ড. এ এন এম মাসউদুর রহমান
জেনে রাখো, কোনো মুসলিম যদি অমুসলিম নাগরিকদের ওপর নির্যাতন ও নিপীড়ন করে, কোনো অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ করে, তার কোনো ধন-সম্পদ জোরপূর্বক কেড়ে নেয়, তবে কিয়ামতের দিন বিচারের কাঠগড়ায় আমি তার বিপক্ষে অমুসলিমদের পক্ষে অবস্থান করব।
ইসলাম শান্তি ও সাম্যের ধর্ম। মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন সে ধর্মের প্রবর্তক। যার সমগ্র জীবন বিশ্ববাসীর জন্য অনুকরণীয় আদর্শ। আল্লাহ বলেন, ‘হে আমার রাসুল, আমি আপনাকে বিশ্ববাসীর জন্য রহমতস্বরূপ প্রেরণ করেছি।’ (সুরা আম্বিয়া)। তিনি নির্দিষ্ট কোনো জাতির জন্য প্রেরিত হননি। তিনি ছিলেন সমগ্র জগতের রাসুল ও মহা মানব। তাঁর ধর্ম ইসলাম হলেও সব ধর্মের প্রতি ছিলেন উদার ও শ্রদ্ধাশীল। মদিনা সনদ তার উত্তম দৃষ্টান্ত। মদিনা হিজরতের পর মহানবী (সা.) মদিনায় বসবাসরত সব ধর্মের অনুসারীদের সমন্বয়ে এ সনদটি তৈরি করেন। উল্লেখ্য, মুসলমান ছাড়া সে সময় মদিনায় বাস করত ইহুদি, পৌত্তলিক, মূর্তিপূজক ও অগ্নিপূজক। ৬২২-৬৩০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত মহানবী (সা.) এ সনদের মাধ্যমে মদিনা রাষ্ট্র পরিচালনা করেন। দীর্ঘ আট বছরের ইতিহাসে অন্য ধর্মের একটি লোকও এ অভিযোগ করেনি যে সে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। বরং ইসলামের মর্মবাণীর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে অনেক লোক ইসলাম গ্রহণ করেছে। কেননা, ষষ্ঠ হিজরিতে যখন মহানবী (সা.) মক্কায় হজব্রত পালন করতে এসে মক্কার কাফিরদের দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয়ে মদিনা প্রত্যাবর্তন করেন, তখন তাঁর সঙ্গে ছিলেন এক হাজার ৪০০ সাহাবি। অপরদিকে অষ্টম হিজরিতে মহানবী (সা.) ১০ হাজার সাহাবি নিয়ে মক্কা বিজয় করেন এবং কাফিরদের বিনা বাধায় মক্কা নগরীতে প্রবেশ করেন। মহানবী (সা.) অমুসলিমদের সঙ্গে কেমন আচরণ করেছেন তার কয়েকটি উদাহরণ উপস্থাপন করা হলো।
মহানবী (সা.) অমুসলিম প্রত্যেক নাগরিককে তাদের ন্যায্য অধিকার প্রদান করেছেন এবং সাহাবিদের এ নির্দেশনা দেন। তিনি তাদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘জেনে রাখো, কোনো মুসলিম যদি অমুসলিম নাগরিকদের ওপর নির্যাতন ও নিপীড়ন করে, কোনো অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ করে, তার কোনো ধন-সম্পদ জোরপূর্বক কেড়ে নেয়, তবে কিয়ামতের দিন বিচারের কাঠগড়ায় আমি তার বিপক্ষে অমুসলিমদের পক্ষে অবস্থান করব। (আবু দাউদ)। তিনি অন্যত্র বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো অমুসলিম নাগরিককে হত্যা করবে, সে জান্নাতের কোনো গন্ধও পাবে না। অথচ, জান্নাতের সুগন্ধ চল্লিশ বছরের দূরত্ব থেকে পাওয়া যাবে।’ (বুখারি)।
শুধু তা-ই নয়, মহানবী (সা.) অমুসলিমদের সঙ্গে ওঠাবসা করেছেন এবং কোনো কোনো অমুসলিমকে তিনি মসজিদে বসার অনুমতি প্রদান করেছেন। যেমন সাকিফ গোত্রের প্রতিনিধি মহানবী (সা.)-এর দরবারে উপস্থিত হয়ে মসজিদের শেষ গম্বুজের কাছে অবস্থান করে। অতঃপর নামাজের সময় হলে সাহাবিদের মধ্য থেকে একজন বললেন, হে আল্লাহ! নামাজের সময় হয়েছে। এরা একদল অমুসলিম, যারা মসজিদে আছে (ফলে মসজিদ নাপাক হতে পারে)। তখন মহানবী (সা.) বললেন, ‘অমুসলিমদের কারণে আল্লাহর জমিন নাপাক হয় না।’ (ইবন আবি শায়বা)।
