অর্ণব সান্যাল
চলচ্চিত্রের রূপালি পর্দায় আমরা নানা কিছুই দেখতে পাই। এমন অনেক ‘অবাস্তব’ কিছু, যা বাস্তবে ঘটলে ঠিক হজম হবে না। সিনেমা ও বাস্তবের মধ্যে তাই স্পষ্ট ফারাক থাকা লাগে। কিন্তু সিনেমার নায়কের নাটকীয় ‘মন্তব্য যখন বাস্তবের পৃথিবীর দায়িত্বপূর্ণ পদে থাকা কারও বক্তব্য হয়ে যায়, তখন?
দীর্ঘদিন ধরেই বিচারবহির্ভূত হত্যা নিয়ে আলোচনা চলছে। এই বিষয়টি এ দেশের প্রেক্ষাপটে প্রায় সময়ই ‘ক্রসফায়ার’ হয়ে যায় সংগত কারণেই। পরিপূর্ণ বিচার ছাড়াই কারও (চিহ্নিত অপরাধী হোন বা না হোন) মৃত্যু হলে, সেটি হয় বিচারবহির্ভূত হত্যা। এর মধ্যে আছে ক্রসফায়ার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে থাকা অবস্থায় মৃত্যু, নির্যাতনে মৃত্যু ইত্যাদি ইত্যাদি। এসব দেখা হয় মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর উদাহরণ হিসেবে। যদিও এমন উদাহরণ এ দেশে নিয়মিতই মেলে।
চলতি বছরের এমন ঘটনার পরিসংখ্যানও আছে। আইন ও সালিস কেন্দ্রের (আসক) দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তারের আগে ও পরে ‘ক্রসফায়ার’ শব্দে ৩৬ জনের প্রাণহানি হয়েছে। বিচারবহির্ভূত হত্যা ও হেফাজতে মৃত্যুর মোট সংখ্যা এই সময়সীমার মধ্যে ৫৫। অর্থাৎ ৫৫টি প্রাণ কোনো বিচার ছাড়াই উবে গেছে দুনিয়া থেকে।
এত দিন ধরে এ নিয়ে সরকার ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো মুখোমুখি অবস্থানেই আছে। দেশে–বিদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যা নিয়ে আলোচনা–সমালোচনাও হয়েছে ঢের। সরকারের পক্ষ থেকে সব সময়ই এ নিয়ে নিজেদের পক্ষ সমর্থনকারী বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। সেটিই স্বাভাবিক। আপনি অভিযোগের আঙুল যার দিকেই তুলুন, তিনি নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে বক্তব্য দিতেই পারেন। নিজের অবস্থানের যৌক্তিকতা বুঝিয়ে বলতে পারেন। সমস্যা হলো, কিছু মানুষকে সেই সুযোগটাই দেওয়া হচ্ছে না। নিরপেক্ষ বিচারের আওতায় তাদের দোষ–গুণের পরীক্ষাটা হচ্ছে না। বরং একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে তার নিহত হওয়ার খবর।
বছরের পর বছর ধরেই এ নিয়ে সরকারের লোকজন সব সময় নিজেদের অবস্থান যে সঠিক, সেটি ব্যাখ্যা করতে চাইতেন। বলতে চাইতেন নির্দিষ্ট পরিবেশ–পরিস্থিতির কথা, যেখানে অনিচ্ছাকৃত বা বাধ্য হয়ে গুলি চালানোর বিষয়টি উঠে আসত। আর এখন মন্ত্রী পর্যায়ের ব্যক্তিও বলে দিচ্ছেন, তিনি ক্রসফায়ারের পক্ষে। অর্থাৎ গণতান্ত্রিক পন্থায় নির্বাচিত হওয়ার দাবি করা একটি সরকারের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য প্রকাশ্যে বলছেন, তিনি গণতন্ত্রের মূল চেতনার বিপক্ষে, তিনি মানুষের সমান অধিকারের বিপক্ষে!
