রবিউল আলম
চারদিকে যখন ভয়, উৎকণ্ঠা—সবকিছুতেই স্থবিরতা, ঠিক সে সময়েই বছর ঘুরে ফের উপস্থিত ২০ অক্টোবর, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। আজকের এ দিনে ১৭ বছরে পা রাখছে দেশের ঐতিহ্যবাহী এ বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে মাত্র ১৬ বছরের যাত্রা হলেও প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে সুদীর্ঘ দেড় শ বছরের সোনালি ইতিহাস। দীর্ঘ এ পথপরিক্রমায় দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের সঙ্গে দেশের এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে শিক্ষা আন্দোলন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ৬ দফা আন্দোলন, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান এবং মহান মুক্তিযোদ্ধাসহ স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রতিটি ধাপে এ প্রতিষ্ঠানের অবদান অনস্বীকার্য।
বর্তমানে নানা রকম সংকটের মধ্যেও দেশের শিক্ষা ও গবেষণায় অবদান রেখে বীরদর্পে দাঁড়িয়ে আছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। ভর্তি পরীক্ষা থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রে দেশের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পছন্দের শীর্ষে উঠে এসেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এখানকার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ দিচ্ছে। জানান দিচ্ছে নিজেদের ভাবনার শক্তির।
১৮৫৮ সালে ব্রাহ্ম স্কুল থেকে যাত্রা করা এ প্রতিষ্ঠান চড়াই-উতরাই পার করে জগন্নাথ কলেজ থেকে ২০০৫ সালের ২০ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত হয়। তবে এত সব ইতিহাস-ঐতিহ্যের মধ্যেও এ বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে হারানোর দীর্ঘ ইতিহাস। কয়েক বছর অন্তর নতুন নতুন মুখ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সব আসন অলংকৃত করলেও প্রকৃত অর্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সংকটের চিত্র, তা একই রূপে বহমান। বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ১৬ বছর পার করলেও এখনো একজন শিক্ষার্থীর জন্যও আবাসনের ব্যবস্থা করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়টি।
এখনো ভাড়া বাসায় দিনাদিপাত করতে হচ্ছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। একই সুযোগ থেকে বঞ্চিত শিক্ষকেরাও। স্বয়ং উপাচার্য থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কোনো ব্যক্তির জন্যও নেই কোনো বাসভবন। এ যেন ভিটামাটিবিহীন এক সাম্রাজ্যের গল্প।
যদিও একসময় জগন্নাথ কলেজের ১২টি ছাত্রাবাস ছিল কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় তার নয়টি ছাত্রাবাসই বেদখল হয়ে যায়। স্থানীয় ক্ষমতাশালী ব্যক্তিরা এ শিক্ষালয়ের এসব ছাত্রাবাস ভেঙে মার্কেটসহ নানা স্থাপনা নির্মাণ করে এখনো নির্বিঘ্নে ব্যবসা করে যাচ্ছেন। হল ফিরে পেতে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন হয়েছে ঠিকই কিন্তু তদন্ত কমিটি, আশ্বাস আর প্রতিশ্রুতির বেড়াজালে আটকে বেদখল হলের গায়ে আর দখলের তকমা জোটেনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ে জায়গা দখল করে মার্কেট নির্মাণে শুধুমাত্র যে প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতারা জড়িত, তাও নয়। সর্বশেষ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তনের স্থান ও শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার জন্য ধূপখোলায় অবস্থিত কেন্দ্রীয় মাঠে মার্কেট নির্মাণের জন্য রাতের আঁধারে খোঁড়াখুঁড়ি করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। হল বেদখল হওয়ার পর বেদখল হয়ে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র কেন্দ্রীয় খেলার মাঠটিও। পুরান ঢাকায় জগন্নাথে বলতে যেটুকু আছে, তা হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত একর ক্যাম্পাস।
