ইয়াসিন আরাফাত
চলতি বছরের শুরুতে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোতে বাড়তে থাকে করোনার টিকা প্রয়োগের হার। সে সময় ওই অঞ্চলের অনেক নেতাই করোনার টিকাকে মহামারি থেকে বেরিয়ে আসার তাৎক্ষণিক পথ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। তবে এই মহামারি ঠেকাতে যে শুধু টিকা যথেষ্ট নয়, তা আবারও দেখিয়ে দিচ্ছে করোনা। পুরো ইউরোপে ফের ভাইরাসটির প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সংক্রমণ বাড়তে থাকার কারণে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের হাসপাতালগুলোতে শয্যার সংকট তীব্র হয়ে উঠছে। কিছু রোগীকে সীমান্তবর্তী প্রতিবেশী দেশ জার্মানিতে পাঠানো শুরু করেছে নেদারল্যান্ডস। করোনা সংক্রমণের ব্যাপক বিস্তারে লাগাম টানতে সম্প্রতি আংশিক লকডাউন জারি করেছে দেশটি। এই লকডাউনের আওতায় টিকার ডোজ সম্পূর্ণ করেননি এমন ব্যক্তিদের জনসমাগমপূর্ণ স্থানে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এদিকে জার্মানিতেও সম্প্রতি ক্রমান্বয়ে বাড়ছে করোনার দৈনিক সংক্রমণ ও মৃত্যু। দেশটির জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বর্তমানে করোনার চতুর্থ ঢেউয়ের মুখে রয়েছে জার্মানি। ওদিকে এরই মধ্যে অস্ট্রিয়ায় লকডাউন জারি করা হয়েছে।
মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনের একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, করোনার সংক্রমণ বাড়ায় আয়ারল্যান্ডেও রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করা হয়েছে। দেশটিতে এরই মধ্যে ১২ বছরের বেশি বয়সীদের ৮৯ শতাংশই করোনার টিকা পেয়েছে। এ ছাড়া পর্তুগালে ৮৭ শতাংশ মানুষের টিকা নেওয়া থাকলেও সেখানে সংক্রমণ কমাতে বিধিনিষেধ আরোপের কথা ভাবছে সরকার। এদিকে যুক্তরাজ্যেও হুহু করে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। দেশটি এখনো লকডাউনের চিন্তা না করলেও সেখানকার জনগণকে টিকার বুস্টার ডোজ নেওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে।
ইউরোপের বিভিন্ন দেশের নেতারা মনে করছেন, মোট জনগোষ্ঠীর যে বাকি অংশকে টিকা দেওয়া যায়নি, তাদের কারণেই করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। এ কারণে গত শুক্রবার অস্ট্রিয়া সরকার জানায়, আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে দেশটির সবার জন্য টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক। গত ১৭ নভেম্বর আয়ারল্যান্ডের উপপ্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকার সিএনএনকে বলেন, টিকা না নেওয়া ব্যক্তিরাই সংক্রমণ বাড়াচ্ছে। যদি সবাই টিকা নিত, তাহলে আর বিধিনিষেধ প্রয়োগের প্রয়োজন হতো না।
তবে এসব যুক্তি মানতে নারাজ বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, শুধু মাত্র টিকা দিয়ে একটি মহামারি ঠেকানো সম্ভব নয়। এ নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক নির্বাহী পরিচালক ডেভিড হেইম্যান বলেন, ‘টিকা মৃত্যু ঠেকাচ্ছে, কিন্তু আমরা যা দেখছি তা হলো একটি ভাইরাস, যা নিজেকে স্থানীয় একটি সত্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে এবং কিছু দেশে এটি অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি সক্রিয় হয়েছে, কারণ সেখানে নিয়ন্ত্রণের কঠোরতা কম।’
