চারদিকে সবুজ আর সবুজ। কোলাহলমুক্ত সেই সবুজকে আশ্রয় করেছে হরেক রকম পাখপাখালি। আছে পরিযায়ী পাখিও। তাদের কলকাকলিতে মুখর চারপাশ।
বিল জুড়ে ফুটে অসংখ্য লাল শাপলা। আর শীতে বহুদূর থেকে এসে লাল শাপলার বিল ও আশপাশের এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে বহু পরিযায়ী পাখি। কোনোটি ফুলের কলিতে ঠোকর দিচ্ছে, কোনোটি মাছ ধরছে, কোনোটি জলে সাঁতার কাটছে। আবার পর্যটকদের নৌকার শব্দ পেলেই ঝাঁক বেঁধে উড়াল দিচ্ছে পাখির ঝাঁক। এ দৃশ্য দেখা যাচ্ছে প্রকৃতিপ্রেমীদের প্র
বগুড়া শহরের অদূরেই গাবতলী উপজেলা। এই উপজেলারই সুন্দর একটি ইউনিয়নের নাম নেপালতলী। সেই গ্রামে আছে চোখজুড়ানো বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। হেমন্ত শেষে ঋতুতে এখন শীতের আমেজ। পৌষের প্রথম সপ্তাহ চলছে। মৃদু হিমেল হাওয়ায় এখনো মাঠে ফসল তুলতে ব্যস্ত কৃষক।
সৌদি আরবে ১০০ মাইল দীর্ঘ এবং প্রায় ১ হাজার ৫০০ ফুট উঁচু দুটি সমান্তরাল ভবন নিয়ে গড়ে উঠছে নিওম শহর। কিন্তু এই শহরটি কোটি কোটি পরিযায়ী পাখির মরণফাঁদ হবে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে আশ্বিনের শেষভাগেই উকি দিচ্ছে শীতের বুড়ি। শেষরাতে যেমন হালকা শীত করে তেমন ভোরে বাইরে বের হলেই চোখে পড়ে কুজ্ঝটিকা। সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে পদ্মার চর ঘিরে অতিথি বা পরিযায়ী পাখির কলরব। নদীর এপাড় থেকে ওপাড় উড়ে চলা পাখির কিচির-মিচির।
বিলের জলে ফুটে আছে শত শত সাদা শাপলা। এ যেন জলের বুকে শাপলায় আঁকা প্রকৃতির এক নকশিকাঁথা। পাখির কলরবে মুখর থাকে বিল ও এর আশপাশের এলাকা। আশ্চর্য সুন্দর এই বিলের দেখা পাবেন মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বাষ্টিয়া এলাকায়। স্থানীয়দের কাছে যার পরিচিতি ‘মেন্দী বিল’ নামে।
রাজশাহীর দুর্গাপুর পৌর এলাকার দেবীপুর গ্রামের প্রায় সব মাঠের ধানখেতে এখন দেখা মিলবে পাখিদের দল। দূর থেকে দেখতে সাদা বকের মতো মনে হলেও লম্বা সরু দুটি পা নিয়ে ওড়াউড়ি করা পাখিটির নাম শামুকখোল। খেত থেকে অদ্ভুত গঠনের লম্বা দুটি ঠোঁট দিয়ে শামুক খুঁজে বেড়ায় এরা।
শীতের শুরু থেকেই অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর হয়ে থাকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী, পারকি সমুদ্রসৈকত, মেরিন একাডেমি ও কেইপিজেড লেক। বহু বছর ধরে এ এলাকাগুলো নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে বেছে নেয় পরিযায়ী পাখিরা।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের পাত্রখোলা চা-বাগানের লেকে দলে দলে আসছে পরিযায়ী পাখি। উপজেলার বিভিন্ন জলাশয় ও হাওর এর পাশাপাশি পাত্রখোলা বাগানের ১৮ নম্বর সেকশনের লেক পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠছে।
পৃথিবীতে প্রায় ৫ লাখ প্রজাতির পাখি আছে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি এক দেশ থেকে আরেক দেশ চলে যায়। এর মধ্যে কিছু কিছু পাখি ২২ হাজার মাইল পথ অনায়াসে পাড়ি দিয়ে চলে যায় দূরদেশে।
পাবনার বেড়া উপজেলায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন উপেক্ষা করে একটি চক্র অভিনব পদ্ধতিতে মৌসুমি পাখি শিকারে মেতে উঠেছে। তারা বিভিন্ন নদী, হাওর, বিল, জলাশয় থেকে বক, পানকৌড়ি, বালিহাঁসসহ নানা প্রজাতির পাখি শিকার করে জীববৈচিত্র্যকে হুমকির
দরজায় কড়া নাড়ছে শীত। এর মধ্যেই কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরে আসতে শুরু করেছে নানা প্রজাতির পরিযায়ী পাখি। অপরূপ হাওরের রূপ-লাবণ্য বাড়িয়ে তুলছে বাহারি পাখির ঝাঁক। প্রকৃতি ও পাখিপ্রেমী মানুষ উপভোগ করছে এ সৌন্দর্য। তবে এ প্রাকৃতিক রূপবৈচিত্র্যের মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে এখানকার অসাধু পাখি শিকারিরা।
সিরাজগঞ্জের তাড়াশের শাহ শরীফ জিন্দানি (রহ.) পুণ্যভূমি নওগাঁর পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া করতোয়া নদীটি পরিযায়ী বা অতিথি পাখির কলতানে মুখর হয়ে উঠেছে। শীতপ্রধান দেশ থেকে নিরাপদ মনে করে পাখিরা প্রতিবছর এ নদীতে এসে আশ্রয় নেয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার বিলগুলো এখন পরিযায়ী পাখির কলকাকলিতে মুখর। বিশেষ করে আলীনগর ইউনিয়নের চূড়ইল, বাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের সিঙ্গাবাদ পাথার, রহনপুর ইউনিয়নের রামদাস ও রাধানগর ইউনিয়নের ছোট্ট ও বড়বিলে অতিথি পাখির ঝাঁক মন কেড়েছে দর্শনার্থীদের।
দেখলে মনে হবে হাঁসের খামার। ব্যক্তি উদ্যোগে কেউ হয়তো বড় পরিসরে হাঁসের খামার করেছেন। আসলে তা নয়। এসব ইউরোপ থেকে আসা পরিযায়ী পাখিদের মেলা। এ নৈসর্গিক দৃশ্য মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা সদরের ঘোপ বাঁওড়ের। এখন পাখির কলতানে ঘুম ভাঙে এ অঞ্চলের মানুষের।
অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)। কুয়াশায় মোড়া সকাল ও গোধূলিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জলাশয়ে দেখা মিলছে পাখির ঝাঁকের। প্রকৃতির পালা বদলে এ দেশে অতিথি পাখির আগমন ঘটে। যা শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে।
প্রতিবছর বিভিন্ন দেশ থেকে বিভিন্ন ধরনের অতিথি পাখি নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে ক্যাম্পাস লেককে বেছে নিয়েছে। ভিনদেশি পাখিদের নিয়ে নতুন রূপে সেজে উঠে লেকটি। ভিনদেশি পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে মুখর হয়ে উঠে লেক পার।