নিউজিল্যান্ডের মাঠে প্রথমবারের মতো টেস্ট জিতে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ। যদিও ক্রাইস্টচার্চে সিরিজের শেষ টেস্টটা ভালো করতে পারেনি তারা। তবু সফরে প্রাপ্তি কম নয়। আগামীকাল দেশে ফেরার আগে এবার নিউজিল্যান্ড সফরটা ফিরে দেখলেন মুমিনুল হক। গতকাল ক্রাইস্টচার্চ থেকে ফোনে দেওয়া বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়কের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রানা আব্বাস।
রানা আব্বাস
প্রশ্ন: এবার নিউজিল্যান্ড সফরের অভিজ্ঞতা তাহলে কেমন হলো?
মুমিনুল হক: জিতলে সব ঠিক, না জিতলে সব বেঠিক। সফরের অভিজ্ঞতা ভালো। ম্যাচ জিতলে সবই ভালো লাগে। একটা জিতেছি। তবে পরের টেস্টটা হেরে গেছি।
প্রশ্ন: ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের আগে বলা হচ্ছিল টস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সেটিতে জিতেছেন, আগে বোলিং নিয়েছেন। যে বোলিং বিভাগ আগের টেস্টে দুর্দান্ত করেছে, তারাই আবার হ্যাগলি ওভালের সবুজ উইকেটে হতাশ করেছে। কারণটা কী?
মুমিনুল: এখানে দুটি কারণ হতে পারে। সিরিজের প্রথম টেস্ট জেতার পর সিরিজ জিততে হবে—এমন একটা প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল। সিরিজ জিতব এমন ভাবনায় যখন টসও জিতে গেলাম, তখন সবাই বেশ এক্সাইটেড হয়ে গিয়েছিলাম। আমরা অবশ্য জাতিগতভাবেই যেকোনো ব্যাপারে একটু এক্সাইটেড থাকি। ওখানেই নিজেদের আসল কাজের ব্যাপারে একটু ভুল করে ফেলেছি। আগের টেস্টে যেভাবে বোলিং করেছি, যে প্রক্রিয়ায় বোলিং করেছি, যে পরিকল্পনাটা ছিল—রান কম দিয়ে ওদের ওপর চাপ তৈরি করে বোলিং করব। ওই জায়গা থেকে সরে গিয়ে দ্বিতীয় টেস্টে হয়তো ভাবনায় ঢুকে গিয়েছিল, বলে বলে উইকেট নিতে হবে, ম্যাচ জিততে হবে। আমরা আসলে ফলকেন্দ্রিক চিন্তা বেশি করেছি দ্বিতীয় টেস্টে। আরেকটা কারণ হতে পারে, আমাদের পেস বোলারদের যদি দেখেন ৩–১০–১১টা টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা। তারা এতটা ঘাসের উইকেটে বোলিং করে অভ্যস্তও নয়। কোথায় বলটা ফেলতে হবে, কোন লেংথে, কত মিটারে বলটা পিচ করাব—এ ব্যাপারে তারা অনভিজ্ঞ কিংবা অভ্যস্ত নয়। যে কারণে তারা লেংথ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। আমাদের যে প্রক্রিয়ায় এগোচ্ছিলাম, সেটা ধরে রাখতে পারিনি। এ কারণে টেস্টটা হাত থেকে বেরিয়ে গেছে।
প্রশ্ন: নিউজিল্যান্ড যখন প্রথম ইনিংসে ৫০০ রানের ওপর করে ফেলল, মনস্তাত্ত্বিকভাবে তখনই নিশ্চয়ই অনেক পিছিয়ে পড়তে হয়েছে?
