মন্টি বৈষ্ণব, ঢাকা
সময়টা ছিল ১৯৯৫ সাল। তৃতীয় শ্রেণি পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী স্কুলের বিজ্ঞান মেলায় রক্তের গ্রুপ তৈরি করে হইচই ফেলে দিয়েছিল। সেই ছোট্ট শিক্ষার্থী আর কেউ নন, তিনি অণুজীববিজ্ঞানী সেঁজুতি সাহা। আমরা অনুমান করতে পারি, স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে বিজ্ঞানের সম্পর্ক নিয়ে ভবিষ্যতে তাঁর কর্মযজ্ঞের বীজ সেদিনই বোনা হয়েছিল।
অণুজীববিজ্ঞানের ঘরে বিজ্ঞানী
বাবা ড. সমীর সাহা ও মা ড. সেতারুন্নাহার— দুজনই পেশায় অণুজীববিজ্ঞানী। বেশির ভাগ দিন গবেষক বাবা-মায়ের বাসায় ফিরতে দেরি হতো। তাই স্কুল ছুটির পর সেঁজুতি বাবা-মায়ের ল্যাবে সময় কাটাতেন। সেই সুযোগে কখনো কখনো মাইক্রোস্কোপে ব্যাকটেরিয়া দেখতেন তিনি। কীভাবে ভ্যাকসিন তৈরি হয়, এর গল্প শুনতেন। রাতে খাবার টেবিলে বাবা-মায়ের গল্প সেঁজুতিকে বিজ্ঞানী হয়ে উঠতে উৎসাহ জুগিয়েছে। ছোটবেলা থেকে সেঁজুতি ভাবতেন, পৃথিবীজুড়ে অণুজীববিজ্ঞানীরা থাকেন। তাঁদের কাজ হচ্ছে রোগনির্ণয় আর জীবাণু ধ্বংস করা।
মেনিনজাইটিসে সফলতার গল্প
সম্প্রতি বিখ্যাত বিজ্ঞান সাময়িকী ‘ল্যানসেট’ যে ১০ জন বিজ্ঞানীর প্রোফাইল প্রকাশ করেছে, তাঁদের একজন সেঁজুতি সাহা। তিনি বর্তমানে শিশু স্বাস্থ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনে (সিএইচআরএফ) গবেষণার কাজে যুক্ত। সেখানে গবেষণার মাধ্যমে কোন জীবাণু কোন রোগ তৈরি করে, তা বের করার কাজ হয়। আবার জীবাণুগুলো যদি ব্যাকটেরিয়া হয়, সে ক্ষেত্রে কোন অ্যান্টিবায়োটিক রেজিসট্যান্স দরকার, তা-ও বের করা হয়। কোনো রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে এর টিকা বা অ্যান্টিবায়োটিক কী হবে, নীতিনির্ধারকদের কাছে সেটি ব্যাখ্যা করে প্রতিষ্ঠানটি।
এই প্রতিষ্ঠানে সেঁজুতি সাহা মূলত মেনিনজাইটিস নিয়ে কাজ করেন। এটি মস্তিষ্কের সংক্রমণজনিত একটি গুরুতর রোগ। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না হলে আক্রান্ত শিশু মারা যেতে পারে কিংবা সেই শিশু সারা জীবনের জন্য প্রতিবন্ধী হয়ে যেতে পারে। মেনিনজাইটিস কোন ধরনের জীবাণু দিয়ে হয়েছে, সেটি বুঝতে পারলে শিশুর সঠিক চিকিৎসা সহজ হয়। কিন্তু বাংলাদেশসহ বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ মেনিনজাইটিস কোন জীবাণু দিয়ে হচ্ছে, তা জানে না।
সেঁজুতি সাহা ২০১৬ সালে বাংলাদেশে এসেছিলেন মূলত মেনিনজাইটিস নিয়ে গবেষণার জন্য। রোগটি কোন জীবাণুতে হয়, তা বোঝার জন্য। এর জন্য ২০১৮ সালে তিনি আলাদা একটি প্যাসিফিক টেকনিক বা পদ্ধতি শুরু করেন। যাকে বলা হয় আনবায়েস্ট আরএনএ মেটাজেনোমিকস সিকোয়েন্স। ২০১৮ সালে সিএইচআরএফ প্রথম মেটা জিনোম সিকোয়েন্সিং মেশিন পায়। সেই মেশিন দিয়ে মেনিনজাইটিস রোগের জীবাণু নির্দিষ্ট করার গবেষণা শুরু হয়।
সেঁজুতি সাহা বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করি স্বল্প খরচে জীবাণুগুলোকে খুঁজে বের করার। পাশাপাশি চিকিৎসকদেরও বলেছি, এই রোগের জন্য শিশুর কোন ধরনের চিকিৎসার প্রয়োজন। এ ছাড়া নীতিনির্ধারকদের জানিয়েছি, কোন টিকা আনলে ভালো হয়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বলতে পারি, আমরা আমাদের শিশুদের মেনিনজাইটিসের ক্ষেত্রে সঠিক চিকিৎসা দিতে পেরেছি।’
