তানিম আহমেদ
ঢাকা: আজ ২৩ জুন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। স্বাধীন বাংলাদেশে ২০০৯ সাল থেকে একটানা ১৩ বছর ধরে ক্ষমতায় আছে দলটি। দীর্ঘ সময়ে ক্ষমতায় থাকার পর দলটির সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে আমলানির্ভরতা বেড়েছে। পাশাপাশি দেখা দিয়েছে সাংগঠনিক দুর্বলতাও।
১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার কে এম দাস লেনের রোজ গার্ডেনে গঠিত হয় পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ। দলের নামের সঙ্গে মুসলিম শব্দটি নিয়ে অনেকেই আপত্তি তুলেছিলেন। পরে ১৯৫৫ সালে দলীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে 'মুসলিম' শব্দটি বাদ দেওয়া হয়। ফলে অমুসলিমরাও এই দলে যোগ দেওয়ার সুযোগ পান।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, আওয়ামী লীগ যে আদর্শ নিয়ে গঠিত হয়েছিল, তা এখন মুখে বলা হলেও কাজে প্রয়োগের সময় সামাজিক, রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হয়েছে। একসময় যে দলটিতে আধিপত্য ছিল মধ্য বামপন্থীদের, সেখানে এখন দাপট মধ্য ডানপন্থীদের। সেটার বড় প্রমাণ হিসেবে তাঁরা দেখছেন সংসদীয় কমিটির প্রস্তাবকে। যে প্রস্তাবে বলা হয়েছে, মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় সম্মানে নারী ইউএনও থাকতে পারবেন না। রাজনৈতিক কারণে ধর্মভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে সমঝোতাও করেছে দলটি।
দলটির নেতারা বলছেন, তাঁরা ডানপন্থীও না, বামপন্থীও না, তাঁরা মধ্যপন্থী, বাংলাদেশপন্থী। যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে দল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেই অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ ও জাতীয়তাবাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে জনগণকে নিয়েই তাঁরা এগিয়ে যাচ্ছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক গোবিন্দ চক্রবর্তী আজকের পত্রিকাকে বলেন, আওয়ামী লীগ যে আদর্শ নিয়ে গঠিত হয়েছিল, সেটা এখন তারা বাচনিকভাবে ধারণ করে। প্রায়োগিকভাবে সময়, সামাজিক, রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় থাকার কারণে বিভিন্ন দল থেকে মানুষজন এসে দলের নেতৃত্ব, সিদ্ধান্ত এবং গঠন প্রক্রিয়ায় চলে যাচ্ছে। এটা হওয়া আসলে বাঞ্ছনীয় নয়।
ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন মনে করেন, ‘প্রতিষ্ঠার পর থেকে আওয়ামী লীগে ডান ও বামের একটা দ্বন্দ্ব ছিল। বঙ্গবন্ধু ও তাজউদ্দীন যখন নেতৃত্ব যান তখন এটা মধ্য বাম ঘেঁষা নীতি নিয়েছিল। এটা মোটামুটি পঁচাত্তর পর্যন্ত বলবৎ ছিল। যার সঙ্গে আদর্শের ভিত্তি ছিল। এই কারণে তারা ব্যাপক জনসমর্থনও পেয়েছিল। এরপর অনেকবার ভেঙেছে এই দল। এখন একটা জায়গায় এসেছে। দলটির এখন আমূল পরিবর্তন হয়েছে। এখানে আধিপত্য পাচ্ছে মধ্য ডানপন্থীরা। সেটা আমাদের মতো অনেকের চোখে খুব শুভ ইঙ্গিত নয়।’
ধর্মান্ধ সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী, বিশেষ করে হেফাজত এবং কওমি মাদ্রাসার সঙ্গে বর্তমান আওয়ামী লীগের যে সখ্য, সেটি এই দলের সঙ্গে যায় না বলে মন্তব্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেনের। তাঁর মতে, বর্তমান আওয়ামী লীগ মূল আওয়ামী লীগ থেকে আদর্শিকভাবে বিচ্যুত। তিনি বলেন, ‘৭৩ বছরে যখন দলটি পদার্পণ করবে তখন আমার প্রত্যাশা আওয়ামী লীগ যেন আওয়ামী লীগ হয়ে ওঠে।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, ‘এগুলো যারা বলেন নিশ্চয় তিনি বামপন্থী। তিনি কি করেছেন? আওয়ামী লীগ ডানপন্থী না, বামপন্থীও না, আমরা মধ্যপন্থী, বাংলাদেশপন্থী। যেটা গত ৭২ বছরে বারবার প্রমাণিত হয়েছে।’
টানা ১২ বছর ক্ষমতায় থাকা দলটির তৃণমূল অগোছালো। দলে আমলানির্ভরতা বেড়েছে। সাংগঠনিক অনেক জেলার সম্মেলন হয় না বছরের পর বছর। আবার যেগুলোতে সম্মেলন হয়েছে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দ্বন্দ্বের কারণে আটকে আছে পূর্ণাঙ্গ কমিটি। এ বিষয়ে গত রোববার চট্টগ্রামে মহানগর আওয়ামী লীগের এক মতবিনিময় সভায় দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘শেখ হাসিনা যত দিন আছেন, তত দিন ক্ষমতায় আছি। ক্ষমতায় থেকে সংগঠন দুর্বল বা সবল বোঝা যাচ্ছে না। যার কারণে সংগঠনের দিকে সবার নজর একটু কম।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, আওয়ামী লীগের প্রাণ বলা হয় কর্মীদের। দলটি যতবারই দুঃসময়ে পড়েছে কর্মীরাই হাল ধরেছিল। কিন্তু এখন আওয়ামী লীগে আমলা নির্ভরতা বেড়েছে। দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকলে একটা বড় রকমের পার্থক্য তৈরি হয়। সেটা হলো ব্যক্তি দলেও থাকে, ব্যক্তি সরকারেও থাকে। তখন ব্যক্তি দলের দিকে নজর দিতে পারে না। কিন্তু রাজনৈতিক দল রাজনৈতিক নেতৃত্বের মাধ্যমেই চলতে হবে। আমলা নেতৃত্ব, অপরাপর নেতৃত্ব দলকে বেশি দূর এগিয়ে নিতে পারে না।
এমন কথার সঙ্গে একমত আওয়ামী লীগের নেতারাও। যদিও বিষয়টি নিয়ে তাঁরা প্রকাশ্য কিছু বলতে চান না। দলটির সম্পাদকমণ্ডলীর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সদস্য বলেন, আমলাতন্ত্র ও পুলিশে জামায়াত-বিএনপির অনুপ্রবেশকারীরা নানা বিতর্কিত ঘটনা ঘটাচ্ছে। সামনের দিনে এগুলোর পরিমাণ আরও বাড়বে।
ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ব্যবসায়ী ও আমলাদের সরকার। এখানে অন্যদের সমর্থন করা ছাড়া আর কিছু করার নেই। তবে শেখ হাসিনা আছেন বলে আমাদের মতো পুরোনো প্রজন্ম তাঁকে সমর্থন করছে। কারণ তিনি আর যাই হোক একেবারে প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে যাবেন না। তবে তিনি যদি দৃঢ় পদক্ষেপ না নেন, দলকে মধ্য বামে না আনেন তাহলে একটা বিপর্যয় হবেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, আওয়ামী লীগের বিপুল সমর্থক সব সময় রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের ৫০ বছর পার হয়েছে। উন্নয়নের সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। এই জায়গায় এসে দলের উচিত হবে তার পেশাদারি বাড়ানো।
তবে আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক খান মনে করেন, আওয়ামী লীগ অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় শক্তিশালী আছে। আমলা নির্ভরতার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ অভিযোগ তাঁরাই করেন যারা আমাদের আর কোনো দোষ খুঁজে পান না। পৃথিবীর সব দেশেই আমলা রয়েছে। তাহলে কি তাদের কাজ না করিয়ে বসে বসে বেতন দেওয়া হবে?