মুমিনুল: হ্যাঁ, অবশ্যই, প্রতিপক্ষ যখন বড় স্কোর করে ফেলে তখন মনস্তাত্ত্বিকভাবে চাপে পড়ে যেতে হয়। সেটিও আবার এমন কন্ডিশনে। যদিও পরে আবার উইকেট ভালো হয়ে গেছে। অবশ্যই আমাদের বোলাররা ভালো বোলিং করতে পারেনি। পরে আমাদের ব্যাটিং বিভাগও ভালো করতে পারেনি। প্রথম ইনিংসে আমরা যে ব্যাটিং করেছি, একেবারেই বাজে! বোলাররা প্রতিদিন ভালো বোলিং করবে না। আমাদের ব্যাটারদের কাজ ছিল ওদের ওই ব্যর্থতা পুষিয়ে দেওয়া। যদি ভালো একটা স্কোর গড়তে পারতাম, পরে উইকেট অনেক ভালো হয়ে গিয়েছিল। তাহলে ওটা (বাজে বোলিং) অনেক পুষিয়ে নেওয়া যেত। এতে বোলাররা দ্বিতীয় ইনিংসে আরও ভালোভাবে ফিরে আসতে পারত। আমরা সেটা পারিনি। প্রথম ইনিংসেই আমরা ম্যাচের বাইরে চলে গেছি। প্রথম ইনিংস সব সময়ই গুরুত্বপূর্ণ, সেটা আপনি ব্যাটিং কিংবা বোলিং বলুন।
প্রশ্ন: অথচ এই ব্যাটিং বিভাগই মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে ১৭৬ ওভার ব্যাটিং করেছে। ক্রাইস্টচার্চে তারাই টেস্টের ব্যাটিং ভুলে গেল!
মুমিনুল: এটা দুইভাবে চিন্তা করতে পারেন। প্রত্যাশা বেড়ে গিয়েছিল। আরেকটি হতে পারে, আমরা একটা টেস্ট জিতেছি, আমাদের মন ভরে গেছে, অনেক খুশি হয়ে গেছি। আমরা আত্মতৃপ্তিতে ভুগেছি। অধিনায়ক হিসেবে আমার এটাই মনে হয়েছে। আমরা হয়তো একটা টেস্ট খুব ভালো খেলি কিংবা একটা ইনিংস খুব ভালো খেলি। এটাই আমাদের চ্যালেঞ্জ, দুটি ইনিংসেই ভালো খেলতে হবে। দুটো ইনিংসেই ভালো বোলিং করতে হবে। ঘুরে দাঁড়াতে হবে। তাহলেই আমরা বড় দল হওয়ার দিকে এগোব। একটা টেস্ট জিতে দুনিয়া উদ্ধার করে ফেললাম, বিষয়টা তা নয়। আমার সামনে আরও বড় বড় চ্যালেঞ্জ আছে। বড় বড় চ্যালেঞ্জ আসবে। এসব চ্যালেঞ্জ জিততে হলে এক টেস্টে জিতে পরেরটাও একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। একটা জিতেই আত্মতৃপ্তিতে ভোগা যাবে না। একটা চ্যাম্পিয়ন দল এভাবে গড়ে ওঠে না। না হলে আজীবন আমাদের ৯ নম্বরে থাকতে হবে।
প্রশ্ন: যে প্রক্রিয়ার কথা বলছিলেন, সেটি ঠিকঠাক ধারাবাহিক করতে আপনাদের আরও কোথায় কোথায় কাজ করতে হবে?
মুমিনুল: দলের প্রতিটা খেলোয়াড়ের ওই ক্ষুধা থাকতে হবে। দলের, ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স—সব দিকেই ওই ক্ষুধা থাকতে হবে। যেটা বলছিলাম, প্রথম টেস্টে যে প্রসেসে ছিলাম পরেরটায় সেটিতে ছিলাম না। অনেক বেশি ফল নিয়ে ভেবেছি।
প্রশ্ন: তবু সব মিলিয়ে প্রাপ্তি একেবারে কম নয় এই নিউজিল্যান্ড সফরে, তাই না?
