অনলাইন ডেস্ক
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে পারবে কি না—তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি বিশ্লেষক মাইকেল কুগেলম্যান। গতকাল শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স প্ল্যাটফর্মে মার্কিন থিংক ট্যাংক উইলসন সেন্টারে দক্ষিণ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক এই প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেন।
সম্প্রতি মাইকেল কুগেলম্যান বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা সফর করে গিয়েছেন। খুব কাছে থেকে নজর রেখেছেন বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনীতির ঘটনা প্রবাহের ওপর। দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতির এই বিশ্লেষক তাঁর ঢাকা সফরের বিষয়টি উল্লেখ করে লিখেছেন, সম্প্রতি তাঁর ঢাকা সফরে তিনি সবচেয়ে বেশি যে প্রশ্নটির মুখোমুখি হয়েছেন, কেন যুক্তরাষ্ট্র শুধু বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে এত চাপাচাপি করছে। অথচ ভারত ও পাকিস্তানের ক্ষেত্রে একেবারে চুপচাপ। কেন যুক্তরাষ্ট্র মূল্যবোধকেন্দ্রিক পররাষ্ট্রনীতির ‘পোস্টার চাইল্ড’ হিসেবে নিজেকে তুলে ধরছে?
নিজের প্রশ্নের জবাবে কুগেলম্যান নিজেই লেখেন, ‘সংক্ষিপ্ত উত্তর হলো—ভিন্ন দেশের জন্য ভিন্ন ভিন্ন নীতি। তবে এর বিশ্লেষণমূলক উত্তর আরও অনেক বড়। মনে হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বেলায় এমনটা করতে খুব স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে এবং তাদের মনে হচ্ছে তারা এ ক্ষেত্রে সফল হতে পারবে।’ এর পরেই কুগেলম্যান লিখেন, ‘উদাহরণ হিসেবে মার্কিন কর্মকর্তারা বলে থাকেন—র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর থেকেই বাহিনীটির ক্ষমতার অপব্যবহার অনেক কমে গেছে।’
তবে এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে পারবে কি না, তা নিয়ে কুগেলম্যানের সন্দেহ। তিনি বলেন, ‘কিন্তু ভিসা নিষেধাজ্ঞা কি বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে পারবে? আমার এ বিষয়ে সন্দেহ আছে। হয়তো বাংলাদেশের অনেক এলিট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছে। কিন্তু ক্ষমতাসীন দল যদি চায় যে তারা যেকোনো মূল্যে ক্ষমতায় থাকতে চায়— এ ক্ষেত্রে ভিসা নিষেধাজ্ঞা যে খুব একটা কাজে দেবে, সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত নই যে।’
বাংলাদেশ সরকারের কর্তাব্যক্তিরা বলছেন, তাঁরা মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে চিন্তিত নন। আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বাংলাদেশ চিন্তিত নয়। এমনকি এ বিষয়ে দেশের ভোটারদেরও মাথাব্যথা নেই। কারণ, তারা যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার কথাই ভাবছে না।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রও একটি গণতান্ত্রিক দেশ, আমরাও।’ যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, ‘যেহেতু তারা বৈশ্বিক শক্তি, সে হিসেবে তারা অন্যদের ওপর নিজের ক্ষমতা প্রয়োগ করতেই পারে। তবে বিষয়টি নিয়ে আমরা চিন্তিত নই। কারণ, আমরা জানি কীভাবে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে হয়।’
এর আগে নিউইয়র্কে বাংলাদেশ মিশনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগামী নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে এমনকি বিদেশ থেকেও যদি কোনো প্রচেষ্টা নেওয়া হয়, দেশের জনগণ তা মেনে নেবে না।’
আগামী সাধারণ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশবাসী ভোট দিলে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসবে। কিন্তু বিদেশ থেকেও নির্বাচন বানচালের কোনো পদক্ষেপ জনগণ মেনে নেবে না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর দল সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদে বর্ণিত জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাস করে। তিনি বলেন, নির্বাচন বানচালের কোনো পদক্ষেপের ক্ষেত্রে যারা উদ্যোগ নেবে, বাংলাদেশের জনগণ তাদের ওপর পাল্টা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে।
নতুন ভিসা নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি আশা করেন, বিরোধী দলসহ নির্বাচন বানচালের প্রচেষ্টাকারীদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। শেখ হাসিনা বলেন, আগামী সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য এটা ভালো হবে। কারণ, বিএনপি জোট ২০১৩-১৪ সালের মতো নির্বাচন বানচালের লক্ষ্যে কোনো অগ্নিসংযোগ করতে পারবে না। সরকারপ্রধান আশা প্রকাশ করেন, যে দেশ ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, তারা উভয়পক্ষ থেকে বা নিরপেক্ষভাবে বিষয়টি বিবেচনা করবে।