এ নিয়ে লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের ইনস্টিটিউট অব ইনেফকশনের সহকারী পরিচালক চার্লস বাংহ্যাম বলছেন, টিকা খুব ভালো সুরক্ষা দেয়। এতে গুরুতর রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। তবে করোনার ডেলটা ধরন খুবই সংক্রামক। একই সঙ্গে বিভিন্ন দেশের জনগণের মধ্যে আচার–ব্যবহারে পরিবর্তন এসেছে। কিছু সতর্কতা সেভাবে পালন করা হচ্ছে না।
চার্লস বাংহ্যামের মতে, ভ্যাকসিন প্রয়োগের হার খুব ভালো হলেও করোনার এই সংক্রমণ থামানো সম্ভব নয়।
জার্মানির হামবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লাইড সায়েন্সেস বিভাগের এপিডেমিওলজি অ্যান্ড পাবলিক হেলথ সার্ভেইলেন্স বিভাগের অধ্যক্ষ রালফ রেইন্টজেস বলেন, টিকা সাহায্য করে। তারা ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করার প্রক্রিয়ায় একটি বাধা। তবে এটি একা যথেষ্ট শক্তিশালী নয়।
চলতি শীত মৌসুমে ইউরোপে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী চিত্রে শঙ্কা জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সম্প্রতি এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, শীত পেরিয়ে বসন্ত আসার আগেই করোনায় আরও ৭ লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে ইউরোপে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ইউরোপ মহাদেশের ৫৩ দেশে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা ১৫ লাখ। নতুন আরও ৭ লাখ মৃত্যু হলে এই সংখ্যা পৌঁছাবে ২২ লাখে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপ শাখা থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এরই মধ্যে বলা হয়েছে, ‘ইউরোপের ৫৩টি দেশের মধ্যে ৪৯টি দেশের হাসপাতালগুলোর আইসিইউতে উপচে পড়ছে করোনা রোগীর ভিড়। চলতি বছর মার্চের পর গত ছয় মাসে সংক্রমণের এত বিস্তার ইউরোপে দেখা যায়নি।’
করোনাভাইরাসের অতিসংক্রামক ও পরিবর্তিত ধরন ডেল্টার বিস্তার, টিকাদান কর্মসূচির ধীরগতি, মাস্ক পরা ও শারীরিক দূরত্ব মেনে চলার ক্ষেত্রে শিথিলতা প্রভৃতি কারণে ইউরোপে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে বলে একটি বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
এদিকে ইউরোপের চলমান করোনাভাইরাস সংকট অনেকটাই তার বয়স্ক জনসংখ্যার জন্য ভুল টিকা বেছে নেওয়ার কারণে হতে পারে বলে মনে করেন অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রধান নির্বাহী প্যাসকেল সরিওট। বিবিসির এক অনুষ্ঠানে সরিওট বলেন, ‘যখন আপনি যুক্তরাজ্যের দিকে তাকান, সেখানে সংক্রমণ শীর্ষ ছুঁয়েছিল। তবে ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় দেশটির এত বেশি মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়নি। যুক্তরাজ্যে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাটি বয়স্ক লোকদের দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল। যেখানে ইউরোপের অন্যান্য অঞ্চলে প্রাথমিকভাবে লোকেরা ভেবেছিল যে এই টিকা বয়স্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে কাজ করে না।’
সরিওটের দাবি, যে টিকাগুলো এমআরএনএ প্রযুক্তি ব্যবহার করে, যেমন—মডার্না বা ফাইজার-বায়োএনটেক, সেগুলো প্রাথমিকভাবে ভালো পরিমাণ অ্যান্টিবডি তৈরি করে। কিন্তু সেই সুরক্ষা কিছু সময় পরেই হ্রাস পেতে শুরু করে। ওদিকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের মতো ভাইরাল ভেক্টর ব্যবহার করে তৈরি টিকাগুলো শক্তিশালী টি-সেল তৈরি করতে পারে। তিনি বলছেন, এটি করোনা প্রতিরোধে বেশি কাজে দেয়।
