তানিম আহমেদ, ঢাকা
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে ঢাকা সেনানিবাসে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দীর্ঘ এক যুগ পর গুরুত্বপূর্ণ এ দিবসের কর্মসূচিতে তাঁর অংশগ্রহণকে রাজনীতির জন্য ইতিবাচক ঘটনা বলে মনে করছেন বিশ্লেষক ও রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা। তাঁরা বলছেন, আওয়ামী লীগের স্বৈরশাসনের অবসানের পর অভ্যুত্থানের পক্ষের দলগুলোর মধ্যে যে মনস্তাত্ত্বিক দূরত্ব তৈরি হচ্ছিল, খালেদা জিয়ার উপস্থিতির কারণে তা কিছুটা হলেও ঘুচবে। পর্যবেক্ষকদের ধারণা, বিষয়টি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আশাবাদ জাগানোর পাশাপাশি অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক সংস্কৃতির পথে হাঁটারও ইঙ্গিত বহন করে।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বর বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর তিনটি শাখা সমন্বিতভাবে যাত্রা শুরু করেছিল। সে কারণে দিনটি সশস্ত্র বাহিনী দিবস হিসেবে পালিত হয়। প্রতিবছর সেনাকুঞ্জে এ দিবসের অনুষ্ঠানে সরকার- প্রধান ও অন্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং সশস্ত্র বাহিনীর শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের পাশাপাশি দেশের বিশিষ্টজনদের মিলনমেলা বসে। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বিরোধী দলীয় নেতা থাকার সময় সর্বশেষ ২০১২ সালে সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন। এরপর থেকে তাঁকে দেখা যায়নি। বিএনপির পক্ষ থেকে গত বৃহস্পতিবার দাবি করা হয়, গত ১২ বছর পরিকল্পিতভাবে সশস্ত্র বাহিনী থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দূরে রেখেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এবার খালেদা জিয়াকে সেনাবাহিনীর উচ্চপর্যায়ের দুজন কর্মকর্তা গিয়ে আমন্ত্রণ জানান। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকেও অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার উপস্থিতির বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছিল, যিনি একই সঙ্গে প্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানের স্ত্রী। তিনি সেনাকুঞ্জে উপস্থিত হওয়ার পর বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খালেদা জিয়া অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হলে সবাই তাঁকে দাঁড়িয়ে সম্মান জানান। একপর্যায়ে তাঁকে ঘিরে জটলার সৃষ্টি হয়েছিল। উপস্থিত রাজনৈতিক নেতারা আলাদাভাবে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানেরা সস্ত্রীক আলাদা কথা বলেন। উপস্থিত বিদেশি কূটনৈতিক মিশনের সদস্যরাও খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। উপস্থিত এক অতিথি বলেন, দেশের রাজনীতিতে খালেদা জিয়ার এখনো যে
একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান রয়েছে, তা ছিল দৃশ্যমান।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সম্প্রতি বিভিন্ন ইস্যুতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, বিএনপি, জামায়াত ও অন্যান্য ইসলামি দল, সিপিবি, গণতন্ত্র মঞ্চসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে দৃশ্যত মনস্তাত্ত্বিক দূরত্ব তৈরি হয়েছে। এর আলোকে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টাসহ উপদেষ্টা পরিষদ এবং রাজনৈতিক নেতাদের উপস্থিতি ও বিএনপির নেত্রীর সঙ্গে তাঁদের কুশল বিনিময় বরফ গলাতে সহায়তা করবে বলে মনে করা হচ্ছে। সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণে রাজনীতিতে ইতিবাচক ধারা সৃষ্টি হবে বলে মনে করেন কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচন যে সকলের অংশগ্রহণে হবে, সে বিষয়ে এটা অর্থবহ ঘটনা বলে আমার কাছে মনে হয়।’
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খালেদা জিয়া দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতা। ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। তারপর তিনি এই অনুষ্ঠানে আসতে পেরেছেন। তাতে সবার মধ্যে খুশি ও স্বস্তির হাওয়া বইছে। এখন দেখতে হবে, বিষয়টি রাজনীতিতে কীভাবে আসে; কিংবা আসে কি না।’