মহানবী (সা.) অমুসলিমদের বোঝা বহন করতেন। যেমন এক বৃদ্ধা তাঁর বোঝা বহন করতে না পেরে বসে ছিলেন। মহানবী (স.) বললেন, ‘আপনি কোথায় যাবেন?’ বৃদ্ধা বললেন, ‘শুনেছি, আমাদের দেশে মুহাম্মদ নামে এক যুবক এসেছে। সে আমাদের ইসলাম গ্রহণ করতে বাধ্য করাচ্ছে। আমি তার ভয়ে পাহাড়ের অপর প্রান্তে যেতে চাই।’ মহানবী (সা.) তাঁকে তাঁর বোঝাসহ গন্তব্যে পৌঁছে দেন। ফেরার সময় বৃদ্ধা বললেন, ‘তুমি এত ভালো মানুষ! তুমি কে বাবা?’ তখন তিনি বললেন, ‘আপনি যার ভয়ে স্বীয় ভূমি ত্যাগ করেছেন, আমি সেই মুহাম্মদ।’ তখন বৃদ্ধার ভুল ভেঙে গেল এবং ইসলাম গ্রহণ করলেন।
অমুসলিমরা অসুস্থ হলে মহানবী (সা.) তাদের দেখতে যেতেন এবং তাঁদের খোঁজখবর নিতেন। আনাস (রা.) বলেন, এক ইহুদি দাস নবী করিম (সা.)-এর খেদমত করত। যখন সে অসুস্থ হলো তখন মহানবী (সা.) তাকে দেখতে গেলেন। তার মাথার দিকে বসে তার খোঁজখবর নিয়ে তাকে ইসলামের দাওয়াত দিলেন। তখন সে দাস তার পিতার দিকে দেখল। পিতা বললেন, তুমি মুহাম্মদ (সা.)-কে অনুসরণ করো। ফলে সে ইসলাম গ্রহণ করল। তখন মহানবী (সা.) এ কথা বললেন, আল্লাহর শুকরিয়া যিনি তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিলেন। (বুখারি)। অমুসলিমদের প্রতি মহানবী (সা.) জীবিত অবস্থায় যেমন হক আদায় করেছেন, তেমনি মৃত্যুর পরেও হক আদায় করেছেন।
হাদিসে বর্ণিত আছে, একদা মহানবী (সা.)-এর পাশ দিয়ে এক ইহুদির লাশ নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি দাঁড়িয়ে যান। সঙ্গে থাকা সাহাবি বললেন, আপনি কেন দাঁড়ালেন, এটা তো ইহুদির লাশ। তখন তিনি বললেন, এটা কি মানব নয়? (বুখারি)।
এ ছাড়াও মহানবী (সা.) অমুসলিমদের জন্য দান-সাদকা করতেন এবং তাদের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন করতেন। পিতা-মাতা অমুসলিম হলে তাদের সঙ্গে সদাচরণের নির্দেশ এসেছে বারংবার। আল্লাহ বলেন, ‘আর যদি তারা তোমাকে আমার সঙ্গে শিরক করতে জোর চেষ্টা করে যে বিষয়ে তোমার কোনো জ্ঞান নেই, তখন তাদের আনুগত্য করবে না এবং দুনিয়ায় তাদের সঙ্গে বসবাস করবে সৎভাবে। (সুরা লুকমান)। আসমা (রা.) বলেন, আমার মা আমার কাছে এলেন তখন তিনি মুশরিক ছিলেন। তখন আমি রাসুল (স.)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, আমার মা এসেছেন, তিনি অমুসলিম। আমি কি তার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখব? তিনি বললেন, অবশ্যই, তার সঙ্গে সদাচরণ করো এবং বন্ধন অটুট রাখো। (বুখারি)।