সম্প্রতি ক্রসফায়ারের পক্ষে ‘ওকালতি’ করেছেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার। গণমাধ্যমের খবরে প্রকাশ, এক আলোচনা সভায় তিনি বলেছেন যে, ‘অনেক সময় বিরোধী দলের নেতারা বলেন ক্রসফায়ার দিয়ে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। কিন্তু আমি ক্রসফায়ারের পক্ষে। একজন সন্ত্রাসীর জন্য লাখ লাখ মানুষের রাতের ঘুম নষ্ট হয়। এদের কারণেই সৃষ্টি হচ্ছে কিশোর গ্যাং। এই সন্ত্রাসীর বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই। তাকে ক্রসফায়ার দিয়ে মেরে ফেলা উচিত।’ মন্ত্রী ক্রসফায়ার প্রসঙ্গে আরও বলেছেন, ‘শান্তির জন্য আমি ক্রসফায়ারের পক্ষে।’ কিন্তু যে শান্তির জন্য মন্ত্রী মহোদয় ক্রসফায়ার চাচ্ছেন, সেই শান্তি কি বিচার ছাড়াই হত্যা করলে পাওয়া যাবে?
উদ্ধৃতি কমার ভেতরে ব্যবহার করা কথাগুলো স্পষ্টভাবেই জানান দিচ্ছে মন্ত্রী মশাইয়ের মনের কথা। তিনি পরিষ্কারভাবেই বলেছেন যে, ‘আদালতের বিচার তো আমাদের দেশে দীর্ঘসূত্রতার বিষয়।’ কথা হলো, যেসব সমস্যার কথা তিনি বলতে চেয়েছেন, সেসবের আইনসংগত ও গণতান্ত্রিক সমাধান বের করার জন্যই তো তাঁদের সংসদে পাঠানো হয়েছে। সে ব্যাপারে উদ্যোগী না হয়ে, যদি তাঁরা বেআইনি পথেই হাঁটতে চান, তবে আর ‘গণতন্ত্র’, ‘নির্বাচন’, ‘আইনের শাসন’, ‘খেয়ে–পরে বেঁচে থাকার অধিকার’ ইত্যাদি বলে ভোট চাওয়া হয় কেন? নাকি ভোট না পাওয়ার বা জনগণের কাছে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার ভয়ই এখন আর নেই?
আসলে একজন ব্যক্তি তখনই বেপরোয়া হন, যখন তার কিছুই পরোয়া করার থাকে না। এ দেশের আইনপ্রণেতাদের ওপরে উল্লেখিত ঘরানার বক্তব্য বলে দিচ্ছে, পরোয়া করার বাজারে এখন বেজায় মন্দা! তাই যা খুশি তাই বলে দেওয়া যাচ্ছে, করা যাচ্ছে।
ঠিক যেমনটা আমরা বাংলা–হিন্দি বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রেও দেখে থাকি। যদিও উন্নত বিশ্বে চলচ্চিত্রের বাণিজ্যিক–অবাণিজ্যিক শ্রেণিবিভাগ নেই, তবে এতদঅঞ্চলের দেশগুলোতে তা দেখা যায় নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের কারণে হয়তো। কারণ নায়ক যখন হাজার অপরাধ করেও শুধু ‘ভালো আচরণের’ জন্য সাজা মওকুফের চিত্রনাট্যে অভিনয় করতে পারেন, তখন তা যে স্রেফ আপামর দর্শক শ্রেণির মনোতুষ্টির জন্যই সৃষ্টি হয়েছে–সেটি আর মুখ ফুটে বলতে হয় না। তো এহেন ‘বাণিজ্যিক’ ছবির একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ সালমান খান অভিনীত ‘দাবাং’। যেখানে একজন পুলিশ কর্মকর্তা অসাধু উপায়ে সাধু কর্তব্য পালনের কাজ করে যান লাগাতার এবং দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন করেন। গুলি চালাতে তার বাধে না। সিনেমায় এসব দেখে আমোদিত হতে হতে, আমরা কি তবে রুপালি পর্দা ও সত্যিকারের জীবনের মধ্যে পার্থক্য টানতে ভুলে যাচ্ছি? নাকি সবাই হতে চাচ্ছি সিনেমার সেই নায়ক, যে কিনা দুই–আড়াই ঘণ্টাতেই তাবৎ সমস্যা মিটিয়ে ফেলতে পারে যে কোনো উপায়ে।
মানুষের জীবনে একটা সময় থাকে, যখন নাটক–সিনেমা দেখে নায়কের মতো হয়ে ওঠার চল থাকে প্রবলভাবে। সাজপোশাক থেকে শুরু করে কথা বলার স্টাইল–সবকিছুই নায়কোচিত করার চেষ্টা চলে তখন। কিন্তু পরিণত হতে হতে সেসব উবে যাওয়াটাই ভালো। আত্মস্থ হওয়া উচিত যে, সিনেমার নায়ক শুধু পর্দাতেই বর্তমান এবং চাইলেই ‘রবিনহুড পাণ্ডে’ হওয়াটা বাস্তবসম্মত নয়।
রবিনহুড পাণ্ডে তার চেয়ে বরং সিনেমার পর্দাতেই থাক। আর সবাই যদি চুলবুল ওরফে রবিনহুড পাণ্ডে হতে চান, তবে ঢের বিপদও আছে। বাঁকা আঙুলে ঘি তুলে তখন আর তা খাওয়ানোর মতো আপামর ‘সোজা–সরল’ জনসাধারণ পাওয়া যাবে না যে!
