সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী
আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ছিল অন্ধকারের বিরুদ্ধে আলোর সংগ্রাম। ওই যুদ্ধে অন্ধকারের প্রাণীদের তো অবশ্যই, আলোর পথযাত্রীদেরও কার কী ভূমিকা ছিল, সেটা জানা দরকার। যথার্থ গবেষণা ছাড়া ওই জানাটা সম্ভবপর নয়। মুক্তিযুদ্ধ তো অনেক বড় ব্যাপার, সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর ব্যাপারেই তো প্রকৃত তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। সাংবাদিক সাগর-রুনি, কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনু এবং পুলিশ সুপারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু ঘাতকদের হাতে নিহত হয়েছেন। তদন্ত হয়েছে। তদন্ত হতে থাকবে। তদন্তকারীরা থেকে থেকে জানাচ্ছেন, তাঁরা সত্যের কাছাকাছি পৌঁছে গেছেন; কিন্তু দেখা যাচ্ছে, সত্য শুধুই পালিয়ে বেড়াচ্ছে। সে বেশ ভীতসন্ত্রস্ত। তদন্তকারীরা নিজেরাও মনে হয় সত্যের ভয়ে ভীত। ছোট ব্যাপারেই এমনটা ঘটলে বড় বড় ব্যাপারে সত্য উন্মোচিত হবে কী করে?
তদন্ত কিন্তু ইতিহাস নয়। তদন্ত চলে কর্তার হুকুমে, ইতিহাস চলে নিজের নিয়মে। আমেরিকার ইরাক আক্রমণের সময় গ্রেট ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের অনেক ব্যঙ্গমূর্তি বের হতো। একটি ছিল, জর্জ বুশের হাতে দড়িতে বাঁধা একটি সারমেয় শাবকের। সম্পর্কের ওই দড়িটা মিথ্যা ছিল না। যুদ্ধে ব্লেয়ারের ভূমিকা নিয়ে সাত বছর ধরে টানা তদন্তের পর এখন যে সত্য উন্মোচিত হয়েছে, তা হলো—ব্লেয়ার একজন মিথ্যাবাদী। তিনি বলেছিলেন, সাদ্দাম হোসেনের হাতে এমন মারণাস্ত্র আছে, যা দিয়ে ইচ্ছা করলে তিনি ৪৫ মিনিটের মধ্যে গ্রেট ব্রিটেনকে ধ্বংস করে ফেলতে পারেন। অভিসন্ধিটা ছিল মানুষকে ভয় দেখিয়ে যুদ্ধে মাতানোর। ঘৃণ্য এই অপরাধীকে আইনের আদালতে দাঁড় করানো হয় তো সম্ভব হবে না; কিন্তু ইতিহাসের আদালত তাঁকে ক্ষমা করবে না। ইতিহাস বলবে, লোকটা জ্ঞানীর ভাণ করেছিল। আসলে ছিল নির্বোধ ও মিথ্যুক। নায়ক সেজেছিল, কিন্তু কাজ করেছে কসাইখানার জোগানদারের। ওই যুদ্ধে আমেরিকার ভূমিকার বিষয়ে তদন্ত হয়নি। তদন্ত হলে বেরিয়ে আসবে আরও ভয়াবহ সব সত্য।
শোনা যাচ্ছে, বাংলাদেশে প্রায় অবিশ্বাস্য একটি আইন পাস করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘ইতিহাস বিকৃতকরণ অপরাধ আইন-২০১৬’। আইন করে ইতিহাসের বিকৃতি নিরোধের এমন উদ্যোগ এমনকি আমাদের ইতিহাসেও দুর্লভ। যে রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাই ঘটেছে একটি মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে, সে রাষ্ট্রে আইন করে ইতিহাসের বিকৃতি রোধ করার চেষ্টা অবিশ্বাস্য বৈকি। সবচেয়ে বড় মুশকিলটা এই রকমের দাঁড়াবে: সরকার যা বলবে, আইনের চোখে সেটাই হবে প্রকৃত ইতিহাস, তার বাইরে যা কিছু সবই ইতিহাসের বিকৃতি। অতএব দণ্ডনীয়। পাকিস্তান আমলের শেষ দিকে পুলিশি শাসন যখন চরমে উঠেছিল, তখন শামসুর রাহমান তাঁর একটি কবিতায় লিখেছিলেন: ‘তোমার প্রেম, প্রিয়া, সরকারি প্রেসনোটের চেয়েও মিথ্যা।’ ওই রকমের প্রেসনোটকেই কি এখন সত্য ইতিহাস বলে মেনে নিতে হবে? অথবা সাম্প্রতিক সময়ে বন্দুকযুদ্ধ ও ক্রসফায়ারের যেসব গল্প শোনা যাচ্ছে, সেগুলোকেই কি ধরে নিতে হবে প্রকৃত ঘটনা হিসেবে? ইতিহাস কিন্তু একদিন হাসবে। বলবে, সেকালে কি মানুষ ছিল না—ইতিহাসের পক্ষে দাঁড়ানোর?