মুসলমানরা যেন কাফিরদের মূর্তিগুলোকে গালি না দেয় সে ব্যাপারে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। কারণ, তাদের গালি দিলে তারাও আল্লাহকে গালি দেবে। আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমরা তাদের গালমন্দ কোরো না, আল্লাহ ব্যতীত যাদেরকে তারা ডাকে, ফলে তারা গালমন্দ করবে আল্লাহকে, শত্রুতা পোষণ করে অজ্ঞতাবশত। এভাবেই আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্য তাদের কর্ম শোভিত করে দিয়েছি। তারপর তাদের রবের নিকট তাদের প্রত্যাবর্তন।’ (সুরা আনয়াম)। মহানবী (সা.) ইসলামকে রক্ষার জন্য কাফিরদের সঙ্গে যুদ্ধ করলেও কখনো তাদের ঘরবাড়ি ধ্বংস করেননি। বরং যুদ্ধ-প্রাক্কালে তিনি যোদ্ধাদের উদ্দেশে বলতেন, ‘তোমরা শত্রুবাহিনীর ঘরবাড়ি ধ্বংস করবে না, গাছপালা কর্তন করবে না, নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের নিকটবর্তী হবে না।’
ইসলাম মানবতার ধর্ম। সবাইকে মানবিক করার জন্যই আল্লাহ তাঁর নবীকে পাঠিয়েছেন। তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন অনুকরণীয় সৌহার্দ্যপূর্ণ সমাজব্যবস্থা। আমরা তাঁর উম্মত। সাম্প্রদায়িক চেতনা ভুলে গিয়ে নবীর আদর্শ বাস্তবায়ন করা এবং মুসলিম-অমুসলিম ভাই ভাই হয়ে সমাজে বাস করা একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
জেনে রাখো, কোনো মুসলিম যদি অমুসলিম নাগরিকদের ওপর নির্যাতন ও নিপীড়ন করে, কোনো অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ করে, তার কোনো ধন-সম্পদ জোরপূর্বক কেড়ে নেয়, তবে কিয়ামতের দিন বিচারের কাঠগড়ায় আমি তার বিপক্ষে অমুসলিমদের পক্ষে অবস্থান করব।
ইসলাম শান্তি ও সাম্যের ধর্ম। মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন সে ধর্মের প্রবর্তক। যার সমগ্র জীবন বিশ্ববাসীর জন্য অনুকরণীয় আদর্শ। আল্লাহ বলেন, ‘হে আমার রাসুল, আমি আপনাকে বিশ্ববাসীর জন্য রহমতস্বরূপ প্রেরণ করেছি।’ (সুরা আম্বিয়া)। তিনি নির্দিষ্ট কোনো জাতির জন্য প্রেরিত হননি। তিনি ছিলেন সমগ্র জগতের রাসুল ও মহা মানব। তাঁর ধর্ম ইসলাম হলেও সব ধর্মের প্রতি ছিলেন উদার ও শ্রদ্ধাশীল। মদিনা সনদ তার উত্তম দৃষ্টান্ত। মদিনা হিজরতের পর মহানবী (সা.) মদিনায় বসবাসরত সব ধর্মের অনুসারীদের সমন্বয়ে এ সনদটি তৈরি করেন। উল্লেখ্য, মুসলমান ছাড়া সে সময় মদিনায় বাস করত ইহুদি, পৌত্তলিক, মূর্তিপূজক ও অগ্নিপূজক। ৬২২-৬৩০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত মহানবী (সা.) এ সনদের মাধ্যমে মদিনা রাষ্ট্র পরিচালনা করেন। দীর্ঘ আট বছরের ইতিহাসে অন্য ধর্মের একটি লোকও এ অভিযোগ করেনি যে সে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। বরং ইসলামের মর্মবাণীর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে অনেক লোক ইসলাম গ্রহণ করেছে। কেননা, ষষ্ঠ হিজরিতে যখন মহানবী (সা.) মক্কায় হজব্রত পালন করতে এসে মক্কার কাফিরদের দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয়ে মদিনা প্রত্যাবর্তন করেন, তখন তাঁর সঙ্গে ছিলেন এক হাজার ৪০০ সাহাবি। অপরদিকে অষ্টম হিজরিতে মহানবী (সা.) ১০ হাজার সাহাবি নিয়ে মক্কা বিজয় করেন এবং কাফিরদের বিনা বাধায় মক্কা নগরীতে প্রবেশ করেন। মহানবী (সা.) অমুসলিমদের সঙ্গে কেমন আচরণ করেছেন তার কয়েকটি উদাহরণ উপস্থাপন করা হলো।