চলচ্চিত্রের রূপালি পর্দায় আমরা নানা কিছুই দেখতে পাই। এমন অনেক ‘অবাস্তব’ কিছু, যা বাস্তবে ঘটলে ঠিক হজম হবে না। সিনেমা ও বাস্তবের মধ্যে তাই স্পষ্ট ফারাক থাকা লাগে। কিন্তু সিনেমার নায়কের নাটকীয় ‘মন্তব্য যখন বাস্তবের পৃথিবীর দায়িত্বপূর্ণ পদে থাকা কারও বক্তব্য হয়ে যায়, তখন?
দীর্ঘদিন ধরেই বিচারবহির্ভূত হত্যা নিয়ে আলোচনা চলছে। এই বিষয়টি এ দেশের প্রেক্ষাপটে প্রায় সময়ই ‘ক্রসফায়ার’ হয়ে যায় সংগত কারণেই। পরিপূর্ণ বিচার ছাড়াই কারও (চিহ্নিত অপরাধী হোন বা না হোন) মৃত্যু হলে, সেটি হয় বিচারবহির্ভূত হত্যা। এর মধ্যে আছে ক্রসফায়ার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে থাকা অবস্থায় মৃত্যু, নির্যাতনে মৃত্যু ইত্যাদি ইত্যাদি। এসব দেখা হয় মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর উদাহরণ হিসেবে। যদিও এমন উদাহরণ এ দেশে নিয়মিতই মেলে।
চলতি বছরের এমন ঘটনার পরিসংখ্যানও আছে। আইন ও সালিস কেন্দ্রের (আসক) দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তারের আগে ও পরে ‘ক্রসফায়ার’ শব্দে ৩৬ জনের প্রাণহানি হয়েছে। বিচারবহির্ভূত হত্যা ও হেফাজতে মৃত্যুর মোট সংখ্যা এই সময়সীমার মধ্যে ৫৫। অর্থাৎ ৫৫টি প্রাণ কোনো বিচার ছাড়াই উবে গেছে দুনিয়া থেকে।
এত দিন ধরে এ নিয়ে সরকার ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো মুখোমুখি অবস্থানেই আছে। দেশে–বিদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যা নিয়ে আলোচনা–সমালোচনাও হয়েছে ঢের। সরকারের পক্ষ থেকে সব সময়ই এ নিয়ে নিজেদের পক্ষ সমর্থনকারী বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। সেটিই স্বাভাবিক। আপনি অভিযোগের আঙুল যার দিকেই তুলুন, তিনি নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে বক্তব্য দিতেই পারেন। নিজের অবস্থানের যৌক্তিকতা বুঝিয়ে বলতে পারেন। সমস্যা হলো, কিছু মানুষকে সেই সুযোগটাই দেওয়া হচ্ছে না। নিরপেক্ষ বিচারের আওতায় তাদের দোষ–গুণের পরীক্ষাটা হচ্ছে না। বরং একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে তার নিহত হওয়ার খবর।
বছরের পর বছর ধরেই এ নিয়ে সরকারের লোকজন সব সময় নিজেদের অবস্থান যে সঠিক, সেটি ব্যাখ্যা করতে চাইতেন। বলতে চাইতেন নির্দিষ্ট পরিবেশ–পরিস্থিতির কথা, যেখানে অনিচ্ছাকৃত বা বাধ্য হয়ে গুলি চালানোর বিষয়টি উঠে আসত। আর এখন মন্ত্রী পর্যায়ের ব্যক্তিও বলে দিচ্ছেন, তিনি ক্রসফায়ারের পক্ষে। অর্থাৎ গণতান্ত্রিক পন্থায় নির্বাচিত হওয়ার দাবি করা একটি সরকারের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য প্রকাশ্যে বলছেন, তিনি গণতন্ত্রের মূল চেতনার বিপক্ষে, তিনি মানুষের সমান অধিকারের বিপক্ষে!