তবে কেরানীগঞ্জে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস স্থাপন হলে পুরাতন ক্যাম্পাস একেবারে ছেড়ে দিতে হবে। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তখন সেই জায়গায় কী হবে, তা নিয়ে এখনো স্পষ্ট করে কিছুই জানানো হয়নি। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অন্ততপক্ষে একটি অনুষদ হলেও পুরোনো ক্যাম্পাসে রাখার মাধ্যমে যেন এ প্রতিষ্ঠানটির ১৬৩ বছরের পুরোনো ঐতিহ্য রক্ষা করা হয়, তার দাবি জানিয়ে আসছেন। তবে এ যাত্রায়ও যদি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হোঁচট খায়, তাহলে ধূলিসাৎ হবে বহু বছরের ঐতিহ্য আর গৌরব। একই সঙ্গে ষোলোকলায় পূর্ণ হবে হারানোর গল্প। তবে পুরোনো ক্যাম্পাসে পড়াশোনা সম্পন্ন করা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের জীবনে যেন পরবর্তী প্রজন্মকে মার্কেট দেখিয়ে নিজের বিদ্যাপীঠকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার মতো দুর্দিন না আসে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সেই কামনা থাকবে অবিরাম।
রবিউল আলম: সাংবাদিক ও সভাপতি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি
চারদিকে যখন ভয়, উৎকণ্ঠা—সবকিছুতেই স্থবিরতা, ঠিক সে সময়েই বছর ঘুরে ফের উপস্থিত ২০ অক্টোবর, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। আজকের এ দিনে ১৭ বছরে পা রাখছে দেশের ঐতিহ্যবাহী এ বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে মাত্র ১৬ বছরের যাত্রা হলেও প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে সুদীর্ঘ দেড় শ বছরের সোনালি ইতিহাস। দীর্ঘ এ পথপরিক্রমায় দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের সঙ্গে দেশের এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে শিক্ষা আন্দোলন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ৬ দফা আন্দোলন, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান এবং মহান মুক্তিযোদ্ধাসহ স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রতিটি ধাপে এ প্রতিষ্ঠানের অবদান অনস্বীকার্য।
বর্তমানে নানা রকম সংকটের মধ্যেও দেশের শিক্ষা ও গবেষণায় অবদান রেখে বীরদর্পে দাঁড়িয়ে আছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। ভর্তি পরীক্ষা থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রে দেশের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পছন্দের শীর্ষে উঠে এসেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এখানকার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ দিচ্ছে। জানান দিচ্ছে নিজেদের ভাবনার শক্তির।
১৮৫৮ সালে ব্রাহ্ম স্কুল থেকে যাত্রা করা এ প্রতিষ্ঠান চড়াই-উতরাই পার করে জগন্নাথ কলেজ থেকে ২০০৫ সালের ২০ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত হয়। তবে এত সব ইতিহাস-ঐতিহ্যের মধ্যেও এ বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে হারানোর দীর্ঘ ইতিহাস। কয়েক বছর অন্তর নতুন নতুন মুখ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সব আসন অলংকৃত করলেও প্রকৃত অর্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সংকটের চিত্র, তা একই রূপে বহমান। বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ১৬ বছর পার করলেও এখনো একজন শিক্ষার্থীর জন্যও আবাসনের ব্যবস্থা করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়টি।
এখনো ভাড়া বাসায় দিনাদিপাত করতে হচ্ছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। একই সুযোগ থেকে বঞ্চিত শিক্ষকেরাও। স্বয়ং উপাচার্য থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কোনো ব্যক্তির জন্যও নেই কোনো বাসভবন। এ যেন ভিটামাটিবিহীন এক সাম্রাজ্যের গল্প।
