ড. এ এন এম মাসউদুর রহমান
একজন দায়িত্বশীল ও প্রকৃত ইমানদার ব্যক্তির কাজ হলো, প্রাপ্ত কোনো সংবাদ সম্পর্কে যাচাই-বাছাই করে তার সত্যতা নিশ্চিত করা এবং তা অন্যের জন্য কল্যাণকর হলে সমাজে প্রচার করা।
মানুষ সামাজিক জীব হওয়ায় একে অপরের সঙ্গে মনের ভাব আদান-প্রদান করে এবং বিভিন্ন সংবাদ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রেরণ করে। প্রেরিত ও প্রচারিত সংবাদ যা-ই হোক না কেন, যিনি সংবাদ শোনেন অথবা গ্রহণ করেন, তাঁর জন্য প্রাপ্ত সংবাদটি যাচাই-বাছাই করে বিশ্বাস করা ও প্রচার করা আবশ্যক। কারণ, সংবাদটি যদি মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন হয়ে থাকে, তবে প্রচারকারীও মিথ্যাবাদী হওয়ার আশঙ্কা থাকে। মিথ্যা সংবাদ প্রচারিত হওয়ার কারণে যেমন তথ্যবিভ্রাট হয়ে থাকে, তেমনি সমাজে নানা রকম বিশৃঙ্খলাও সৃষ্টি হতে পারে। এমনকি মারামারি, জ্বালাও-পোড়াও, হত্যাকাণ্ডও ঘটতে পারে। আমরা এ প্রসঙ্গে মহানবী (সা.)-এর সময়ের একটি ঘটনা উল্লেখ করতে পারি।
মহানবী (সা.) বনি মুস্তালিকের কাছে জাকাত আদায়ের জন্য আল-ওয়ালিদ ইবন উকবাকে পাঠান। বনি মুস্তালিকের কাছে এ সংবাদ পৌঁছালে তাঁরা আল-ওয়ালিদকে স্বাগত জানানোর জন্য রাস্তায় এগিয়ে আসেন। এতে আল-ওয়ালিদ ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। কারণ, অন্ধকার যুগ থেকেই তাঁর গোত্র ও বনি মুস্তালিকের মধ্যে ভীষণ শত্রুতা ছিল।
এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি অর্ধেক রাস্তা থেকে ফিরে এসে মহানবী (সা.)-কে জানান, বনি মুস্তালিক জাকাত দিতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেছেন এবং অস্ত্র দিয়ে তাঁকে হত্যা করতে উদ্যত হয়েছেন। মহানবী (সা.) আল-ওয়ালিদের কাছ থেকে এ সংবাদ শুনে ভীষণ রাগান্বিত হন এবং একপর্যায়ে তাঁদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে মনস্থির করেন। এতে সাহাবিরাও তাঁকে সমর্থন করেন।
ইত্যবসরে বনি মুস্তালিকের একটি প্রতিনিধিদল মদিনায় মহানবী (সা.)-এর কাছে উপস্থিত হয়ে বলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা সংবাদ পেলাম যে, আমাদের কাছে জাকাত আদায়ের জন্য প্রেরিত আল-ওয়ালিদ অর্ধেক রাস্তা থেকে ফিরে এসেছেন। আমরা আশঙ্কা করছি, হয়তোবা আপনি আমাদের ওপর রাগান্বিত হয়েছেন এবং তাঁকে ফিরে আসতে বলেছেন। আমরা এ জন্য আল্লাহর কাছে পানাহ চাচ্ছি।
তাঁদের এ কথা শুনে মহানবী (সা.) আল-ওয়ালিদের ফিরে আসার বিষয়টি বুঝতে পারলেন। তখন আল্লাহ তাআলা তাঁর নবীর উদ্দেশ্যে নিম্নের আয়াতটি অবতীর্ণ করেন এবং বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, যদি কোনো ফাসিক তোমাদের নিকট কোনো সংবাদ নিয়ে আসে, তাহলে তোমরা তা যাচাই করে নাও। এ আশঙ্কায় যে, তোমরা অজ্ঞতাবশত কোনো সম্প্রদায়কে আক্রমণ করবে, ফলে তোমরা তোমাদের কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হবে।’ (সুরা হুজুরাত, ৬)