সব মানুষ নিশ্চয়ই চুপ করে থাকেননি; কিন্তু তাঁদের কণ্ঠ চাপা পড়ে গেছে সুবিধাভোগী চাটুকারদের বড় গলার আওয়াজের নিচে। গণমাধ্যম তাঁদের বক্তব্য তুলে ধরেনি, গুরুত্ব দেওয়া পরের কথা। গণমাধ্যম সুবিধাভোগীদের দখলে। বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে মোবাইল ফোনের রেজিস্ট্রেশনের উপযোগিতা নিয়ে অনেকে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন। সরকার শোনেনি। এগিয়ে গেছে। এখন দেখা যাচ্ছে, হাজার হাজার মোবাইল ফোন এই পদ্ধতিতেই ভুয়া রেজিস্ট্রেশন নিয়ে বাজারে বিক্রি হচ্ছে। নিয়ম এটাই। গরিবের কথা প্রথমে বাসি হয়, তার পরে ফলে। রামপালে কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন যে অত্যন্ত ক্ষতিকর হবে, এ কথাও বলা হয়েছে। গরিবেরাই বলছে। সেটাও হয়তো একদিন ফলবে। তবে, তখন দেরি হয়ে যাবে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ সম্বন্ধেও আপত্তি উঠেছে। নানা বিপদের কথা বলা হয়েছে। কায়মনোবাক্যে আমরা কামনা করব যে, এ ক্ষেত্রে গরিবের কথা যেন মিথ্যা প্রমাণিত হয়। কারণ, সত্য বলে প্রমাণিত হলে যে বিপর্যয় ঘটবে, তা কল্পনারও বাইরে।
জঙ্গি সমস্যা বিষয়ে ফেরত আসা যাক। ধারণা করা হতো, মাদ্রাসাছাত্ররাই শুধু জঙ্গি হয়। এখন দেখা যাচ্ছে, মাদ্রাসার ছাত্রদের কেউ কেউ ওই কাজে যুক্ত হয়েছে ঠিকই; কিন্তু তাদের চেয়ে অনেক ভয়ংকর হচ্ছে ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষিতদের একাংশের জঙ্গি সংযোগ। এদের শক্তি, দক্ষতা, যোগাযোগ অনেক উচ্চমানের। মাদ্রাসা ও ইংরেজি মাধ্যম—এই দুয়ের মধ্যে মিল অবশ্যই আছে। সেটা হলো গন্তব্যের। আর পার্থক্য যেটা, তার ভিত্তি হলো শ্রেণি। ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষিত জঙ্গিরা ধনী পরিবারের সন্তান। মাদ্রাসা থেকে যারা এসেছে, তারা নিম্নবিত্ত। পার্থক্যটা ইংরেজি মাধ্যম ও মাদ্রাসা শিক্ষার দূরত্বের সমান সমান। শিক্ষার উভয় ধারাই উৎপাটিত এবং জনজীবন থেকে বিচ্ছিন্ন। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা পরকালের কথা ভাববে, এতে কোনো অস্বাভাবিকতা নেই। কিন্তু ইংরেজি মাধ্যমের ছাত্রদের মনোযোগ তো বর্তমান জগতে সাফল্যের দিকেই থাকার কথা। তাহলে? ব্যাপার আসলে এটাই যে, ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষিত ওই তরুণেরা ইহজগতের উপার্জনে সন্তুষ্ট নয়। ইহজগতে তাদের তেমন একটা সমস্যা নেই। ঘরবাড়ির ব্যবস্থা পিতামাতাই করে দিয়েছেন। দেশে করেছেন, মাশআল্লাহ বিদেশেও করবেন। কিন্তু পরকালের কথাও তো ভাবতে হবে। সেখানেও তো বিষয়-আশয় দরকার। হয়তো সেই চিন্তাটাই তাদের পেয়ে বসেছে। সেই সঙ্গে এটাও হতে পারে, বাঙালি পরিচয়ে তারা আর সন্তুষ্ট নয়—মুসলমান পরিচয়টা বড় করে তুলতে চায়। ভেবেছে, তাতে সম্মান বাড়বে। বড় একটা পরিসরও পেয়ে যাবে। রাজনীতিতে ধর্মের যে ব্যবহার চলছে, তার প্রভাবও তাদের ওপর গিয়ে পড়ার কথা। পুঁজিবাদীরা ধর্মকর্মের জন্য সুখ্যাত নয়; কিন্তু তারা ধর্মের কথা খুব করে বলে। জর্জ বুশ তো ক্রুসেডই ঘোষণা করেছিলেন। ক্রুসেড উৎসাহিত করেছে জিহাদকে। এঁরা কেউই জনগণের পক্ষে নন, সবাই জনগণের বিপক্ষে। ভারতে উগ্র হিন্দুত্ববাদের চর্চা যে বাংলাদেশের তরুণদের ওপর পড়ছে না, এমনও নয়। পড়ছে এবং পড়তে থাকবে।
