অনলাইন ডেস্ক
‘আমরা এখন মুক্ত, আমরা এখন স্বাধীন দেশ’—শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের পর এভাবেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বাংলাদেশের নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একই সঙ্গে শেখ হাসিনার একদলীয় একনায়কতান্ত্রিক শাসনের পতনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী দেশের তরুণ-যুবসমাজকেও ধন্যবাদ জানান তিনি।
উচ্চ বেকারত্বের কারণে কয়েক মাস ধরেই উত্তপ্ত ছিল বাংলাদেশ। করোনা মহামারির কারণে বাংলাদেশের রপ্তানিমুখী অর্থনীতি অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়ে। তারপর থেকেই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি স্থবির ও বেকারত্বের হার বাড়ছিল। বিভিন্ন প্রতিবেদন বলছে, ১৫-২৪ বছর বয়সী কিশোর-তরুণদের ৪১ শতাংশই স্কুলে যায় না কিংবা কোনো কাজে নিযুক্ত নয়।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত এক নির্বাচনে টানা চতুর্থবার ক্ষমতায় আসেন শেখ হাসিনা। বিরোধী দলগুলো কারচুপির অভিযোগ এনে এই নির্বাচন বয়কট করে। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি অভিযোগ করেছে, আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচনের আগে তাদের ২৫ হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, এই নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ছিল না।
এর অর্থ হলো, শেখ হাসিনার শাসনের বৈধতা নিয়ে ব্যাপক প্রশ্ন ছিল এবং ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক অসন্তোষ তাঁর শাসনের স্থিতিশীলতাকে আরও ক্ষয়িষ্ণু করতে শুরু করে। সহিংস দমনপীড়ন—এমনকি শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার কয়েক ঘণ্টা আগেও অন্তত ৯৯ জনকে হত্যা করা হয়েছে। সারা দেশে তাঁর সমর্থন তলানিতে পৌঁছায়। একপর্যায়ে গত সোমবার দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এখন তিনি ভারতে অবস্থান করছেন।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে তরুণ প্রজন্ম, যারা জেনারেশন-জেড বা জেন-জি নামে পরিচিত। বিশ্বজুড়ে পূর্ববর্তী প্রজন্মগুলোর কাছে এই জেন-জি অলস ও খুবই আলাভোলা হিসেবে পরিচিত। কিন্তু বিস্ময়করভাবে এই প্রজন্মই শেখ হাসিনার ওপর ক্রমাগত চাপ প্রয়োগ করেছে এবং তাঁকে পদত্যাগে বাধ্য করেছে।
সরকারি চাপের কারণে দেশের মূলধারার গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে না পারায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলনকে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য এই প্রজন্ম ইন্টারনেটকে মূল হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় আন্দোলন দমনে হাসিনা সরকার ১১ দিনের জন্য ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিল। কারফিউ ঘোষণা করে ‘শুট অ্যাট সাইট’ বা দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিল।
এরই ধারাবাহিকতায় পুলিশের গুলিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রথম নিহত হন আবু সাঈদ। তাঁর ওপর পুলিশের গুলি চালানোর ভিডিও ভাইরাল হয়। কিন্তু সাঈদের ওপর পুলিশের গুলি চালানো থেকে নিশ্চিত হয়ে যায় যে, শেখ হাসিনা সরকার পদত্যাগে মোটেও ইচ্ছুক ছিল না।
গুলি করার পাশাপাশি মৌখিকভাবেও হাসিনা আন্দোলনকারীদের আক্রমণ করেছেন। তিনি আন্দোলনকারীদের প্রতি ‘রাজাকার’ শব্দ ব্যবহার করে তাদের বিশ্বাসঘাতক হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছিলেন। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিরা কোটা সুবিধা না পেলে, রাজাকারদের নাতি-নাতনিরা কি সুবিধা পাবে?’