মহানবী (সা.) অমুসলিম প্রত্যেক নাগরিককে তাদের ন্যায্য অধিকার প্রদান করেছেন এবং সাহাবিদের এ নির্দেশনা দেন। তিনি তাদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘জেনে রাখো, কোনো মুসলিম যদি অমুসলিম নাগরিকদের ওপর নির্যাতন ও নিপীড়ন করে, কোনো অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ করে, তার কোনো ধন-সম্পদ জোরপূর্বক কেড়ে নেয়, তবে কিয়ামতের দিন বিচারের কাঠগড়ায় আমি তার বিপক্ষে অমুসলিমদের পক্ষে অবস্থান করব। (আবু দাউদ)। তিনি অন্যত্র বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো অমুসলিম নাগরিককে হত্যা করবে, সে জান্নাতের কোনো গন্ধও পাবে না। অথচ, জান্নাতের সুগন্ধ চল্লিশ বছরের দূরত্ব থেকে পাওয়া যাবে।’ (বুখারি)।
শুধু তা-ই নয়, মহানবী (সা.) অমুসলিমদের সঙ্গে ওঠাবসা করেছেন এবং কোনো কোনো অমুসলিমকে তিনি মসজিদে বসার অনুমতি প্রদান করেছেন। যেমন সাকিফ গোত্রের প্রতিনিধি মহানবী (সা.)-এর দরবারে উপস্থিত হয়ে মসজিদের শেষ গম্বুজের কাছে অবস্থান করে। অতঃপর নামাজের সময় হলে সাহাবিদের মধ্য থেকে একজন বললেন, হে আল্লাহ! নামাজের সময় হয়েছে। এরা একদল অমুসলিম, যারা মসজিদে আছে (ফলে মসজিদ নাপাক হতে পারে)। তখন মহানবী (সা.) বললেন, ‘অমুসলিমদের কারণে আল্লাহর জমিন নাপাক হয় না।’ (ইবন আবি শায়বা)।
মহানবী (সা.) অমুসলিমদের বোঝা বহন করতেন। যেমন এক বৃদ্ধা তাঁর বোঝা বহন করতে না পেরে বসে ছিলেন। মহানবী (স.) বললেন, ‘আপনি কোথায় যাবেন?’ বৃদ্ধা বললেন, ‘শুনেছি, আমাদের দেশে মুহাম্মদ নামে এক যুবক এসেছে। সে আমাদের ইসলাম গ্রহণ করতে বাধ্য করাচ্ছে। আমি তার ভয়ে পাহাড়ের অপর প্রান্তে যেতে চাই।’ মহানবী (সা.) তাঁকে তাঁর বোঝাসহ গন্তব্যে পৌঁছে দেন। ফেরার সময় বৃদ্ধা বললেন, ‘তুমি এত ভালো মানুষ! তুমি কে বাবা?’ তখন তিনি বললেন, ‘আপনি যার ভয়ে স্বীয় ভূমি ত্যাগ করেছেন, আমি সেই মুহাম্মদ।’ তখন বৃদ্ধার ভুল ভেঙে গেল এবং ইসলাম গ্রহণ করলেন।
অমুসলিমরা অসুস্থ হলে মহানবী (সা.) তাদের দেখতে যেতেন এবং তাঁদের খোঁজখবর নিতেন। আনাস (রা.) বলেন, এক ইহুদি দাস নবী করিম (সা.)-এর খেদমত করত। যখন সে অসুস্থ হলো তখন মহানবী (সা.) তাকে দেখতে গেলেন। তার মাথার দিকে বসে তার খোঁজখবর নিয়ে তাকে ইসলামের দাওয়াত দিলেন। তখন সে দাস তার পিতার দিকে দেখল। পিতা বললেন, তুমি মুহাম্মদ (সা.)-কে অনুসরণ করো। ফলে সে ইসলাম গ্রহণ করল। তখন মহানবী (সা.) এ কথা বললেন, আল্লাহর শুকরিয়া যিনি তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিলেন। (বুখারি)। অমুসলিমদের প্রতি মহানবী (সা.) জীবিত অবস্থায় যেমন হক আদায় করেছেন, তেমনি মৃত্যুর পরেও হক আদায় করেছেন।
হাদিসে বর্ণিত আছে, একদা মহানবী (সা.)-এর পাশ দিয়ে এক ইহুদির লাশ নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি দাঁড়িয়ে যান। সঙ্গে থাকা সাহাবি বললেন, আপনি কেন দাঁড়ালেন, এটা তো ইহুদির লাশ। তখন তিনি বললেন, এটা কি মানব নয়? (বুখারি)।
এ ছাড়াও মহানবী (সা.) অমুসলিমদের জন্য দান-সাদকা করতেন এবং তাদের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন করতেন। পিতা-মাতা অমুসলিম হলে তাদের সঙ্গে সদাচরণের নির্দেশ এসেছে বারংবার। আল্লাহ বলেন, ‘আর যদি তারা তোমাকে আমার সঙ্গে শিরক করতে জোর চেষ্টা করে যে বিষয়ে তোমার কোনো জ্ঞান নেই, তখন তাদের আনুগত্য করবে না এবং দুনিয়ায় তাদের সঙ্গে বসবাস করবে সৎভাবে। (সুরা লুকমান)। আসমা (রা.) বলেন, আমার মা আমার কাছে এলেন তখন তিনি মুশরিক ছিলেন। তখন আমি রাসুল (স.)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, আমার মা এসেছেন, তিনি অমুসলিম। আমি কি তার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখব? তিনি বললেন, অবশ্যই, তার সঙ্গে সদাচরণ করো এবং বন্ধন অটুট রাখো। (বুখারি)।