বর্ষীয়ান, অভিজ্ঞ রাজনীতিক হিসেবে এই অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার উপস্থিতি দেশের রাজনীতির জন্য স্বস্তির বলে মনে করেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের পর যে বিশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে, সে ক্ষেত্রে এটি কিছুটা স্বস্তি ও আস্থা তৈরি করবে। সেখানে সশস্ত্র বাহিনী, রাজনৈতিক দল, আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা ছাত্র-তরুণদের সঙ্গে যে হৃদ্যতার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল, তার রাজনৈতিক গুরুত্ব আছে। খালেদা জিয়ার উপস্থিতিসমৃদ্ধ এই মিলনমেলা সবার মধ্যকার আপাত-মনস্তাত্ত্বিক দূরত্ব দূর করবে বলে মনে করি।’
গণফোরাম সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান মোস্তফা মহসীন মন্টু বলেন, ‘এ রকম অনুষ্ঠান আমাদের জাতীয় ঐক্য গড়ে দেবে। প্রতিহিংসার রাজনীতি জাতীয় ঐক্য গড়তে পারে না।’
খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, মো. নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম। সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ও আসিফও ছিলেন আন্দোলনের সমন্বয়ক। কুশলাদির একটি ছবির ক্যাপশন ছিল, ‘সোনালী অতীত, গর্বিত ভবিষ্যৎ’। উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ লেখেন, ‘আপনাকে এই সুযোগ করে দিতে পেরে আমরা গর্বিত।’ সারজিস আলম লেখেন, ‘আপনার আপসহীন মনোভাব আমাদের অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।’
পর্যবেক্ষকেরা মনে করেন, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের বিষয়ে অবস্থান, নির্বাচনের সময়সহ বিভিন্ন ইস্যুতে অন্তর্বর্তী সরকার, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলের মধ্যে মতান্তরের যে আভাস পাওয়া যাচ্ছে, তা নিরসনে ভূমিকা রাখতে পারে এদিনের আশাজাগানিয়া ছবিটি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. মাহবুবউল্লাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তাঁদের স্তরের রাজনীতিকেরা যা কিছুই করেন, তার একটা প্রভাব রাজনীতিতে হয়, সমাজে হয়। ওনার ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হওয়ার কথা নয়।’
নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আ ন ম মুনীরুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন খালেদা জিয়াকে এসব অনুষ্ঠান থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছিল। সেখানে এবার সশস্ত্র বাহিনী এবং উপস্থিত অন্যরা তাঁকে সাদরে আমন্ত্রণ ও স্বাগত জানিয়েছেন। এর প্রভাব অবশ্যই সব জায়গায় থাকবে।’
সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার উপস্থিতি বিএনপির নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত করবে বলে মনে করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক শামসুল আলম। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সব রাজনৈতিক নেতৃত্ব খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেছেন। এর রাজনৈতিক তাৎপর্য হচ্ছে, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগবিরোধী সবাই একত্র।’
২০১৮ সালে দুর্নীতি মামলায় কারাগারে যান বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দুই বছর কারাগারে থাকার পর ২০২০ সালের মার্চে সরকারের নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি পান তিনি। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি দণ্ড মওকুফ করে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেন।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে ঢাকা সেনানিবাসে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দীর্ঘ এক যুগ পর গুরুত্বপূর্ণ এ দিবসের কর্মসূচিতে তাঁর অংশগ্রহণকে রাজনীতির জন্য ইতিবাচক ঘটনা বলে মনে করছেন বিশ্লেষক ও রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা। তাঁরা বলছেন, আওয়ামী লীগের স্বৈরশাসনের অবসানের পর অভ্যুত্থানের পক্ষের দলগুলোর মধ্যে যে মনস্তাত্ত্বিক দূরত্ব তৈরি হচ্ছিল, খালেদা জিয়ার উপস্থিতির কারণে তা কিছুটা হলেও ঘুচবে। পর্যবেক্ষকদের ধারণা, বিষয়টি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আশাবাদ জাগানোর পাশাপাশি অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক সংস্কৃতির পথে হাঁটারও ইঙ্গিত বহন করে।