যদিও একসময় জগন্নাথ কলেজের ১২টি ছাত্রাবাস ছিল কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় তার নয়টি ছাত্রাবাসই বেদখল হয়ে যায়। স্থানীয় ক্ষমতাশালী ব্যক্তিরা এ শিক্ষালয়ের এসব ছাত্রাবাস ভেঙে মার্কেটসহ নানা স্থাপনা নির্মাণ করে এখনো নির্বিঘ্নে ব্যবসা করে যাচ্ছেন। হল ফিরে পেতে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন হয়েছে ঠিকই কিন্তু তদন্ত কমিটি, আশ্বাস আর প্রতিশ্রুতির বেড়াজালে আটকে বেদখল হলের গায়ে আর দখলের তকমা জোটেনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ে জায়গা দখল করে মার্কেট নির্মাণে শুধুমাত্র যে প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতারা জড়িত, তাও নয়। সর্বশেষ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তনের স্থান ও শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার জন্য ধূপখোলায় অবস্থিত কেন্দ্রীয় মাঠে মার্কেট নির্মাণের জন্য রাতের আঁধারে খোঁড়াখুঁড়ি করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। হল বেদখল হওয়ার পর বেদখল হয়ে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র কেন্দ্রীয় খেলার মাঠটিও। পুরান ঢাকায় জগন্নাথে বলতে যেটুকু আছে, তা হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত একর ক্যাম্পাস।
তবে কেরানীগঞ্জে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস স্থাপন হলে পুরাতন ক্যাম্পাস একেবারে ছেড়ে দিতে হবে। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তখন সেই জায়গায় কী হবে, তা নিয়ে এখনো স্পষ্ট করে কিছুই জানানো হয়নি। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অন্ততপক্ষে একটি অনুষদ হলেও পুরোনো ক্যাম্পাসে রাখার মাধ্যমে যেন এ প্রতিষ্ঠানটির ১৬৩ বছরের পুরোনো ঐতিহ্য রক্ষা করা হয়, তার দাবি জানিয়ে আসছেন। তবে এ যাত্রায়ও যদি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হোঁচট খায়, তাহলে ধূলিসাৎ হবে বহু বছরের ঐতিহ্য আর গৌরব। একই সঙ্গে ষোলোকলায় পূর্ণ হবে হারানোর গল্প। তবে পুরোনো ক্যাম্পাসে পড়াশোনা সম্পন্ন করা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের জীবনে যেন পরবর্তী প্রজন্মকে মার্কেট দেখিয়ে নিজের বিদ্যাপীঠকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার মতো দুর্দিন না আসে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সেই কামনা থাকবে অবিরাম।
রবিউল আলম: সাংবাদিক ও সভাপতি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি
শেখ হাসিনার পতিত স্বৈরাচারী সরকার সাড়ে ১৫ বছর ধরে এ দেশের জনগণের মাথাপিছু জিডিপি প্রশংসনীয় গতিতে বাড়ার গল্প সাজিয়ে শাসন করেছে। মাথাপিছু জিডিপি প্রকৃতপক্ষে একটি মারাত্মক ত্রুটিপূর্ণ কনসেপ্ট। এটার সবচেয়ে মারাত্মক সীমাবদ্ধতা হলো, এটা একটা গড়, যেটা স্বল্পসংখ্যক ধনী এবং বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ নিম্ন-মধ্যবিত্ত
২ ঘণ্টা আগেআমাদের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস পৃথিবীকে জলবায়ু-বিপর্যয় থেকে রক্ষার জন্য ‘শূন্য বর্জ্য ও শূন্য কার্বন’-এর ওপর ভিত্তি করে একটি নতুন জীবনধারা গড়ে তোলা প্রয়োজন বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন।
২ ঘণ্টা আগেআমেরিকার ১৩২ বছরের পুরোনো রেকর্ড ভেঙে একবার হেরে যাওয়ার পর দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রথম মেয়াদে ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ট্রাম্প।
২ ঘণ্টা আগেজগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বড্ড কষ্ট বুকে নিয়েই ‘সব শালারা বাটপার’ স্লোগানটি দিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরেই তাঁরা দ্বিতীয় ক্যাম্পাস পাচ্ছেন না। ঠিকাদারেরা ভেলকিবাজি করছেন।ক্যাম্পাসের জন্য জমিও অধিগ্রহণ করা হয়নি।
২ ঘণ্টা আগে