বিরস
ভারতের মতো বিশাল দেশের কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে প্রণব মুখার্জি কয়েক দশক ধরে দাপটের সঙ্গেই নিজের অস্তিত্ব বা উপস্থিতি জানান দিয়ে গেছেন। ইন্দিরা গান্ধীর বিশ্বস্ত ছিলেন। রাজীব গান্ধীর সঙ্গে কোনো কারণে দূরত্ব তৈরি হলেও তারপর থেকে প্রণব মুখার্জি ছিলেন কংগ্রেসের একজন অন্যতম নীতিনির্ধারক। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। একপর্যায়ে ভারতের রাষ্ট্রপতির পদও অলংকৃত করেছেন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের একজন অকৃত্রিম বন্ধু।
প্রণব মুখার্জির বাবাও কংগ্রেস করতেন। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে তিনি জেল-জুলুমও সহ্য করেছেন। নিজের ছোটবেলার স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে তিনি ‘আমার দেখা রাজনীতি: ইন্দিরাকাল’ আত্মজীবনী গ্রন্থে লিখেছেন: ‘স্বাধীনতার আগে বাবা কংগ্রেসের প্রায় সব বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। আমার সেই সময়ের একটি আশ্চর্য ঘটনা মনে আছে। মা অনেক পরে যেসব ঘটনার কথা বলতেন, তার একটি। একদিন একদল পুলিশ আমাদের সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করবে বলে এসে হাজির। আমাদের আগে থেকেই সাবধান করা হয়। ফলে আমরা আমাদের সব গরু-ছাগল আর গোলার ফসল গ্রামের নানা মানুষের বাড়িতে সরিয়ে দিয়েছিলাম। বাবার সব কাগজপত্রও একইভাবে প্রতিবেশীদের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল, যাতে সেসব রক্ষা পায়। বাজেয়াপ্ত করার মতন প্রায় কিচ্ছু না পেয়ে পুলিশের এক সাব-ইন্সপেক্টর আমাকে শুধোলেন: তোমাদের বাড়িতে গরু ছিল না? আমি দেখেছি, সেসব গেল কোথায়?
অম্লান বদনে আমি জবাব দিলাম, ‘গরু? আমরা খেয়ে ফেলেছি।’
সাব-ইন্সপেক্টর তো তাজ্জব, ‘কী বলছ? তোমরা হিন্দু ব্রাহ্মণ, আর গরু কিনা খেয়ে ফেলেছ?’
আমি, সবেমাত্র আট বছরে তখন, বললাম, ‘আসলে বাবা তো কত দিন ধরে জেলে, তাই আমরা গরুগুলো বিক্রি করে সেই টাকায় নিজেরা পেট চালিয়েছি।’
আট বছর বয়সী বালকের এই বাকচাতুর্য থেকেই তাঁর ভবিষ্যৎ রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠার বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছিল বলা যায়। উঠন্তি মুলো পত্তনেই চেনা যায়।
খ. একবার একটি বাম রাজনৈতিক দলের একজন জাতীয় নেতা সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী প্রচার করতে থাকেন যে, বাম নেতা গরিবের পক্ষে রাজনীতি করেন, অথচ ঢাকায় বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন। আলিশান বাড়িতে থাকেন। দামি গাড়িতে চড়েন ইত্যাদি ইত্যাদি। এসব প্রচারণার জবাবে বাম নেতার কর্মীরা বলেন, তাদের নেতা ছাত্রজীবন থেকেই ত্যাগের রাজনীতি করেছেন। জেল খেটেছেন, বছরের পর বছর আত্মগোপনে থেকেছেন। গরিব মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করছেন। তাঁর ঢাকায় নিজস্ব কোনো বাড়ি নেই। দামি গাড়ি থাকার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। তিনি সারা জীবন নিজের জন্য কিছুই করেননি।
এবার প্রতিপক্ষ বক্তব্য বদলে দিয়ে প্রচার করতে থাকে: যিনি বছরের পর বছর রাজনীতি করে নিজের জন্য কিছু করতে পারেননি, তিনি ভোটে জিতে আপনাদের জন্য কিছু করবেন, সেটা কীভাবে বিশ্বাস করা যায়?