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বর বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর তিনটি শাখা সমন্বিতভাবে যাত্রা শুরু করেছিল। সে কারণে দিনটি সশস্ত্র বাহিনী দিবস হিসেবে পালিত হয়। প্রতিবছর সেনাকুঞ্জে এ দিবসের অনুষ্ঠানে সরকার- প্রধান ও অন্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং সশস্ত্র বাহিনীর শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের পাশাপাশি দেশের বিশিষ্টজনদের মিলনমেলা বসে। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বিরোধী দলীয় নেতা থাকার সময় সর্বশেষ ২০১২ সালে সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন। এরপর থেকে তাঁকে দেখা যায়নি। বিএনপির পক্ষ থেকে গত বৃহস্পতিবার দাবি করা হয়, গত ১২ বছর পরিকল্পিতভাবে সশস্ত্র বাহিনী থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দূরে রেখেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এবার খালেদা জিয়াকে সেনাবাহিনীর উচ্চপর্যায়ের দুজন কর্মকর্তা গিয়ে আমন্ত্রণ জানান। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকেও অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার উপস্থিতির বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছিল, যিনি একই সঙ্গে প্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানের স্ত্রী। তিনি সেনাকুঞ্জে উপস্থিত হওয়ার পর বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খালেদা জিয়া অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হলে সবাই তাঁকে দাঁড়িয়ে সম্মান জানান। একপর্যায়ে তাঁকে ঘিরে জটলার সৃষ্টি হয়েছিল। উপস্থিত রাজনৈতিক নেতারা আলাদাভাবে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানেরা সস্ত্রীক আলাদা কথা বলেন। উপস্থিত বিদেশি কূটনৈতিক মিশনের সদস্যরাও খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। উপস্থিত এক অতিথি বলেন, দেশের রাজনীতিতে খালেদা জিয়ার এখনো যে
একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান রয়েছে, তা ছিল দৃশ্যমান।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সম্প্রতি বিভিন্ন ইস্যুতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, বিএনপি, জামায়াত ও অন্যান্য ইসলামি দল, সিপিবি, গণতন্ত্র মঞ্চসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে দৃশ্যত মনস্তাত্ত্বিক দূরত্ব তৈরি হয়েছে। এর আলোকে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টাসহ উপদেষ্টা পরিষদ এবং রাজনৈতিক নেতাদের উপস্থিতি ও বিএনপির নেত্রীর সঙ্গে তাঁদের কুশল বিনিময় বরফ গলাতে সহায়তা করবে বলে মনে করা হচ্ছে। সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণে রাজনীতিতে ইতিবাচক ধারা সৃষ্টি হবে বলে মনে করেন কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচন যে সকলের অংশগ্রহণে হবে, সে বিষয়ে এটা অর্থবহ ঘটনা বলে আমার কাছে মনে হয়।’
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খালেদা জিয়া দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতা। ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। তারপর তিনি এই অনুষ্ঠানে আসতে পেরেছেন। তাতে সবার মধ্যে খুশি ও স্বস্তির হাওয়া বইছে। এখন দেখতে হবে, বিষয়টি রাজনীতিতে কীভাবে আসে; কিংবা আসে কি না।’
বর্ষীয়ান, অভিজ্ঞ রাজনীতিক হিসেবে এই অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার উপস্থিতি দেশের রাজনীতির জন্য স্বস্তির বলে মনে করেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের পর যে বিশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে, সে ক্ষেত্রে এটি কিছুটা স্বস্তি ও আস্থা তৈরি করবে। সেখানে সশস্ত্র বাহিনী, রাজনৈতিক দল, আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা ছাত্র-তরুণদের সঙ্গে যে হৃদ্যতার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল, তার রাজনৈতিক গুরুত্ব আছে। খালেদা জিয়ার উপস্থিতিসমৃদ্ধ এই মিলনমেলা সবার মধ্যকার আপাত-মনস্তাত্ত্বিক দূরত্ব দূর করবে বলে মনে করি।’
গণফোরাম সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান মোস্তফা মহসীন মন্টু বলেন, ‘এ রকম অনুষ্ঠান আমাদের জাতীয় ঐক্য গড়ে দেবে। প্রতিহিংসার রাজনীতি জাতীয় ঐক্য গড়তে পারে না।’
খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, মো. নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম। সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ও আসিফও ছিলেন আন্দোলনের সমন্বয়ক। কুশলাদির একটি ছবির ক্যাপশন ছিল, ‘সোনালী অতীত, গর্বিত ভবিষ্যৎ’। উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ লেখেন, ‘আপনাকে এই সুযোগ করে দিতে পেরে আমরা গর্বিত।’ সারজিস আলম লেখেন, ‘আপনার আপসহীন মনোভাব আমাদের অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।’
পর্যবেক্ষকেরা মনে করেন, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের বিষয়ে অবস্থান, নির্বাচনের সময়সহ বিভিন্ন ইস্যুতে অন্তর্বর্তী সরকার, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলের মধ্যে মতান্তরের যে আভাস পাওয়া যাচ্ছে, তা নিরসনে ভূমিকা রাখতে পারে এদিনের আশাজাগানিয়া ছবিটি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. মাহবুবউল্লাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তাঁদের স্তরের রাজনীতিকেরা যা কিছুই করেন, তার একটা প্রভাব রাজনীতিতে হয়, সমাজে হয়। ওনার ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হওয়ার কথা নয়।’
নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আ ন ম মুনীরুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন খালেদা জিয়াকে এসব অনুষ্ঠান থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছিল। সেখানে এবার সশস্ত্র বাহিনী এবং উপস্থিত অন্যরা তাঁকে সাদরে আমন্ত্রণ ও স্বাগত জানিয়েছেন। এর প্রভাব অবশ্যই সব জায়গায় থাকবে।’
সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার উপস্থিতি বিএনপির নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত করবে বলে মনে করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক শামসুল আলম। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সব রাজনৈতিক নেতৃত্ব খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেছেন। এর রাজনৈতিক তাৎপর্য হচ্ছে, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগবিরোধী সবাই একত্র।’
২০১৮ সালে দুর্নীতি মামলায় কারাগারে যান বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দুই বছর কারাগারে থাকার পর ২০২০ সালের মার্চে সরকারের নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি পান তিনি। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি দণ্ড মওকুফ করে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেন।
নতুন নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব গ্রহণকে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি। জনগণের প্রত্যাশা পূরণে নতুন কমিশন কাজ করবে বলেও আশা প্রকাশ করেছে দলটি
১১ ঘণ্টা আগেরাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের অপসারণ চেয়ে তাঁর নিয়োগ দেওয়া নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রত্যাখ্যান করেছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। একই সঙ্গে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের প্রাপ্ত প্রস্তাবের আলোকে নতুন আইনের অধীনে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছেন তারা
১৩ ঘণ্টা আগেড. কামাল হোসেন আর গণফোরামের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি রাজনীতি থেকে অবসর নিয়েছেন—বলে জানিয়েছেন নিজেকে গণফোরামের সভাপতি দাবি করা এবং সাবেক সংসদ সদস্য মফিজুল ইসলাম খান কামাল।
১ দিন আগেনতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বলতে তারা কী বোঝাচ্ছে? তাদের এই ধারণা স্পষ্ট করা উচিত। আমি জানতে চাই, তাদের নতুন রাজনৈতিক মীমাংসা আসলে কী? আমি এ বিষয়ে কোথাও কিছু লেখা নথিভুক্ত পাইনি। তাদের প্রস্তাব কী, সেটা স্পষ্ট নয়। আমাদের যে ধরনের রাজনীতি আমরা কল্পনা করি, তা আমাদের সংবিধানে স্পষ্টভাবে নথিভুক্ত।
২ দিন আগে