ইসরায়েলের ৪ হাজার ৮০০ স্বাস্থ্যকর্মীর ওপরে করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে, দুই ডোজ টিকা দেওয়ার পরে অ্যান্টিবডির মাত্রা দ্রুত হ্রাস পায়। বিশেষ করে ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী পুরুষের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি। কাতারেও টিকা নিয়ে একটি গবেষণা করা হয়েছে। যেখানে দেখা গেছে, ফাইজার-বায়োএনটেকের তৈরি করোনা টিকার দুই ডোজ নেওয়ার দুই মাস পরই কমতে থাকে কার্যকারিতা।
অবশ্য করোনার টিকা নিয়ে বিশ্বজুড়ে চলা নানামাত্রিক রাজনীতির কারণে বিভিন্ন পদ্ধতিতে তৈরি টিকাগুলোর দীর্ঘমেয়াদি কার্যকারিতা নিয়ে এখনই স্পষ্ট কোনো সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব হচ্ছে না। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব বিষয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যকে একপাশে সরিয়ে রেখে ভাবা উচিত সব পক্ষের। তবেই করোনার টিকা, এর প্রয়োগ ও কার্যকারিতা নিয়ে একটি সাধারণ সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যাবে। আর কেবল তখনই করোনাভাইরাস ঠেকানোর পথে সত্যিকারের ও চিরস্থায়ী অগ্রগতির দেখা পাবে মানুষ।
চলতি বছরের শুরুতে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোতে বাড়তে থাকে করোনার টিকা প্রয়োগের হার। সে সময় ওই অঞ্চলের অনেক নেতাই করোনার টিকাকে মহামারি থেকে বেরিয়ে আসার তাৎক্ষণিক পথ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। তবে এই মহামারি ঠেকাতে যে শুধু টিকা যথেষ্ট নয়, তা আবারও দেখিয়ে দিচ্ছে করোনা। পুরো ইউরোপে ফের ভাইরাসটির প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সংক্রমণ বাড়তে থাকার কারণে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের হাসপাতালগুলোতে শয্যার সংকট তীব্র হয়ে উঠছে। কিছু রোগীকে সীমান্তবর্তী প্রতিবেশী দেশ জার্মানিতে পাঠানো শুরু করেছে নেদারল্যান্ডস। করোনা সংক্রমণের ব্যাপক বিস্তারে লাগাম টানতে সম্প্রতি আংশিক লকডাউন জারি করেছে দেশটি। এই লকডাউনের আওতায় টিকার ডোজ সম্পূর্ণ করেননি এমন ব্যক্তিদের জনসমাগমপূর্ণ স্থানে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এদিকে জার্মানিতেও সম্প্রতি ক্রমান্বয়ে বাড়ছে করোনার দৈনিক সংক্রমণ ও মৃত্যু। দেশটির জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বর্তমানে করোনার চতুর্থ ঢেউয়ের মুখে রয়েছে জার্মানি। ওদিকে এরই মধ্যে অস্ট্রিয়ায় লকডাউন জারি করা হয়েছে।
মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনের একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, করোনার সংক্রমণ বাড়ায় আয়ারল্যান্ডেও রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করা হয়েছে। দেশটিতে এরই মধ্যে ১২ বছরের বেশি বয়সীদের ৮৯ শতাংশই করোনার টিকা পেয়েছে। এ ছাড়া পর্তুগালে ৮৭ শতাংশ মানুষের টিকা নেওয়া থাকলেও সেখানে সংক্রমণ কমাতে বিধিনিষেধ আরোপের কথা ভাবছে সরকার। এদিকে যুক্তরাজ্যেও হুহু করে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। দেশটি এখনো লকডাউনের চিন্তা না করলেও সেখানকার জনগণকে টিকার বুস্টার ডোজ নেওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে।
ইউরোপের বিভিন্ন দেশের নেতারা মনে করছেন, মোট জনগোষ্ঠীর যে বাকি অংশকে টিকা দেওয়া যায়নি, তাদের কারণেই করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। এ কারণে গত শুক্রবার অস্ট্রিয়া সরকার জানায়, আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে দেশটির সবার জন্য টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক। গত ১৭ নভেম্বর আয়ারল্যান্ডের উপপ্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকার সিএনএনকে বলেন, টিকা না নেওয়া ব্যক্তিরাই সংক্রমণ বাড়াচ্ছে। যদি সবাই টিকা নিত, তাহলে আর বিধিনিষেধ প্রয়োগের প্রয়োজন হতো না।