মুমিনুল: প্রাপ্তি একটু আছে। তবে এই প্রাপ্তিতে আমি খুব একটা খুশি নই। ৬ বছর, ১০ বছর পর একটা টেস্ট জিতবেন—এতেই খুশি হয়ে গেলেন আবার পরের টেস্টে বাজেভাবে হারলেন, তাহলে সেই একই কথা হলো। বিদেশের মাঠে একটা টেস্ট জিতেছেন, অবশ্যই এটা একটা প্রাপ্তি। শেষ টেস্ট যদি ভালোভাবে শেষ করতে পারতাম...ম্যাচ হারতেই পারি, তবে খুব ভালোভাবে শেষ করতে পারলে বুঝতাম যে না, ভালো প্রাপ্তি আছে। এই সফরে আমাদের প্রাপ্তি এটাই, সিরিজটা ড্র করতে পেরেছি, লিটন দেশের বাইরে সেঞ্চুরি করেছে। ধারাবাহিক রান পেয়েছে। প্রাপ্তি এটাই, পেসাররা ম্যাচ জেতাতে পারে, এটা প্রমাণ হয়েছে। ইবাদত ৬ উইকেট নিয়েছে।
প্রশ্ন: লিটনের ব্যাটিং নিয়ে আলাদাভাবে যদি বলতেন।
মুমিনুল: লিটন গত তিনটা টেস্ট সিরিজেই ধারাবাহিক ভালো খেলছে। এখন অনেক বেশি মনোযোগী সে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যর্থ হওয়ার পর তার মনোযাগ আরও বেড়েছে। সে এখন টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে অনেক ভাবে। এখন সে অনেক পরিণত। টেকনিক্যালিও অনেক ভালো।
প্রশ্ন: কদিন আগে শেষ হওয়া ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের মৌসুম দেখে মনে হলো, দেশের উইকেটে পেসারদের পুরোনো হাহাকারটা থেকেই গেছে।
মুমিনুল: বিশ্বের সেরা পেসারদের যদি ফ্ল্যাট উইকেটে বোলিং করতে বলেন, সেখানে কোন লেংথে বোলিং করতে হবে, তারা সেটা জানে। সেরা পেসাররা জানে কোন উইকেটে কীভাবে বোলিং করতে হয়। ধীরে ধীরে আমাদের বোলাররাও শিখছে। হয়তো একটু সময় লাগবে। আরও ৫-১০ টেস্ট হয়তো লেগে যাবে। এতটুকু সময় একটু ধৈর্য ধরতে হবে। আমরা এই ধৈর্য ধরতে পারি না। দ্রুত বলে ফেলি—ওকে দিয়ে হচ্ছে না, চলে না ইত্যাদি।
প্রশ্ন: অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের অনুপস্থিতিতে তরুণদের নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার এই বাস্তবতা থেকে আপনার শিক্ষাটা কী?
মুমিনুল: কেউ চোটে পড়ল, কেউ বিরতি নিল—এসব আমার হাতে নেই। আমার হাতে যে রিসোর্স আছে, সেটা নিয়েই খেলতে হবে। ওই বিশ্বাসটাই রাখি, এই রিসোর্স নিয়েই আমাকে নামতে হবে, লড়তে হবে। এতে ফল অনেক সময় পক্ষে আসবে, কখনো আসবে না।
প্রশ্ন: গত আড়াই বছরে অধিনায়ক হিসেবে কতটা গুছিয়ে নিতে পারলেন?
মুমিনুল: আগেই বললাম, ম্যাচ জিতলে সব ঠিক থাকে। এখন মনে হচ্ছে, দলটা একটা স্থিতিশীল জায়গায় আছে। কারণ, যারা টেস্ট ক্রিকেট খেলে তারাই ঘুরেফিরে আসছে। খুব একটা পরিবর্তন হয় না। সামনে সিরিজে হয়তো সাকিব–তামিম ভাই ফিরবেন। দল তখন আরও শক্তিশালী হবে।
প্রশ্ন: পরের সফর দক্ষিণ আফ্রিকায়, মার্চে। আরেকটি কঠিন সফর। সেখানে ভালো করতে এবার নিউজিল্যান্ড সফর থেকে কতটা আত্মবিশ্বাসী হয়েছেন?
মুমিনুল: আমরা যেটা দেখি, সেটাই সাধারণত বিশ্বাস করি। যেহেতু একটা টেস্ট জিতেছি, ফল দেখেছি, আপনারা (সংবাদমাধ্যম) বিশ্বাস করেন কি না জানি না, আমরা খেলোয়াড়েরা বিশ্বাস করি যে আমরা পারি। বিদেশে ভালো খেলতে পারি, টেস্ট জিততে পারি—এই বিশ্বাস সবার মধ্যে এসেছে। এটাই দরকার ছিল।
প্রশ্ন: এবার নিউজিল্যান্ড সফরের অভিজ্ঞতা তাহলে কেমন হলো?
মুমিনুল হক: জিতলে সব ঠিক, না জিতলে সব বেঠিক। সফরের অভিজ্ঞতা ভালো। ম্যাচ জিতলে সবই ভালো লাগে। একটা জিতেছি। তবে পরের টেস্টটা হেরে গেছি।
প্রশ্ন: ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের আগে বলা হচ্ছিল টস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সেটিতে জিতেছেন, আগে বোলিং নিয়েছেন। যে বোলিং বিভাগ আগের টেস্টে দুর্দান্ত করেছে, তারাই আবার হ্যাগলি ওভালের সবুজ উইকেটে হতাশ করেছে। কারণটা কী?