সম্প্রতি ক্রসফায়ারের পক্ষে ‘ওকালতি’ করেছেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার। গণমাধ্যমের খবরে প্রকাশ, এক আলোচনা সভায় তিনি বলেছেন যে, ‘অনেক সময় বিরোধী দলের নেতারা বলেন ক্রসফায়ার দিয়ে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। কিন্তু আমি ক্রসফায়ারের পক্ষে। একজন সন্ত্রাসীর জন্য লাখ লাখ মানুষের রাতের ঘুম নষ্ট হয়। এদের কারণেই সৃষ্টি হচ্ছে কিশোর গ্যাং। এই সন্ত্রাসীর বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই। তাকে ক্রসফায়ার দিয়ে মেরে ফেলা উচিত।’ মন্ত্রী ক্রসফায়ার প্রসঙ্গে আরও বলেছেন, ‘শান্তির জন্য আমি ক্রসফায়ারের পক্ষে।’ কিন্তু যে শান্তির জন্য মন্ত্রী মহোদয় ক্রসফায়ার চাচ্ছেন, সেই শান্তি কি বিচার ছাড়াই হত্যা করলে পাওয়া যাবে?
উদ্ধৃতি কমার ভেতরে ব্যবহার করা কথাগুলো স্পষ্টভাবেই জানান দিচ্ছে মন্ত্রী মশাইয়ের মনের কথা। তিনি পরিষ্কারভাবেই বলেছেন যে, ‘আদালতের বিচার তো আমাদের দেশে দীর্ঘসূত্রতার বিষয়।’ কথা হলো, যেসব সমস্যার কথা তিনি বলতে চেয়েছেন, সেসবের আইনসংগত ও গণতান্ত্রিক সমাধান বের করার জন্যই তো তাঁদের সংসদে পাঠানো হয়েছে। সে ব্যাপারে উদ্যোগী না হয়ে, যদি তাঁরা বেআইনি পথেই হাঁটতে চান, তবে আর ‘গণতন্ত্র’, ‘নির্বাচন’, ‘আইনের শাসন’, ‘খেয়ে–পরে বেঁচে থাকার অধিকার’ ইত্যাদি বলে ভোট চাওয়া হয় কেন? নাকি ভোট না পাওয়ার বা জনগণের কাছে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার ভয়ই এখন আর নেই?