শেখ হাসিনার এই কৌশল আগের প্রজন্মের ওপর খাটলেও নতুন এই প্রজন্মের ক্ষেত্রে এটি কোনো কাজেই আসেনি। বরং ইন্টারনেট ও প্রযুক্তিজ্ঞান কাজে লাগিয়ে আন্দোলনকে গতিশীল করে তোলেন তাঁরা। এই আন্দোলন দমনে শেখ হাসিনা সরকারের সব কৌশলই বুমেরাং হয়েছে। সেগুলো সমাজের সব স্তরের মানুষকে আন্দোলনে যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে উৎসাহ জুগিয়েছে। বিশেষ করে সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও নাগরিক সমাজও এই আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল।
এই আন্দোলনে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হলো—বাস্তব জীবন নিয়ে নির্বিকার মনে করা হতো যেই তরুণসমাজকে, তারাই সরকার পতনের আন্দোলনকে সংগঠিত করেছে। তারা রাষ্ট্রের নির্মম দমনের মুখে মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে গেছে। একনায়কের পতন ঘটিয়ে বাংলাদেশের জেন-জি বিশ্বকে ইঙ্গিত দিয়েছে যে, এই প্রজন্ম কেবল রাজনীতি ও প্রযুক্তিসচেতনই নয়, ক্ষমতাসীনদের দমন-পীড়ন মোকাবিলার শক্তিও তাদের আছে।
এই আন্দোলনের সাফল্য কেবল বৃহত্তর দক্ষিণ এশীয় অঞ্চল নয়, সারা বিশ্বের একনায়কদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। আইন প্রণয়ন ও অন্যান্য পদ্ধতির মাধ্যমে বিকেন্দ্রীকৃত গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্যে এরই মধ্যে এই অঞ্চলে শাসকদের প্রচেষ্টা চলছে। আগামী দিনগুলোতে, প্রচেষ্টাগুলো আরও তীব্র হতে পারে। কারণ, শাসকশ্রেণি প্রতিবাদের মাধ্যম হিসেবে ইন্টারনেট ব্যবহারের উপায়গুলোকে সীমাবদ্ধ করতে চাইবে। তবে এই পথে যাওয়াটা হবে মূর্খতা। কারণ, তরুণ প্রজন্ম এ ধরনের প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে সমাধান খুঁজে বের করতে থাকবে।
এর মধ্যেই ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরপর কী হবে, তা দেখার বিষয়। আন্দোলনকারীরাও বলেছেন, তাঁরা অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য তাঁদের প্রস্তাব প্রকাশ করবেন। তাঁরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া রক্ষার বিষয়েও দৃঢ়তা দেখিয়েছেন। ছাত্রদের বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সমন্বয়কারী বলেছেন, ‘সেনাপ্রধান যদি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন এবং সরকার গঠন করেন, আমরা তা মেনে নেব না।’
এরই মধ্যে সারা দেশে অগ্নিসংযোগ, সহিংসতা ও লুটপাট চলছে। দেশজুড়ে অমুসলিমদের বিরুদ্ধে সহিংসতার খবরও পাওয়া গেছে। আশঙ্কার বিষয় হলো, বিশৃঙ্খলা অব্যাহত থাকলে গণতান্ত্রিক দেশে উত্তরণ ঘটতে পারে না। এমন পরিণতি ঠেকাতে হলে আইনের শাসন, সমতা ও গণতন্ত্রের ভিত্তিতে বাংলাদেশের জন্য নতুন রূপকল্প তৈরিতে নবশক্তিকে কাজে লাগাতে হবে।
মিসরসহ অনেক দেশে তরুণদের নেতৃত্বে বিপ্লবের অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে। কিন্তু সেসব বিপ্লব যে ধরনের পরিবর্তন আনবে বলে ধারণা করা হয়েছিল, তা আনতে ব্যর্থ হয়েছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে, আগের শক্তি অনেক দ্রুতই ফিরে আসে সহিংসতার মধ্য দিয়ে। বাংলাদেশেও অগণতান্ত্রিক সামরিক শাসনের ইতিহাস আছে। আবারও বাংলাদেশ সেই পথে যেতে পারে।
যাতে এমনটা না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে নিশ্চিত করতে হবে যে, তারা দেশের রাজনীতিতে যুক্ত থাকবে। প্রতিবাদের পর আন্দোলনকারীদের বিচ্ছিন্নতা কেবল আগের শক্তি তথা স্ট্যাটাস ক্যুকেই ফিরে আসার সুযোগ দেয় এবং টেকসইভাবে পরিবর্তনের পথ রুদ্ধ করে। বাংলাদেশে যাতে এমনটা না হয়, তা নিশ্চিত করতে জেন-জিকে চাপ বজায় রাখতে হবে।
দ্য ডন থেকে অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান
‘আমরা এখন মুক্ত, আমরা এখন স্বাধীন দেশ’—শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের পর এভাবেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বাংলাদেশের নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একই সঙ্গে শেখ হাসিনার একদলীয় একনায়কতান্ত্রিক শাসনের পতনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী দেশের তরুণ-যুবসমাজকেও ধন্যবাদ জানান তিনি।