ওদিকে বাংলাদেশের সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা বহু আগেই নির্বাসিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ বলে দাবি করে যে আওয়ামী লীগ, তারা ক্ষমতায় একাধিকবার এসেছে; কিন্তু একবারও চেষ্টা করেনি ধর্মনিরপেক্ষতার রাষ্ট্রীয় নীতিকে সংবিধানে ফেরত আনতে। উপরন্তু এরশাদের রাষ্ট্রধর্ম সংযোজনকে তারা নীরবে মেনে নিয়েছে। এমনকি বহু অপরাধসহ রাষ্ট্রধর্ম সংযোজনের অপরাধেও অপরাধী, রাষ্ট্রদ্রোহী এরশাদের দলের সঙ্গে রাজনৈতিকভাবে তাদের একত্রে থাকাটা নির্বিবাদে চলছে। এরশাদ ছুটে যেতে চাইলে জেলের ভয় দেখিয়ে তাঁকে কাছে টেনে আনা হয়েছিল।
জঙ্গিদের সংখ্যা অল্প। আমরা জানি, একাত্তরে দেশের সব মানুষ ছিল একদিকে। মুষ্টিমেয় কিছু ছিল হানাদারদের পক্ষে। জঙ্গিদের সংখ্যা ওই কুলাঙ্গারদের তুলনায়ও অল্প। কিন্তু এদের সংখ্যা বাড়ছে। এবং ধনীগৃহের সন্তানেরাও ওই পথে চলে আসছে। বিপদটা বিশেষভাবে সেখানেই। ভরসাও কিন্তু আবার তরুণেরাই। শাহবাগে যে তরুণেরা এসে জড়ো হয়েছিল, সংখ্যায় তারা বিপুল। তারাও অবস্থাপন্ন ঘরেরই সন্তান। কিন্তু তাদের আদর্শবাদটা ছিল ভিন্ন ধরনের। সেটি ছিল সমষ্টিগত মুক্তির, যে স্বপ্ন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পেছনে কাজ করেছে, সেই স্বপ্নটিকে পুনরুজ্জীবিত করার।
তারা অবশ্য বেশি দূর এগোতে পারেনি। কারণ, তাদের জাগরণটা স্বতঃস্ফূর্ত হলেও ছিল অসংগঠিত। সংগঠন না থাকলে শুধু স্বতঃস্ফূর্ততায় কাজ হওয়ার নয়। কাজ হয়ও-নি। যে তরুণেরা জঙ্গি হয়ে যাচ্ছে, তাদের শাহবাগের পথে নিয়ে আসাটা দরকার। সে জন্য রাজনৈতিক আন্দোলন চাই, চাই সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কাজ। এসব ক্ষেত্রে অভাবটা যে কত মর্মান্তিকরূপে ক্ষতিকর, জঙ্গিবাদের তৎপরতা তারই প্রমাণ।
তরুণদের সামাজিকভাবে সংকুচিত করার চেষ্টাটা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তারা পরিসর পাচ্ছে না। ফেসবুক সামাজিকমাধ্যম হিসেবে গণ্য হয়েছে, আসলে কিন্তু সে যা ঘটাচ্ছে, তা হলো ছায়ার সঙ্গে যোগাযোগ। ব্যক্তিকে নিয়ে আসছে ছোট বৃত্তের মধ্যে। অথচ ধারণা দিচ্ছে যে, মিলন ঘটছে অসংখ্য জানা-অজানা মানুষের সঙ্গে। ওই মানুষগুলো তো মানুষ নয়, তারা মানুষের চিহ্ন মাত্র। যোগাযোগ দরকার জীবন্ত মানুষের সঙ্গে। সেটা ঘটছে না। লোকে এখন সিনেমা হলে যাওয়া ছেড়ে দিয়েছে। তারা ছবি দেখে একাকী, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পর্দায়। সবকিছুই কামরার মধ্যে। তার বাইরে জগৎ নেই। খেলার মাঠ নেই। বেড়ানোর পার্ক নেই। পাঠাগার নেই, যেখান থেকে বই আনবে এবং যেখানে গিয়ে মিলিত হবে। পাড়া-মহল্লায় সাংস্কৃতিক কাজ নেই। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই। নাটক হয় না। তার পরিবর্তে ধর্মীয় ওয়াজ চলে। ওয়াজ শোনার জন্য লোকে চাঁদা দিতে বাধ্য হয়। একজন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী কারাগারে, অসংখ্য সাঈদী মাঠেঘাটে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ছাত্র সংসদ নেই। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে তো নেই-ই, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও নিষিদ্ধ অবস্থায় আছে। পঁচিশ বছর ধরে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কোনোটিতেই ছাত্র সংসদের নির্বাচন হয়নি। কবে যে হবে, কেউই জানে না। এ রকম নিষিদ্ধকরণ ব্রিটিশ কিংবা পাকিস্তান আমলে হলে আমরা ভীষণ উত্তেজিত হতাম। বলতাম, অসহনীয় ষড়যন্ত্র। কিন্তু এখন কিছু বলি না। কারণ, এখন আমাদের নিজেদের লোকেরাই শাসনকর্তা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে স্বদেশি শাসনকর্তাদের আচরণ যে বিদেশি শাসকদের তুলনায়ও খারাপ, সেটা তো পরিষ্কার। ছাত্র সংসদকে ঘিরে সম্ভাব্য সাংস্কৃতিক কাজকর্মের অভাবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন শিক্ষিত লোকদের বস্তিতে পরিণত হয়েছে। সেখান থেকে সংস্কৃতিচর্চায় দুর্বল এবং সামাজিকতা অনুশীলনের সুযোগবঞ্চিত যেসব তরুণ বের হয়ে আসছে, তারা তাদের নিজের ভবিষ্যতের জন্য তো নয়ই, দেশের ভবিষ্যতের জন্যও কোনো উজ্জ্বল প্রতিশ্রুতি বহন করে না। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জঙ্গি বের হয়ে আসার ঘটনায় তো এই সত্য প্রমাণিতই হয়ে গেছে। অথচ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাও যে ক্ষমতা রাখে নিজেদের অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপের সফল প্রতিরোধের, সেটার প্রমাণ পাওয়া গেছে ভ্যাট বসানোর বিরুদ্ধে তাদের আন্দোলনে। ছাত্রদের এই ক্ষমতাকে রাষ্ট্র অত্যন্ত অপছন্দ করে, ভয়ও পায়। কারণ, রাষ্ট্র জনবিরোধী। শিক্ষিত তরুণেরা রাজনীতিতে অংশ নিতে পারছে না। সমাজ, পরিবার এবং নিজের জন্যও তারা এখন বোঝা। এই বোঝা বিপজ্জনক। এর ভেতর বিস্ফোরক আছে। লুকানো।
লেখক: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ইমেরিটাস অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ছিল অন্ধকারের বিরুদ্ধে আলোর সংগ্রাম। ওই যুদ্ধে অন্ধকারের প্রাণীদের তো অবশ্যই, আলোর পথযাত্রীদেরও কার কী ভূমিকা ছিল, সেটা জানা দরকার। যথার্থ গবেষণা ছাড়া ওই জানাটা সম্ভবপর নয়। মুক্তিযুদ্ধ তো অনেক বড় ব্যাপার, সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর ব্যাপারেই তো প্রকৃত তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। সাংবাদিক সাগর-রুনি, কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনু এবং পুলিশ সুপারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু ঘাতকদের হাতে নিহত হয়েছেন। তদন্ত হয়েছে। তদন্ত হতে থাকবে। তদন্তকারীরা থেকে থেকে জানাচ্ছেন, তাঁরা সত্যের কাছাকাছি পৌঁছে গেছেন; কিন্তু দেখা যাচ্ছে, সত্য শুধুই পালিয়ে বেড়াচ্ছে। সে বেশ ভীতসন্ত্রস্ত। তদন্তকারীরা নিজেরাও মনে হয় সত্যের ভয়ে ভীত। ছোট ব্যাপারেই এমনটা ঘটলে বড় বড় ব্যাপারে সত্য উন্মোচিত হবে কী করে?