এর আগে, গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত বাংলাদেশি ব্যক্তিদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ প্রয়োগের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। বিবৃতি অনুযায়ী, এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত যেকোনো ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। অন্য অনেকের সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমান বা সাবেক কর্মকর্তা-কর্মচারী, সরকারের সমর্থক এবং বিরোধীদলীয় সদস্যরা এর অন্তর্ভুক্ত। এ ধরনের ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরাও এর অন্তর্ভুক্ত থাকবেন। এর আগে, গত মে মাসে মার্কিন সরকার প্রথমবারের মতো এই নিষেধাজ্ঞার পরিকল্পনার বিষয়টি প্রকাশ করে।
দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিবিষয়ক বিশ্লেষক কুগেলম্যানের মতে, বিরোধী দলগুলোকেও নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র পরিষ্কারভাবে বলতে চাইছে যে তারা কোনো একটি বিশেষ পক্ষকে সুবিধা দিতে চায় না।
তবে বিরোধী দলগুলো মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে খুব বেশি উচ্ছ্বাসী নয়। তবে বিষয়টি তাদের জন্য রাজনৈতিক মূলধন হিসেবে ধরা দিতে পারে। এমনটা তাদের বক্তব্য থেকে অনেকটাই স্পষ্ট। মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়া বিএনপির বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির সদস্য শামা ওবায়েদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই সরকারের প্রধানমন্ত্রী যখন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন—ঠিক তখনই ভিসা নীতি কার্যকরে পদক্ষেপ নেওয়ার খবরটা দিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এর এক দিন আগে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) জানাল, তারা নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠাচ্ছে না। এসব ঘটনায় এটা এখন দিবালোকের মতো পরিষ্কার যে এই সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক মহলের কোনো আস্থা নেই।’
প্রায় একই রকম অবস্থান ব্যক্ত করেছেন দেশের প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এটি সরকারের প্রতি অশনিসংকেত।
এখানে একটি বিষয় লক্ষণীয় যে যুক্তরাষ্ট্র আরোপিত এই নিষেধাজ্ঞাগুলো নির্বাচনের আগেই দেওয়া হয়েছে; বাংলাদেশে আগামী জানুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র কেবল বাংলাদেশের ওপরই এমন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি। এর আগে, গত জুলাই মাসে মধ্য আমেরিকার চারটি দেশে গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করায় চার দেশের ৩৯ জনের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। দেশগুলো হলো গুয়াতেমালা, নিকারাগুয়া, হন্ডুরাস ও এল সালভাদর।
বিষয়টি নিয়ে কুগেলম্যান বলছেন, এই নিষেধাজ্ঞাই শেষ নয়, বরং এমনটা ইঙ্গিত দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে যে এটি যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে একগাদা উদ্যোগের প্রথম দফা এবং এভাবেই যুক্তরাষ্ট্র কাজ করে থাকে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে পারবে কি না—তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি বিশ্লেষক মাইকেল কুগেলম্যান। গতকাল শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স প্ল্যাটফর্মে মার্কিন থিংক ট্যাংক উইলসন সেন্টারে দক্ষিণ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক এই প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেন।
সম্প্রতি মাইকেল কুগেলম্যান বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা সফর করে গিয়েছেন। খুব কাছে থেকে নজর রেখেছেন বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনীতির ঘটনা প্রবাহের ওপর। দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতির এই বিশ্লেষক তাঁর ঢাকা সফরের বিষয়টি উল্লেখ করে লিখেছেন, সম্প্রতি তাঁর ঢাকা সফরে তিনি সবচেয়ে বেশি যে প্রশ্নটির মুখোমুখি হয়েছেন, কেন যুক্তরাষ্ট্র শুধু বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে এত চাপাচাপি করছে। অথচ ভারত ও পাকিস্তানের ক্ষেত্রে একেবারে চুপচাপ। কেন যুক্তরাষ্ট্র মূল্যবোধকেন্দ্রিক পররাষ্ট্রনীতির ‘পোস্টার চাইল্ড’ হিসেবে নিজেকে তুলে ধরছে?
