্রশাসন দেশটিতে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। বাইডেন প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারাও কঠোর ভাষায় সমালোচনা শুরু করেছেন। বিশ্লেষকেরা বলছেন, হামাস গাজায় ফিলিস্তিনিদের প্রাণহানি ও দুর্দশা থেকে ফায়দা লাভের চেষ্টা করছে। তবে হামাসের দাবি, তাদের কিংবা সিনওয়ার কারওরই এ ধরনের কোনো উদ্দেশ্য নেই।
হামাস নেতা আহমেদ ইউসেফ বলেন, ‘হামাসের কৌশল হলো—এখনই যুদ্ধ বন্ধ করা এবং ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর চলমান গণহত্যা ও হত্যাকাণ্ড বন্ধ করা।’ তবে মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, সিনওয়ার গাজার বাইরে থাকা হামাসের নেতা–কর্মীদের প্রতি বিরক্তি প্রকাশ করেছেন একাধিকবার। মূলত, গাজায় হামাসের কার্যক্রম এবং গাজার বাইরে থাকা হামাস নেতাদের সে বিষয়ে অবগত না থাকার বিষয়টি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে এমন হয়েছে।
যুদ্ধবিরতি আলোচনার সঙ্গে জড়িত এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, আমাদের অনুমান, সিনওয়ার তাঁর ভাই ও হামাসের সশস্ত্র শাখার অন্যতম শীর্ষ কমান্ডার মোহাম্মদের সঙ্গে পরামর্শ করেই গাজায় কার্যক্রম চালাচ্ছেন এবং এ কারণে গাজার বাইরে অবস্থান করা হামাসের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে মতবিরোধ তৈরি হয়েছে তাঁর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই মার্কিন কর্মকর্তা আরও জানান, যেখানে হামাসের রাজনৈতিক নেতৃত্ব কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দিতেও প্রস্তুত ছিলেন, সেখানে সিনওয়ার এ বিষয়ে খুব একটা আগ্রহ দেখাননি। কারণ, তিনি জানতেন যে, যুদ্ধ শেষ হোক বা না হোক তাঁকে হত্যা করা হতে পারে। মার্কিন কর্মকর্তার মতে, সিনওয়ারের এই আশঙ্কা ঠিকই আছে। কারণ, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও ইসরায়েল সিনওয়ারের পিছু ছাড়বে না।
যদিও হামাস নেতারা একটি ঐক্যবদ্ধ চিত্রই বহির্বিশ্বের সামনে তুলে ধরছেন। তাঁরা সিদ্ধান্ত গ্রহণে সিনওয়ারের ব্যক্তিগত ভূমিকাকে খাটো করে নির্বাচিত হামাস নেতৃত্বের সম্মিলিত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আন্দোলনের গতিপথ নির্ধারণের প্রতি জোর আরোপ করেন। কেউ কেউ বলেন, এই যুদ্ধে সিনওয়ার যে বড় ভূমিকা পালন করেছেন তার বেশির ভাগই গাজায় হামাসের শীর্ষ নেতা হিসেবে তাঁর অবস্থানের কারণে।
কাতারে অবস্থানরত হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা মুসা আবু মারজুকের মতে, ‘সিনওয়ারের বক্তব্য চূড়ান্ত না হলেও গাজার বিষয়ে তাঁর একটি বড় ভূমিকা আছে।’
তিনি বলেন, ‘সিনওয়ারের মতামত খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তিনি ভূখণ্ডটিতে আছেন এবং ভেতর থেকে হামাসের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তবে সিদ্ধান্তের বিষয়ে ইসমাইল হানিয়ের বক্তব্যই চূড়ান্ত।’
তবে সিনওয়ারের চারিত্রিক দৃঢ়তায় একটা অস্বাভাবিক কিছু আছে বলে মনে করেন তাঁর বন্ধু আল–আওদা। তিনি বলেন, সিনওয়ারের জায়গায় হামাসের অন্য কোনো নেতা হলে হয়তো ৭ অক্টোবরের মতো ঘটনা না ঘটিয়ে গাজা শাসন সংক্রান্ত বিষয়ে মনোনিবেশ করতেন। তিনি বলেন, ‘তাঁর জায়গায় অন্য কেউ হলে হয়তো বিষয়গুলো আরও শান্তভাবে সংঘটিত হতো।’
এর আগে, গত ফেব্রুয়ারিতে ইসরায়েলি বাহিনী গাজার একটি টানেলের নিরাপত্তা ক্যামেরার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছিল যেখানে দেখা যায়, এক ব্যক্তি তাঁর সঙ্গে একজন নারী ও শিশুকে নিয়ে টানেলের ভেতর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। ইসরায়েল দাবি করে, সেই ব্যক্তি সিনওয়ার ছিলেন। যদিও এর পক্ষে কোনো প্রমাণ তারা দেখায়নি।
মূলত গাজায় আগ্রাসন চালানোর দীর্ঘ সাত মাস পরেও ইসরায়েল সেই টানেলের মতো অন্ধকার এক কানাগলিতে আটকে আছে। যেখানে দেশটি না হামাসকে নির্মূল করার সফলতা অর্জন করতে পারছে, আর না সিনওয়ারকে ধরতে পেরেছে। সিনওয়ার এখনো ইসরায়েলি বাহিনীর কাছে এক মরীচিকার মতো। মূলত, যুদ্ধের সাত মাস শেষে সিনওয়ারই ইসরায়েলের ব্যর্থতার জলজ্যান্ত প্রতীক হিসেবে হাজির হয়েছেন।
নিউইয়র্ক টাইমস থেকে সংক্ষেপে অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান
ইয়াহিয়া সিনওয়ার, গাজায় হামাসের শীর্ষ নেতা। যাকে গত বছরে ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার অন্যতম স্থপতি বলা হয়। সেই হামলার পর হামাস ধরেই নিয়েছিল যে, ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে ইসরায়েল ছাড়বে না। কিন্তু যুদ্ধের সাত মাস শেষে ইসরায়েল গাজাকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিলেও সিনওয়ারসহ হামাসের সব শীর্ষ নেতাই বহাল তবিয়তে আছেন। এটি গাজা অভিযানে ইসরায়েলের ব্যর্থতাই তুলে ধরছে। আর সিনওয়ার সেই ব্যর্থতার জলজ্যান্ত প্রতীক হয়ে উঠেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরও বলছে, গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েল যে কৌশল অনুসরণ করছে, তাতে চূড়ান্ত বিজয় পাওয়া সম্ভব নয়। হামাসের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই সন্দেহের কথা জানিয়ে আসছে।
ইসরায়েলি নীতিনির্ধারকেরা সিনওয়ারকে হত্যা করাসহ হামাসকে নির্মূল করার অঙ্গীকার করলেও সেই আশা পূরণ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র বলেছে, ‘ইসরায়েলিরা তাঁকে হত্যার প্রতিজ্ঞা করলেও তাঁর সঙ্গেই (যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি–বন্দী বিনিময় নিয়ে) দর–কষাকষি করতে বাধ্য হয়েছে।’
বিগত সাত মাসের যুদ্ধ–বাস্তবতায় সিনওয়ার কেবল ইস্পাতদৃঢ় মনোবলের নেতাই নন, একজন কৌশলী আলোচক হিসেবেও আবির্ভূত হয়েছেন। তিনি একই সঙ্গে আলোচনার টেবিল সামলেছেন এবং গাজায় ইসরায়েলি বিজয়কে ঠেকিয়ে দিয়েছেন। সূত্রটি এ বিষয়ে বলেছে, ‘হামাস, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলি সূত্রগুলো বলছে, ইসরায়েলিরা এখনো আলোচনার টেবিলে আছে’। যা মূলত সিনওয়ারেরই অবদান।
হামাস–ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি আলোচনার সঙ্গে জড়িত একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, যদিও কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতিসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু এর মূল চাবিকাঠি সিনওয়ারের হাতে। এমনকি কাতারে থাকা হামাসের শীর্ষ নেতাদেরও এ বিষয়ে কিছু করার নেই। সূত্রগুলো বলছে, হামাস নেতারা এই আলোচনার ক্ষেত্রে যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে সিনওয়ারের অনুমতি বা সম্মতি তালাশ করছেন।
হামাস নেতারা বলছেন, দলের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে সিনওয়ারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত নয় এবং টেকনিক্যালি সিনওয়ার হামাসের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষও নন। কিন্তু গাজায় হামাসের ওপর তাঁর নিয়ন্ত্রণ ও দৃঢ় ব্যক্তিত্ব তাঁকে গোষ্ঠীটির ভেতরে এক অনন্য–অসাধারণ ভাবমূর্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। ফলে তাঁকে উপেক্ষা করার জো নেই। এই বিষয়টি হামাসের শত্রু–মিত্র নির্বিশেষে স্বীকার করে।