তদন্ত কিন্তু ইতিহাস নয়। তদন্ত চলে কর্তার হুকুমে, ইতিহাস চলে নিজের নিয়মে। আমেরিকার ইরাক আক্রমণের সময় গ্রেট ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের অনেক ব্যঙ্গমূর্তি বের হতো। একটি ছিল, জর্জ বুশের হাতে দড়িতে বাঁধা একটি সারমেয় শাবকের। সম্পর্কের ওই দড়িটা মিথ্যা ছিল না। যুদ্ধে ব্লেয়ারের ভূমিকা নিয়ে সাত বছর ধরে টানা তদন্তের পর এখন যে সত্য উন্মোচিত হয়েছে, তা হলো—ব্লেয়ার একজন মিথ্যাবাদী। তিনি বলেছিলেন, সাদ্দাম হোসেনের হাতে এমন মারণাস্ত্র আছে, যা দিয়ে ইচ্ছা করলে তিনি ৪৫ মিনিটের মধ্যে গ্রেট ব্রিটেনকে ধ্বংস করে ফেলতে পারেন। অভিসন্ধিটা ছিল মানুষকে ভয় দেখিয়ে যুদ্ধে মাতানোর। ঘৃণ্য এই অপরাধীকে আইনের আদালতে দাঁড় করানো হয় তো সম্ভব হবে না; কিন্তু ইতিহাসের আদালত তাঁকে ক্ষমা করবে না। ইতিহাস বলবে, লোকটা জ্ঞানীর ভাণ করেছিল। আসলে ছিল নির্বোধ ও মিথ্যুক। নায়ক সেজেছিল, কিন্তু কাজ করেছে কসাইখানার জোগানদারের। ওই যুদ্ধে আমেরিকার ভূমিকার বিষয়ে তদন্ত হয়নি। তদন্ত হলে বেরিয়ে আসবে আরও ভয়াবহ সব সত্য।
শোনা যাচ্ছে, বাংলাদেশে প্রায় অবিশ্বাস্য একটি আইন পাস করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘ইতিহাস বিকৃতকরণ অপরাধ আইন-২০১৬’। আইন করে ইতিহাসের বিকৃতি নিরোধের এমন উদ্যোগ এমনকি আমাদের ইতিহাসেও দুর্লভ। যে রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাই ঘটেছে একটি মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে, সে রাষ্ট্রে আইন করে ইতিহাসের বিকৃতি রোধ করার চেষ্টা অবিশ্বাস্য বৈকি। সবচেয়ে বড় মুশকিলটা এই রকমের দাঁড়াবে: সরকার যা বলবে, আইনের চোখে সেটাই হবে প্রকৃত ইতিহাস, তার বাইরে যা কিছু সবই ইতিহাসের বিকৃতি। অতএব দণ্ডনীয়। পাকিস্তান আমলের শেষ দিকে পুলিশি শাসন যখন চরমে উঠেছিল, তখন শামসুর রাহমান তাঁর একটি কবিতায় লিখেছিলেন: ‘তোমার প্রেম, প্রিয়া, সরকারি প্রেসনোটের চেয়েও মিথ্যা।’ ওই রকমের প্রেসনোটকেই কি এখন সত্য ইতিহাস বলে মেনে নিতে হবে? অথবা সাম্প্রতিক সময়ে বন্দুকযুদ্ধ ও ক্রসফায়ারের যেসব গল্প শোনা যাচ্ছে, সেগুলোকেই কি ধরে নিতে হবে প্রকৃত ঘটনা হিসেবে? ইতিহাস কিন্তু একদিন হাসবে। বলবে, সেকালে কি মানুষ ছিল না—ইতিহাসের পক্ষে দাঁড়ানোর?
