মইনুল হাসান
ওরা ১২ জন, চারজন নারী ও আটজন পুরুষ। কিন্তু একটা মাত্র চেয়ার। তাঁদের সবার দৃষ্টি এখন এই রাজকীয় চেয়ারটির দিকে, সবাই এটি নিজের দখলে নিতে চান। সবাই দেশপ্রেমিক। দেশের মঙ্গল করতে, দেশবাসীকে আরাম, আয়েশ আর স্বস্তিতে রাখতে তাঁরা সবাই অন্তঃপ্রাণ।
আগামী ১০ ও ২৪ এপ্রিল দুই দফায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ফ্রান্সের পঞ্চম প্রজাতন্ত্রের দ্বাদশ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ফ্রান্সের নির্বাচনী ব্যবস্থা অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম পর্বে যদি কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশ ভোট অর্জন করতে ব্যর্থ হন, তাহলে দ্বিতীয় পর্বের নির্বাচনে অংশ নেবেন তাঁদের মধ্যে সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া দুই প্রার্থী। মোট ১২ জন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর মধ্য থেকে প্রথম দফায় ১০ এপ্রিল সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত দুজন প্রতিদ্বন্দ্বীকে চূড়ান্ত লড়াইয়ের জন্য বাছাই করবেন ৪ কোটি ৮৭ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক ফরাসি নাগরিক-ভোটার। ইতিমধ্যে সরকারি খরচে প্রতিটি ভোটারের ঠিকানায় সব প্রার্থীর ছবি এবং পরিচিতিসহ চার পাতার নির্বাচনী ইশতেহার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
চেয়ার বলার চেয়ে ‘মসনদ’ বলাই ভালো। কারণ যে ব্যক্তি এই আসনে উপবেশন করার জন্য দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে নির্বাচিত হবেন, তিনি হবেন দেশটির পঞ্চম প্রজাতন্ত্রের নবম প্রেসিডেন্ট। দেশের প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে প্যারিসের এলিজে প্রাসাদের বাসিন্দা হবেন গুনে গুনে পাঁচ বছরের জন্য। বলে রাখা ভালো, ফ্রান্সে রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকারব্যবস্থা বিদ্যমান।
পাঁচ বছর আগে ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মোট প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ১১ জন। এবার একজন বেশি। কয়েকটি নতুন মুখ ছাড়া এবারের নির্বাচনেও ঘুরেফিরে সেই পুরোনো প্রার্থীরাই আবারও নির্বাচনী লড়াইয়ে নেমেছেন। সেবার নির্বাচিত হয়েছিলেন ৩৯ বছর বয়সের মধ্যপন্থী প্রার্থী ইমানুয়েল মাখোঁ। অনেকটা ভাগ্যচক্রে তিনি ফরাসি রাজনীতির কেন্দ্রে চলে আসেন। এর আগে প্রায় ৪৫ বছর ধরে ক্ষমতার পালাবদল ডান ও বামদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কম্যুনিস্ট, পরিবেশবাদী আর কট্টরপন্থীরা তাতে মোটেই নাক গলাতে পারেনি। সে বছর ইমানুয়েল মাখোঁ বাম ও ডানপন্থী প্রার্থীদের পরাজিত করেন। পরে দ্বিতীয় দফায় ভোটে পরাজিত করেন কট্টর ডানপন্থী প্রার্থী মারিন লো পেনকে। দ্বিতীয় দফায় মাখোঁ পেয়েছিলেন ৬৬ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ ভোট। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী মারিন লো পেনের ভাগ্যে জুটেছিল ৩৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ ভোট।
এ বছর সনাতন বাম ও ডানদের মধ্য থেকে প্রার্থী হয়েছেন দুজন নারী। সোশ্যালিস্ট পার্টির পক্ষ থেকে প্রার্থী হয়েছেন প্যারিস নগরীর মেয়র ৬২ বছর বয়সী অ্যান হিডালগো। আর রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ভ্যালেরি পেক্রেস, তাঁর বয়স ৫৪ বছর। বিভিন্ন জরিপের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে যে, দুজনেই ১০ এপ্রিল প্রথম দফায় অনেক ব্যবধানে নির্বাচনের ময়দান থেকে বিদায় নেবেন। বিশ্লেষকদের ধারণা, তাঁরা দুজনেই অনেকটা বাম ও ডান রাজনীতির মুখ রাখতেই ভোটের লড়াইয়ে নাম লিখিয়েছেন।