আসলে একজন ব্যক্তি তখনই বেপরোয়া হন, যখন তার কিছুই পরোয়া করার থাকে না। এ দেশের আইনপ্রণেতাদের ওপরে উল্লেখিত ঘরানার বক্তব্য বলে দিচ্ছে, পরোয়া করার বাজারে এখন বেজায় মন্দা! তাই যা খুশি তাই বলে দেওয়া যাচ্ছে, করা যাচ্ছে।
ঠিক যেমনটা আমরা বাংলা–হিন্দি বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রেও দেখে থাকি। যদিও উন্নত বিশ্বে চলচ্চিত্রের বাণিজ্যিক–অবাণিজ্যিক শ্রেণিবিভাগ নেই, তবে এতদঅঞ্চলের দেশগুলোতে তা দেখা যায় নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের কারণে হয়তো। কারণ নায়ক যখন হাজার অপরাধ করেও শুধু ‘ভালো আচরণের’ জন্য সাজা মওকুফের চিত্রনাট্যে অভিনয় করতে পারেন, তখন তা যে স্রেফ আপামর দর্শক শ্রেণির মনোতুষ্টির জন্যই সৃষ্টি হয়েছে–সেটি আর মুখ ফুটে বলতে হয় না। তো এহেন ‘বাণিজ্যিক’ ছবির একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ সালমান খান অভিনীত ‘দাবাং’। যেখানে একজন পুলিশ কর্মকর্তা অসাধু উপায়ে সাধু কর্তব্য পালনের কাজ করে যান লাগাতার এবং দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন করেন। গুলি চালাতে তার বাধে না। সিনেমায় এসব দেখে আমোদিত হতে হতে, আমরা কি তবে রুপালি পর্দা ও সত্যিকারের জীবনের মধ্যে পার্থক্য টানতে ভুলে যাচ্ছি? নাকি সবাই হতে চাচ্ছি সিনেমার সেই নায়ক, যে কিনা দুই–আড়াই ঘণ্টাতেই তাবৎ সমস্যা মিটিয়ে ফেলতে পারে যে কোনো উপায়ে।
মানুষের জীবনে একটা সময় থাকে, যখন নাটক–সিনেমা দেখে নায়কের মতো হয়ে ওঠার চল থাকে প্রবলভাবে। সাজপোশাক থেকে শুরু করে কথা বলার স্টাইল–সবকিছুই নায়কোচিত করার চেষ্টা চলে তখন। কিন্তু পরিণত হতে হতে সেসব উবে যাওয়াটাই ভালো। আত্মস্থ হওয়া উচিত যে, সিনেমার নায়ক শুধু পর্দাতেই বর্তমান এবং চাইলেই ‘রবিনহুড পাণ্ডে’ হওয়াটা বাস্তবসম্মত নয়।
রবিনহুড পাণ্ডে তার চেয়ে বরং সিনেমার পর্দাতেই থাক। আর সবাই যদি চুলবুল ওরফে রবিনহুড পাণ্ডে হতে চান, তবে ঢের বিপদও আছে। বাঁকা আঙুলে ঘি তুলে তখন আর তা খাওয়ানোর মতো আপামর ‘সোজা–সরল’ জনসাধারণ পাওয়া যাবে না যে!
আমি দুই মাস আগেই বলেছিলাম, নভেম্বরে পরিস্থিতি খারাপ হবে। আমি সেটা দেশের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লেখার মাধ্যমে তুলে ধরেছিলাম। এবারের ডেঙ্গু পরিস্থিতিটা আগের বছরগুলোর মতো না। অন্যান্য বছরে নভেম্বরের দিকে ডেঙ্গু পরিস্থিতি কমে আসতে শুরু করে।
৬ ঘণ্টা আগেআজ ১৭ নভেম্বর, মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর মৃত্যুদিবস। ১৯৭৬ সালের এ দিনে তিনি এক বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের ইতিহাস পেছনে ফেলে পরলোকগমন করেন। আজীবন সংগ্রামী ভাসানী কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সোচ্চার থাকার পাশাপাশি বাংলাদেশের স্বাধীনতারও ছিলেন প্রথম প্রবক্তা।
৭ ঘণ্টা আগেসকালের আলোয় মনটা অকারণে আনমনা হয়ে যায়। মনের কোণে হঠাৎ বেজে ওঠে চেনা গানের সুর—‘কোন পুরাতন প্রাণের টানে...।’ মন ছুটে যায় সেই ছেলেবেলায়, যখন ঋতুবদল ঘটত গানের সুরেই।
৭ ঘণ্টা আগেজুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশে শেখ হাসিনার দীর্ঘস্থায়ী দুঃশাসনের অবসান হয়েছে। ক্ষমতা পেয়েছে অন্তর্বর্তী এক সরকার, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন অরাজনৈতিক অথচ বিশ্বখ্যাত ব্যক্তি, বাংলাদেশের একমাত্র নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
৭ ঘণ্টা আগে