বলা নিষ্প্রয়োজন, নির্বাচনে বাম নেতা পরাজিত হয়েছিলেন। ভোটে ত্যাগী নেতার চেয়ে মানুষের পছন্দের তালিকায় ওপরে থাকেন ভোগীরাই।
গ. সাহিত্যিক বলাই চাঁদ মুখোপাধ্যায় বনফুল নামেও যিনি পরিচিত, একবার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে দেখা করতে শান্তিনিকেতনে এসেছেন। বনফুল রবীন্দ্রনাথের ঘরে ঢুকে দেখলেন কবি একটি বড় টেবিলের ওপর ঝুঁকে গভীর মনোযোগ দিয়ে লিখছেন। এই অবস্থায় ডেকে কবিকে বিরক্ত করা উচিত হবে না মনে করে বনফুল চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকলেন। একসময় মুখ তুলে বনফুলকে দেখে কবি বললেন, ‘কখন এলে? বলো কী খবর?’
বনফুল বিনীতভাবে বললেন, ‘গুরুদেব, অত ঝুঁকে লিখতে আপনার কষ্ট হয় না? আজকাল তোকত রকম চেয়ার বেরিয়েছে। তাতে বসে আরাম করে
লেখা যায়।’
রবীন্দ্রনাথ মুচকি হেসে বললেন, ‘সব রকম চেয়ারই আছে আমার। কিন্তু ঝুঁকে না লিখলে লেখা যে এখন বের হয় না। আসলে কুঁজোর জল কমে গেলে তো উপুড় করেই গ্লাস ভরতে হয়!’
ভারতের মতো বিশাল দেশের কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে প্রণব মুখার্জি কয়েক দশক ধরে দাপটের সঙ্গেই নিজের অস্তিত্ব বা উপস্থিতি জানান দিয়ে গেছেন। ইন্দিরা গান্ধীর বিশ্বস্ত ছিলেন। রাজীব গান্ধীর সঙ্গে কোনো কারণে দূরত্ব তৈরি হলেও তারপর থেকে প্রণব মুখার্জি ছিলেন কংগ্রেসের একজন অন্যতম নীতিনির্ধারক। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। একপর্যায়ে ভারতের রাষ্ট্রপতির পদও অলংকৃত করেছেন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের একজন অকৃত্রিম বন্ধু।
প্রণব মুখার্জির বাবাও কংগ্রেস করতেন। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে তিনি জেল-জুলুমও সহ্য করেছেন। নিজের ছোটবেলার স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে তিনি ‘আমার দেখা রাজনীতি: ইন্দিরাকাল’ আত্মজীবনী গ্রন্থে লিখেছেন: ‘স্বাধীনতার আগে বাবা কংগ্রেসের প্রায় সব বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। আমার সেই সময়ের একটি আশ্চর্য ঘটনা মনে আছে। মা অনেক পরে যেসব ঘটনার কথা বলতেন, তার একটি। একদিন একদল পুলিশ আমাদের সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করবে বলে এসে হাজির। আমাদের আগে থেকেই সাবধান করা হয়। ফলে আমরা আমাদের সব গরু-ছাগল আর গোলার ফসল গ্রামের নানা মানুষের বাড়িতে সরিয়ে দিয়েছিলাম। বাবার সব কাগজপত্রও একইভাবে প্রতিবেশীদের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল, যাতে সেসব রক্ষা পায়। বাজেয়াপ্ত করার মতন প্রায় কিচ্ছু না পেয়ে পুলিশের এক সাব-ইন্সপেক্টর আমাকে শুধোলেন: তোমাদের বাড়িতে গরু ছিল না? আমি দেখেছি, সেসব গেল কোথায়?
অম্লান বদনে আমি জবাব দিলাম, ‘গরু? আমরা খেয়ে ফেলেছি।’
সাব-ইন্সপেক্টর তো তাজ্জব, ‘কী বলছ? তোমরা হিন্দু ব্রাহ্মণ, আর গরু কিনা খেয়ে ফেলেছ?’