আর দলের কোন্দলকে সামনে বড় করে আনতে নারাজ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান। তাঁর মত, এই দেশে তিনজনের পার্টির মধ্যেও অন্তর্দ্বন্দ্ব আছে। আর এত বড় বিশাল পার্টিতে কিছু থাকতেই পারে।
কর্মসূচি
আওয়ামী লীগের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আজ সকালে কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও দেশব্যাপী আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল ৯টায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি। বিকেল ৪টায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা করা হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। এ ছাড়া গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের একটি প্রতিনিধি দল শ্রদ্ধা জানাবেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে কর্মসূচি পালনের জন্য দলের নেতা-কর্মী, সমর্থকদের আহ্বান জানিয়েছেন।
ঢাকা: আজ ২৩ জুন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। স্বাধীন বাংলাদেশে ২০০৯ সাল থেকে একটানা ১৩ বছর ধরে ক্ষমতায় আছে দলটি। দীর্ঘ সময়ে ক্ষমতায় থাকার পর দলটির সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে আমলানির্ভরতা বেড়েছে। পাশাপাশি দেখা দিয়েছে সাংগঠনিক দুর্বলতাও।
১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার কে এম দাস লেনের রোজ গার্ডেনে গঠিত হয় পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ। দলের নামের সঙ্গে মুসলিম শব্দটি নিয়ে অনেকেই আপত্তি তুলেছিলেন। পরে ১৯৫৫ সালে দলীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে 'মুসলিম' শব্দটি বাদ দেওয়া হয়। ফলে অমুসলিমরাও এই দলে যোগ দেওয়ার সুযোগ পান।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, আওয়ামী লীগ যে আদর্শ নিয়ে গঠিত হয়েছিল, তা এখন মুখে বলা হলেও কাজে প্রয়োগের সময় সামাজিক, রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হয়েছে। একসময় যে দলটিতে আধিপত্য ছিল মধ্য বামপন্থীদের, সেখানে এখন দাপট মধ্য ডানপন্থীদের। সেটার বড় প্রমাণ হিসেবে তাঁরা দেখছেন সংসদীয় কমিটির প্রস্তাবকে। যে প্রস্তাবে বলা হয়েছে, মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় সম্মানে নারী ইউএনও থাকতে পারবেন না। রাজনৈতিক কারণে ধর্মভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে সমঝোতাও করেছে দলটি।
দলটির নেতারা বলছেন, তাঁরা ডানপন্থীও না, বামপন্থীও না, তাঁরা মধ্যপন্থী, বাংলাদেশপন্থী। যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে দল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেই অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ ও জাতীয়তাবাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে জনগণকে নিয়েই তাঁরা এগিয়ে যাচ্ছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক গোবিন্দ চক্রবর্তী আজকের পত্রিকাকে বলেন, আওয়ামী লীগ যে আদর্শ নিয়ে গঠিত হয়েছিল, সেটা এখন তারা বাচনিকভাবে ধারণ করে। প্রায়োগিকভাবে সময়, সামাজিক, রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় থাকার কারণে বিভিন্ন দল থেকে মানুষজন এসে দলের নেতৃত্ব, সিদ্ধান্ত এবং গঠন প্রক্রিয়ায় চলে যাচ্ছে। এটা হওয়া আসলে বাঞ্ছনীয় নয়।
ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন মনে করেন, ‘প্রতিষ্ঠার পর থেকে আওয়ামী লীগে ডান ও বামের একটা দ্বন্দ্ব ছিল। বঙ্গবন্ধু ও তাজউদ্দীন যখন নেতৃত্ব যান তখন এটা মধ্য বাম ঘেঁষা নীতি নিয়েছিল। এটা মোটামুটি পঁচাত্তর পর্যন্ত বলবৎ ছিল। যার সঙ্গে আদর্শের ভিত্তি ছিল। এই কারণে তারা ব্যাপক জনসমর্থনও পেয়েছিল। এরপর অনেকবার ভেঙেছে এই দল। এখন একটা জায়গায় এসেছে। দলটির এখন আমূল পরিবর্তন হয়েছে। এখানে আধিপত্য পাচ্ছে মধ্য ডানপন্থীরা। সেটা আমাদের মতো অনেকের চোখে খুব শুভ ইঙ্গিত নয়।’
ধর্মান্ধ সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী, বিশেষ করে হেফাজত এবং কওমি মাদ্রাসার সঙ্গে বর্তমান আওয়ামী লীগের যে সখ্য, সেটি এই দলের সঙ্গে যায় না বলে মন্তব্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেনের। তাঁর মতে, বর্তমান আওয়ামী লীগ মূল আওয়ামী লীগ থেকে আদর্শিকভাবে বিচ্যুত। তিনি বলেন, ‘৭৩ বছরে যখন দলটি পদার্পণ করবে তখন আমার প্রত্যাশা আওয়ামী লীগ যেন আওয়ামী লীগ হয়ে ওঠে।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, ‘এগুলো যারা বলেন নিশ্চয় তিনি বামপন্থী। তিনি কি করেছেন? আওয়ামী লীগ ডানপন্থী না, বামপন্থীও না, আমরা মধ্যপন্থী, বাংলাদেশপন্থী। যেটা গত ৭২ বছরে বারবার প্রমাণিত হয়েছে।’