হামাস সদস্য, রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং সিনওয়ারের বন্ধু সালাহ–আল–দ্বীন আল–আওদা বলেন, ‘সিনওয়ারের সঙ্গে পরামর্শ না করে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। তিনি সাধারণ কোনো নেতা নন। তিনি শক্তিশালী ব্যক্তিত্ব এবং ঘটনার স্থপতি। তিনি কোনো সাধারণ ব্যবস্থাপক বা পরিচালক নন, তিনি একজন নেতা।’
উল্লেখ্য, আল–আওদা এবং সিনওয়ার ১৯৯০ থেকে ২০০০–এর দশক পর্যন্ত একসঙ্গে ইসরায়েলি কারাগারে ছিলেন। সে সময় তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের মতে, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি অভিযান শুরুর পর থেকে সিনওয়ারের তরফ থেকে কোনো মন্তব্য সে অর্থে শোনা যায়নি। কিন্তু হামাসের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের চেয়ে বয়সে ছোট হয়েও সিনওয়ার গত বছরের নভেম্বরে সাময়িক যুদ্ধবিরতির পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।
যুদ্ধবিরতি আলোচনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আরব ও পশ্চিমা কর্মকর্তা এবং বিশ্লেষকেরা বলছেন, অনেক সময় সিনওয়ারের অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকার কারণে যুদ্ধবিরতি আলোচনার প্রক্রিয়া অনেক ধীর গতির হয়ে গিয়েছিল। ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে গাজার যোগাযোগ অবকাঠামো পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় সিনওয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করা কঠিন হয়ে পড়ে। কখনো কখনো তাঁর কাছে বার্তা পৌঁছানোর জন্য একদিন এবং প্রতিক্রিয়া পাওয়ার জন্য আরও একদিন লেগে যেত।
ইসরায়েলি ও মার্কিন কর্মকর্তাদের মতে, সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি আলোচনা চলার সময়ে সিনওয়ার একজন দক্ষ আলোচক ও রাজনৈতিক খেলোয়াড় হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। যিনি ইসরায়েলি সমাজের মনস্তত্ত্ব বুঝতে সক্ষম এবং সেই অনুসারে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে পারঙ্গম। ইসরায়েলি ও মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বিগত কয়েক মাস সিনওয়ারের উদ্দেশ্য সম্পর্কে ধারণা পাওয়ার চেষ্টা করেছেন। ইসরায়েলি ও মার্কিন বিশ্লেষকদের বিশ্বাস, সিনওয়ারের মূল উদ্দেশ্য হলো—ইসরায়েলকে দুর্বল করে প্রতিশোধ নেওয়া। ফিলিস্তিনি জনগণের কল্যাণ বা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা তাঁর কাছে গৌণ বিষয়।
ইয়াহিয়া সিনওয়ার ১৯৬২ সালে গাজায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পরিবার উচ্ছেদের শিকার হয়ে গাজায় স্থানান্তরিত হয়। তাঁদের মূল ভিটেমাটি এখন ইসরায়েলের দখলে। ১৯৮০–এর দশকে সিনওয়ার হামাসে যোগ দেন। পরে ধর্মত্যাগী ও ইসরায়েলের সহযোগীদের হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তাঁকে কারাদণ্ড দেয় ইসরায়েলি আদালত। প্রায় দুই দশক কারাগারে থাকার পর সিনওয়ার ২০১১ সালে মুক্তি পান। মূলত হামাসের হাতে বন্দী ইসরায়েলি সেনাদের মুক্তির বিনিময়ে সিনওয়ার মুক্তি পান। ২০১৭ সালে সিনওয়ার হামাসের গাজা প্রধান নির্বাচিত হন।
ইসরায়েলি কর্মকর্তা ও সহবন্দীরা বলছেন, ইসরায়েলি কারাগারে বন্দী থাকার সময় সিনওয়ার হিব্রু শিখেছিলেন এবং ইসরায়েলি সংস্কৃতি ও সমাজ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পাওয়া চেষ্টা করেছিলেন। ইসরায়েলি ও মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, সিনওয়ার এখন ইসরায়েলি সমাজে বিভাজনের বীজ বপন করতে ও দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ওপর চাপ বাড়াতে সেই বোঝাপড়া ব্যবহার করছেন। তাঁদের বিশ্বাস, যুদ্ধবিরতি আলোচনার গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে নেতানিয়াহুর প্রতি জনগণের ক্ষোভ উসকে দিতেই সিনওয়ারের নির্দেশে ইসরায়েলি জিম্মিদের ভিডিও প্রকাশ করেছিলেন।