তবে এসব যুক্তি মানতে নারাজ বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, শুধু মাত্র টিকা দিয়ে একটি মহামারি ঠেকানো সম্ভব নয়। এ নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক নির্বাহী পরিচালক ডেভিড হেইম্যান বলেন, ‘টিকা মৃত্যু ঠেকাচ্ছে, কিন্তু আমরা যা দেখছি তা হলো একটি ভাইরাস, যা নিজেকে স্থানীয় একটি সত্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে এবং কিছু দেশে এটি অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি সক্রিয় হয়েছে, কারণ সেখানে নিয়ন্ত্রণের কঠোরতা কম।’
এ নিয়ে লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের ইনস্টিটিউট অব ইনেফকশনের সহকারী পরিচালক চার্লস বাংহ্যাম বলছেন, টিকা খুব ভালো সুরক্ষা দেয়। এতে গুরুতর রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। তবে করোনার ডেলটা ধরন খুবই সংক্রামক। একই সঙ্গে বিভিন্ন দেশের জনগণের মধ্যে আচার–ব্যবহারে পরিবর্তন এসেছে। কিছু সতর্কতা সেভাবে পালন করা হচ্ছে না।
চার্লস বাংহ্যামের মতে, ভ্যাকসিন প্রয়োগের হার খুব ভালো হলেও করোনার এই সংক্রমণ থামানো সম্ভব নয়।
জার্মানির হামবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লাইড সায়েন্সেস বিভাগের এপিডেমিওলজি অ্যান্ড পাবলিক হেলথ সার্ভেইলেন্স বিভাগের অধ্যক্ষ রালফ রেইন্টজেস বলেন, টিকা সাহায্য করে। তারা ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করার প্রক্রিয়ায় একটি বাধা। তবে এটি একা যথেষ্ট শক্তিশালী নয়।
চলতি শীত মৌসুমে ইউরোপে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী চিত্রে শঙ্কা জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সম্প্রতি এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, শীত পেরিয়ে বসন্ত আসার আগেই করোনায় আরও ৭ লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে ইউরোপে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ইউরোপ মহাদেশের ৫৩ দেশে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা ১৫ লাখ। নতুন আরও ৭ লাখ মৃত্যু হলে এই সংখ্যা পৌঁছাবে ২২ লাখে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপ শাখা থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এরই মধ্যে বলা হয়েছে, ‘ইউরোপের ৫৩টি দেশের মধ্যে ৪৯টি দেশের হাসপাতালগুলোর আইসিইউতে উপচে পড়ছে করোনা রোগীর ভিড়। চলতি বছর মার্চের পর গত ছয় মাসে সংক্রমণের এত বিস্তার ইউরোপে দেখা যায়নি।’
করোনাভাইরাসের অতিসংক্রামক ও পরিবর্তিত ধরন ডেল্টার বিস্তার, টিকাদান কর্মসূচির ধীরগতি, মাস্ক পরা ও শারীরিক দূরত্ব মেনে চলার ক্ষেত্রে শিথিলতা প্রভৃতি কারণে ইউরোপে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে বলে একটি বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