কট্টর বামপন্থীদের মধ্যে এগিয়ে আছেন ‘জাগ্রত ফ্রান্স’ অর্থাৎ ‘লা ফ্রন্সঁ আনসুমিজ’ দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জঁ লুক মেলনশোঁ। অভিবাসীবান্ধব বলে কিছু ভোট নিজের দিকে টানতে পারলেও ২০ শতাংশের বেশি ভোট তাঁর বাক্সে পড়বে না বলে জরিপকারীদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
জরিপে অনেকটা এগিয়ে আছেন কট্টর ডানপন্থী দল, জাতীয় জমায়েতের প্রার্থী ৫৩ বছর বয়সী ম্যাডাম মারিন লো পেন। জরিপে দেখা যাচ্ছে যে তিনি প্রথম ধাপে ২০ শতাংশের বেশি ভোট পাবেন। মারিন লো পেন মুসলিম অভিবাসীদের কট্টর বিরোধী। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ফ্রান্সকে বের করে আনবেন বলে যে আস্ফালন শুরু করেছিলেন, তা থেকে অনেকটাই তিনি সরে এসেছেন। এদিকে কট্টর ডানপন্থীদের মধ্যে আরও বেশি মাত্রায় কট্টর প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ৬৩ বছর বয়সী এরিক জেমুর। তিনি ১০ শতাংশের কাছাকাছি ভোট পেতে পারেন বলে জরিপে উঠে এসেছে। নির্বাচনের প্রথম ধাপে বাদবাকি ছয়জন প্রার্থীকে ১ শতাংশ থেকে ৩ শতাংশ ভোট কুড়াতেই গলদঘর্ম হতে হবে বলেও জানা গেছে জরিপ থেকে।
সব জরিপে সব প্রার্থী থেকে অনেকটা ব্যবধানে এগিয়ে আছেন ‘এগিয়ে চলো’ আন্দোলনের নেতা ৪৪ বছর বয়সী বিদায়ি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ। প্রায় ৩০ শতাংশের কাছাকাছি ভোট পাওয়ার সম্ভাবনা আছে মাখোঁর। গত মেয়াদে ইমানুয়েল মাখোঁ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁকে ‘হলুদ কোর্তা’ খ্যাত সরকারবিরোধী ব্যাপক আন্দোলনের মুখে পড়তে হয়। এর পরই শুরু হয় কোভিড-১৯ অতিমারি। তিনি বেশ দক্ষতার সঙ্গে বেশ কিছু প্রতিকূলতা কাটিয়ে ওঠেন। ফ্রান্সে বেকারের সংখ্যা জনগোষ্ঠীর প্রায় ১০ শতাংশ থেকে নিচের দিকে নামিয়ে আনতে সক্ষম হন মাখোঁ। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা এবং দেশটির অর্থনীতি চাঙ্গা করতে তিনি দক্ষতার পরিচয় দেন। মাখোঁ অর্থনীতি ভালো বোঝেন। একসময় তিনি দেশটির জাঁদরেল অর্থমন্ত্রী ছিলেন। এদিকে পরাশক্তি রাশিয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন চালালে তা রোধে বৈদেশিক রাজনীতিতেও তিনি সরব ছিলেন এবং এখনো রয়েছেন। উল্লেখ্য, এ বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ আগামী ছয় মাসের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছেন।
যাঁরা খুব কাছে থেকে ভোটারদের মতিগতি বোঝার চেষ্টা করছেন তাঁদের মতে, এবারও ২৪ এপ্রিল চূড়ান্ত ধাপে লড়াই হবে মধ্যপন্থী ইমানুয়েল মাখোঁ ও কট্টর ডানপন্থী নেতা মারিন লো পেনের মধ্যে। দ্বিতীয়বারের মতো ইমানুয়েল মাখোঁ ফরাসি প্রেসিডেন্টের জন্য রক্ষিত আসনে আসীন হতে যাচ্ছেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জরিপে সেই সম্ভাবনা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
তার পরও কথা থাকে। জনমত জরিপ থেকে নির্বাচনের ফলাফল সম্পর্কে আগাম ধারণা পাওয়া গেলেও তা যে সব সময় সঠিক হবে এটা ভাবা সংগত নয়। আর গণতন্ত্রে জনগণই যখন সব ক্ষমতার উৎস, তখন আমাদের নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আর সেই ফলাফলের ওপরই নির্ভর করবে যে প্রশ্নটির উত্তর, তা হলো, শেষ হাসি কে হাসবেন?
