কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারা হেফাজতে মারা যাওয়া বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান হিরা খানের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের খোঁজখবর নিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। আজ সোমবার বেলা ৩টায় দলীয় কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে সেখানে যান তিনি।

নিহতের পরিবারে খোঁজখবর নেওয়া শেষে জয়নুল আবেদীন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এই সরকার মানবতায় বিশ্বাস করে না। তারা মিথ্যা মামলা দিয়ে যেসব নেতা-কর্মীদের জেলখানার নিয়ে গেছে, তাদের স্বাস্থ্যের অবস্থা এবং তাদের সুন্দর জীবনরক্ষা করার দায়িত্ব ছিল বর্তমান সরকারের। কিন্তু শাসক দল মানবতায় বিশ্বাস করে না বলে তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরকার পতনের এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যাঁরা জেলখানায় মৃত্যুবরণ করেছে, তাদের পরিবারের খোঁজখবর রাখার দায়িত্ব হচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের। কেননা তারা এ দেশের মানুষের জন্য, এ দেশের গণতন্ত্র রক্ষার জন্য আন্দোলন করার করে গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাদের জেলে পুড়ে, বন্দী করে হত্যা করা হয়েছে। আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এই গাজীপুর অঞ্চলের।’

বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘জনগণ এই ডামি নির্বাচনকে গ্রহণ করে নাই, আমরাও গ্রহণ করি নাই। যাঁরা আজ জেলখানায় মৃত্যুবরণ করেছে তাদের শহীদী মৃত্যু হয়েছে। শহীদের রক্ত কোনো দিন বৃথা যায় না। এই সরকারের কর্মকাণ্ডের কারণেই তাদের পতন হবে। মানুষের গণতন্ত্র হরণ করে কেউ টিকে থাকতে পারে না। পৃথিবীর কোনো সরকার টিকতে পারেনি।’

বিএনপি নেতা জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘তৃণমূল বিএনপির কাছে একটাই বার্তা তাঁরা যেভাবে আন্দোলন করছে, তার চেয়ে বেশি আন্দোলন করে সরকার পতন ঘটাতে হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘোষণা আসবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমাদের মহাসচিব, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মুক্তি লাভ করেছেন। সারা দেশের হাজার হাজার নেতা-কর্মী মুক্তি পেয়েছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে কঠোর আন্দোলন আসবে।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন—কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, গাজীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ্ রিয়াজুল হান্নান, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ওমর ফারুক সাফিন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান ফকির, সাধারণ সম্পাদক মো. আক্তারুল আলম মাষ্টার, জেলা বিএনপির সহসভাপতি মো. শফিকুল ইসলামসহ বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

উল্লেখ্য, বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান হিরা খান (৪৫) উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের মৃত গিয়াসউদ্দিন খানের ছেলে। তিনি কাওরাইদ ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

গত ১ ডিসেম্বর শুক্রবার কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এ বন্দী থাকা অবস্থায় বুকে ব্যথা অনুভব করলে দ্রুত তাঁকে গাজীপুর শহীদ তাজ উদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুপুর ১২টার দিকে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এর আগে অক্টোবর মাসে বিএনপির কেন্দ্রীয় সমাবেশ থেকে ফেরার পথে শ্রীপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে শ্রীপুর থানা-পুলিশ। ২৯ অক্টোবর শ্রীপুর থানার একটি বিস্ফোরক মামলায় তাকে প্রথমে গাজীপুর জেলা কারাগারে ও পরবর্তীতে ১০ নভেম্বর কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এ নেওয়া হয়।