সৈকত দে
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) মানুষকে চাকরিচ্যুত করবে–এমন আশঙ্কার মধ্যে বিশেষজ্ঞরা আমাদের আশার কথা শুনিয়েছেন। বিবিসির বিশ্লেষক কেট মর্গানের নিবন্ধ অবলম্বনে আসুন প্রকৃত ছবিটার সামনে দাঁড়াই।
শিল্পবিপ্লবের শুরু থেকে, নতুন আবিষ্কৃত যন্ত্র নানা রকম ভয় দেখাচ্ছিল মানুষের মনে। যন্ত্রচালিত সুতাকল থেকে মাইক্রো চিপস হয়তো মানুষের কাজের বিকল্প হয়ে উঠবে। বেশির ভাগ মানুষ কাজ হারাবেন যন্ত্রের কারণে। তবে কয়েকজন বিশেষজ্ঞ বলছেন, সভ্যতায় চারদিক ব্যাপ্ত করে এআইয়ের ক্রমবিকাশ ঘটার কারণে কিছু কাজ রোবটের পক্ষে করে ফেলা সম্ভব। এ বছরের মার্চে গোল্ডমান স্যাকসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষের এক-চতুর্থাংশ কাজ করে দিতে সক্ষম। প্রতিবেদনটির আরেকটি সংযুক্তি হলো, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এবং আমেরিকাজুড়ে স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের কারণে ৩০০ মিলিয়ন মানুষ কাজ হারাতে পারেন। ‘রুল অব দ্য রোবটস: হাউ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স উইল ট্রান্সফর্ম এভরিথিং’ গ্রন্থের লেখক মার্টিন ফোর্ড মন্তব্য করেন, এটি বিপজ্জনক। ‘এই বিপদ কেবল একজন ব্যক্তির নয়, অসংখ্য মানুষের বেলাতেই ঘটতে পারে। একই সময়ে প্রায় সবার ক্ষেত্রে পুরো অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে।’
আশার কথা, এই নিবন্ধ কেবল হতাশার সংবাদে পূর্ণ নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এখনো কিছু কাজ আছে, যা করতে এআই পুরোপুরি অক্ষম। কাজগুলোকে প্রধানত তিনটি ধরনে ভাগ করা যায়। প্রথমত, সুনির্দিষ্টভাবে মানবীয় বৈশিষ্ট্য দরকার এমন কাজ আর ইউনিক চিন্তার অনিবার্যতা থাকা কাজগুলো। তাঁর মতে, গ্রাফিক ডিজাইন এবং ভিজুয়াল আর্ট সম্পর্কিত কাজে এআই দক্ষতা দেখাতে পারবে। কেননা মৌলিক অ্যালগরিদম একটা বটকে লাখ লাখ শব্দ বিশ্লেষণের নির্দেশ দিতে পারে। এই নির্দেশের ফলে এআই নন্দনতত্ত্ব বিষয়ে অত্যন্ত সৃজনশীল হতে পারবে মুহূর্তেই। কিন্তু বিজ্ঞান, ওষুধ, আইন—এসব বিষয়ের ক্ষেত্রে নতুন ব্যবসাপদ্ধতি কিংবা আইনি কৌশলে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে পারবে। কারণ, মানব মস্তিষ্কের এসব বিশ্লেষণী ক্ষমতা এআই আয়ত্ত করতে পারেনি।
দ্বিতীয়ত, আন্তব্যক্তিক সম্পর্কের চূড়ান্তে গিয়ে করতে হয় যেসব কাজ, তা-ও মার্টিনের মতে নিরাপদ। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা, ব্যবসা পরামর্শক কিংবা হাসপাতালের নার্সের কাজ মানুষেরই থাকবে। তিনি মনে করেন, যখন মানুষকে গভীরভাবে বোঝা জরুরি, সেটা এআইয়ের বুঝতে অনেক দেরি আছে। এ ধরনের কাজে মানবিক সম্পর্ক নির্মাণ করাটা কাজের জন্যই জরুরি।
তৃতীয়ত, যেসব কাজে প্রচুর ঘোরাঘুরি এবং অভাবিত পরিস্থিতিতে সমস্যা সমাধানের দক্ষতা লাগে, সেই কাজ আপাতত মানুষের হাতেই থাকছে। অনেক হাতে-কলমের কাজ, যেমন ইলেকট্রিশিয়ানের কাজ, ঝালাইয়ের কাজ, কাঠমিস্ত্রির কাজ—সব নিরাপদ। প্রতি মুহূর্তে নতুন সব পরিস্থিতিতে পড়তে হয় এসব কাজে, যা এআই পারবে না। তিনি রসিকতা করে বলেন, ‘এসব করতে গেলে আপনাকে স্টার ওয়ার্স সিনেমার সি থ্রি পি ও রোবট নিয়োগ দিতে হবে। সেটা কই পাবেন?’