মুমিনুল: এখানে দুটি কারণ হতে পারে। সিরিজের প্রথম টেস্ট জেতার পর সিরিজ জিততে হবে—এমন একটা প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল। সিরিজ জিতব এমন ভাবনায় যখন টসও জিতে গেলাম, তখন সবাই বেশ এক্সাইটেড হয়ে গিয়েছিলাম। আমরা অবশ্য জাতিগতভাবেই যেকোনো ব্যাপারে একটু এক্সাইটেড থাকি। ওখানেই নিজেদের আসল কাজের ব্যাপারে একটু ভুল করে ফেলেছি। আগের টেস্টে যেভাবে বোলিং করেছি, যে প্রক্রিয়ায় বোলিং করেছি, যে পরিকল্পনাটা ছিল—রান কম দিয়ে ওদের ওপর চাপ তৈরি করে বোলিং করব। ওই জায়গা থেকে সরে গিয়ে দ্বিতীয় টেস্টে হয়তো ভাবনায় ঢুকে গিয়েছিল, বলে বলে উইকেট নিতে হবে, ম্যাচ জিততে হবে। আমরা আসলে ফলকেন্দ্রিক চিন্তা বেশি করেছি দ্বিতীয় টেস্টে। আরেকটা কারণ হতে পারে, আমাদের পেস বোলারদের যদি দেখেন ৩–১০–১১টা টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা। তারা এতটা ঘাসের উইকেটে বোলিং করে অভ্যস্তও নয়। কোথায় বলটা ফেলতে হবে, কোন লেংথে, কত মিটারে বলটা পিচ করাব—এ ব্যাপারে তারা অনভিজ্ঞ কিংবা অভ্যস্ত নয়। যে কারণে তারা লেংথ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। আমাদের যে প্রক্রিয়ায় এগোচ্ছিলাম, সেটা ধরে রাখতে পারিনি। এ কারণে টেস্টটা হাত থেকে বেরিয়ে গেছে।
প্রশ্ন: নিউজিল্যান্ড যখন প্রথম ইনিংসে ৫০০ রানের ওপর করে ফেলল, মনস্তাত্ত্বিকভাবে তখনই নিশ্চয়ই অনেক পিছিয়ে পড়তে হয়েছে?
মুমিনুল: হ্যাঁ, অবশ্যই, প্রতিপক্ষ যখন বড় স্কোর করে ফেলে তখন মনস্তাত্ত্বিকভাবে চাপে পড়ে যেতে হয়। সেটিও আবার এমন কন্ডিশনে। যদিও পরে আবার উইকেট ভালো হয়ে গেছে। অবশ্যই আমাদের বোলাররা ভালো বোলিং করতে পারেনি। পরে আমাদের ব্যাটিং বিভাগও ভালো করতে পারেনি। প্রথম ইনিংসে আমরা যে ব্যাটিং করেছি, একেবারেই বাজে! বোলাররা প্রতিদিন ভালো বোলিং করবে না। আমাদের ব্যাটারদের কাজ ছিল ওদের ওই ব্যর্থতা পুষিয়ে দেওয়া। যদি ভালো একটা স্কোর গড়তে পারতাম, পরে উইকেট অনেক ভালো হয়ে গিয়েছিল। তাহলে ওটা (বাজে বোলিং) অনেক পুষিয়ে নেওয়া যেত। এতে বোলাররা দ্বিতীয় ইনিংসে আরও ভালোভাবে ফিরে আসতে পারত। আমরা সেটা পারিনি। প্রথম ইনিংসেই আমরা ম্যাচের বাইরে চলে গেছি। প্রথম ইনিংস সব সময়ই গুরুত্বপূর্ণ, সেটা আপনি ব্যাটিং কিংবা বোলিং বলুন।
প্রশ্ন: অথচ এই ব্যাটিং বিভাগই মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে ১৭৬ ওভার ব্যাটিং করেছে। ক্রাইস্টচার্চে তারাই টেস্টের ব্যাটিং ভুলে গেল!
