প্রবাসী ফুটবলার টানতে কেন পিছিয়ে বাফুফে

জহির উদ্দিন মিশু,ঢাকা
প্রকাশ : ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০: ৫৫
ছবি: এএফপি

২০১৫ সালে যাঁদের নাম ছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) তালিকায়, তাঁরা এখন আলোচনার বাইরে। নতুন করে আরও ছয়জনের কথা শোনা গেলেও বাফুফে বলছে, সংখ্যাটা এত নয়। এ বিষয়ে কেউ কেউ আবার বাফুফের গাফিলতিও দেখছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দেশের জনপ্রিয় এক ক্লাবের টিম ম্যানেজার গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ন্যাচারালাইজড ফুটবলাররা কখনোই বলবে না, আমাকে নেন, আমি খেলব। আপনাকেই তাদের সুন্দর করে প্রস্তাব দিতে হবে। কিন্তু কাজটি বাফুফে কতটুকু করছে, সে ব্যাপারে আমি সন্দিহান। তা ছাড়া যারা এরই মধ্যে বাংলাদেশের হয়ে খেলার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে, তাদের আনতেও তেমন গুরুত্ব নেই ফেডারেশনের। আমি তো তাদের গাফিলতি দেখছি। না হলে এক হামজার জন্য এত অপেক্ষা কেন।’

যদিও বাফুফে গাফিলতির কথা মানতে নারাজ। দেশের ফুটবলের এই অভিভাবক সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার জানিয়েছেন, তাঁরা এখন পর্যন্ত অনেক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলারকে মেইল করেছেন। কিন্তু একাধিক খেলোয়াড় খেলতেই রাজি হননি। শুক্রবার বাফুফের এই কর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আসলে অনেকে তো অনেকের কথা বলছেন; কিন্তু কয়জনের আগ্রহ আছে, সেটা জানা দরকার। আমরা ধরে ধরে বেশ কয়েকজনকে মেইল করেছি এরই মধ্যে, তবে বেশির ভাগই খেলতে রাজি নন। এই যেমন সামিত সোমের কথাই বলি। তাকে মেইল করার পর ও বলল, এ মুহূর্তে সে বাংলাদেশের হয়ে খেলতে আগ্রহী নয়। এভাবে যারা অনিচ্ছুক কিংবা যাদের উত্তরে আমরা সন্তুষ্ট হতে পারি না, তখন তো তাদের নিয়ে আর কিছু করার থাকে না।’

অবশ্য বাফুফের বর্তমান সভাপতি তাবিথ আউয়াল এ ব্যাপারে ইতিবাচক, ‘বিদেশে জন্ম নেওয়া, বড় হওয়া বা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কেউ যদি বাংলাদেশের হয়ে খেলতে চায়, তাদের খেলার সুযোগ দেওয়া দেশের ফুটবলের জন্যই মঙ্গলজনক।’

বর্তমানে কয়জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলারকে নিয়ে কাজ করছে বাফুফে? এমন প্রশ্নের উত্তরে হামজা চৌধুরী আর সুলেমান দিয়াবাতের নাম বলেছেন তুষার, ‘এ মুহূর্তে আমরা হামজা ও দিয়াবাতেকে নিয়ে কাজ করছি। তবে দিয়াবাতের বিষয়টায় একটু সমস্যা আছে। তবু আমরা ইমিগ্রেশন ইনফরমেশনের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।’

এএফসিতে (এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন) থাকা অনেক দেশ এই ন্যাচারালাইজড ফুটবলারদের এনে বদলে দিয়েছে তাদের ফুটবল-ভাগ্য। যেমন ইন্দোনেশিয়া। নব্বইয়ের পর তাদের ঝলক ফুটবল বিশ্ব দারুণভাবে টের পেয়েছিল। কিন্তু ২০০০ সালের পর তারা অনেকটা ব্যাকফুটে চলে যায়। ২০১৬ সালে ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ে ১৯১তে নেমে আসে। সেখান থেকেই আবার ঘুরে দাঁড়ায় তারা। ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ে ১৩০তম অবস্থান দলটির। কদিন আগে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে সৌদি আরবের মতো দলকেও ইন্দোনেশিয়া গুঁড়িয়ে দিয়েছে। তাদের এমন উন্নতিতে রয়েছে ন্যাচারালাইজড ফুটবলারদের বড় অবদান। ইন্দোনেশিয়ার বর্তমান দলে দশজনের বেশি ন্যাচারালাইজড ফুটবলার। থাইল্যান্ড, কাতার, মালয়েশিয়া এমনকি প্রতিবেশী ভারতও ফুটবলে উন্নতিতে ন্যাচারালাইজড ফুটবলারদের দিকে হাত বাড়িয়েছে।

সে পথে হাঁটতে বাফুফের সমস্যা কোথায়! গত এক দশকে তারা কেবল জামাল ভূঁইয়া আর তারিক কাজীর গায়েই লাল-সবুজের জার্সি চড়াতে পেরেছে। আর আলোচনায় থেকেছেন ফরিদ আলী, রিদওয়ান হান্নান, রিসায়াত ইসলাম বা সামিত সোমদের মতো অনেকে। বাংলাদেশের জার্সি গায়ে তোলার ইচ্ছা থাকার পরও বিলম্বিত হচ্ছে হামজা চৌধুরী কিংবা সুলেমান দিয়াবাতেকে পাওয়াটা।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত