করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখীর মধ্যে আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকেই দেশে লকডাউন শিথিল হচ্ছে। সরকার বলছে, ঈদ ঘিরে অর্থনীতি গতিশীল রাখতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

আজ বুধবার জাতীয় সংসদ ভবন এলাকার বাসভবন থেকে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ঈদযাত্রায় মানুষের ভোগান্তি কমানোর পাশাপাশি খেটে খাওয়া মানুষের আর্থিক নিরাপত্তা এবং ঈদ ঘিরে অর্থনীতির প্রবাহ গতিশীল রাখতে শেখ হাসিনার সরকারের এই উদ্যোগ। মনে রাখতে হবে সাময়িক এ বিধিনিষেধ শিথিলের সুযোগ নিয়ে আমরা যেন গড্ডলিকাপ্রবাহে গা না ভাসাই। এ পরিস্থিতিতে নিজেই হতে হবে নিজের রক্ষক।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নিজেদের উদাসীনতা এবং অপরিণামদর্শিতায় উৎসবের যাত্রা যেন জীবনের শেষ যাত্রায় রূপ না নেয়।

ঈদ সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী লকডাউনের ব্রেক দিলেও কাউকে করোনা ব্রেক দেবে না, প্রাণঘাতী রূপ নিয়ে সংক্রমণ ছড়াবেই উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাই শতভাগ মাস্ক পরিধানের কোনো বিকল্প নেই।

বিধিনিষেধ শিথিল করায় আগামীকাল থেকে সারা দেশে শর্তসাপেক্ষে গণপরিবহন চলাচল করবে উল্লেখ করে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, এর আগের ধারাবাহিকতায় সমন্বয়কৃত ৬০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়ায় অর্ধেক আসন খালি রেখে গণপরিবহন চলাচল করবে।

মন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, পরিবহন মালিক এবং শ্রমিক সংগঠনগুলো করোনার বর্তমান সংক্রমণ মাথায় রেখে, স্বাস্থ্যবিধিসহ শর্তগুলো মেনে যানবাহন পরিচালনা করবে। শর্ত অমান্যকারী এবং অতিরিক্ত ভাড়া আদায়কারী পরিবহনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করে দেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনা প্রণয়নে যেন স্বজনপ্রীতি না হয় এবং প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে পৌঁছায়, সেদিকে কঠোর সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম সহ্য করা হবে না।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যেই লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় মানুষের সহায়তা, গ্রামীণ কর্ম-সৃজন, পর্যটন খাত এবং পরিবহনশ্রমিক ও খেটে খাওয়া মানুষের জন্য ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজের ঘোষণা দিয়েছেন। সত্যিকার অর্থে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা যাতে তালিকাভুক্ত হয়, সেদিকে সর্বোচ্চ মনোযোগ দিতে হবে। 

রূপগঞ্জের অগ্নিদুর্ঘটনায় সরকার যখন আন্তরিকভাবে কাজ করছে, তখন বিএনপি তাদের একমাত্র সম্বল বক্তৃতা-বিবৃতিবাজি করে যাচ্ছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা ঘটনার ছয় দিন পরে রূপগঞ্জে গিয়ে এটা করতে হবে, সেটা করতে হবে বলে নানান কথার ফুলঝুরি ছড়াচ্ছে। এসব তাদের চিরাচরিত অপরাজনীতিরই ধারাবাহিকতা।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির ঘরবন্দী রাজনীতি এবং বিদ্বেষ ছড়ানো বাক্যবাণ দেশের সুস্থধারার রাজনীতি চর্চার পরিবেশকে দূষিত করছে।