ইশতিয়াক হাসান
ইগুয়াজু জলপ্রপাত থেকে শুরু করে লেনকয়োস ম্যারানহেনসেস ন্যাশনাল পার্কসহ ব্রাজিলে শ্বাসরুদ্ধকর সৌন্দর্যময় জায়গার অভাব নেই। সাও পাওলোর উপকূল থেকে ৯০ মাইল দূরে অবস্থিত ইলহা দ্য কুয়েইমাদা গ্র্যান্ডে দ্বীপটিকে প্রথম দেখায় এমন সুন্দর একটি জায়গা বলেই মনে হবে আপনার। তবে বেশির ভাগ ব্রাজিলিয়ান এ দ্বীপের কথা জানলেও সেখানে যাওয়ার কথা তাঁরা কল্পনাও করতে পারেন না। কারণ, দ্বীপে ২০০০-৪০০০টি সোনালি ল্যাঞ্চহেড ভাইপার সাপের আস্তানা। গোটা পৃথিবীর সবচেয়ে বিষধর সাপগুলোর একটি হিসেবে বিবেচনা করা হয় একে। আর এই সাপগুলোকে পাবেন কেবল এ দ্বীপেই।
এ ধরনের সাপের বিষে একজন মানুষের মৃত্যু হতে পারে ছোবল দেওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে। ‘সর্প দ্বীপে’ যাঁরা ভুলে কিংবা সাহস করে চলে এসেছিলেন, তাঁদের ভাগ্যে কী হয়েছিল এর রোমহর্ষক বিভিন্ন বর্ণনা প্রচলিত আছে আশপাশের এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে। এমন একটি হলো—এক হতভাগ্য জেলে দ্বীপে নৌকা ভিড়িয়েছিলেন কলার খোঁজে। কয়েক দিন পরে নৌকায় তাঁর মৃতদেহ খুঁজে পাওয়া যায়। সারা শরীরে রক্তের চিহ্ন, আর সাপের কামড়ের দাগ। ১৯০৯ থেকে ১৯২০ সাল পর্যন্ত দ্বীপে গুটিকয়েক লোকের বাস ছিল, এখানকার বাতিঘরটিকে পরিচালনা করার জন্য। লোকের মুখে মুখে ছড়ানো অপর একটি গল্প অনুযায়ী বাতিঘরের শেষ রক্ষক ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের মৃত্যু হয় সাপের কামড়ে। জানালা গলে বিষধর সাপের ছোট একটি দল ঢুকে পড়েছিল বাড়িটিতে।
সাপগুলোর আটলান্টিক মহাসাগরে অবস্থিত এই দ্বীপে আগমন নিয়েও একটি গল্প আছে। সেটা হলো— জলদস্যুরা তাদের গুপ্তধন পাহারা দিতে বিষধর এই সাপ দ্বীপে নিয়ে আসে। তবে বাস্তবতা হলো, হাজার হাজার বছর ধরে এ দ্বীপে সাপেদের রাজত্ব। এতে মানুষের কোনো ভূমিকা নেই।
১১ হাজার বছর আগে পৃথিবীর সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ৬০ ফুটের মতো বেড়ে যায়। এ সময় ব্রাজিলের মূলভূমি থেকে আলাদা হয়ে যায় ইলহা দ্য কুয়েইমাদা গ্র্যান্ডে দ্বীপটি। স্বাভাবিকভাবেই দ্বীপে বাস করা সাপেরা ধীরে ধীরে মূলভূমির আত্মীয়-স্বজনদের থেকে অন্য রকম ও প্রচণ্ড বিষধর হয়ে ওঠে সময়ের বিবর্তনে।
এ দ্বীপে সাপ শিকার করবে এমন কোনো স্থলচর বড় প্রাণী নেই। ফলে এর সংখ্যা বাড়তেও কোনো বাধা ছিল না। অবশ্য এগুলোর একটা সমস্যাও ছিল, স্থলে বিচরণ করে তেমন কোনো শিকারও ছিল না তাদের। অতএব গাছে উঠে এ এলাকায় সাময়িক আস্তানা নেওয়া পাখিদের শিকার করতে শুরু করে। সোনালি ল্যাঞ্চহেড ভাইপারের বিষ মূলভূমির সাপ থেকে তিন থেকে পাঁচ গুণ শক্তিশালী হওয়ায় কোনো শিকারকে ছোবল দেওয়ার পর তার মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে বেশি সময় লাগে না।