নিজের প্রশ্নের জবাবে কুগেলম্যান নিজেই লেখেন, ‘সংক্ষিপ্ত উত্তর হলো—ভিন্ন দেশের জন্য ভিন্ন ভিন্ন নীতি। তবে এর বিশ্লেষণমূলক উত্তর আরও অনেক বড়। মনে হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বেলায় এমনটা করতে খুব স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে এবং তাদের মনে হচ্ছে তারা এ ক্ষেত্রে সফল হতে পারবে।’ এর পরেই কুগেলম্যান লিখেন, ‘উদাহরণ হিসেবে মার্কিন কর্মকর্তারা বলে থাকেন—র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর থেকেই বাহিনীটির ক্ষমতার অপব্যবহার অনেক কমে গেছে।’
তবে এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে পারবে কি না, তা নিয়ে কুগেলম্যানের সন্দেহ। তিনি বলেন, ‘কিন্তু ভিসা নিষেধাজ্ঞা কি বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে পারবে? আমার এ বিষয়ে সন্দেহ আছে। হয়তো বাংলাদেশের অনেক এলিট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছে। কিন্তু ক্ষমতাসীন দল যদি চায় যে তারা যেকোনো মূল্যে ক্ষমতায় থাকতে চায়— এ ক্ষেত্রে ভিসা নিষেধাজ্ঞা যে খুব একটা কাজে দেবে, সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত নই যে।’
বাংলাদেশ সরকারের কর্তাব্যক্তিরা বলছেন, তাঁরা মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে চিন্তিত নন। আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বাংলাদেশ চিন্তিত নয়। এমনকি এ বিষয়ে দেশের ভোটারদেরও মাথাব্যথা নেই। কারণ, তারা যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার কথাই ভাবছে না।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রও একটি গণতান্ত্রিক দেশ, আমরাও।’ যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, ‘যেহেতু তারা বৈশ্বিক শক্তি, সে হিসেবে তারা অন্যদের ওপর নিজের ক্ষমতা প্রয়োগ করতেই পারে। তবে বিষয়টি নিয়ে আমরা চিন্তিত নই। কারণ, আমরা জানি কীভাবে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে হয়।’
এর আগে নিউইয়র্কে বাংলাদেশ মিশনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগামী নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে এমনকি বিদেশ থেকেও যদি কোনো প্রচেষ্টা নেওয়া হয়, দেশের জনগণ তা মেনে নেবে না।’
আগামী সাধারণ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশবাসী ভোট দিলে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসবে। কিন্তু বিদেশ থেকেও নির্বাচন বানচালের কোনো পদক্ষেপ জনগণ মেনে নেবে না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর দল সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদে বর্ণিত জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাস করে। তিনি বলেন, নির্বাচন বানচালের কোনো পদক্ষেপের ক্ষেত্রে যারা উদ্যোগ নেবে, বাংলাদেশের জনগণ তাদের ওপর পাল্টা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে।
নতুন ভিসা নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি আশা করেন, বিরোধী দলসহ নির্বাচন বানচালের প্রচেষ্টাকারীদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। শেখ হাসিনা বলেন, আগামী সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য এটা ভালো হবে। কারণ, বিএনপি জোট ২০১৩-১৪ সালের মতো নির্বাচন বানচালের লক্ষ্যে কোনো অগ্নিসংযোগ করতে পারবে না। সরকারপ্রধান আশা প্রকাশ করেন, যে দেশ ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, তারা উভয়পক্ষ থেকে বা নিরপেক্ষভাবে বিষয়টি বিবেচনা করবে।
এর আগে, গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত বাংলাদেশি ব্যক্তিদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ প্রয়োগের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। বিবৃতি অনুযায়ী, এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত যেকোনো ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। অন্য অনেকের সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমান বা সাবেক কর্মকর্তা-কর্মচারী, সরকারের সমর্থক এবং বিরোধীদলীয় সদস্যরা এর অন্তর্ভুক্ত। এ ধরনের ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরাও এর অন্তর্ভুক্ত থাকবেন। এর আগে, গত মে মাসে মার্কিন সরকার প্রথমবারের মতো এই নিষেধাজ্ঞার পরিকল্পনার বিষয়টি প্রকাশ করে।
দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিবিষয়ক বিশ্লেষক কুগেলম্যানের মতে, বিরোধী দলগুলোকেও নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র পরিষ্কারভাবে বলতে চাইছে যে তারা কোনো একটি বিশেষ পক্ষকে সুবিধা দিতে চায় না।
তবে বিরোধী দলগুলো মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে খুব বেশি উচ্ছ্বাসী নয়। তবে বিষয়টি তাদের জন্য রাজনৈতিক মূলধন হিসেবে ধরা দিতে পারে। এমনটা তাদের বক্তব্য থেকে অনেকটাই স্পষ্ট। মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়া বিএনপির বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির সদস্য শামা ওবায়েদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই সরকারের প্রধানমন্ত্রী যখন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন—ঠিক তখনই ভিসা নীতি কার্যকরে পদক্ষেপ নেওয়ার খবরটা দিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এর এক দিন আগে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) জানাল, তারা নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠাচ্ছে না। এসব ঘটনায় এটা এখন দিবালোকের মতো পরিষ্কার যে এই সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক মহলের কোনো আস্থা নেই।’
প্রায় একই রকম অবস্থান ব্যক্ত করেছেন দেশের প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এটি সরকারের প্রতি অশনিসংকেত।
এখানে একটি বিষয় লক্ষণীয় যে যুক্তরাষ্ট্র আরোপিত এই নিষেধাজ্ঞাগুলো নির্বাচনের আগেই দেওয়া হয়েছে; বাংলাদেশে আগামী জানুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র কেবল বাংলাদেশের ওপরই এমন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি। এর আগে, গত জুলাই মাসে মধ্য আমেরিকার চারটি দেশে গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করায় চার দেশের ৩৯ জনের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। দেশগুলো হলো গুয়াতেমালা, নিকারাগুয়া, হন্ডুরাস ও এল সালভাদর।
বিষয়টি নিয়ে কুগেলম্যান বলছেন, এই নিষেধাজ্ঞাই শেষ নয়, বরং এমনটা ইঙ্গিত দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে যে এটি যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে একগাদা উদ্যোগের প্রথম দফা এবং এভাবেই যুক্তরাষ্ট্র কাজ করে থাকে।
কোভিড-১৯ মহামারির পর সোশ্যাল মিডিয়া ফাস্ট ফ্যাশন শিল্পকে ভঙ্গুর করে তুলেছে। জায়গা করে নিচ্ছে ভয়াবহ মানবাধিকার সংকট সৃস্টিকারী ‘আলট্রা-ফাস্ট ফ্যাশন’। সেই শিল্পে তৈরি মানুষেরই ‘রক্তে’ রঞ্জিত পোশাক সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রল করে কিনছে অনবরত। আর রক্তের বেসাতি থেকে মালিক শ্রেণি মুনাফা কামিয়েই যাচ্ছে।
১৭ ঘণ্টা আগেনবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গর্ভমেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গ
৪ দিন আগেপরিশেষে বলা যায়, হাসিনার চীনা ধাঁচের স্বৈরশাসক শাসিত রাষ্ট্র গড়ে তোলার প্রয়াস ব্যর্থ হয় একাধিক কারণে। তাঁর বৈষম্যমূলক এবং এলিটপন্থী বাঙালি-আওয়ামী আদর্শ জনসাধারণ গ্রহণ করেনি, যা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির গণমুখী আদর্শের বিপরীত। ২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক মন্দা তাঁর শাসনকে দুর্বল করে দেয়, পাশাপাশি
৯ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় মোটামুটি সারা বিশ্বকেই নাড়িয়ে দিয়েছে। বাদ যায়নি তাঁর প্রতিবেশী দেশগুলো। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের এই জয়ের বড় প্রভাব পড়বে প্রতিবেশী দেশগুলোয়।
১১ দিন আগে