এ অবস্থায় একজন দায়িত্বশীল ও প্রকৃত ইমানদার ব্যক্তির কাজ হলো, প্রাপ্ত কোনো সংবাদ সম্পর্কে যাচাই-বাছাই করে তার সত্যতা নিশ্চিত করা এবং তা অন্যের জন্য কল্যাণকর হলে সমাজে প্রচার করা।
নো ব্যক্তি যাচাই-বাছাই করতে সক্ষম না হলে তিনি তাঁর দায়িত্বশীল অথবা যিনি এ সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন, তাঁর মাধ্যমে সংবাদটি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া। কেননা, এ ব্যাপারে কোরআন মজিদে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর যখন তাদের কাছে শান্তি কিংবা ভীতিজনক কোনো বিষয় আসে, তখন তারা তা প্রচার করে। আর যদি তারা সেটি রাসুলের কাছে এবং তাদের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছে দিত, তাহলে অবশ্যই তাদের মধ্যে যারা তা উদ্ভাবন করে তারা তা জানত। আর যদি তোমাদের ওপর আল্লাহর অনুগ্রহ ও তার রহমত না হতো, তবে অবশ্যই অল্প কয়েকজন ছাড়া তোমরা শয়তানের অনুসরণ করতে।’ (সুরা নিসা, ৮৩)
ইসলামের দৃষ্টিতে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রচার করা কারও সঙ্গে প্রতারণা করা অথবা ধোঁকা দেওয়ার শামিল। কারণ, এটির মাধ্যমে অন্যকে ঠকানো হয়। এমনকি এর মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারিবারিক ও সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। তাই মহানবী (সা.) প্রতারণা করাকে নিষিদ্ধ করেছেন এবং প্রতারক ব্যক্তিকে ইসলাম থেকে খারিজ বলে উল্লেখ করেছেন। এ প্রসঙ্গে মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতারণা করে ও ধোঁকা দেয়, সে আমাদের দলভুক্ত নয়।’ (মুসলিম)
বর্তমানে ফেসবুক, মেসেঞ্জার, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন সংবাদ অবগত হয়ে থাকি। প্রচারিত সংবাদ মুহূর্তের মধ্যে সর্বত্র চাউর হয়ে থাকে। যদি তা সত্য ও জনকল্যাণকর হয় ভালো কথা, আর যদি তা কোনো দল বা সম্প্রদায়কে উসকানি দেয়, তবে তা সত্য হলেও প্রচার করা উচিত নয়। কারণ, তা উপকার না করে ক্ষতিই করে অনেক বেশি। পক্ষান্তরে তা যদি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন হয়ে থাকে, তবে প্রচারকারী যেমন মিথ্যাবাদী বলে সাব্যস্ত হয়, তেমনি সামাজিক বিশৃঙ্খলাও বাড়তে পারে কয়েক গুণ। তাই আল্লাহ তাআলা সত্য কথা বলার নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সঠিক কথা বলো। তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের কাজগুলোকে শুদ্ধ করে দেবেন এবং তোমাদের পাপগুলো ক্ষমা করে দেবেন।’ (সুরা আহজাব, ৭০-৭১)। অপরদিকে কোনো ব্যক্তি যে কথাই শোনেন তাই যদি প্রচার করেন, কিন্তু যাচাই করেন না, হাদিসে তাঁকেও মিথ্যাবাদী বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘একজন ব্যক্তি যা শোনে তাই যদি প্রচার করে, তবে এটি তার মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য যথেষ্ট।’ (মুসলিম)