আমার স্বপ্ন, চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের পরিধি আরও বড় হবে। এমন একটা গবেষণাগার তৈরি করব, যেখানে শুধু আমরাই কাজ করব, তা নয়। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গা থেকে বিজ্ঞানীরা কাজ করতে আসবেন।
অর্জন
চিকুনগুনিয়া ভাইরাসজনিত একটি রোগ, যে ভাইরাসের মাধ্যমে জ্বর
হয়। শিশুদের ক্ষেত্রে এই ভাইরাস মস্তিষ্কে আক্রমণ করে। এই তথ্যের প্রমাণ ছিল না আগে। সেঁজুতি সাহার দলের সদস্যরা তা প্রমাণ করে রোগটির চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা রেখেছেন।
বিজ্ঞানমনস্ক জনগোষ্ঠী
সেঁজুতি মনে করেন, বিজ্ঞানমনস্ক জনগোষ্ঠী তৈরি করার বিকল্প নেই। এ দেশের ছেলেমেয়েরা খুব বেশি বিজ্ঞানী হতে চায় না। একটি ছেলে বা মেয়েকে যখন প্রশ্ন করা হয়, তুমি বড় হয়ে কী হবে। তখন তারা বলে, ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হবে। কারণ, ছোটবেলা থেকে তারা তাদের আশপাশে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারদের দেখে এসেছে। এখানকার ছেলেমেয়েরা স্কুল-কলেজে বিজ্ঞানীদের দেখতে পায় না। তাই বিজ্ঞান শিক্ষা বা বিজ্ঞান গবেষণার বিষয় প্রচারের বিকল্প নেই। এতে বিজ্ঞানসচেতন জনগোষ্ঠীও তৈরি হবে।
অবদান
সেঁজুতির অণুজীববিজ্ঞানী হওয়ার পেছনে বাবা-মায়ের অবদান সবচেয়ে বেশি। মা-বাবা তাঁকে ছোটবেলা থেকে বিজ্ঞানমনস্ক হওয়ার জন্য সহযোগিতা করেছেন। ‘আমি পৃথিবীর যে প্রান্তেই সফলতা অর্জন করি না কেন, আমার সকল অবদানের পেছনে মা-বাবার সমর্থন অনেক বেশি। আর আমার সবচেয়ে বেশি শক্তির জায়গা হচ্ছে চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন। এখানে এমন একটা দল আছে, যারা কাজ করতে অনেক বেশি আনন্দ পায়। মাঝে মাঝে মনে হয়, আমরা কোনো উৎসবে কাজ করছি।’ নিজের কাজের পেছনের শক্তি সম্পর্কে পরিবার ও প্রতিষ্ঠানের কথা এভাবেই জানিয়েছেন সেঁজুতি সাহা।
নারীর ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা
আমাদের দেশে গবেষণার ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ সবাই প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হন বলে মনে করেন সেঁজুতি। তবে তিনি এটাও মনে করেন, আমাদের সামাজিক পরিস্থিতি একজন নারীকে গবেষণার ক্ষেত্রে অনেকটা পিছিয়ে দিচ্ছে। নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে সেঁজুতি বলেন, দেখা গেল কাজ করতে করতে রাত হয়ে গেছে। তখন একজন ছেলে যত সহজে বাসায় ফিরে যেতে পারবেন, একজন নারীর ক্ষেত্রে বিষয়টি তত সহজ নয়। রাতে বাসায় পৌঁছাতে তাঁকে অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হবে। আবার বিজ্ঞান গবেষণা হলো সার্বক্ষণিক চিন্তার বিষয়। সারা দিনের বেশির ভাগ সময়ে এ নিয়ে ভাবনায় থাকতে হয়। সে ক্ষেত্রে একজন নারীকে বাসায় পৌঁছানোর পর চলে যেতে হয় রান্নাঘরে। তাঁর আর চিন্তাভাবনার কোনো সুযোগ থাকে না। এসব দিক দিয়ে নারীরা বিজ্ঞান গবেষণায় কিছুটা পিছিয়ে পড়ছেন।