গোটা দ্বীপের আয়তন কিন্তু বেশি নয়। মাত্র ৪৩ হেক্টর বা ১০৬ একর। এখানে সাপের সংখ্যা এত বেশি যে একে অনেকেই বিবেচনা করেন বিষধর সাপের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হিসেবে। সাপের সংখ্যা দ্বীপটিতে এত বেশি যে অনুমান করা হয় দ্বীপের কিছু কিছু জায়গায় প্রতি বর্গমিটারে একটি করে সাপের বাস।
বিপদের কথা চিন্তা করে ব্রাজিলের সরকার দ্বীপটিতে ভ্রমণ খুব কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। অবশ্য সরকারি বিধিনিষেধ না থাকলেও দ্বীপটি পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্য হয়ে ওঠার সুযোগ ছিল বলে মনে হয় না। এ সাপের ছোবলে কিডনি নষ্ট হওয়া, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ এমনকি শরীর থেকে প্রচুর রক্ত যাওয়ার শঙ্কা থাকে। এমনকি চিকিৎসা পাওয়ার পরও রোগীর মৃত্যুর আশঙ্কা পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
এমনকি দ্বীপে আসার জন্য কেউ সরকারি অনুমতি পেলেও সঙ্গে অবশ্যই চিকিৎসক রাখতে হয়। ব্রাজিলের নৌবাহিনী বছরে একবার দ্বীপের বাতিঘরটির সংস্কার করতে আসে। ১৯২০ সালের পর থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলে এটি। জীববিদ ও গবেষকদের গবেষণার গুরুত্বপূর্ণ এক জায়গা দ্বীপটি। তবে সোনালি ল্যাঞ্চহেড ভাইপার নিয়ে গবেষণা করতে দ্বীপে যেতে চাইলেও বিশেষ অনুমতি নিতে হয় তাঁদের।
গবেষক ও সংগ্রাহকদের কাছে সাপটির মূল্য অনেক। আর তাই চোরাশিকারিরা দ্বীপটিতে হানা দেয় বলে শোনা যায়। ফাঁদে ফেলে দ্বীপ থেকে এ ধরনের সাপ ধরে চোরাই বাজারে বিক্রি করে দেয় তারা। একটি সোনালি ল্যাঞ্চহেড ভাইপার কত বিকোয় শুনবেন? ১০ হাজার থেকে ৩০ হাজার ডলারে। তা ছাড়া নানা কারণে দ্বীপের গাছপালা কমে যাওয়া এবং বিভিন্ন রোগেও দ্বীপে সাপের সংখ্যা কমছে। গত পনেরো-বিশ বছরে দ্বীপের এই সরীসৃপদের সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে। আইইউসিএনের লাল তালিকায় এটি এখন মহা বিপন্ন প্রজাতি। এটি হয়তো মানুষের কাছে সর্প দ্বীপকে কিছুটা কম ভীতিকর জায়গায় পরিণত করছে, তবে সাপের জন্য কিংবা প্রাণী সংরক্ষকদের দৃষ্টিকোণ থেকে এটি মোটেই ভালো কোনো সংকেত নয়।
সূত্র: স্মিথসোনিয়ান ম্যাগাজিন, ডিসকভার ম্যাগাজিন. কম
ইগুয়াজু জলপ্রপাত থেকে শুরু করে লেনকয়োস ম্যারানহেনসেস ন্যাশনাল পার্কসহ ব্রাজিলে শ্বাসরুদ্ধকর সৌন্দর্যময় জায়গার অভাব নেই। সাও পাওলোর উপকূল থেকে ৯০ মাইল দূরে অবস্থিত ইলহা দ্য কুয়েইমাদা গ্র্যান্ডে দ্বীপটিকে প্রথম দেখায় এমন সুন্দর একটি জায়গা বলেই মনে হবে আপনার। তবে বেশির ভাগ ব্রাজিলিয়ান এ দ্বীপের কথা জানলেও সেখানে যাওয়ার কথা তাঁরা কল্পনাও করতে পারেন না। কারণ, দ্বীপে ২০০০-৪০০০টি সোনালি ল্যাঞ্চহেড ভাইপার সাপের আস্তানা। গোটা পৃথিবীর সবচেয়ে বিষধর সাপগুলোর একটি হিসেবে বিবেচনা করা হয় একে। আর এই সাপগুলোকে পাবেন কেবল এ দ্বীপেই।