উচ্চ বেকারত্বের কারণে কয়েক মাস ধরেই উত্তপ্ত ছিল বাংলাদেশ। করোনা মহামারির কারণে বাংলাদেশের রপ্তানিমুখী অর্থনীতি অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়ে। তারপর থেকেই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি স্থবির ও বেকারত্বের হার বাড়ছিল। বিভিন্ন প্রতিবেদন বলছে, ১৫-২৪ বছর বয়সী কিশোর-তরুণদের ৪১ শতাংশই স্কুলে যায় না কিংবা কোনো কাজে নিযুক্ত নয়।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত এক নির্বাচনে টানা চতুর্থবার ক্ষমতায় আসেন শেখ হাসিনা। বিরোধী দলগুলো কারচুপির অভিযোগ এনে এই নির্বাচন বয়কট করে। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি অভিযোগ করেছে, আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচনের আগে তাদের ২৫ হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, এই নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ছিল না।
এর অর্থ হলো, শেখ হাসিনার শাসনের বৈধতা নিয়ে ব্যাপক প্রশ্ন ছিল এবং ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক অসন্তোষ তাঁর শাসনের স্থিতিশীলতাকে আরও ক্ষয়িষ্ণু করতে শুরু করে। সহিংস দমনপীড়ন—এমনকি শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার কয়েক ঘণ্টা আগেও অন্তত ৯৯ জনকে হত্যা করা হয়েছে। সারা দেশে তাঁর সমর্থন তলানিতে পৌঁছায়। একপর্যায়ে গত সোমবার দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এখন তিনি ভারতে অবস্থান করছেন।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে তরুণ প্রজন্ম, যারা জেনারেশন-জেড বা জেন-জি নামে পরিচিত। বিশ্বজুড়ে পূর্ববর্তী প্রজন্মগুলোর কাছে এই জেন-জি অলস ও খুবই আলাভোলা হিসেবে পরিচিত। কিন্তু বিস্ময়করভাবে এই প্রজন্মই শেখ হাসিনার ওপর ক্রমাগত চাপ প্রয়োগ করেছে এবং তাঁকে পদত্যাগে বাধ্য করেছে।
সরকারি চাপের কারণে দেশের মূলধারার গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে না পারায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলনকে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য এই প্রজন্ম ইন্টারনেটকে মূল হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় আন্দোলন দমনে হাসিনা সরকার ১১ দিনের জন্য ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিল। কারফিউ ঘোষণা করে ‘শুট অ্যাট সাইট’ বা দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিল।
এরই ধারাবাহিকতায় পুলিশের গুলিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রথম নিহত হন আবু সাঈদ। তাঁর ওপর পুলিশের গুলি চালানোর ভিডিও ভাইরাল হয়। কিন্তু সাঈদের ওপর পুলিশের গুলি চালানো থেকে নিশ্চিত হয়ে যায় যে, শেখ হাসিনা সরকার পদত্যাগে মোটেও ইচ্ছুক ছিল না।
গুলি করার পাশাপাশি মৌখিকভাবেও হাসিনা আন্দোলনকারীদের আক্রমণ করেছেন। তিনি আন্দোলনকারীদের প্রতি ‘রাজাকার’ শব্দ ব্যবহার করে তাদের বিশ্বাসঘাতক হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছিলেন। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিরা কোটা সুবিধা না পেলে, রাজাকারদের নাতি-নাতনিরা কি সুবিধা পাবে?’
শেখ হাসিনার এই কৌশল আগের প্রজন্মের ওপর খাটলেও নতুন এই প্রজন্মের ক্ষেত্রে এটি কোনো কাজেই আসেনি। বরং ইন্টারনেট ও প্রযুক্তিজ্ঞান কাজে লাগিয়ে আন্দোলনকে গতিশীল করে তোলেন তাঁরা। এই আন্দোলন দমনে শেখ হাসিনা সরকারের সব কৌশলই বুমেরাং হয়েছে। সেগুলো সমাজের সব স্তরের মানুষকে আন্দোলনে যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে উৎসাহ জুগিয়েছে। বিশেষ করে সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও নাগরিক সমাজও এই আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল।
এই আন্দোলনে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হলো—বাস্তব জীবন নিয়ে নির্বিকার মনে করা হতো যেই তরুণসমাজকে, তারাই সরকার পতনের আন্দোলনকে সংগঠিত করেছে। তারা রাষ্ট্রের নির্মম দমনের মুখে মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে গেছে। একনায়কের পতন ঘটিয়ে বাংলাদেশের জেন-জি বিশ্বকে ইঙ্গিত দিয়েছে যে, এই প্রজন্ম কেবল রাজনীতি ও প্রযুক্তিসচেতনই নয়, ক্ষমতাসীনদের দমন-পীড়ন মোকাবিলার শক্তিও তাদের আছে।