স্বপ্ন
স্বপ্নের শেষ নেই সেঁজুতির। ‘আমার বড় স্বপ্ন হলো, চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের পরিধি আরও বড় হবে। আমরা এমন একটা গবেষণাগার তৈরি করব, যেখানে শুধু আমরাই কাজ করব, তা নয়; বিশ্বের বিভিন্ন জায়গা থেকে বিজ্ঞানীরা কাজ করতে আসবেন। আবার বাংলাদেশ থেকে যেসব বিজ্ঞানী দেশের বাইরে পড়তে যাচ্ছেন, তাঁরা দেশে ফিরে এসে আমাদের গবেষণাগারে কাজ করবেন। অথবা অনেকেই হয়তো দেশের বাইরে যাবেন না।’
লক্ষ্য
বিজ্ঞানকে মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়া, মানুষকে বিজ্ঞানের কাছে নিয়ে আসা, হাতে-কলমে বিজ্ঞান বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া—এই তিন বিষয়ে কাজ করছে চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন। সেঁজুতি সাহা বলেছেন, ‘আমরা মানুষের জন্য গবেষণা করব। জনগণের উপকার হবে, এমন গবেষণাগার আমরা দেখতে চাই।’
সময়টা ছিল ১৯৯৫ সাল। তৃতীয় শ্রেণি পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী স্কুলের বিজ্ঞান মেলায় রক্তের গ্রুপ তৈরি করে হইচই ফেলে দিয়েছিল। সেই ছোট্ট শিক্ষার্থী আর কেউ নন, তিনি অণুজীববিজ্ঞানী সেঁজুতি সাহা। আমরা অনুমান করতে পারি, স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে বিজ্ঞানের সম্পর্ক নিয়ে ভবিষ্যতে তাঁর কর্মযজ্ঞের বীজ সেদিনই বোনা হয়েছিল।
অণুজীববিজ্ঞানের ঘরে বিজ্ঞানী
বাবা ড. সমীর সাহা ও মা ড. সেতারুন্নাহার— দুজনই পেশায় অণুজীববিজ্ঞানী। বেশির ভাগ দিন গবেষক বাবা-মায়ের বাসায় ফিরতে দেরি হতো। তাই স্কুল ছুটির পর সেঁজুতি বাবা-মায়ের ল্যাবে সময় কাটাতেন। সেই সুযোগে কখনো কখনো মাইক্রোস্কোপে ব্যাকটেরিয়া দেখতেন তিনি। কীভাবে ভ্যাকসিন তৈরি হয়, এর গল্প শুনতেন। রাতে খাবার টেবিলে বাবা-মায়ের গল্প সেঁজুতিকে বিজ্ঞানী হয়ে উঠতে উৎসাহ জুগিয়েছে। ছোটবেলা থেকে সেঁজুতি ভাবতেন, পৃথিবীজুড়ে অণুজীববিজ্ঞানীরা থাকেন। তাঁদের কাজ হচ্ছে রোগনির্ণয় আর জীবাণু ধ্বংস করা।
মেনিনজাইটিসে সফলতার গল্প
সম্প্রতি বিখ্যাত বিজ্ঞান সাময়িকী ‘ল্যানসেট’ যে ১০ জন বিজ্ঞানীর প্রোফাইল প্রকাশ করেছে, তাঁদের একজন সেঁজুতি সাহা। তিনি বর্তমানে শিশু স্বাস্থ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনে (সিএইচআরএফ) গবেষণার কাজে যুক্ত। সেখানে গবেষণার মাধ্যমে কোন জীবাণু কোন রোগ তৈরি করে, তা বের করার কাজ হয়। আবার জীবাণুগুলো যদি ব্যাকটেরিয়া হয়, সে ক্ষেত্রে কোন অ্যান্টিবায়োটিক রেজিসট্যান্স দরকার, তা-ও বের করা হয়। কোনো রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে এর টিকা বা অ্যান্টিবায়োটিক কী হবে, নীতিনির্ধারকদের কাছে সেটি ব্যাখ্যা করে প্রতিষ্ঠানটি।
এই প্রতিষ্ঠানে সেঁজুতি সাহা মূলত মেনিনজাইটিস নিয়ে কাজ করেন। এটি মস্তিষ্কের সংক্রমণজনিত একটি গুরুতর রোগ। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না হলে আক্রান্ত শিশু মারা যেতে পারে কিংবা সেই শিশু সারা জীবনের জন্য প্রতিবন্ধী হয়ে যেতে পারে। মেনিনজাইটিস কোন ধরনের জীবাণু দিয়ে হয়েছে, সেটি বুঝতে পারলে শিশুর সঠিক চিকিৎসা সহজ হয়। কিন্তু বাংলাদেশসহ বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ মেনিনজাইটিস কোন জীবাণু দিয়ে হচ্ছে, তা জানে না।
সেঁজুতি সাহা ২০১৬ সালে বাংলাদেশে এসেছিলেন মূলত মেনিনজাইটিস নিয়ে গবেষণার জন্য। রোগটি কোন জীবাণুতে হয়, তা বোঝার জন্য। এর জন্য ২০১৮ সালে তিনি আলাদা একটি প্যাসিফিক টেকনিক বা পদ্ধতি শুরু করেন। যাকে বলা হয় আনবায়েস্ট আরএনএ মেটাজেনোমিকস সিকোয়েন্স। ২০১৮ সালে সিএইচআরএফ প্রথম মেটা জিনোম সিকোয়েন্সিং মেশিন পায়। সেই মেশিন দিয়ে মেনিনজাইটিস রোগের জীবাণু নির্দিষ্ট করার গবেষণা শুরু হয়।
সেঁজুতি সাহা বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করি স্বল্প খরচে জীবাণুগুলোকে খুঁজে বের করার। পাশাপাশি চিকিৎসকদেরও বলেছি, এই রোগের জন্য শিশুর কোন ধরনের চিকিৎসার প্রয়োজন। এ ছাড়া নীতিনির্ধারকদের জানিয়েছি, কোন টিকা আনলে ভালো হয়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বলতে পারি, আমরা আমাদের শিশুদের মেনিনজাইটিসের ক্ষেত্রে সঠিক চিকিৎসা দিতে পেরেছি।’
আমার স্বপ্ন, চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের পরিধি আরও বড় হবে। এমন একটা গবেষণাগার তৈরি করব, যেখানে শুধু আমরাই কাজ করব, তা নয়। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গা থেকে বিজ্ঞানীরা কাজ করতে আসবেন।
অর্জন
চিকুনগুনিয়া ভাইরাসজনিত একটি রোগ, যে ভাইরাসের মাধ্যমে জ্বর
হয়। শিশুদের ক্ষেত্রে এই ভাইরাস মস্তিষ্কে আক্রমণ করে। এই তথ্যের প্রমাণ ছিল না আগে। সেঁজুতি সাহার দলের সদস্যরা তা প্রমাণ করে রোগটির চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা রেখেছেন।
বিজ্ঞানমনস্ক জনগোষ্ঠী
সেঁজুতি মনে করেন, বিজ্ঞানমনস্ক জনগোষ্ঠী তৈরি করার বিকল্প নেই। এ দেশের ছেলেমেয়েরা খুব বেশি বিজ্ঞানী হতে চায় না। একটি ছেলে বা মেয়েকে যখন প্রশ্ন করা হয়, তুমি বড় হয়ে কী হবে। তখন তারা বলে, ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হবে। কারণ, ছোটবেলা থেকে তারা তাদের আশপাশে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারদের দেখে এসেছে। এখানকার ছেলেমেয়েরা স্কুল-কলেজে বিজ্ঞানীদের দেখতে পায় না। তাই বিজ্ঞান শিক্ষা বা বিজ্ঞান গবেষণার বিষয় প্রচারের বিকল্প নেই। এতে বিজ্ঞানসচেতন জনগোষ্ঠীও তৈরি হবে।
অবদান
সেঁজুতির অণুজীববিজ্ঞানী হওয়ার পেছনে বাবা-মায়ের অবদান সবচেয়ে বেশি। মা-বাবা তাঁকে ছোটবেলা থেকে বিজ্ঞানমনস্ক হওয়ার জন্য সহযোগিতা করেছেন। ‘আমি পৃথিবীর যে প্রান্তেই সফলতা অর্জন করি না কেন, আমার সকল অবদানের পেছনে মা-বাবার সমর্থন অনেক বেশি। আর আমার সবচেয়ে বেশি শক্তির জায়গা হচ্ছে চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন। এখানে এমন একটা দল আছে, যারা কাজ করতে অনেক বেশি আনন্দ পায়। মাঝে মাঝে মনে হয়, আমরা কোনো উৎসবে কাজ করছি।’ নিজের কাজের পেছনের শক্তি সম্পর্কে পরিবার ও প্রতিষ্ঠানের কথা এভাবেই জানিয়েছেন সেঁজুতি সাহা।