মুমিনুল: এটা দুইভাবে চিন্তা করতে পারেন। প্রত্যাশা বেড়ে গিয়েছিল। আরেকটি হতে পারে, আমরা একটা টেস্ট জিতেছি, আমাদের মন ভরে গেছে, অনেক খুশি হয়ে গেছি। আমরা আত্মতৃপ্তিতে ভুগেছি। অধিনায়ক হিসেবে আমার এটাই মনে হয়েছে। আমরা হয়তো একটা টেস্ট খুব ভালো খেলি কিংবা একটা ইনিংস খুব ভালো খেলি। এটাই আমাদের চ্যালেঞ্জ, দুটি ইনিংসেই ভালো খেলতে হবে। দুটো ইনিংসেই ভালো বোলিং করতে হবে। ঘুরে দাঁড়াতে হবে। তাহলেই আমরা বড় দল হওয়ার দিকে এগোব। একটা টেস্ট জিতে দুনিয়া উদ্ধার করে ফেললাম, বিষয়টা তা নয়। আমার সামনে আরও বড় বড় চ্যালেঞ্জ আছে। বড় বড় চ্যালেঞ্জ আসবে। এসব চ্যালেঞ্জ জিততে হলে এক টেস্টে জিতে পরেরটাও একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। একটা জিতেই আত্মতৃপ্তিতে ভোগা যাবে না। একটা চ্যাম্পিয়ন দল এভাবে গড়ে ওঠে না। না হলে আজীবন আমাদের ৯ নম্বরে থাকতে হবে।
প্রশ্ন: যে প্রক্রিয়ার কথা বলছিলেন, সেটি ঠিকঠাক ধারাবাহিক করতে আপনাদের আরও কোথায় কোথায় কাজ করতে হবে?
মুমিনুল: দলের প্রতিটা খেলোয়াড়ের ওই ক্ষুধা থাকতে হবে। দলের, ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স—সব দিকেই ওই ক্ষুধা থাকতে হবে। যেটা বলছিলাম, প্রথম টেস্টে যে প্রসেসে ছিলাম পরেরটায় সেটিতে ছিলাম না। অনেক বেশি ফল নিয়ে ভেবেছি।
প্রশ্ন: তবু সব মিলিয়ে প্রাপ্তি একেবারে কম নয় এই নিউজিল্যান্ড সফরে, তাই না?
মুমিনুল: প্রাপ্তি একটু আছে। তবে এই প্রাপ্তিতে আমি খুব একটা খুশি নই। ৬ বছর, ১০ বছর পর একটা টেস্ট জিতবেন—এতেই খুশি হয়ে গেলেন আবার পরের টেস্টে বাজেভাবে হারলেন, তাহলে সেই একই কথা হলো। বিদেশের মাঠে একটা টেস্ট জিতেছেন, অবশ্যই এটা একটা প্রাপ্তি। শেষ টেস্ট যদি ভালোভাবে শেষ করতে পারতাম...ম্যাচ হারতেই পারি, তবে খুব ভালোভাবে শেষ করতে পারলে বুঝতাম যে না, ভালো প্রাপ্তি আছে। এই সফরে আমাদের প্রাপ্তি এটাই, সিরিজটা ড্র করতে পেরেছি, লিটন দেশের বাইরে সেঞ্চুরি করেছে। ধারাবাহিক রান পেয়েছে। প্রাপ্তি এটাই, পেসাররা ম্যাচ জেতাতে পারে, এটা প্রমাণ হয়েছে। ইবাদত ৬ উইকেট নিয়েছে।
প্রশ্ন: লিটনের ব্যাটিং নিয়ে আলাদাভাবে যদি বলতেন।
মুমিনুল: লিটন গত তিনটা টেস্ট সিরিজেই ধারাবাহিক ভালো খেলছে। এখন অনেক বেশি মনোযোগী সে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যর্থ হওয়ার পর তার মনোযাগ আরও বেড়েছে। সে এখন টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে অনেক ভাবে। এখন সে অনেক পরিণত। টেকনিক্যালিও অনেক ভালো।
প্রশ্ন: কদিন আগে শেষ হওয়া ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের মৌসুম দেখে মনে হলো, দেশের উইকেটে পেসারদের পুরোনো হাহাকারটা থেকেই গেছে।
মুমিনুল: বিশ্বের সেরা পেসারদের যদি ফ্ল্যাট উইকেটে বোলিং করতে বলেন, সেখানে কোন লেংথে বোলিং করতে হবে, তারা সেটা জানে। সেরা পেসাররা জানে কোন উইকেটে কীভাবে বোলিং করতে হয়। ধীরে ধীরে আমাদের বোলাররাও শিখছে। হয়তো একটু সময় লাগবে। আরও ৫-১০ টেস্ট হয়তো লেগে যাবে। এতটুকু সময় একটু ধৈর্য ধরতে হবে। আমরা এই ধৈর্য ধরতে পারি না। দ্রুত বলে ফেলি—ওকে দিয়ে হচ্ছে না, চলে না ইত্যাদি।
প্রশ্ন: অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের অনুপস্থিতিতে তরুণদের নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার এই বাস্তবতা থেকে আপনার শিক্ষাটা কী?