অনেক ইসরায়েলি চান, যেকোনো মূল্যে বাকি জিম্মিদের মুক্ত করতে, এমনকি হামাসের দাবি অনুসারে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির বাস্তবায়ন করে হলেও। কিন্তু নেতানিয়াহু যুদ্ধ শেষ করতে নারাজ, মূলত জোট সরকারের কট্টর ডানপন্থী অংশীদারদের চাপের কারণে তাঁর এই অবস্থান। এই অবস্থায় বিশ্লেষকেরা বলছেন, নেতানিয়াহুকে যদি যুদ্ধবিরতির বিষয়টি ঝুলিয়ে দেওয়ার জন্য দায়ী করা হয় তবে একই অভিযোগের আঙুল উঠবে তাঁর প্রতিপক্ষ সিনওয়ারের বিরুদ্ধেও।
ইসরায়েলি ও মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের মতে, সিনওয়ার চান গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন আরও প্রলম্বিত করতে। যাতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইসরায়েলের যে ভাবমূর্তি আছে তা ধসে পড়ে এবং দেশটির প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয়। এ কারণেই হয়তো, রাফাহে ইসরায়েলের তীব্র অভিযানের মুখেও গত রোববার হামাস ইসরায়েলের অভ্যন্তরে বিপুল পরিমাণ রকেট হামলা চালিয়েছে। যে হামলায় চার ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে।
এটি যদি সত্যিই হামাসের যুদ্ধকৌশল হয়ে থাকে তবে সম্ভবত তা কাজে দিয়েছে। গত সপ্তাহে ইসরায়েল রাফাহে অভিযান শুরুর পর বাইডেন প্রশাসন দেশটিতে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। বাইডেন প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারাও কঠোর ভাষায় সমালোচনা শুরু করেছেন। বিশ্লেষকেরা বলছেন, হামাস গাজায় ফিলিস্তিনিদের প্রাণহানি ও দুর্দশা থেকে ফায়দা লাভের চেষ্টা করছে। তবে হামাসের দাবি, তাদের কিংবা সিনওয়ার কারওরই এ ধরনের কোনো উদ্দেশ্য নেই।
হামাস নেতা আহমেদ ইউসেফ বলেন, ‘হামাসের কৌশল হলো—এখনই যুদ্ধ বন্ধ করা এবং ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর চলমান গণহত্যা ও হত্যাকাণ্ড বন্ধ করা।’ তবে মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, সিনওয়ার গাজার বাইরে থাকা হামাসের নেতা–কর্মীদের প্রতি বিরক্তি প্রকাশ করেছেন একাধিকবার। মূলত, গাজায় হামাসের কার্যক্রম এবং গাজার বাইরে থাকা হামাস নেতাদের সে বিষয়ে অবগত না থাকার বিষয়টি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে এমন হয়েছে।
যুদ্ধবিরতি আলোচনার সঙ্গে জড়িত এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, আমাদের অনুমান, সিনওয়ার তাঁর ভাই ও হামাসের সশস্ত্র শাখার অন্যতম শীর্ষ কমান্ডার মোহাম্মদের সঙ্গে পরামর্শ করেই গাজায় কার্যক্রম চালাচ্ছেন এবং এ কারণে গাজার বাইরে অবস্থান করা হামাসের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে মতবিরোধ তৈরি হয়েছে তাঁর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই মার্কিন কর্মকর্তা আরও জানান, যেখানে হামাসের রাজনৈতিক নেতৃত্ব কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দিতেও প্রস্তুত ছিলেন, সেখানে সিনওয়ার এ বিষয়ে খুব একটা আগ্রহ দেখাননি। কারণ, তিনি জানতেন যে, যুদ্ধ শেষ হোক বা না হোক তাঁকে হত্যা করা হতে পারে। মার্কিন কর্মকর্তার মতে, সিনওয়ারের এই আশঙ্কা ঠিকই আছে। কারণ, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও ইসরায়েল সিনওয়ারের পিছু ছাড়বে না।