এই আন্দোলনের সাফল্য কেবল বৃহত্তর দক্ষিণ এশীয় অঞ্চল নয়, সারা বিশ্বের একনায়কদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। আইন প্রণয়ন ও অন্যান্য পদ্ধতির মাধ্যমে বিকেন্দ্রীকৃত গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্যে এরই মধ্যে এই অঞ্চলে শাসকদের প্রচেষ্টা চলছে। আগামী দিনগুলোতে, প্রচেষ্টাগুলো আরও তীব্র হতে পারে। কারণ, শাসকশ্রেণি প্রতিবাদের মাধ্যম হিসেবে ইন্টারনেট ব্যবহারের উপায়গুলোকে সীমাবদ্ধ করতে চাইবে। তবে এই পথে যাওয়াটা হবে মূর্খতা। কারণ, তরুণ প্রজন্ম এ ধরনের প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে সমাধান খুঁজে বের করতে থাকবে।
এর মধ্যেই ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরপর কী হবে, তা দেখার বিষয়। আন্দোলনকারীরাও বলেছেন, তাঁরা অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য তাঁদের প্রস্তাব প্রকাশ করবেন। তাঁরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া রক্ষার বিষয়েও দৃঢ়তা দেখিয়েছেন। ছাত্রদের বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সমন্বয়কারী বলেছেন, ‘সেনাপ্রধান যদি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন এবং সরকার গঠন করেন, আমরা তা মেনে নেব না।’
এরই মধ্যে সারা দেশে অগ্নিসংযোগ, সহিংসতা ও লুটপাট চলছে। দেশজুড়ে অমুসলিমদের বিরুদ্ধে সহিংসতার খবরও পাওয়া গেছে। আশঙ্কার বিষয় হলো, বিশৃঙ্খলা অব্যাহত থাকলে গণতান্ত্রিক দেশে উত্তরণ ঘটতে পারে না। এমন পরিণতি ঠেকাতে হলে আইনের শাসন, সমতা ও গণতন্ত্রের ভিত্তিতে বাংলাদেশের জন্য নতুন রূপকল্প তৈরিতে নবশক্তিকে কাজে লাগাতে হবে।
মিসরসহ অনেক দেশে তরুণদের নেতৃত্বে বিপ্লবের অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে। কিন্তু সেসব বিপ্লব যে ধরনের পরিবর্তন আনবে বলে ধারণা করা হয়েছিল, তা আনতে ব্যর্থ হয়েছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে, আগের শক্তি অনেক দ্রুতই ফিরে আসে সহিংসতার মধ্য দিয়ে। বাংলাদেশেও অগণতান্ত্রিক সামরিক শাসনের ইতিহাস আছে। আবারও বাংলাদেশ সেই পথে যেতে পারে।
যাতে এমনটা না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে নিশ্চিত করতে হবে যে, তারা দেশের রাজনীতিতে যুক্ত থাকবে। প্রতিবাদের পর আন্দোলনকারীদের বিচ্ছিন্নতা কেবল আগের শক্তি তথা স্ট্যাটাস ক্যুকেই ফিরে আসার সুযোগ দেয় এবং টেকসইভাবে পরিবর্তনের পথ রুদ্ধ করে। বাংলাদেশে যাতে এমনটা না হয়, তা নিশ্চিত করতে জেন-জিকে চাপ বজায় রাখতে হবে।
দ্য ডন থেকে অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গর্ভমেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গ
২ দিন আগেপরিশেষে বলা যায়, হাসিনার চীনা ধাঁচের স্বৈরশাসক শাসিত রাষ্ট্র গড়ে তোলার প্রয়াস ব্যর্থ হয় একাধিক কারণে। তাঁর বৈষম্যমূলক এবং এলিটপন্থী বাঙালি-আওয়ামী আদর্শ জনসাধারণ গ্রহণ করেনি, যা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির গণমুখী আদর্শের বিপরীত। ২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক মন্দা তাঁর শাসনকে দুর্বল করে দেয়, পাশাপাশি
৬ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় মোটামুটি সারা বিশ্বকেই নাড়িয়ে দিয়েছে। বাদ যায়নি তাঁর প্রতিবেশী দেশগুলো। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের এই জয়ের বড় প্রভাব পড়বে প্রতিবেশী দেশগুলোয়।
৮ দিন আগেমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পর বিশ্বের অনেক অঞ্চলে নতুন উদ্বেগ ও প্রত্যাশার সৃষ্টি হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সতর্কভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, ইউক্রেন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, আর ইসরায়েল অনেকটা খুশিতে উদ্বেলিত। তবে বিশেষ নজরে আছে পারস্য উপসাগরীয় তেলসমৃদ্ধ দেশগুলো।
৯ দিন আগে