মহিউদ্দিন খান মোহন
‘মজা মারে ফজার বাপে, কিল খায় তুফাইন্নার মায়’–আমাদের বিক্রমপুরে বহুল প্রচলিত একটি প্রবাদ। এর মর্মার্থ হলো, ফজার বাপ ফষ্টিনষ্টি করে কেটে পড়লেও স্বামীর হাতে ধরা পড়ে কিল হজম করতে হয়েছে তুফাইন্নার মাকে। যখন কোনো স্বার্থান্বেষী তার স্বার্থোদ্ধার করে কেটে পড়ে, কিন্তু নিরীহ মানুষ ভোগান্তির শিকার হয়, তখন পরিস্থিতি বোঝাতে এ প্রবাদটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
আমাদের সমাজে এ ধরনের ফজার বাপের কমতি নেই। এরা ঘাপটি মেরে থাকে সর্বত্র। কীভাবে অপরকে ফাঁদে ফেলে ফায়দা লুটে নেওয়া যায়, এ ধান্দায় এরা ব্যস্ত থাকে অহর্নিশ। এসব ফজার বাপের পাল্লায় পড়ে সহজ-সরল মানুষগুলো কখনো কখনো সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়। আমরা তাদের দুরবস্থা দেখে কয়েক দিন হা-পিত্যেশ করি, হম্বিতম্বি করি। তারপর সব হয়ে যায় সুনসান। আর তাতেই ফজার বাপেরা পার পেয়ে যায়।
অতিসম্প্রতি সেই ফজার বাপেদের দেখা মিলেছে দেশের ই-কমার্স সেক্টরে। বেশ কয়েকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের হাজার হাজার কোটি টাকা হাওয়া করে দিয়েছে। এই নবরূপী ফজার বাপেরা তো মজা লুটে নিয়ে কেটে পড়েছে। এখন যারা ওই সব প্রতিষ্ঠানের গ্রাহক ছিল বা বিনিয়োগ করেছিল, সেই তুফাইন্নার মায়েদের অবস্থা কী? যে টাকা তারা ই-কমার্সের ফজার বাপদের ট্যাঁকে গুঁজে দিয়েছে, তা কি আর তারা ফিরে পাবে?
গত ৩০ সেপ্টেম্বর আজকের পত্রিকার শিরোনাম ছিল ‘আট প্রতিষ্ঠানে গ্রাহকের গচ্চা ৩৭৯৩ কোটি টাকা’। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবিশ্বাস্য ও লোভনীয় মূল্যছাড়ের ঘোষণা দিয়ে আটটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের ৩ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে কেটে পড়েছে। অভিযোগ রয়েছে, ই-অরেঞ্জ ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা, ইভ্যালি ৯৫০ কোটি, ধামাকা ৭৫০ কোটি, নিরাপদ ৭৮ কোটি, এসপিসি ২৬৮ কোটি, দালাল প্লাস ২০০ কোটি, কিউকম ৪০০ কোটি এবং সিরাজগঞ্জ শপ গ্রাহকদের ৪৭ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ৩ অক্টোবরের আজকের পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, রিং আইডি নামে একটি ফেসবুকভিত্তিক প্রতিষ্ঠান অতিমুনাফার লোভ দেখিয়ে লুটে নিয়েছে হাজার কোটি টাকা। কিন্তু তাদের ব্যাংক হিসাবে আছে মাত্র দেড় শ কোটি টাকা। বাকি টাকার কোনো হদিস নেই। অন্যদিকে সস্তায় ‘আনন্দের বাজার’ থেকে পণ্য কিনতে গিয়ে প্রতারিতরা এখন বেদনায় ভারাক্রান্ত। ই-কমার্সভিত্তিক এ প্রতিষ্ঠানটিও লোভনীয় ছাড়ে পণ্য সরবরাহের কথা বলে হাতিয়ে নিয়েছে গ্রাহকদের কয়েক শ কোটি টাকা।
বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, এই প্রতারক প্রতিষ্ঠানগুলো দিনের পর দিন নিরীহ মানুষগুলোকে ঠকিয়ে একরকম চোখের সামনে টাকা নিয়ে সটকে পড়লেও আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তা ঘুণাক্ষরেও টের পেল না! অথচ এই প্রতিষ্ঠানগুলো বাজারমূল্যের অর্ধেক দামে পণ্য সরবরাহ করার বিজ্ঞাপন দিয়েছিল। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের টনক কি তখনই নড়া উচিত ছিল না? কেউ কেউ আবার গ্রাহকদের ‘লোভ’কে এ জন্য দায়ী করতে চান। এটা ঠিক যে অতিলাভের আশায় না জেনে-বুঝে বিনিয়োগ বা পণ্যের জন্য অগ্রিম দেওয়ার ফলে প্রতারকেরা এই মহা লুণ্ঠনের মওকা পেয়েছে। তবে সরকার যদি শুরু থেকেই বিষয়টি কড়া নজরদারিতে রাখত, তাহলে হয়তো এই লুটপাট সম্ভব হতো না।
প্রতারণা পৃথিবীতে নতুন কোনো অপরাধ নয়। আদিকাল থেকেই তা চলে আসছে। হায় হায় কোম্পানি বলে যে কথাটি চালু আছে, তার উৎপত্তিও এ ধরনের প্রতারণার ব্যবসা থেকে। একজন প্রবীণ নগরবাসীর কাছে শুনেছি, পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকার একরামপুর এলাকায় (হৃষিকেশ দাস রোড) একটি কোম্পানি অফিস খুলে প্রচার করল তারা তিন মাসের মধ্যে গ্রাহকদের বিনিয়োগ টাকার দ্বিগুণ ফেরত দেবে। দলে দলে মানুষ সেখানে অর্থকড়ি জমা করল। কিন্তু টাকা ফেরতের সময় আসার আগেই কোম্পানি পাততাড়ি গুটিয়ে হাওয়া হয়ে গেল। বিনিয়োগকারীরা কপাল চাপড়ে হায় হায় করতে থাকল। সে থেকেই এ ধরনের প্রতারক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বোঝাতে ‘হায় হায় কোম্পানি’ বলা হয়ে থাকে। একটি ভারতীয় হিন্দি সিনেমা আছে, ‘ফির হেরা ফেরি’ নামে। সেখানেও একটি প্রতারক চক্র ‘পঁচিশ দিন মে পয়সা ডাবল’ বলে লোভ দেখিয়ে মানুষকে প্রতারিত করে। প্রতারকেরা প্রতারণা করবে—এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। বিচ্ছিন্নভাবে সে ধরনের ঘটনা ঘটতেই পারে। কিন্তু যখন সেটা মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ে, শঙ্কাটা বেড়ে যায় তখনই। এর আগেও এনজিও ‘যুবক’, ‘ডেসটিনি’, ‘ইউনি পে টু ইউ’ প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে মানুষকে সর্বস্বান্ত করেছে। যদিও ওই সব হায় হায় কোম্পানির কর্তাদের কেউ কেউ জেলখানায় আরাম-আয়েশেই আছেন। তবে যাঁরা প্রতারিত হয়েছেন, তাঁরা তাঁদের অর্থ ফেরত পাননি। আর আদৌ তা পাবে কি না বা কীভাবে ফেরত পাবে, তা এখনো অস্পষ্টই রয়ে গেছে।
বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির উৎকর্ষের যুগে ই-কমার্স বিশ্বব্যাপী কেনাকাটার একটি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম। আমাদের দেশেও তা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছিল। কিন্তু কতিপয় ফাটকাবাজ সে ব্যবসাটির প্রতি মানুষের মধ্যে এমন আস্থাহীনতার সৃষ্টি করল, যা আর ফিরে আসবে কি না, সন্দেহ। কিন্তু কেন এমন হলো? এ বিষয়ে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান বদিউর রহমান সম্প্রতি একটি দৈনিককে বলেছেন, ‘প্রশাসন ঢিলেঢালা হলে যা হওয়ার তা-ই হয়েছে। এ ক্ষেত্রে দায়ী সরকারের প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ব্যর্থতা।’ তিনি বলেছেন, ‘এখন ই-কমার্সের টাকা যারা মেরে দিয়েছে, তাদের আইনের আওতায় আনলেই চলবে না, গ্রাহকের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য সরকারকে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।’ অর্থ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব ড. মাহবুব আহমেদ মনে করেন, সরকারকে এমন একটি উপায় খুঁজে বের করতে হবে, যাতে গ্রাহকের লেনদেন সুরক্ষিত থাকে। তাঁর মতে, এমএলএম কোম্পানিগুলো পরিচালনার জন্য যে আইনটি ইতিপূর্বে করা হয়েছে, তা অনুসরণ করলে ই-কমার্স প্রতারণা ঠেকানো যেত। অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউশনের শিক্ষক ড. মো. রিদওয়ানুল হক বলেছেন, ‘ই-কমার্স কোম্পানিতে পণ্য কিনে প্রতারণার শিকার মানুষ তাদের অর্থ কীভাবে ফেরত পাবে, তার সঠিক জবাব দেওয়ার মতো কেউ নেই। এর জবাব আমার কাছেও যেমন নেই, সরকারের কাছেও নেই।’ (সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১)।
এই যদি হয় অবস্থা, তাহলে দেশবাসী যাবে কোথায়? আইনের সঠিক ও কঠোর প্রয়োগ না হলে অপরাধপ্রবণতার বিস্তার ঘটে–এ কথা বিজ্ঞজনেরা বলে থাকেন। এ ক্ষেত্রেও তা-ই ঘটেছে। ইতিপূর্বে প্রতারকদের যদি কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হতো, তাহলে আজ এ লুটপাটের অবস্থার সৃষ্টি হতো না। এখনো যদি সরকার কঠোর পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে
ফজার বাপেদের দৌরাত্ম্য দিন দিন বাড়তেই থাকবে।
‘মজা মারে ফজার বাপে, কিল খায় তুফাইন্নার মায়’–আমাদের বিক্রমপুরে বহুল প্রচলিত একটি প্রবাদ। এর মর্মার্থ হলো, ফজার বাপ ফষ্টিনষ্টি করে কেটে পড়লেও স্বামীর হাতে ধরা পড়ে কিল হজম করতে হয়েছে তুফাইন্নার মাকে। যখন কোনো স্বার্থান্বেষী তার স্বার্থোদ্ধার করে কেটে পড়ে, কিন্তু নিরীহ মানুষ ভোগান্তির শিকার হয়, তখন পরিস্থিতি বোঝাতে এ প্রবাদটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
আমাদের সমাজে এ ধরনের ফজার বাপের কমতি নেই। এরা ঘাপটি মেরে থাকে সর্বত্র। কীভাবে অপরকে ফাঁদে ফেলে ফায়দা লুটে নেওয়া যায়, এ ধান্দায় এরা ব্যস্ত থাকে অহর্নিশ। এসব ফজার বাপের পাল্লায় পড়ে সহজ-সরল মানুষগুলো কখনো কখনো সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়। আমরা তাদের দুরবস্থা দেখে কয়েক দিন হা-পিত্যেশ করি, হম্বিতম্বি করি। তারপর সব হয়ে যায় সুনসান। আর তাতেই ফজার বাপেরা পার পেয়ে যায়।
অতিসম্প্রতি সেই ফজার বাপেদের দেখা মিলেছে দেশের ই-কমার্স সেক্টরে। বেশ কয়েকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের হাজার হাজার কোটি টাকা হাওয়া করে দিয়েছে। এই নবরূপী ফজার বাপেরা তো মজা লুটে নিয়ে কেটে পড়েছে। এখন যারা ওই সব প্রতিষ্ঠানের গ্রাহক ছিল বা বিনিয়োগ করেছিল, সেই তুফাইন্নার মায়েদের অবস্থা কী? যে টাকা তারা ই-কমার্সের ফজার বাপদের ট্যাঁকে গুঁজে দিয়েছে, তা কি আর তারা ফিরে পাবে?