যদিও হামাস নেতারা একটি ঐক্যবদ্ধ চিত্রই বহির্বিশ্বের সামনে তুলে ধরছেন। তাঁরা সিদ্ধান্ত গ্রহণে সিনওয়ারের ব্যক্তিগত ভূমিকাকে খাটো করে নির্বাচিত হামাস নেতৃত্বের সম্মিলিত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আন্দোলনের গতিপথ নির্ধারণের প্রতি জোর আরোপ করেন। কেউ কেউ বলেন, এই যুদ্ধে সিনওয়ার যে বড় ভূমিকা পালন করেছেন তার বেশির ভাগই গাজায় হামাসের শীর্ষ নেতা হিসেবে তাঁর অবস্থানের কারণে।
কাতারে অবস্থানরত হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা মুসা আবু মারজুকের মতে, ‘সিনওয়ারের বক্তব্য চূড়ান্ত না হলেও গাজার বিষয়ে তাঁর একটি বড় ভূমিকা আছে।’
তিনি বলেন, ‘সিনওয়ারের মতামত খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তিনি ভূখণ্ডটিতে আছেন এবং ভেতর থেকে হামাসের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তবে সিদ্ধান্তের বিষয়ে ইসমাইল হানিয়ের বক্তব্যই চূড়ান্ত।’
তবে সিনওয়ারের চারিত্রিক দৃঢ়তায় একটা অস্বাভাবিক কিছু আছে বলে মনে করেন তাঁর বন্ধু আল–আওদা। তিনি বলেন, সিনওয়ারের জায়গায় হামাসের অন্য কোনো নেতা হলে হয়তো ৭ অক্টোবরের মতো ঘটনা না ঘটিয়ে গাজা শাসন সংক্রান্ত বিষয়ে মনোনিবেশ করতেন। তিনি বলেন, ‘তাঁর জায়গায় অন্য কেউ হলে হয়তো বিষয়গুলো আরও শান্তভাবে সংঘটিত হতো।’
এর আগে, গত ফেব্রুয়ারিতে ইসরায়েলি বাহিনী গাজার একটি টানেলের নিরাপত্তা ক্যামেরার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছিল যেখানে দেখা যায়, এক ব্যক্তি তাঁর সঙ্গে একজন নারী ও শিশুকে নিয়ে টানেলের ভেতর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। ইসরায়েল দাবি করে, সেই ব্যক্তি সিনওয়ার ছিলেন। যদিও এর পক্ষে কোনো প্রমাণ তারা দেখায়নি।
মূলত গাজায় আগ্রাসন চালানোর দীর্ঘ সাত মাস পরেও ইসরায়েল সেই টানেলের মতো অন্ধকার এক কানাগলিতে আটকে আছে। যেখানে দেশটি না হামাসকে নির্মূল করার সফলতা অর্জন করতে পারছে, আর না সিনওয়ারকে ধরতে পেরেছে। সিনওয়ার এখনো ইসরায়েলি বাহিনীর কাছে এক মরীচিকার মতো। মূলত, যুদ্ধের সাত মাস শেষে সিনওয়ারই ইসরায়েলের ব্যর্থতার জলজ্যান্ত প্রতীক হিসেবে হাজির হয়েছেন।
নিউইয়র্ক টাইমস থেকে সংক্ষেপে অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান
কোভিড-১৯ মহামারির পর সোশ্যাল মিডিয়া ফাস্ট ফ্যাশন শিল্পকে ভঙ্গুর করে তুলেছে। জায়গা করে নিচ্ছে ভয়াবহ মানবাধিকার সংকট সৃস্টিকারী ‘আলট্রা-ফাস্ট ফ্যাশন’। সেই শিল্পে তৈরি মানুষেরই ‘রক্তে’ রঞ্জিত পোশাক সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রল করে কিনছে অনবরত। আর রক্তের বেসাতি থেকে মালিক শ্রেণি মুনাফা কামিয়েই যাচ্ছে।
২ ঘণ্টা আগেনবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গর্ভমেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গ
৪ দিন আগেপরিশেষে বলা যায়, হাসিনার চীনা ধাঁচের স্বৈরশাসক শাসিত রাষ্ট্র গড়ে তোলার প্রয়াস ব্যর্থ হয় একাধিক কারণে। তাঁর বৈষম্যমূলক এবং এলিটপন্থী বাঙালি-আওয়ামী আদর্শ জনসাধারণ গ্রহণ করেনি, যা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির গণমুখী আদর্শের বিপরীত। ২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক মন্দা তাঁর শাসনকে দুর্বল করে দেয়, পাশাপাশি
৮ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় মোটামুটি সারা বিশ্বকেই নাড়িয়ে দিয়েছে। বাদ যায়নি তাঁর প্রতিবেশী দেশগুলো। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের এই জয়ের বড় প্রভাব পড়বে প্রতিবেশী দেশগুলোয়।
১০ দিন আগে