আমেরিকার বাফালো ইউনিভার্সিটির লেবার ইকোনমিকসের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর জোয়ান্নে সং ম্যাকগাফিন মনে করেন, সরাসরি হুমকি এই মুহূর্তে নেই। তবে কাজ বদলাবে। মানুষের কাজ আরও বেশি করে ইন্টারপার্সোনাল স্কিলের দিকে ঝুঁকবে। তিনি যুক্ত করেন, ‘কল্পনা করা যেতে পারে, এআই মানুষের চেয়ে ভালো করে ক্যানসার শনাক্ত করবে। ভবিষ্যতে, আমি ধারণা করি, এই নতুন প্রযুক্তি চিকিৎসকেরা ব্যবহার করবেন। কিন্তু তাঁদের ভূমিকা পুরো বদলাবে না। যন্ত্র টাকা গুনে দেবে ঠিকই কিন্তু মানুষ তো নতুন নতুন পণ্য নিয়ে সম্ভাব্য ক্রেতার কাছে তার বোধ-বুদ্ধি নিয়ে উপস্থিত হবে। সামাজিক সম্পর্কই খুব গুরুত্ববহ ভূমিকা রাখবে ভবিষ্যতে।’
মার্টিন ফোর্ডের একটা স্মরণীয় কথা দিয়ে লেখার যতি টানি। তিনি বলছেন, ‘অগ্রসর শিক্ষা কিংবা অধিক বেতনের অবস্থান এআইয়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধব্যবস্থা নয়। আমরা হয়তো ভাবি, বেশি বেতনের লোকটা যে জীবনধারণের জন্য গাড়ি চালায়, তার থেকে নিরাপদ। কিন্তু বেশি বেতনের লোকটার চেয়ে উবারচালক শান্তিতে থাকবে। কারণ, আমরা এখনো স্বচালিত গাড়ি পাইনি। কিন্তু এআই ঠিকঠাক প্রতিবেদন লিখতে পারে। অনেক ঘটনায় অধিক শিক্ষিত শ্রমিকেরা কম শিক্ষিতদের চেয়ে বেশি বিপদে থাকে। হোটেলের রুম পরিষ্কারের কাজের কথা ভাবুন, এই কাজ পুরো স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায় করা সত্যিই কঠিন। সংক্ষেপে, আমরা মানুষেরা এখনো নিশ্চিত থাকতে পারি। এআইয়ের ‘হাত’ আমাদের কাজ নিয়ে নিতে আরও বহু দেরি আছে, অন্তত বেশ কিছুটা সময়।’
সূত্র: বিবিসি
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) মানুষকে চাকরিচ্যুত করবে–এমন আশঙ্কার মধ্যে বিশেষজ্ঞরা আমাদের আশার কথা শুনিয়েছেন। বিবিসির বিশ্লেষক কেট মর্গানের নিবন্ধ অবলম্বনে আসুন প্রকৃত ছবিটার সামনে দাঁড়াই।
শিল্পবিপ্লবের শুরু থেকে, নতুন আবিষ্কৃত যন্ত্র নানা রকম ভয় দেখাচ্ছিল মানুষের মনে। যন্ত্রচালিত সুতাকল থেকে মাইক্রো চিপস হয়তো মানুষের কাজের বিকল্প হয়ে উঠবে। বেশির ভাগ মানুষ কাজ হারাবেন যন্ত্রের কারণে। তবে কয়েকজন বিশেষজ্ঞ বলছেন, সভ্যতায় চারদিক ব্যাপ্ত করে এআইয়ের ক্রমবিকাশ ঘটার কারণে কিছু কাজ রোবটের পক্ষে করে ফেলা সম্ভব। এ বছরের মার্চে গোল্ডমান স্যাকসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষের এক-চতুর্থাংশ কাজ করে দিতে