নারীর ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা
আমাদের দেশে গবেষণার ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ সবাই প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হন বলে মনে করেন সেঁজুতি। তবে তিনি এটাও মনে করেন, আমাদের সামাজিক পরিস্থিতি একজন নারীকে গবেষণার ক্ষেত্রে অনেকটা পিছিয়ে দিচ্ছে। নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে সেঁজুতি বলেন, দেখা গেল কাজ করতে করতে রাত হয়ে গেছে। তখন একজন ছেলে যত সহজে বাসায় ফিরে যেতে পারবেন, একজন নারীর ক্ষেত্রে বিষয়টি তত সহজ নয়। রাতে বাসায় পৌঁছাতে তাঁকে অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হবে। আবার বিজ্ঞান গবেষণা হলো সার্বক্ষণিক চিন্তার বিষয়। সারা দিনের বেশির ভাগ সময়ে এ নিয়ে ভাবনায় থাকতে হয়। সে ক্ষেত্রে একজন নারীকে বাসায় পৌঁছানোর পর চলে যেতে হয় রান্নাঘরে। তাঁর আর চিন্তাভাবনার কোনো সুযোগ থাকে না। এসব দিক দিয়ে নারীরা বিজ্ঞান গবেষণায় কিছুটা পিছিয়ে পড়ছেন।
স্বপ্ন
স্বপ্নের শেষ নেই সেঁজুতির। ‘আমার বড় স্বপ্ন হলো, চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের পরিধি আরও বড় হবে। আমরা এমন একটা গবেষণাগার তৈরি করব, যেখানে শুধু আমরাই কাজ করব, তা নয়; বিশ্বের বিভিন্ন জায়গা থেকে বিজ্ঞানীরা কাজ করতে আসবেন। আবার বাংলাদেশ থেকে যেসব বিজ্ঞানী দেশের বাইরে পড়তে যাচ্ছেন, তাঁরা দেশে ফিরে এসে আমাদের গবেষণাগারে কাজ করবেন। অথবা অনেকেই হয়তো দেশের বাইরে যাবেন না।’
লক্ষ্য
বিজ্ঞানকে মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়া, মানুষকে বিজ্ঞানের কাছে নিয়ে আসা, হাতে-কলমে বিজ্ঞান বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া—এই তিন বিষয়ে কাজ করছে চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন। সেঁজুতি সাহা বলেছেন, ‘আমরা মানুষের জন্য গবেষণা করব। জনগণের উপকার হবে, এমন গবেষণাগার আমরা দেখতে চাই।’
প্রবাদ আছে, দুঃসাহসে দুঃখ হয়। কিন্তু বাগেরহাটের প্রজাপতি স্কোয়াড দুঃসাহসে ভর করে আলোর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে। আমাদের সমাজ বাস্তবতায় বাল্যবিবাহ রুখে দেওয়া এখনো যে কতটা কঠিন কাজ, তা কারও অজানা নয়। সেই কঠিন কাজই করে চলেছে বাগেরহাটের কিশোরীরা। প্রজাপতি স্কোয়াড নামে দেশে ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিতি পেয়েছে তার
৬ দিন আগেগাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রথম ছয় মাসের মধ্যে নিহত হয়েছে ৩৪ হাজার ৫০০ জনের বেশি মানুষ। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশন বা ওএইচসিএইচআর এ তথ্য জানিয়েছে। তাদের
৬ দিন আগেআপনি শিক্ষিত ও সচেতন একজন মানুষ। সম্পর্কের একটি সুন্দর পর্যায়ে আছেন। তবে আপনার সঙ্গীর যে সমস্যার কথা উল্লেখ করেছেন, তা কিন্তু বড় ধরনের আবেগীয়
৬ দিন আগেশওকত আরা খন্দকার ওরফে ঝর্ণা। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে ঘর-সংসার সামলে মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন দীর্ঘদিন ধরে।
৬ দিন আগে