এ কথা ভুলে গেলে চলবে না যে, আমরা যে কথাই বলি-না কেন, আল্লাহ তাআলা তা সংরক্ষণ করেন এবং আমাদের সঙ্গে তিনি নিয়োজিত রেখেছেন পাহারাদার। আল্লাহ বলেন, ‘যখন ডানে ও বামে বসা দুজন লেখক পরস্পর গ্রহণ করবে। মানুষ যে কথাই উচ্চারণ করে, তার জন্য তার কাছে সদা উপস্থিত রয়েছে তৎপর প্রহরী।’ (সুরা ক্বাফ, ১৭-১৮)
সংবাদ প্রচারিত ও প্রেরিত হয় বলে আমরা দেশ-বিদেশের অবস্থা সম্পর্কে অবহিত হয়ে থাকি। যাঁরা সংবাদ তৈরি করেন, প্রচার করেন ও বিভিন্ন মাধ্যমে প্রেরণ করেন, তাঁদের খেয়াল রাখতে হবে, প্রতিটি সংবাদ সবার জন্য কল্যাণকর নয়। তাই তা যেন বানোয়াট, মিথ্যা, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, উসকানিমূলক ও ভিত্তিহীন না হয়। এমনকি সত্য হলেও তা যদি কোনো সম্প্রদায়ের জন্য স্পর্শকাতর হয়ে থাকে, তবে তা বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার না করে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে অবহিত করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানাতে হবে। তবেই সমাজ থাকবে সংঘাতমুক্ত এবং দেশ হবে নিরাপদ আশ্রয়স্থল।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
একজন দায়িত্বশীল ও প্রকৃত ইমানদার ব্যক্তির কাজ হলো, প্রাপ্ত কোনো সংবাদ সম্পর্কে যাচাই-বাছাই করে তার সত্যতা নিশ্চিত করা এবং তা অন্যের জন্য কল্যাণকর হলে সমাজে প্রচার করা।
মানুষ সামাজিক জীব হওয়ায় একে অপরের সঙ্গে মনের ভাব আদান-প্রদান করে এবং বিভিন্ন সংবাদ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রেরণ করে। প্রেরিত ও প্রচারিত সংবাদ যা-ই হোক না কেন, যিনি সংবাদ শোনেন অথবা গ্রহণ করেন, তাঁর জন্য প্রাপ্ত সংবাদটি যাচাই-বাছাই করে বিশ্বাস করা ও প্রচার করা আবশ্যক। কারণ, সংবাদটি যদি মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন হয়ে থাকে, তবে প্রচারকারীও মিথ্যাবাদী হওয়ার আশঙ্কা থাকে। মিথ্যা সংবাদ প্রচারিত হওয়ার কারণে যেমন তথ্যবিভ্রাট হয়ে থাকে, তেমনি সমাজে নানা রকম বিশৃঙ্খলাও সৃষ্টি হতে পারে। এমনকি মারামারি, জ্বালাও-পোড়াও, হত্যাকাণ্ডও ঘটতে পারে। আমরা এ প্রসঙ্গে মহানবী (সা.)-এর সময়ের একটি ঘটনা উল্লেখ করতে পারি।
মহানবী (সা.) বনি মুস্তালিকের কাছে জাকাত আদায়ের জন্য আল-ওয়ালিদ ইবন উকবাকে পাঠান। বনি মুস্তালিকের কাছে এ সংবাদ পৌঁছালে তাঁরা আল-ওয়ালিদকে স্বাগত জানানোর জন্য রাস্তায় এগিয়ে আসেন। এতে আল-ওয়ালিদ ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। কারণ, অন্ধকার যুগ থেকেই তাঁর গোত্র ও বনি মুস্তালিকের মধ্যে ভীষণ শত্রুতা ছিল।
এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি অর্ধেক রাস্তা থেকে ফিরে এসে মহানবী (সা.)-কে জানান, বনি মুস্তালিক জাকাত দিতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেছেন এবং অস্ত্র দিয়ে তাঁকে হত্যা করতে উদ্যত হয়েছেন। মহানবী (সা.) আল-ওয়ালিদের কাছ থেকে এ সংবাদ শুনে ভীষণ রাগান্বিত হন এবং একপর্যায়ে তাঁদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে মনস্থির করেন। এতে সাহাবিরাও তাঁকে সমর্থন করেন।