এদিকে ইউরোপের চলমান করোনাভাইরাস সংকট অনেকটাই তার বয়স্ক জনসংখ্যার জন্য ভুল টিকা বেছে নেওয়ার কারণে হতে পারে বলে মনে করেন অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রধান নির্বাহী প্যাসকেল সরিওট। বিবিসির এক অনুষ্ঠানে সরিওট বলেন, ‘যখন আপনি যুক্তরাজ্যের দিকে তাকান, সেখানে সংক্রমণ শীর্ষ ছুঁয়েছিল। তবে ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় দেশটির এত বেশি মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়নি। যুক্তরাজ্যে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাটি বয়স্ক লোকদের দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল। যেখানে ইউরোপের অন্যান্য অঞ্চলে প্রাথমিকভাবে লোকেরা ভেবেছিল যে এই টিকা বয়স্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে কাজ করে না।’
সরিওটের দাবি, যে টিকাগুলো এমআরএনএ প্রযুক্তি ব্যবহার করে, যেমন—মডার্না বা ফাইজার-বায়োএনটেক, সেগুলো প্রাথমিকভাবে ভালো পরিমাণ অ্যান্টিবডি তৈরি করে। কিন্তু সেই সুরক্ষা কিছু সময় পরেই হ্রাস পেতে শুরু করে। ওদিকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের মতো ভাইরাল ভেক্টর ব্যবহার করে তৈরি টিকাগুলো শক্তিশালী টি-সেল তৈরি করতে পারে। তিনি বলছেন, এটি করোনা প্রতিরোধে বেশি কাজে দেয়।
ইসরায়েলের ৪ হাজার ৮০০ স্বাস্থ্যকর্মীর ওপরে করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে, দুই ডোজ টিকা দেওয়ার পরে অ্যান্টিবডির মাত্রা দ্রুত হ্রাস পায়। বিশেষ করে ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী পুরুষের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি। কাতারেও টিকা নিয়ে একটি গবেষণা করা হয়েছে। যেখানে দেখা গেছে, ফাইজার-বায়োএনটেকের তৈরি করোনা টিকার দুই ডোজ নেওয়ার দুই মাস পরই কমতে থাকে কার্যকারিতা।
অবশ্য করোনার টিকা নিয়ে বিশ্বজুড়ে চলা নানামাত্রিক রাজনীতির কারণে বিভিন্ন পদ্ধতিতে তৈরি টিকাগুলোর দীর্ঘমেয়াদি কার্যকারিতা নিয়ে এখনই স্পষ্ট কোনো সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব হচ্ছে না। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব বিষয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যকে একপাশে সরিয়ে রেখে ভাবা উচিত সব পক্ষের। তবেই করোনার টিকা, এর প্রয়োগ ও কার্যকারিতা নিয়ে একটি সাধারণ সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যাবে। আর কেবল তখনই করোনাভাইরাস ঠেকানোর পথে সত্যিকারের ও চিরস্থায়ী অগ্রগতির দেখা পাবে মানুষ।
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গর্ভমেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গ
৪ দিন আগেপরিশেষে বলা যায়, হাসিনার চীনা ধাঁচের স্বৈরশাসক শাসিত রাষ্ট্র গড়ে তোলার প্রয়াস ব্যর্থ হয় একাধিক কারণে। তাঁর বৈষম্যমূলক এবং এলিটপন্থী বাঙালি-আওয়ামী আদর্শ জনসাধারণ গ্রহণ করেনি, যা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির গণমুখী আদর্শের বিপরীত। ২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক মন্দা তাঁর শাসনকে দুর্বল করে দেয়, পাশাপাশি
৮ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় মোটামুটি সারা বিশ্বকেই নাড়িয়ে দিয়েছে। বাদ যায়নি তাঁর প্রতিবেশী দেশগুলো। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের এই জয়ের বড় প্রভাব পড়বে প্রতিবেশী দেশগুলোয়।
১০ দিন আগেমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পর বিশ্বের অনেক অঞ্চলে নতুন উদ্বেগ ও প্রত্যাশার সৃষ্টি হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সতর্কভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, ইউক্রেন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, আর ইসরায়েল অনেকটা খুশিতে উদ্বেলিত। তবে বিশেষ নজরে আছে পারস্য উপসাগরীয় তেলসমৃদ্ধ দেশগুলো।
১০ দিন আগে