সব মানুষ নিশ্চয়ই চুপ করে থাকেননি; কিন্তু তাঁদের কণ্ঠ চাপা পড়ে গেছে সুবিধাভোগী চাটুকারদের বড় গলার আওয়াজের নিচে। গণমাধ্যম তাঁদের বক্তব্য তুলে ধরেনি, গুরুত্ব দেওয়া পরের কথা। গণমাধ্যম সুবিধাভোগীদের দখলে। বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে মোবাইল ফোনের রেজিস্ট্রেশনের উপযোগিতা নিয়ে অনেকে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন। সরকার শোনেনি। এগিয়ে গেছে। এখন দেখা যাচ্ছে, হাজার হাজার মোবাইল ফোন এই পদ্ধতিতেই ভুয়া রেজিস্ট্রেশন নিয়ে বাজারে বিক্রি হচ্ছে। নিয়ম এটাই। গরিবের কথা প্রথমে বাসি হয়, তার পরে ফলে। রামপালে কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন যে অত্যন্ত ক্ষতিকর হবে, এ কথাও বলা হয়েছে। গরিবেরাই বলছে। সেটাও হয়তো একদিন ফলবে। তবে, তখন দেরি হয়ে যাবে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ সম্বন্ধেও আপত্তি উঠেছে। নানা বিপদের কথা বলা হয়েছে। কায়মনোবাক্যে আমরা কামনা করব যে, এ ক্ষেত্রে গরিবের কথা যেন মিথ্যা প্রমাণিত হয়। কারণ, সত্য বলে প্রমাণিত হলে যে বিপর্যয় ঘটবে, তা কল্পনারও বাইরে।
জঙ্গি সমস্যা বিষয়ে ফেরত আসা যাক। ধারণা করা হতো, মাদ্রাসাছাত্ররাই শুধু জঙ্গি হয়। এখন দেখা যাচ্ছে, মাদ্রাসার ছাত্রদের কেউ কেউ ওই কাজে যুক্ত হয়েছে ঠিকই; কিন্তু তাদের চেয়ে অনেক ভয়ংকর হচ্ছে ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষিতদের একাংশের জঙ্গি সংযোগ। এদের শক্তি, দক্ষতা, যোগাযোগ অনেক উচ্চমানের। মাদ্রাসা ও ইংরেজি মাধ্যম—এই দুয়ের মধ্যে মিল অবশ্যই আছে। সেটা হলো গন্তব্যের। আর পার্থক্য যেটা, তার ভিত্তি হলো শ্রেণি। ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষিত জঙ্গিরা ধনী পরিবারের সন্তান। মাদ্রাসা থেকে যারা এসেছে, তারা নিম্নবিত্ত। পার্থক্যটা ইংরেজি মাধ্যম ও মাদ্রাসা শিক্ষার দূরত্বের সমান সমান। শিক্ষার উভয় ধারাই উৎপাটিত এবং জনজীবন থেকে বিচ্ছিন্ন। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা পরকালের কথা ভাববে, এতে কোনো অস্বাভাবিকতা নেই। কিন্তু ইংরেজি মাধ্যমের ছাত্রদের মনোযোগ তো বর্তমান জগতে সাফল্যের দিকেই থাকার কথা। তাহলে? ব্যাপার আসলে এটাই যে, ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষিত ওই তরুণেরা ইহজগতের উপার্জনে সন্তুষ্ট নয়। ইহজগতে তাদের তেমন একটা সমস্যা নেই। ঘরবাড়ির ব্যবস্থা পিতামাতাই করে দিয়েছেন। দেশে করেছেন, মাশআল্লাহ বিদেশেও করবেন। কিন্তু পরকালের কথাও তো ভাবতে হবে। সেখানেও তো বিষয়-আশয় দরকার। হয়তো সেই চিন্তাটাই তাদের পেয়ে বসেছে। সেই সঙ্গে এটাও হতে পারে, বাঙালি পরিচয়ে তারা আর সন্তুষ্ট নয়—মুসলমান পরিচয়টা বড় করে তুলতে চায়। ভেবেছে, তাতে সম্মান বাড়বে। বড় একটা পরিসরও পেয়ে যাবে। রাজনীতিতে ধর্মের যে ব্যবহার চলছে, তার প্রভাবও তাদের ওপর গিয়ে পড়ার কথা। পুঁজিবাদীরা ধর্মকর্মের জন্য সুখ্যাত নয়; কিন্তু তারা ধর্মের কথা খুব করে বলে। জর্জ বুশ তো ক্রুসেডই ঘোষণা করেছিলেন। ক্রুসেড উৎসাহিত করেছে জিহাদকে। এঁরা কেউই জনগণের পক্ষে নন, সবাই জনগণের বিপক্ষে। ভারতে উগ্র হিন্দুত্ববাদের চর্চা যে বাংলাদেশের তরুণদের ওপর পড়ছে না, এমনও নয়। পড়ছে এবং পড়তে থাকবে।