মুমিনুল: কেউ চোটে পড়ল, কেউ বিরতি নিল—এসব আমার হাতে নেই। আমার হাতে যে রিসোর্স আছে, সেটা নিয়েই খেলতে হবে। ওই বিশ্বাসটাই রাখি, এই রিসোর্স নিয়েই আমাকে নামতে হবে, লড়তে হবে। এতে ফল অনেক সময় পক্ষে আসবে, কখনো আসবে না।
প্রশ্ন: গত আড়াই বছরে অধিনায়ক হিসেবে কতটা গুছিয়ে নিতে পারলেন?
মুমিনুল: আগেই বললাম, ম্যাচ জিতলে সব ঠিক থাকে। এখন মনে হচ্ছে, দলটা একটা স্থিতিশীল জায়গায় আছে। কারণ, যারা টেস্ট ক্রিকেট খেলে তারাই ঘুরেফিরে আসছে। খুব একটা পরিবর্তন হয় না। সামনে সিরিজে হয়তো সাকিব–তামিম ভাই ফিরবেন। দল তখন আরও শক্তিশালী হবে।
প্রশ্ন: পরের সফর দক্ষিণ আফ্রিকায়, মার্চে। আরেকটি কঠিন সফর। সেখানে ভালো করতে এবার নিউজিল্যান্ড সফর থেকে কতটা আত্মবিশ্বাসী হয়েছেন?
মুমিনুল: আমরা যেটা দেখি, সেটাই সাধারণত বিশ্বাস করি। যেহেতু একটা টেস্ট জিতেছি, ফল দেখেছি, আপনারা (সংবাদমাধ্যম) বিশ্বাস করেন কি না জানি না, আমরা খেলোয়াড়েরা বিশ্বাস করি যে আমরা পারি। বিদেশে ভালো খেলতে পারি, টেস্ট জিততে পারি—এই বিশ্বাস সবার মধ্যে এসেছে। এটাই দরকার ছিল।
এই শতাব্দির গোড়ার দিকের গল্প। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে গতিময় এক ফাস্ট বোলারকে চোখে পড়ল রাকিব হায়দার পাভেলের। সেই বোলার ব্যাটেও ঝড় তুলতে পারেন। বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকেই পাভেল ওই অলরাউন্ডারকে নিয়ে এলেন তাঁদের প্রথম বিভাগ ক্রিকেটের আজাদ স্পোর্টিংয়ে।
৭ ঘণ্টা আগেএবার সাফজয়ীদের পুরস্কৃত করল বেসরকারি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান সাউথইস্ট ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানটি আজ তাদের কার্যালয়ে আমন্ত্রণ জানিয়ে এই সম্মাননা জানায়। এ সময় ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছাড়াও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি তাবিথ আউয়াল এবং কয়েকজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
৮ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমানের মৃত্যুতে তাঁর পরিবার পড়েছে বিপাকে। সংকটময় এই মুহূর্তে জিয়ার পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন বাংলাদেশের তারকা ক্রিকেটার তামিম ইকবাল।
৯ ঘণ্টা আগেপাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল করেছিলেন ১৬ রান। দুইবার মেরেছিলেন ডাক। সেই ব্যর্থতার ঝাল ঝাড়লেন অন্য সংস্করণ টি-টোয়েন্টিতে। ব্রিসবেনের গ্যাবায় আজ প্রথম টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের ওপর চালালেন তাণ্ডব। ম্যাক্সওয়েলের তাণ্ডবের পর অস্ট্রেলিয়ার আক্রমণাত্মক বোলিংয়ে চোখে সর্ষেফ
১০ ঘণ্টা আগে