সক্ষম। প্রতিবেদনটির আরেকটি সংযুক্তি হলো, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এবং আমেরিকাজুড়ে স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের কারণে ৩০০ মিলিয়ন মানুষ কাজ হারাতে পারেন। ‘রুল অব দ্য রোবটস: হাউ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স উইল ট্রান্সফর্ম এভরিথিং’ গ্রন্থের লেখক মার্টিন ফোর্ড মন্তব্য করেন, এটি বিপজ্জনক। ‘এই বিপদ কেবল একজন ব্যক্তির নয়, অসংখ্য মানুষের বেলাতেই ঘটতে পারে। একই সময়ে প্রায় সবার ক্ষেত্রে পুরো অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে।’
আশার কথা, এই নিবন্ধ কেবল হতাশার সংবাদে পূর্ণ নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এখনো কিছু কাজ আছে, যা করতে এআই পুরোপুরি অক্ষম। কাজগুলোকে প্রধানত তিনটি ধরনে ভাগ করা যায়। প্রথমত, সুনির্দিষ্টভাবে মানবীয় বৈশিষ্ট্য দরকার এমন কাজ আর ইউনিক চিন্তার অনিবার্যতা থাকা কাজগুলো। তাঁর মতে, গ্রাফিক ডিজাইন এবং ভিজুয়াল আর্ট সম্পর্কিত কাজে এআই দক্ষতা দেখাতে পারবে। কেননা মৌলিক অ্যালগরিদম একটা বটকে লাখ লাখ শব্দ বিশ্লেষণের নির্দেশ দিতে পারে। এই নির্দেশের ফলে এআই নন্দনতত্ত্ব বিষয়ে অত্যন্ত সৃজনশীল হতে পারবে মুহূর্তেই। কিন্তু বিজ্ঞান, ওষুধ, আইন—এসব বিষয়ের ক্ষেত্রে নতুন ব্যবসাপদ্ধতি কিংবা আইনি কৌশলে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে পারবে। কারণ, মানব মস্তিষ্কের এসব বিশ্লেষণী ক্ষমতা এআই আয়ত্ত করতে পারেনি।
দ্বিতীয়ত, আন্তব্যক্তিক সম্পর্কের চূড়ান্তে গিয়ে করতে হয় যেসব কাজ, তা-ও মার্টিনের মতে নিরাপদ। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা, ব্যবসা পরামর্শক কিংবা হাসপাতালের নার্সের কাজ মানুষেরই থাকবে। তিনি মনে করেন, যখন মানুষকে গভীরভাবে বোঝা জরুরি, সেটা এআইয়ের বুঝতে অনেক দেরি আছে। এ ধরনের কাজে মানবিক সম্পর্ক নির্মাণ করাটা কাজের জন্যই জরুরি।
তৃতীয়ত, যেসব কাজে প্রচুর ঘোরাঘুরি এবং অভাবিত পরিস্থিতিতে সমস্যা সমাধানের দক্ষতা লাগে, সেই কাজ আপাতত মানুষের হাতেই থাকছে। অনেক হাতে-কলমের কাজ, যেমন ইলেকট্রিশিয়ানের কাজ, ঝালাইয়ের কাজ, কাঠমিস্ত্রির কাজ—সব নিরাপদ। প্রতি মুহূর্তে নতুন সব পরিস্থিতিতে পড়তে হয় এসব কাজে, যা এআই পারবে না। তিনি রসিকতা করে বলেন, ‘এসব করতে গেলে আপনাকে স্টার ওয়ার্স সিনেমার সি থ্রি পি ও রোবট নিয়োগ দিতে হবে। সেটা কই পাবেন?’