এ ধরনের সাপের বিষে একজন মানুষের মৃত্যু হতে পারে ছোবল দেওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে। ‘সর্প দ্বীপে’ যাঁরা ভুলে কিংবা সাহস করে চলে এসেছিলেন, তাঁদের ভাগ্যে কী হয়েছিল এর রোমহর্ষক বিভিন্ন বর্ণনা প্রচলিত আছে আশপাশের এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে। এমন একটি হলো—এক হতভাগ্য জেলে দ্বীপে নৌকা ভিড়িয়েছিলেন কলার খোঁজে। কয়েক দিন পরে নৌকায় তাঁর মৃতদেহ খুঁজে পাওয়া যায়। সারা শরীরে রক্তের চিহ্ন, আর সাপের কামড়ের দাগ। ১৯০৯ থেকে ১৯২০ সাল পর্যন্ত দ্বীপে গুটিকয়েক লোকের বাস ছিল, এখানকার বাতিঘরটিকে পরিচালনা করার জন্য। লোকের মুখে মুখে ছড়ানো অপর একটি গল্প অনুযায়ী বাতিঘরের শেষ রক্ষক ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের মৃত্যু হয় সাপের কামড়ে। জানালা গলে বিষধর সাপের ছোট একটি দল ঢুকে পড়েছিল বাড়িটিতে।
সাপগুলোর আটলান্টিক মহাসাগরে অবস্থিত এই দ্বীপে আগমন নিয়েও একটি গল্প আছে। সেটা হলো— জলদস্যুরা তাদের গুপ্তধন পাহারা দিতে বিষধর এই সাপ দ্বীপে নিয়ে আসে। তবে বাস্তবতা হলো, হাজার হাজার বছর ধরে এ দ্বীপে সাপেদের রাজত্ব। এতে মানুষের কোনো ভূমিকা নেই।
১১ হাজার বছর আগে পৃথিবীর সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ৬০ ফুটের মতো বেড়ে যায়। এ সময় ব্রাজিলের মূলভূমি থেকে আলাদা হয়ে যায় ইলহা দ্য কুয়েইমাদা গ্র্যান্ডে দ্বীপটি। স্বাভাবিকভাবেই দ্বীপে বাস করা সাপেরা ধীরে ধীরে মূলভূমির আত্মীয়-স্বজনদের থেকে অন্য রকম ও প্রচণ্ড বিষধর হয়ে ওঠে সময়ের বিবর্তনে।
এ দ্বীপে সাপ শিকার করবে এমন কোনো স্থলচর বড় প্রাণী নেই। ফলে এর সংখ্যা বাড়তেও কোনো বাধা ছিল না। অবশ্য এগুলোর একটা সমস্যাও ছিল, স্থলে বিচরণ করে তেমন কোনো শিকারও ছিল না তাদের। অতএব গাছে উঠে এ এলাকায় সাময়িক আস্তানা নেওয়া পাখিদের শিকার করতে শুরু করে। সোনালি ল্যাঞ্চহেড ভাইপারের বিষ মূলভূমির সাপ থেকে তিন থেকে পাঁচ গুণ শক্তিশালী হওয়ায় কোনো শিকারকে ছোবল দেওয়ার পর তার মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে বেশি সময় লাগে না।
গোটা দ্বীপের আয়তন কিন্তু বেশি নয়। মাত্র ৪৩ হেক্টর বা ১০৬ একর। এখানে সাপের সংখ্যা এত বেশি যে একে অনেকেই বিবেচনা করেন বিষধর সাপের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হিসেবে। সাপের সংখ্যা দ্বীপটিতে এত বেশি যে অনুমান করা হয় দ্বীপের কিছু কিছু জায়গায় প্রতি বর্গমিটারে একটি করে সাপের বাস।
বিপদের কথা চিন্তা করে ব্রাজিলের সরকার দ্বীপটিতে ভ্রমণ খুব কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। অবশ্য সরকারি বিধিনিষেধ না থাকলেও দ্বীপটি পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্য হয়ে ওঠার সুযোগ ছিল বলে মনে হয় না। এ সাপের ছোবলে কিডনি নষ্ট হওয়া, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ এমনকি শরীর থেকে প্রচুর রক্ত যাওয়ার শঙ্কা থাকে। এমনকি চিকিৎসা পাওয়ার পরও রোগীর মৃত্যুর আশঙ্কা পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
