পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ান হাসান বলেছেন, যশোরের ভবদহের জলাবদ্ধতা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে নতুন পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। তবে বিগত সময়ের মতো পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিভিন্ন সংস্থার মতামতে নয়, এবার ভুক্তভোগীদের পরামর্শে নেওয়া প্রকল্প অনুযায়ী কাজ করা হবে।
পাবনার চাটমোহর উপজেলার ছাইকোলা ইউনিয়নের বোয়াইলমারী উচ্চ বিদ্যালয় ও বোয়াইলমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। এতে বছরের বেশির ভাগ সময় জলাবদ্ধতা লেগে থাকে। বিদ্যালয় দুটির শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। মাঠে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করতে পারেন না।
সাতক্ষীরার প্রাণকেন্দ্র দিয়ে প্রবাহিত প্রাণসায়ের খালের আবার সংস্কারকাজ করা হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার সকালে সুলতানপুর বড় বাজার এলাকা থেকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু হয়। জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ এই কাজের উদ্বোধন করেন।
রাজধানীর শ্যামপুর থানার পোস্তগোলা শিল্প এলাকার একটি রাস্তায় সারা বছরই পানি জমে থাকে। সামান্য বৃষ্টি হলেই এলাকার রাস্তাগুলো তলিয়ে যায় কয়েক ফুট পানির নিচে। এতে বোঝার উপায় নেই কোথায় গর্ত আছে। সেই সঙ্গে খানাখন্দে চলাচলের অনুপযোগী হতে চলেছে ব্যস্ততম এই শিল্প এলাকার রাস্তাগুলো।
ভারী বৃষ্টি ও ফেনী থেকে নেমে আসা বানের পানিতে গত ২০ আগস্ট প্লাবিত হয় নোয়াখালীর আট উপজেলা। সম্প্রতি এ বন্যা জেলার গত ৫০-৬০ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে। সরকারি হিসাবে, সারা দেশে চলতি বন্যায় সবচেয়ে বেশি ৪ হাজার ১৯১ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে নোয়াখালীতে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় (এলজিআরডি) এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ. এফ. হাসান আরিফ বলেছেন, জলাবদ্ধতা ঢাকা মহানগরীর দীর্ঘদিনের সমস্যা। ধাপে ধাপে জলাবদ্ধতা নিরসন হবে। ১৫ বছরের জঞ্জাল একদিনে পরিষ্কার হবে না।
যশোরে সাম্প্রতিক টানা ভারী বৃষ্টিতে সবজির খেত ও বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কয়েক দফায় সবজির চারা রোপণ করা হলেও বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে তা পচে যাচ্ছে। তাই বারবার সবজির চারা রোপণ করতে গিয়ে দ্বিগুণ খরচ করতে হচ্ছে কৃষকদের।
টানা কয়েক দিনের বৃষ্টি ও উজানে যশোর শহর থেকে আসা পানিতে তলিয়ে গেছে ভবদহের দুই শতাধিক বাড়িঘর। এই এলাকার স্কুল, কলেজ, রাস্তাঘাট, ধর্মীয় উপাসনালয়ও এখন পানির তলে। ভেসে গেছে কয়েক হাজার মাছের ঘের। তলিয়ে গেছে ফসলি জমি।
প্রায় ২০ বছর ধরে জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগে রয়েছেন প্রথম শ্রেণির পৌরসভার বাসিন্দারা। তলিয়ে গেছে অলিগলির সড়কগুলো। শুধু সড়ক নয়, পানিতে তালিয়ে গেছে রান্নাঘর, নলকূপ ও টয়লেট। বসতঘরেও উঠে গেছে পানি। ঘরের তালা বদ্ধ করে অনেকেই চলে গেছেন স্বজনদের বাড়িতে। কারও কারও বসতঘরে প্রবেশ করতে কাপড় তুলতে হয় হাঁটুর ওপরে।
যশোরের কেশবপুরে পানিতে ১০৪ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পৌরসভাসহ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের ১ হাজার ৩০ পরিবারের ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। বৃষ্টি ও নদ-নদীর পানি উপচে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এ সংকট নিরসনে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।
কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে পাবনা পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, দ্রুত পানি নিষ্কাশন হতে না পারায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে সড়ক ও বাসাবাড়িতে বৃষ্টির পানি জমে চরম দুর্ভোগে পড়েছে পৌরবাসী। ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে যানবাহনের চালক, যাত্রী ও পথচারীদের।
টানা ভারী বৃষ্টিতে বাগেরহাট, যশোর, কুষ্টিয়া, মেহেরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। আটকে পড়া পানিতে ১০ হাজারের বেশি মাছের ঘের ও আড়াই হাজারের বেশি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এ ছাড়া মাদারীপুর শহরে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
টানা বৃষ্টিতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি) ক্যাম্পাসে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে পানি ঢুকে পড়ায় শিক্ষার্থীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। তবে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে মাদারীপুর শহরের শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। সড়কে এখনো পানি জমে আছে। ফলে শহরের অনেক মানুষ জলাবদ্ধতার জন্য দুর্ভোগে পড়েছেন। শহরের অপরিকল্পিত ও উন্নত নালা ব্যবস্থা না থাকায় এই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে শহরবাসীকে।
বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি) ক্যাম্পাসের সড়ক, ভবন, মাঠে। কাদা পানি মাড়িয়ে শিক্ষার্থীদের যেতে হয় ক্লাসে। শুধু তাই নয়, বেশ কিছু আবাসিক হলের নিচতলার কক্ষ পর্যন্ত পৌঁছে যায় পানি। কর্তৃপক্ষ বলছে, দ্রুত এটি সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়া হবে...
গত দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে কেশবপুর পৌরসভার বিভিন্ন অঞ্চল তৃতীয়বারের মতো প্লাবিত হয়েছে। পাশাপাশি কেশবপুর সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন। ডুবে গেছে আমন খেতসহ পুকুর ও মাছের ঘের। উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হরিহর নদে স্বাভাবিক জোয়ার-ভাটা না থাকায় নদ উপচে এলাকায় পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সাপ্তাহিক ছুটিতে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে বেড়াতে এসে প্রায় ৩০ হাজার পর্যটক হোটেলবন্দী হয়ে পড়েছেন। গত দুদিনে টানা ভারী বর্ষণে শহরের হোটেল-মোটেল জোনের কলাতলীর অধিকাংশ এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এতে পর্যটকেরা ঘুরতে বের হতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন।