বাংলাদেশে প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুমে দেখা যায় পাহাড়ধসের ঘটনা। পাহাড়ধসের কারণে বিলীন হয় অসংখ্য ঘরবাড়ি। ভারী বর্ষণ শুরু হলেই পাহাড়ধসের আতঙ্ক দেখা যায়। শুধু ঘরবাড়ি ধ্বংস হয় না, অসংখ্য প্রাণহানিও ঘটে। এসবের পরও মানুষ একটু মাথা গোঁজার ঠাঁইয়ের জন্য এখানে ঘরবাড়ি বানায়। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও সিলেটে পাহাড় কাটার
আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চট্টগ্রামসহ দেশের পাঁচ বিভাগে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। ভারী বৃষ্টির কারণে পাহাড়ধসের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। আজ শনিবার (৫ অক্টোবর) ভারী বর্ষণের সতর্কতায় এ তথ্য জানানো হয়।
টানা ভারী বর্ষণে কক্সবাজারের চকরিয়ায় পাহাড় ধস হয়েছে। এতে রেলপথের ওপর মাটি পড়ে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। অন্যদিকে ঝোড়ো বাতাসে সীতাকুণ্ডে রেলপথে গাছ ভেঙে পড়েছে।
কক্সবাজারে ২০১৫ সালের ২৪ জুন ৪৬৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় ৫০১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতে একদিনের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করা হলো।
টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামগামী লেন তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাহত হয় যান চলাচল। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর থেকে ৮ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয় যানজট।
বন্যায় ফেনীতে রেললাইন ও রেল সেতুর ওপর দিয়েও পানি প্রবাহিত হচ্ছে। একই অবস্থা সিলেটের একটি রেলসেতুরও। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইনে পাহাড় ধসে পড়েছে। এসব কারণে চট্টগ্রামের সব ট্রেন চলাচল বন্ধ রেখেছে রেলওয়ে।
টানা অতি বৃষ্টিতে কক্সবাজারের চকরিয়া পাহাড়ধসে পড়েছে রেললাইনের ওপর। এতে পাহাড়ের পাদদেশে ১০টি বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে কেউ হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। গতকাল মঙ্গলবার রাতে উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের গাইনাকাটা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ভারী বর্ষণে কক্সবাজারের মহেশখালীতে পাহাড় ধসে আব্দুস শুক্কুর (৬০) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এ সময় তাঁর মেয়ে মোস্তফা খানম (২০) আহত হয়েছেন। আজ সোমবার উপজেলার কালারমার ছড়া ইউনিয়নের ঝাপুয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
কক্সবাজারের পেকুয়ায় পাহাড় ধসে একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। আজ রোববার ভোরে উপজেলার শিলখালী ইউনিয়নের সেগুনবাগিচা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে । এ সব তথ্য নিশ্চিত করেছেন পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল ইসলাম জয়।
খাগড়াছড়ির আলুটিলা সাপমারা এলাকায় পাহাড় ধসে ঢাকা ও চট্টগ্রামের সঙ্গে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তাতে আটকা পড়েছে বহু যানবাহন। আজ শনিবার সকালে খাগড়াছড়ি-আলুটিলা সড়কের সাপমারা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
অতিবৃষ্টিতে বান্দরবান-থানচি সড়কে পাহাড় ধসে পড়ে যান চলাচল বন্ধ হওয়ার ৪ ঘণ্টা পর স্বাভাবিক হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বান্দরবান ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সহকারী পরিচালক পূর্ণচন্দ্র মূৎসুদ্দি আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ভারী বৃষ্টিতে পাহাড় ধসে বান্দরবান-থানচি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। গত সোমবার থেকেই বান্দরবানের থানচি উপজেলায় থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছিল। এর মধ্যে গতকাল বুধবার রাতে ভারী বৃষ্টিতে নীলগিরি এলাকার পাহাড় ধসে সড়কের ওপর মাটি পড়ে বান্দরবান-থানচি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
টানা ভারী বর্ষণে কক্সবাজার শহরে পাহাড় ধসে মীম জান্নাত (১৩) নামের আরেক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে শহরের সৈকতপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত মীম কক্সবাজার পৌরসভার সৈকতপাড়ার মোহাম্মদ সেলিমের মেয়ে। এর আগে সদরের পৃথক স্থানে দুই নারী ও এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
কক্সবাজারে পাহাড়ধসে ঘুমন্ত স্বামী-স্ত্রী নিহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে শহরের বাদশাঘোনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত দুজন হলেন ওই এলাকার নজির হোসেনের ছেলে মো. আনোয়ার হোসেন (২৬) ও তাঁর স্ত্রী মাইমুনা আক্তার (২০)।
ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে সৃষ্ট বৃষ্টি, বজ্রপাত ও ভূমিধসের কারণে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় চার রাজ্যে অন্তত ৩২ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে নিহত হয়েছে সাতজন, মিজোরামে ১৭ জন, আসামে তিনজন, নাগাল্যান্ডে চারজন। রাজ্যগুলোর স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার মারিশ্যা-দীঘিনালা সড়কের দুই টিলা এলাকায় পাহাড়ধসে সারা দেশের সঙ্গে বাঘাইছড়ির যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে দুই টিলা এলাকায় পাহাড়ের বড় একটি অংশ সড়কের ওপর ধসে পড়ে।
ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে চট্টগ্রাম নগরীতে টানা বর্ষণে পাহাড় ধসে প্রাণহানি রোধে ১০০ পরিবারকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিয়েছে জেলা প্রশাসন। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের সরিয়ে নেওয়া হয়।