আমেরিকার বাফালো ইউনিভার্সিটির লেবার ইকোনমিকসের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর জোয়ান্নে সং ম্যাকগাফিন মনে করেন, সরাসরি হুমকি এই মুহূর্তে নেই। তবে কাজ বদলাবে। মানুষের কাজ আরও বেশি করে ইন্টারপার্সোনাল স্কিলের দিকে ঝুঁকবে। তিনি যুক্ত করেন, ‘কল্পনা করা যেতে পারে, এআই মানুষের চেয়ে ভালো করে ক্যানসার শনাক্ত করবে। ভবিষ্যতে, আমি ধারণা করি, এই নতুন প্রযুক্তি চিকিৎসকেরা ব্যবহার করবেন। কিন্তু তাঁদের ভূমিকা পুরো বদলাবে না। যন্ত্র টাকা গুনে দেবে ঠিকই কিন্তু মানুষ তো নতুন নতুন পণ্য নিয়ে সম্ভাব্য ক্রেতার কাছে তার বোধ-বুদ্ধি নিয়ে উপস্থিত হবে। সামাজিক সম্পর্কই খুব গুরুত্ববহ ভূমিকা রাখবে ভবিষ্যতে।’
মার্টিন ফোর্ডের একটা স্মরণীয় কথা দিয়ে লেখার যতি টানি। তিনি বলছেন, ‘অগ্রসর শিক্ষা কিংবা অধিক বেতনের অবস্থান এআইয়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধব্যবস্থা নয়। আমরা হয়তো ভাবি, বেশি বেতনের লোকটা যে জীবনধারণের জন্য গাড়ি চালায়, তার থেকে নিরাপদ। কিন্তু বেশি বেতনের লোকটার চেয়ে উবারচালক শান্তিতে থাকবে। কারণ, আমরা এখনো স্বচালিত গাড়ি পাইনি। কিন্তু এআই ঠিকঠাক প্রতিবেদন লিখতে পারে। অনেক ঘটনায় অধিক শিক্ষিত শ্রমিকেরা কম শিক্ষিতদের চেয়ে বেশি বিপদে থাকে। হোটেলের রুম পরিষ্কারের কাজের কথা ভাবুন, এই কাজ পুরো স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায় করা সত্যিই কঠিন। সংক্ষেপে, আমরা মানুষেরা এখনো নিশ্চিত থাকতে পারি। এআইয়ের ‘হাত’ আমাদের কাজ নিয়ে নিতে আরও বহু দেরি আছে, অন্তত বেশ কিছুটা সময়।’
সূত্র: বিবিসি
পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে পাঠানো স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে সারা বিশ্বে মোবাইল ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা দিয়ে থাকে স্টারলিংক। এবার কম্পিউটারের পাশাপাশি স্মার্টফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার ও কল করার সুবিধা চালু করতে যাচ্ছে ইলন মাস্কের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানটি। নতুন এ সুবিধা চালুর জন্য বিভিন্ন দেশে
১৩ ঘণ্টা আগেদেশের বাজারে ২০২৩ সালে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে অনার বাংলাদেশ। ব্র্যান্ডটি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আজকের পত্রিকা প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান অবস্থা, ব্র্যান্ড ও ইন্ডাস্ট্রির বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেছে অনার বাংলাদেশের ডেপুটি কান্ট্রি ম্যানেজার মুজাহিদুল ইসলামের সঙ্গে।
১ দিন আগেঅস্ট্রেলিয়ার যোগাযোগমন্ত্রী মিশেল রোল্যান্ড ২১ নভেম্বর সংসদে ইতিহাস সৃষ্টিকারী এক আইন উত্থাপন করেছেন। এই আইন পাস হলে দেশটিতে ১৬ বছরের কম বয়সী শিশু-কিশোরদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হবে।
১ দিন আগেঅ্যানিমেশন ও ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট বা ভিএফএক্স বর্তমান সময়ে অনেক শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। গেমিং, কনটেন্ট তৈরি, ব্র্যান্ডিং, ভার্চুয়াল সিমুলেশনসহ অনেক ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে অ্যানিমেশনের।
১ দিন আগে