মুসলমানরা যেন কাফিরদের মূর্তিগুলোকে গালি না দেয় সে ব্যাপারে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। কারণ, তাদের গালি দিলে তারাও আল্লাহকে গালি দেবে। আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমরা তাদের গালমন্দ কোরো না, আল্লাহ ব্যতীত যাদেরকে তারা ডাকে, ফলে তারা গালমন্দ করবে আল্লাহকে, শত্রুতা পোষণ করে অজ্ঞতাবশত। এভাবেই আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্য তাদের কর্ম শোভিত করে দিয়েছি। তারপর তাদের রবের নিকট তাদের প্রত্যাবর্তন।’ (সুরা আনয়াম)। মহানবী (সা.) ইসলামকে রক্ষার জন্য কাফিরদের সঙ্গে যুদ্ধ করলেও কখনো তাদের ঘরবাড়ি ধ্বংস করেননি। বরং যুদ্ধ-প্রাক্কালে তিনি যোদ্ধাদের উদ্দেশে বলতেন, ‘তোমরা শত্রুবাহিনীর ঘরবাড়ি ধ্বংস করবে না, গাছপালা কর্তন করবে না, নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের নিকটবর্তী হবে না।’
ইসলাম মানবতার ধর্ম। সবাইকে মানবিক করার জন্যই আল্লাহ তাঁর নবীকে পাঠিয়েছেন। তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন অনুকরণীয় সৌহার্দ্যপূর্ণ সমাজব্যবস্থা। আমরা তাঁর উম্মত। সাম্প্রদায়িক চেতনা ভুলে গিয়ে নবীর আদর্শ বাস্তবায়ন করা এবং মুসলিম-অমুসলিম ভাই ভাই হয়ে সমাজে বাস করা একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
আমি দুই মাস আগেই বলেছিলাম, নভেম্বরে পরিস্থিতি খারাপ হবে। আমি সেটা দেশের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লেখার মাধ্যমে তুলে ধরেছিলাম। এবারের ডেঙ্গু পরিস্থিতিটা আগের বছরগুলোর মতো না। অন্যান্য বছরে নভেম্বরের দিকে ডেঙ্গু পরিস্থিতি কমে আসতে শুরু করে।
১৬ ঘণ্টা আগেআজ ১৭ নভেম্বর, মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর মৃত্যুদিবস। ১৯৭৬ সালের এ দিনে তিনি এক বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের ইতিহাস পেছনে ফেলে পরলোকগমন করেন। আজীবন সংগ্রামী ভাসানী কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সোচ্চার থাকার পাশাপাশি বাংলাদেশের স্বাধীনতারও ছিলেন প্রথম প্রবক্তা।
১৬ ঘণ্টা আগেসকালের আলোয় মনটা অকারণে আনমনা হয়ে যায়। মনের কোণে হঠাৎ বেজে ওঠে চেনা গানের সুর—‘কোন পুরাতন প্রাণের টানে...।’ মন ছুটে যায় সেই ছেলেবেলায়, যখন ঋতুবদল ঘটত গানের সুরেই।
১৬ ঘণ্টা আগেজুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশে শেখ হাসিনার দীর্ঘস্থায়ী দুঃশাসনের অবসান হয়েছে। ক্ষমতা পেয়েছে অন্তর্বর্তী এক সরকার, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন অরাজনৈতিক অথচ বিশ্বখ্যাত ব্যক্তি, বাংলাদেশের একমাত্র নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
১৬ ঘণ্টা আগে