লেখক: ফ্রান্সপ্রবাসী লেখক
বিশ্লেষণ সম্পর্কিত পড়ুন:
ওরা ১২ জন, চারজন নারী ও আটজন পুরুষ। কিন্তু একটা মাত্র চেয়ার। তাঁদের সবার দৃষ্টি এখন এই রাজকীয় চেয়ারটির দিকে, সবাই এটি নিজের দখলে নিতে চান। সবাই দেশপ্রেমিক। দেশের মঙ্গল করতে, দেশবাসীকে আরাম, আয়েশ আর স্বস্তিতে রাখতে তাঁরা সবাই অন্তঃপ্রাণ।
আগামী ১০ ও ২৪ এপ্রিল দুই দফায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ফ্রান্সের পঞ্চম প্রজাতন্ত্রের দ্বাদশ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ফ্রান্সের নির্বাচনী ব্যবস্থা অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম পর্বে যদি কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশ ভোট অর্জন করতে ব্যর্থ হন, তাহলে দ্বিতীয় পর্বের নির্বাচনে অংশ নেবেন তাঁদের মধ্যে সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া দুই প্রার্থী। মোট ১২ জন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর মধ্য থেকে প্রথম দফায় ১০ এপ্রিল সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত দুজন প্রতিদ্বন্দ্বীকে চূড়ান্ত লড়াইয়ের জন্য বাছাই করবেন ৪ কোটি ৮৭ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক ফরাসি নাগরিক-ভোটার। ইতিমধ্যে সরকারি খরচে প্রতিটি ভোটারের ঠিকানায় সব প্রার্থীর ছবি এবং পরিচিতিসহ চার পাতার নির্বাচনী ইশতেহার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
চেয়ার বলার চেয়ে ‘মসনদ’ বলাই ভালো। কারণ যে ব্যক্তি এই আসনে উপবেশন করার জন্য দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে নির্বাচিত হবেন, তিনি হবেন দেশটির পঞ্চম প্রজাতন্ত্রের নবম প্রেসিডেন্ট। দেশের প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে প্যারিসের এলিজে প্রাসাদের বাসিন্দা হবেন গুনে গুনে পাঁচ বছরের জন্য। বলে রাখা ভালো, ফ্রান্সে রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকারব্যবস্থা বিদ্যমান।
পাঁচ বছর আগে ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মোট প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ১১ জন। এবার একজন বেশি। কয়েকটি নতুন মুখ ছাড়া এবারের নির্বাচনেও ঘুরেফিরে সেই পুরোনো প্রার্থীরাই আবারও নির্বাচনী লড়াইয়ে নেমেছেন। সেবার নির্বাচিত হয়েছিলেন ৩৯ বছর বয়সের মধ্যপন্থী প্রার্থী ইমানুয়েল মাখোঁ। অনেকটা ভাগ্যচক্রে তিনি ফরাসি রাজনীতির কেন্দ্রে চলে আসেন। এর আগে প্রায় ৪৫ বছর ধরে ক্ষমতার পালাবদল ডান ও বামদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কম্যুনিস্ট, পরিবেশবাদী আর কট্টরপন্থীরা তাতে মোটেই নাক গলাতে পারেনি। সে বছর ইমানুয়েল মাখোঁ বাম ও ডানপন্থী প্রার্থীদের পরাজিত করেন। পরে দ্বিতীয় দফায় ভোটে পরাজিত করেন কট্টর ডানপন্থী প্রার্থী মারিন লো পেনকে। দ্বিতীয় দফায় মাখোঁ পেয়েছিলেন ৬৬ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ ভোট। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী মারিন লো পেনের ভাগ্যে জুটেছিল ৩৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ ভোট।