আমি, সবেমাত্র আট বছরে তখন, বললাম, ‘আসলে বাবা তো কত দিন ধরে জেলে, তাই আমরা গরুগুলো বিক্রি করে সেই টাকায় নিজেরা পেট চালিয়েছি।’
আট বছর বয়সী বালকের এই বাকচাতুর্য থেকেই তাঁর ভবিষ্যৎ রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠার বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছিল বলা যায়। উঠন্তি মুলো পত্তনেই চেনা যায়।
খ. একবার একটি বাম রাজনৈতিক দলের একজন জাতীয় নেতা সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী প্রচার করতে থাকেন যে, বাম নেতা গরিবের পক্ষে রাজনীতি করেন, অথচ ঢাকায় বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন। আলিশান বাড়িতে থাকেন। দামি গাড়িতে চড়েন ইত্যাদি ইত্যাদি। এসব প্রচারণার জবাবে বাম নেতার কর্মীরা বলেন, তাদের নেতা ছাত্রজীবন থেকেই ত্যাগের রাজনীতি করেছেন। জেল খেটেছেন, বছরের পর বছর আত্মগোপনে থেকেছেন। গরিব মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করছেন। তাঁর ঢাকায় নিজস্ব কোনো বাড়ি নেই। দামি গাড়ি থাকার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। তিনি সারা জীবন নিজের জন্য কিছুই করেননি।
এবার প্রতিপক্ষ বক্তব্য বদলে দিয়ে প্রচার করতে থাকে: যিনি বছরের পর বছর রাজনীতি করে নিজের জন্য কিছু করতে পারেননি, তিনি ভোটে জিতে আপনাদের জন্য কিছু করবেন, সেটা কীভাবে বিশ্বাস করা যায়?
বলা নিষ্প্রয়োজন, নির্বাচনে বাম নেতা পরাজিত হয়েছিলেন। ভোটে ত্যাগী নেতার চেয়ে মানুষের পছন্দের তালিকায় ওপরে থাকেন ভোগীরাই।
গ. সাহিত্যিক বলাই চাঁদ মুখোপাধ্যায় বনফুল নামেও যিনি পরিচিত, একবার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে দেখা করতে শান্তিনিকেতনে এসেছেন। বনফুল রবীন্দ্রনাথের ঘরে ঢুকে দেখলেন কবি একটি বড় টেবিলের ওপর ঝুঁকে গভীর মনোযোগ দিয়ে লিখছেন। এই অবস্থায় ডেকে কবিকে বিরক্ত করা উচিত হবে না মনে করে বনফুল চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকলেন। একসময় মুখ তুলে বনফুলকে দেখে কবি বললেন, ‘কখন এলে? বলো কী খবর?’
বনফুল বিনীতভাবে বললেন, ‘গুরুদেব, অত ঝুঁকে লিখতে আপনার কষ্ট হয় না? আজকাল তোকত রকম চেয়ার বেরিয়েছে। তাতে বসে আরাম করে
লেখা যায়।’
রবীন্দ্রনাথ মুচকি হেসে বললেন, ‘সব রকম চেয়ারই আছে আমার। কিন্তু ঝুঁকে না লিখলে লেখা যে এখন বের হয় না। আসলে কুঁজোর জল কমে গেলে তো উপুড় করেই গ্লাস ভরতে হয়!’
দলীয় রাজনৈতিক সরকারের সঙ্গে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের তুলনা হতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন পাশে রেখেই ইউনূস সরকারের কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে এর ১০০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার সময়টায়। তবে সাধারণ মানুষ মনে হয় প্রতিদিনই তার জীবনে সরকারের ভূমিকা বিচার করে দেখছে।
৮ ঘণ্টা আগেশেখ হাসিনা সরকারের পতনের ১০০ দিন পার হয়ে গেছে। ১০০ দিনে অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা কিছু যে হয়নি, তা নয়। তবে দেশ পরিচালনার দায়িত্বে যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্যে অস্থিরতার লক্ষণ অস্পষ্ট নয়। এর মধ্যেই তিন দফায় উপদেষ্টার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
৮ ঘণ্টা আগেবাংলা ভাষায় অতিপরিচিত একটি শব্দবন্ধ হলো ‘খোলনলচে’। যাপিত জীবনে কমবেশি আমরা সবাই শব্দবন্ধটি প্রয়োগ করেছি। বাংলা বাগধারায় আমরা পড়েছি ‘খোলনলচে পালটানো’। বাংলা অভিধানে খোল শব্দের একাধিক অর্থ রয়েছে।
৮ ঘণ্টা আগেঅফিসে যাতায়াতের সময় স্টাফ বাসে পরিচয়ের সূত্রে ফারজানা আক্তার আজিমপুরে নিজের বাসায় সাবলেট দিয়েছিলেন ফাতেমা আক্তার শাপলা নামের এক নারীকে। কিন্তু ফাতেমা যে একটি প্রতারক চক্রের সদস্য, সেটা তাঁর জানা ছিল না।
৮ ঘণ্টা আগে