টানা ১২ বছর ক্ষমতায় থাকা দলটির তৃণমূল অগোছালো। দলে আমলানির্ভরতা বেড়েছে। সাংগঠনিক অনেক জেলার সম্মেলন হয় না বছরের পর বছর। আবার যেগুলোতে সম্মেলন হয়েছে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দ্বন্দ্বের কারণে আটকে আছে পূর্ণাঙ্গ কমিটি। এ বিষয়ে গত রোববার চট্টগ্রামে মহানগর আওয়ামী লীগের এক মতবিনিময় সভায় দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘শেখ হাসিনা যত দিন আছেন, তত দিন ক্ষমতায় আছি। ক্ষমতায় থেকে সংগঠন দুর্বল বা সবল বোঝা যাচ্ছে না। যার কারণে সংগঠনের দিকে সবার নজর একটু কম।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, আওয়ামী লীগের প্রাণ বলা হয় কর্মীদের। দলটি যতবারই দুঃসময়ে পড়েছে কর্মীরাই হাল ধরেছিল। কিন্তু এখন আওয়ামী লীগে আমলা নির্ভরতা বেড়েছে। দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকলে একটা বড় রকমের পার্থক্য তৈরি হয়। সেটা হলো ব্যক্তি দলেও থাকে, ব্যক্তি সরকারেও থাকে। তখন ব্যক্তি দলের দিকে নজর দিতে পারে না। কিন্তু রাজনৈতিক দল রাজনৈতিক নেতৃত্বের মাধ্যমেই চলতে হবে। আমলা নেতৃত্ব, অপরাপর নেতৃত্ব দলকে বেশি দূর এগিয়ে নিতে পারে না।
এমন কথার সঙ্গে একমত আওয়ামী লীগের নেতারাও। যদিও বিষয়টি নিয়ে তাঁরা প্রকাশ্য কিছু বলতে চান না। দলটির সম্পাদকমণ্ডলীর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সদস্য বলেন, আমলাতন্ত্র ও পুলিশে জামায়াত-বিএনপির অনুপ্রবেশকারীরা নানা বিতর্কিত ঘটনা ঘটাচ্ছে। সামনের দিনে এগুলোর পরিমাণ আরও বাড়বে।
ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ব্যবসায়ী ও আমলাদের সরকার। এখানে অন্যদের সমর্থন করা ছাড়া আর কিছু করার নেই। তবে শেখ হাসিনা আছেন বলে আমাদের মতো পুরোনো প্রজন্ম তাঁকে সমর্থন করছে। কারণ তিনি আর যাই হোক একেবারে প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে যাবেন না। তবে তিনি যদি দৃঢ় পদক্ষেপ না নেন, দলকে মধ্য বামে না আনেন তাহলে একটা বিপর্যয় হবেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, আওয়ামী লীগের বিপুল সমর্থক সব সময় রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের ৫০ বছর পার হয়েছে। উন্নয়নের সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। এই জায়গায় এসে দলের উচিত হবে তার পেশাদারি বাড়ানো।
তবে আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক খান মনে করেন, আওয়ামী লীগ অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় শক্তিশালী আছে। আমলা নির্ভরতার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ অভিযোগ তাঁরাই করেন যারা আমাদের আর কোনো দোষ খুঁজে পান না। পৃথিবীর সব দেশেই আমলা রয়েছে। তাহলে কি তাদের কাজ না করিয়ে বসে বসে বেতন দেওয়া হবে?
আর দলের কোন্দলকে সামনে বড় করে আনতে নারাজ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান। তাঁর মত, এই দেশে তিনজনের পার্টির মধ্যেও অন্তর্দ্বন্দ্ব আছে। আর এত বড় বিশাল পার্টিতে কিছু থাকতেই পারে।
কর্মসূচি
আওয়ামী লীগের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আজ সকালে কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও দেশব্যাপী আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল ৯টায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি। বিকেল ৪টায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা করা হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। এ ছাড়া গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের একটি প্রতিনিধি দল শ্রদ্ধা জানাবেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে কর্মসূচি পালনের জন্য দলের নেতা-কর্মী, সমর্থকদের আহ্বান জানিয়েছেন।
অভ্যন্তরীণ হস্তক্ষেপ না করার মাধ্যমে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এগোতে পারে বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। আজ শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পানি বণ্টন সংকটের মীমাংসা খুঁজতে ‘অভিন্ন নদীর পানি ও ভারত...
১৫ ঘণ্টা আগেসুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন আয়োজন করাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান।
১৬ ঘণ্টা আগেআওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা যদি ভালো হয়ে যেতে চান, তাহলে সকল সহযোগিতা থাকবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের
১৭ ঘণ্টা আগেদেশে গণ-অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী বিপ্লবী সরকার গঠিত হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম। তিনি বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের শক্তির ওপর দাঁড়িয়ে অন্তর্বর্তীকালীন বিপ্লবী সরকার গঠিত হয়নি। ফলে শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে পেরেছেন
২১ ঘণ্টা আগে