এমনকি দ্বীপে আসার জন্য কেউ সরকারি অনুমতি পেলেও সঙ্গে অবশ্যই চিকিৎসক রাখতে হয়। ব্রাজিলের নৌবাহিনী বছরে একবার দ্বীপের বাতিঘরটির সংস্কার করতে আসে। ১৯২০ সালের পর থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলে এটি। জীববিদ ও গবেষকদের গবেষণার গুরুত্বপূর্ণ এক জায়গা দ্বীপটি। তবে সোনালি ল্যাঞ্চহেড ভাইপার নিয়ে গবেষণা করতে দ্বীপে যেতে চাইলেও বিশেষ অনুমতি নিতে হয় তাঁদের।
গবেষক ও সংগ্রাহকদের কাছে সাপটির মূল্য অনেক। আর তাই চোরাশিকারিরা দ্বীপটিতে হানা দেয় বলে শোনা যায়। ফাঁদে ফেলে দ্বীপ থেকে এ ধরনের সাপ ধরে চোরাই বাজারে বিক্রি করে দেয় তারা। একটি সোনালি ল্যাঞ্চহেড ভাইপার কত বিকোয় শুনবেন? ১০ হাজার থেকে ৩০ হাজার ডলারে। তা ছাড়া নানা কারণে দ্বীপের গাছপালা কমে যাওয়া এবং বিভিন্ন রোগেও দ্বীপে সাপের সংখ্যা কমছে। গত পনেরো-বিশ বছরে দ্বীপের এই সরীসৃপদের সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে। আইইউসিএনের লাল তালিকায় এটি এখন মহা বিপন্ন প্রজাতি। এটি হয়তো মানুষের কাছে সর্প দ্বীপকে কিছুটা কম ভীতিকর জায়গায় পরিণত করছে, তবে সাপের জন্য কিংবা প্রাণী সংরক্ষকদের দৃষ্টিকোণ থেকে এটি মোটেই ভালো কোনো সংকেত নয়।
সূত্র: স্মিথসোনিয়ান ম্যাগাজিন, ডিসকভার ম্যাগাজিন. কম
হঠাৎ বাথরুমে ঢুকে যদি আবিষ্কার করেন বিশাল একটি সাপ কুণ্ডলী পাকিয়ে পড়ে আছে কী অবস্থা হবে বলুন তো? ঠিক এমনটাই ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ক্যারোলাইনার এক নারীর ক্ষেত্রে। ভোরে বাথরুমে ঢুকতেই তিনি আবিষ্কার টয়লেটের পেছনে আরাম করে বিশ্রাম নিচ্ছে সরীসৃপটি।
৫ দিন আগেসিভি বা কোনো লেখার সারসংক্ষেপ তৈরির মতো বিভিন্ন কাজে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক (এআই) চ্যাটবট চ্যাটজিপিটির ব্যবহার করার কথা শুনে থাকবেন। তবে চ্যাটবটটি অদ্ভুতভাবে ব্যবহার করেন ব্রিটিশ সংগীতশিল্পী লিলি অ্যালেন। স্বামীর সঙ্গে ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করে করেন তিনি।
৬ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার ১১ বছর বয়স্ক এক বালিকার পোষা ছাগলকে ধরে পরে জবাই করা হয়। এ কাজে সহায়তা করার অভিযোগ উঠে শাস্টা কাউন্টি শেরিফ অফিসের বিরুদ্ধে। এ অভিযোগ প্রমাণিত হলে শেরিফ অফিসকে তিন লাখ ডলার বা তিন কোটি ৫৮ লাখ টাকা জরিমানা দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
৮ দিন আগেমার্কিন প্রেসিডেন্টদের অনেকেই জীবনের কোনো না কোনো সময় বিচিত্র সব পেশার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এগুলোর কিছু কিছু এতটাই অস্বাভাবিক যে বিশ্বাসই করতে চাইবে না মন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে আজ আমরা পরিচয় করিয়ে দেব এমনই ১০ মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং তাঁদের বিচিত্র পেশার সঙ্গে। লেখাটি কোনো পেশাই যে
১০ দিন আগে