এ বছর সনাতন বাম ও ডানদের মধ্য থেকে প্রার্থী হয়েছেন দুজন নারী। সোশ্যালিস্ট পার্টির পক্ষ থেকে প্রার্থী হয়েছেন প্যারিস নগরীর মেয়র ৬২ বছর বয়সী অ্যান হিডালগো। আর রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ভ্যালেরি পেক্রেস, তাঁর বয়স ৫৪ বছর। বিভিন্ন জরিপের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে যে, দুজনেই ১০ এপ্রিল প্রথম দফায় অনেক ব্যবধানে নির্বাচনের ময়দান থেকে বিদায় নেবেন। বিশ্লেষকদের ধারণা, তাঁরা দুজনেই অনেকটা বাম ও ডান রাজনীতির মুখ রাখতেই ভোটের লড়াইয়ে নাম লিখিয়েছেন।
কট্টর বামপন্থীদের মধ্যে এগিয়ে আছেন ‘জাগ্রত ফ্রান্স’ অর্থাৎ ‘লা ফ্রন্সঁ আনসুমিজ’ দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জঁ লুক মেলনশোঁ। অভিবাসীবান্ধব বলে কিছু ভোট নিজের দিকে টানতে পারলেও ২০ শতাংশের বেশি ভোট তাঁর বাক্সে পড়বে না বলে জরিপকারীদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
জরিপে অনেকটা এগিয়ে আছেন কট্টর ডানপন্থী দল, জাতীয় জমায়েতের প্রার্থী ৫৩ বছর বয়সী ম্যাডাম মারিন লো পেন। জরিপে দেখা যাচ্ছে যে তিনি প্রথম ধাপে ২০ শতাংশের বেশি ভোট পাবেন। মারিন লো পেন মুসলিম অভিবাসীদের কট্টর বিরোধী। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ফ্রান্সকে বের করে আনবেন বলে যে আস্ফালন শুরু করেছিলেন, তা থেকে অনেকটাই তিনি সরে এসেছেন। এদিকে কট্টর ডানপন্থীদের মধ্যে আরও বেশি মাত্রায় কট্টর প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ৬৩ বছর বয়সী এরিক জেমুর। তিনি ১০ শতাংশের কাছাকাছি ভোট পেতে পারেন বলে জরিপে উঠে এসেছে। নির্বাচনের প্রথম ধাপে বাদবাকি ছয়জন প্রার্থীকে ১ শতাংশ থেকে ৩ শতাংশ ভোট কুড়াতেই গলদঘর্ম হতে হবে বলেও জানা গেছে জরিপ থেকে।
সব জরিপে সব প্রার্থী থেকে অনেকটা ব্যবধানে এগিয়ে আছেন ‘এগিয়ে চলো’ আন্দোলনের নেতা ৪৪ বছর বয়সী বিদায়ি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ। প্রায় ৩০ শতাংশের কাছাকাছি ভোট পাওয়ার সম্ভাবনা আছে মাখোঁর। গত মেয়াদে ইমানুয়েল মাখোঁ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁকে ‘হলুদ কোর্তা’ খ্যাত সরকারবিরোধী ব্যাপক আন্দোলনের মুখে পড়তে হয়। এর পরই শুরু হয় কোভিড-১৯ অতিমারি। তিনি বেশ দক্ষতার সঙ্গে বেশ কিছু প্রতিকূলতা কাটিয়ে ওঠেন। ফ্রান্সে বেকারের সংখ্যা জনগোষ্ঠীর প্রায় ১০ শতাংশ থেকে নিচের দিকে নামিয়ে আনতে সক্ষম হন মাখোঁ। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা এবং দেশটির অর্থনীতি চাঙ্গা করতে তিনি দক্ষতার পরিচয় দেন। মাখোঁ অর্থনীতি ভালো বোঝেন। একসময় তিনি দেশটির জাঁদরেল অর্থমন্ত্রী ছিলেন। এদিকে পরাশক্তি রাশিয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন চালালে তা রোধে বৈদেশিক রাজনীতিতেও তিনি সরব ছিলেন এবং এখনো রয়েছেন। উল্লেখ্য, এ বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ আগামী ছয় মাসের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছেন।
যাঁরা খুব কাছে থেকে ভোটারদের মতিগতি বোঝার চেষ্টা করছেন তাঁদের মতে, এবারও ২৪ এপ্রিল চূড়ান্ত ধাপে লড়াই হবে মধ্যপন্থী ইমানুয়েল মাখোঁ ও কট্টর ডানপন্থী নেতা মারিন লো পেনের মধ্যে। দ্বিতীয়বারের মতো ইমানুয়েল মাখোঁ ফরাসি প্রেসিডেন্টের জন্য রক্ষিত আসনে আসীন হতে যাচ্ছেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জরিপে সেই সম্ভাবনা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
তার পরও কথা থাকে। জনমত জরিপ থেকে নির্বাচনের ফলাফল সম্পর্কে আগাম ধারণা পাওয়া গেলেও তা যে সব সময় সঠিক হবে এটা ভাবা সংগত নয়। আর গণতন্ত্রে জনগণই যখন সব ক্ষমতার উৎস, তখন আমাদের নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আর সেই ফলাফলের ওপরই নির্ভর করবে যে প্রশ্নটির উত্তর, তা হলো, শেষ হাসি কে হাসবেন?
লেখক: ফ্রান্সপ্রবাসী লেখক
বিশ্লেষণ সম্পর্কিত পড়ুন:
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গর্ভমেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গ
৩ দিন আগেপরিশেষে বলা যায়, হাসিনার চীনা ধাঁচের স্বৈরশাসক শাসিত রাষ্ট্র গড়ে তোলার প্রয়াস ব্যর্থ হয় একাধিক কারণে। তাঁর বৈষম্যমূলক এবং এলিটপন্থী বাঙালি-আওয়ামী আদর্শ জনসাধারণ গ্রহণ করেনি, যা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির গণমুখী আদর্শের বিপরীত। ২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক মন্দা তাঁর শাসনকে দুর্বল করে দেয়, পাশাপাশি
৭ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় মোটামুটি সারা বিশ্বকেই নাড়িয়ে দিয়েছে। বাদ যায়নি তাঁর প্রতিবেশী দেশগুলো। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের এই জয়ের বড় প্রভাব পড়বে প্রতিবেশী দেশগুলোয়।
৯ দিন আগেমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পর বিশ্বের অনেক অঞ্চলে নতুন উদ্বেগ ও প্রত্যাশার সৃষ্টি হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সতর্কভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, ইউক্রেন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, আর ইসরায়েল অনেকটা খুশিতে উদ্বেলিত। তবে বিশেষ নজরে আছে পারস্য উপসাগরীয় তেলসমৃদ্ধ দেশগুলো।
১০ দিন আগে