গত ৩০ সেপ্টেম্বর আজকের পত্রিকার শিরোনাম ছিল ‘আট প্রতিষ্ঠানে গ্রাহকের গচ্চা ৩৭৯৩ কোটি টাকা’। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবিশ্বাস্য ও লোভনীয় মূল্যছাড়ের ঘোষণা দিয়ে আটটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের ৩ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে কেটে পড়েছে। অভিযোগ রয়েছে, ই-অরেঞ্জ ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা, ইভ্যালি ৯৫০ কোটি, ধামাকা ৭৫০ কোটি, নিরাপদ ৭৮ কোটি, এসপিসি ২৬৮ কোটি, দালাল প্লাস ২০০ কোটি, কিউকম ৪০০ কোটি এবং সিরাজগঞ্জ শপ গ্রাহকদের ৪৭ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ৩ অক্টোবরের আজকের পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, রিং আইডি নামে একটি ফেসবুকভিত্তিক প্রতিষ্ঠান অতিমুনাফার লোভ দেখিয়ে লুটে নিয়েছে হাজার কোটি টাকা। কিন্তু তাদের ব্যাংক হিসাবে আছে মাত্র দেড় শ কোটি টাকা। বাকি টাকার কোনো হদিস নেই। অন্যদিকে সস্তায় ‘আনন্দের বাজার’ থেকে পণ্য কিনতে গিয়ে প্রতারিতরা এখন বেদনায় ভারাক্রান্ত। ই-কমার্সভিত্তিক এ প্রতিষ্ঠানটিও লোভনীয় ছাড়ে পণ্য সরবরাহের কথা বলে হাতিয়ে নিয়েছে গ্রাহকদের কয়েক শ কোটি টাকা।
বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, এই প্রতারক প্রতিষ্ঠানগুলো দিনের পর দিন নিরীহ মানুষগুলোকে ঠকিয়ে একরকম চোখের সামনে টাকা নিয়ে সটকে পড়লেও আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তা ঘুণাক্ষরেও টের পেল না! অথচ এই প্রতিষ্ঠানগুলো বাজারমূল্যের অর্ধেক দামে পণ্য সরবরাহ করার বিজ্ঞাপন দিয়েছিল। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের টনক কি তখনই নড়া উচিত ছিল না? কেউ কেউ আবার গ্রাহকদের ‘লোভ’কে এ জন্য দায়ী করতে চান। এটা ঠিক যে অতিলাভের আশায় না জেনে-বুঝে বিনিয়োগ বা পণ্যের জন্য অগ্রিম দেওয়ার ফলে প্রতারকেরা এই মহা লুণ্ঠনের মওকা পেয়েছে। তবে সরকার যদি শুরু থেকেই বিষয়টি কড়া নজরদারিতে রাখত, তাহলে হয়তো এই লুটপাট সম্ভব হতো না।
প্রতারণা পৃথিবীতে নতুন কোনো অপরাধ নয়। আদিকাল থেকেই তা চলে আসছে। হায় হায় কোম্পানি বলে যে কথাটি চালু আছে, তার উৎপত্তিও এ ধরনের প্রতারণার ব্যবসা থেকে। একজন প্রবীণ নগরবাসীর কাছে শুনেছি, পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকার একরামপুর এলাকায় (হৃষিকেশ দাস রোড) একটি কোম্পানি অফিস খুলে প্রচার করল তারা তিন মাসের মধ্যে গ্রাহকদের বিনিয়োগ টাকার দ্বিগুণ ফেরত দেবে। দলে দলে মানুষ সেখানে অর্থকড়ি জমা করল। কিন্তু টাকা ফেরতের সময় আসার আগেই কোম্পানি পাততাড়ি গুটিয়ে হাওয়া হয়ে গেল। বিনিয়োগকারীরা কপাল চাপড়ে হায় হায় করতে থাকল। সে থেকেই এ ধরনের প্রতারক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বোঝাতে ‘হায় হায় কোম্পানি’ বলা হয়ে থাকে। একটি ভারতীয় হিন্দি সিনেমা আছে, ‘ফির হেরা ফেরি’ নামে। সেখানেও একটি প্রতারক চক্র ‘পঁচিশ দিন মে পয়সা ডাবল’ বলে লোভ দেখিয়ে মানুষকে প্রতারিত করে। প্রতারকেরা প্রতারণা করবে—এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। বিচ্ছিন্নভাবে সে ধরনের ঘটনা ঘটতেই পারে। কিন্তু যখন সেটা মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ে, শঙ্কাটা বেড়ে যায় তখনই। এর আগেও এনজিও ‘যুবক’, ‘ডেসটিনি’, ‘ইউনি পে টু ইউ’ প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে মানুষকে সর্বস্বান্ত করেছে। যদিও ওই সব হায় হায় কোম্পানির কর্তাদের কেউ কেউ জেলখানায় আরাম-আয়েশেই আছেন। তবে যাঁরা প্রতারিত হয়েছেন, তাঁরা তাঁদের অর্থ ফেরত পাননি। আর আদৌ তা পাবে কি না বা কীভাবে ফেরত পাবে, তা এখনো অস্পষ্টই রয়ে গেছে।
বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির উৎকর্ষের যুগে ই-কমার্স বিশ্বব্যাপী কেনাকাটার একটি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম। আমাদের দেশেও তা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছিল। কিন্তু কতিপয় ফাটকাবাজ সে ব্যবসাটির প্রতি মানুষের মধ্যে এমন আস্থাহীনতার সৃষ্টি করল, যা আর ফিরে আসবে কি না, সন্দেহ। কিন্তু কেন এমন হলো? এ বিষয়ে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান বদিউর রহমান সম্প্রতি একটি দৈনিককে বলেছেন, ‘প্রশাসন ঢিলেঢালা হলে যা হওয়ার তা-ই হয়েছে। এ ক্ষেত্রে দায়ী সরকারের প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ব্যর্থতা।’ তিনি বলেছেন, ‘এখন ই-কমার্সের টাকা যারা মেরে দিয়েছে, তাদের আইনের আওতায় আনলেই চলবে না, গ্রাহকের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য সরকারকে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।’ অর্থ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব ড. মাহবুব আহমেদ মনে করেন, সরকারকে এমন একটি উপায় খুঁজে বের করতে হবে, যাতে গ্রাহকের লেনদেন সুরক্ষিত থাকে। তাঁর মতে, এমএলএম কোম্পানিগুলো পরিচালনার জন্য যে আইনটি ইতিপূর্বে করা হয়েছে, তা অনুসরণ করলে ই-কমার্স প্রতারণা ঠেকানো যেত। অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউশনের শিক্ষক ড. মো. রিদওয়ানুল হক বলেছেন, ‘ই-কমার্স কোম্পানিতে পণ্য কিনে প্রতারণার শিকার মানুষ তাদের অর্থ কীভাবে ফেরত পাবে, তার সঠিক জবাব দেওয়ার মতো কেউ নেই। এর জবাব আমার কাছেও যেমন নেই, সরকারের কাছেও নেই।’ (সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১)।
এই যদি হয় অবস্থা, তাহলে দেশবাসী যাবে কোথায়? আইনের সঠিক ও কঠোর প্রয়োগ না হলে অপরাধপ্রবণতার বিস্তার ঘটে–এ কথা বিজ্ঞজনেরা বলে থাকেন। এ ক্ষেত্রেও তা-ই ঘটেছে। ইতিপূর্বে প্রতারকদের যদি কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হতো, তাহলে আজ এ লুটপাটের অবস্থার সৃষ্টি হতো না। এখনো যদি সরকার কঠোর পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে
ফজার বাপেদের দৌরাত্ম্য দিন দিন বাড়তেই থাকবে।
আমি দুই মাস আগেই বলেছিলাম, নভেম্বরে পরিস্থিতি খারাপ হবে। আমি সেটা দেশের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লেখার মাধ্যমে তুলে ধরেছিলাম। এবারের ডেঙ্গু পরিস্থিতিটা আগের বছরগুলোর মতো না। অন্যান্য বছরে নভেম্বরের দিকে ডেঙ্গু পরিস্থিতি কমে আসতে শুরু করে।
১৮ ঘণ্টা আগেআজ ১৭ নভেম্বর, মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর মৃত্যুদিবস। ১৯৭৬ সালের এ দিনে তিনি এক বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের ইতিহাস পেছনে ফেলে পরলোকগমন করেন। আজীবন সংগ্রামী ভাসানী কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সোচ্চার থাকার পাশাপাশি বাংলাদেশের স্বাধীনতারও ছিলেন প্রথম প্রবক্তা।
১৮ ঘণ্টা আগেসকালের আলোয় মনটা অকারণে আনমনা হয়ে যায়। মনের কোণে হঠাৎ বেজে ওঠে চেনা গানের সুর—‘কোন পুরাতন প্রাণের টানে...।’ মন ছুটে যায় সেই ছেলেবেলায়, যখন ঋতুবদল ঘটত গানের সুরেই।
১৮ ঘণ্টা আগেজুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশে শেখ হাসিনার দীর্ঘস্থায়ী দুঃশাসনের অবসান হয়েছে। ক্ষমতা পেয়েছে অন্তর্বর্তী এক সরকার, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন অরাজনৈতিক অথচ বিশ্বখ্যাত ব্যক্তি, বাংলাদেশের একমাত্র নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
১৮ ঘণ্টা আগে