ওদিকে বাংলাদেশের সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা বহু আগেই নির্বাসিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ বলে দাবি করে যে আওয়ামী লীগ, তারা ক্ষমতায় একাধিকবার এসেছে; কিন্তু একবারও চেষ্টা করেনি ধর্মনিরপেক্ষতার রাষ্ট্রীয় নীতিকে সংবিধানে ফেরত আনতে। উপরন্তু এরশাদের রাষ্ট্রধর্ম সংযোজনকে তারা নীরবে মেনে নিয়েছে। এমনকি বহু অপরাধসহ রাষ্ট্রধর্ম সংযোজনের অপরাধেও অপরাধী, রাষ্ট্রদ্রোহী এরশাদের দলের সঙ্গে রাজনৈতিকভাবে তাদের একত্রে থাকাটা নির্বিবাদে চলছে। এরশাদ ছুটে যেতে চাইলে জেলের ভয় দেখিয়ে তাঁকে কাছে টেনে আনা হয়েছিল।
জঙ্গিদের সংখ্যা অল্প। আমরা জানি, একাত্তরে দেশের সব মানুষ ছিল একদিকে। মুষ্টিমেয় কিছু ছিল হানাদারদের পক্ষে। জঙ্গিদের সংখ্যা ওই কুলাঙ্গারদের তুলনায়ও অল্প। কিন্তু এদের সংখ্যা বাড়ছে। এবং ধনীগৃহের সন্তানেরাও ওই পথে চলে আসছে। বিপদটা বিশেষভাবে সেখানেই। ভরসাও কিন্তু আবার তরুণেরাই। শাহবাগে যে তরুণেরা এসে জড়ো হয়েছিল, সংখ্যায় তারা বিপুল। তারাও অবস্থাপন্ন ঘরেরই সন্তান। কিন্তু তাদের আদর্শবাদটা ছিল ভিন্ন ধরনের। সেটি ছিল সমষ্টিগত মুক্তির, যে স্বপ্ন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পেছনে কাজ করেছে, সেই স্বপ্নটিকে পুনরুজ্জীবিত করার।
তারা অবশ্য বেশি দূর এগোতে পারেনি। কারণ, তাদের জাগরণটা স্বতঃস্ফূর্ত হলেও ছিল অসংগঠিত। সংগঠন না থাকলে শুধু স্বতঃস্ফূর্ততায় কাজ হওয়ার নয়। কাজ হয়ও-নি। যে তরুণেরা জঙ্গি হয়ে যাচ্ছে, তাদের শাহবাগের পথে নিয়ে আসাটা দরকার। সে জন্য রাজনৈতিক আন্দোলন চাই, চাই সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কাজ। এসব ক্ষেত্রে অভাবটা যে কত মর্মান্তিকরূপে ক্ষতিকর, জঙ্গিবাদের তৎপরতা তারই প্রমাণ।
তরুণদের সামাজিকভাবে সংকুচিত করার চেষ্টাটা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তারা পরিসর পাচ্ছে না। ফেসবুক সামাজিকমাধ্যম হিসেবে গণ্য হয়েছে, আসলে কিন্তু সে যা ঘটাচ্ছে, তা হলো ছায়ার সঙ্গে যোগাযোগ। ব্যক্তিকে নিয়ে আসছে ছোট বৃত্তের মধ্যে। অথচ ধারণা দিচ্ছে যে, মিলন ঘটছে অসংখ্য জানা-অজানা মানুষের সঙ্গে। ওই মানুষগুলো তো মানুষ নয়, তারা মানুষের চিহ্ন মাত্র। যোগাযোগ দরকার জীবন্ত মানুষের সঙ্গে। সেটা ঘটছে না। লোকে এখন সিনেমা হলে যাওয়া ছেড়ে দিয়েছে। তারা ছবি দেখে একাকী, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পর্দায়। সবকিছুই কামরার মধ্যে। তার বাইরে জগৎ নেই। খেলার মাঠ নেই। বেড়ানোর পার্ক নেই। পাঠাগার নেই, যেখান থেকে বই আনবে এবং যেখানে গিয়ে মিলিত হবে। পাড়া-মহল্লায় সাংস্কৃতিক কাজ নেই। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই। নাটক হয় না। তার পরিবর্তে ধর্মীয় ওয়াজ চলে। ওয়াজ শোনার জন্য লোকে চাঁদা দিতে বাধ্য হয়। একজন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী কারাগারে, অসংখ্য সাঈদী মাঠেঘাটে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ছাত্র সংসদ নেই। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে তো নেই-ই, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও নিষিদ্ধ অবস্থায় আছে। পঁচিশ বছর ধরে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কোনোটিতেই ছাত্র সংসদের নির্বাচন হয়নি। কবে যে হবে, কেউই জানে না। এ রকম নিষিদ্ধকরণ ব্রিটিশ কিংবা পাকিস্তান আমলে হলে আমরা ভীষণ উত্তেজিত হতাম। বলতাম, অসহনীয় ষড়যন্ত্র। কিন্তু এখন কিছু বলি না। কারণ, এখন আমাদের নিজেদের লোকেরাই শাসনকর্তা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে স্বদেশি শাসনকর্তাদের আচরণ যে বিদেশি শাসকদের তুলনায়ও খারাপ, সেটা তো পরিষ্কার। ছাত্র সংসদকে ঘিরে সম্ভাব্য সাংস্কৃতিক কাজকর্মের অভাবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন শিক্ষিত লোকদের বস্তিতে পরিণত হয়েছে। সেখান থেকে সংস্কৃতিচর্চায় দুর্বল এবং সামাজিকতা অনুশীলনের সুযোগবঞ্চিত যেসব তরুণ বের হয়ে আসছে, তারা তাদের নিজের ভবিষ্যতের জন্য তো নয়ই, দেশের ভবিষ্যতের জন্যও কোনো উজ্জ্বল প্রতিশ্রুতি বহন করে না। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জঙ্গি বের হয়ে আসার ঘটনায় তো এই সত্য প্রমাণিতই হয়ে গেছে। অথচ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাও যে ক্ষমতা রাখে নিজেদের অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপের সফল প্রতিরোধের, সেটার প্রমাণ পাওয়া গেছে ভ্যাট বসানোর বিরুদ্ধে তাদের আন্দোলনে। ছাত্রদের এই ক্ষমতাকে রাষ্ট্র অত্যন্ত অপছন্দ করে, ভয়ও পায়। কারণ, রাষ্ট্র জনবিরোধী। শিক্ষিত তরুণেরা রাজনীতিতে অংশ নিতে পারছে না। সমাজ, পরিবার এবং নিজের জন্যও তারা এখন বোঝা। এই বোঝা বিপজ্জনক। এর ভেতর বিস্ফোরক আছে। লুকানো।
লেখক: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ইমেরিটাস অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
আমি দুই মাস আগেই বলেছিলাম, নভেম্বরে পরিস্থিতি খারাপ হবে। আমি সেটা দেশের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লেখার মাধ্যমে তুলে ধরেছিলাম। এবারের ডেঙ্গু পরিস্থিতিটা আগের বছরগুলোর মতো না। অন্যান্য বছরে নভেম্বরের দিকে ডেঙ্গু পরিস্থিতি কমে আসতে শুরু করে।
২১ ঘণ্টা আগেআজ ১৭ নভেম্বর, মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর মৃত্যুদিবস। ১৯৭৬ সালের এ দিনে তিনি এক বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের ইতিহাস পেছনে ফেলে পরলোকগমন করেন। আজীবন সংগ্রামী ভাসানী কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সোচ্চার থাকার পাশাপাশি বাংলাদেশের স্বাধীনতারও ছিলেন প্রথম প্রবক্তা।
১ দিন আগেসকালের আলোয় মনটা অকারণে আনমনা হয়ে যায়। মনের কোণে হঠাৎ বেজে ওঠে চেনা গানের সুর—‘কোন পুরাতন প্রাণের টানে...।’ মন ছুটে যায় সেই ছেলেবেলায়, যখন ঋতুবদল ঘটত গানের সুরেই।
১ দিন আগেজুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশে শেখ হাসিনার দীর্ঘস্থায়ী দুঃশাসনের অবসান হয়েছে। ক্ষমতা পেয়েছে অন্তর্বর্তী এক সরকার, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন অরাজনৈতিক অথচ বিশ্বখ্যাত ব্যক্তি, বাংলাদেশের একমাত্র নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
১ দিন আগে