ইত্যবসরে বনি মুস্তালিকের একটি প্রতিনিধিদল মদিনায় মহানবী (সা.)-এর কাছে উপস্থিত হয়ে বলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা সংবাদ পেলাম যে, আমাদের কাছে জাকাত আদায়ের জন্য প্রেরিত আল-ওয়ালিদ অর্ধেক রাস্তা থেকে ফিরে এসেছেন। আমরা আশঙ্কা করছি, হয়তোবা আপনি আমাদের ওপর রাগান্বিত হয়েছেন এবং তাঁকে ফিরে আসতে বলেছেন। আমরা এ জন্য আল্লাহর কাছে পানাহ চাচ্ছি।
তাঁদের এ কথা শুনে মহানবী (সা.) আল-ওয়ালিদের ফিরে আসার বিষয়টি বুঝতে পারলেন। তখন আল্লাহ তাআলা তাঁর নবীর উদ্দেশ্যে নিম্নের আয়াতটি অবতীর্ণ করেন এবং বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, যদি কোনো ফাসিক তোমাদের নিকট কোনো সংবাদ নিয়ে আসে, তাহলে তোমরা তা যাচাই করে নাও। এ আশঙ্কায় যে, তোমরা অজ্ঞতাবশত কোনো সম্প্রদায়কে আক্রমণ করবে, ফলে তোমরা তোমাদের কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হবে।’ (সুরা হুজুরাত, ৬)
এ অবস্থায় একজন দায়িত্বশীল ও প্রকৃত ইমানদার ব্যক্তির কাজ হলো, প্রাপ্ত কোনো সংবাদ সম্পর্কে যাচাই-বাছাই করে তার সত্যতা নিশ্চিত করা এবং তা অন্যের জন্য কল্যাণকর হলে সমাজে প্রচার করা।
নো ব্যক্তি যাচাই-বাছাই করতে সক্ষম না হলে তিনি তাঁর দায়িত্বশীল অথবা যিনি এ সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন, তাঁর মাধ্যমে সংবাদটি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া। কেননা, এ ব্যাপারে কোরআন মজিদে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর যখন তাদের কাছে শান্তি কিংবা ভীতিজনক কোনো বিষয় আসে, তখন তারা তা প্রচার করে। আর যদি তারা সেটি রাসুলের কাছে এবং তাদের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছে দিত, তাহলে অবশ্যই তাদের মধ্যে যারা তা উদ্ভাবন করে তারা তা জানত। আর যদি তোমাদের ওপর আল্লাহর অনুগ্রহ ও তার রহমত না হতো, তবে অবশ্যই অল্প কয়েকজন ছাড়া তোমরা শয়তানের অনুসরণ করতে।’ (সুরা নিসা, ৮৩)
ইসলামের দৃষ্টিতে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রচার করা কারও সঙ্গে প্রতারণা করা অথবা ধোঁকা দেওয়ার শামিল। কারণ, এটির মাধ্যমে অন্যকে ঠকানো হয়। এমনকি এর মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারিবারিক ও সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। তাই মহানবী (সা.) প্রতারণা করাকে নিষিদ্ধ করেছেন এবং প্রতারক ব্যক্তিকে ইসলাম থেকে খারিজ বলে উল্লেখ করেছেন। এ প্রসঙ্গে মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতারণা করে ও ধোঁকা দেয়, সে আমাদের দলভুক্ত নয়।’ (মুসলিম)
বর্তমানে ফেসবুক, মেসেঞ্জার, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন সংবাদ অবগত হয়ে থাকি। প্রচারিত সংবাদ মুহূর্তের মধ্যে সর্বত্র চাউর হয়ে থাকে। যদি তা সত্য ও জনকল্যাণকর হয় ভালো কথা, আর যদি তা কোনো দল বা সম্প্রদায়কে উসকানি দেয়, তবে তা সত্য হলেও প্রচার করা উচিত নয়। কারণ, তা উপকার না করে ক্ষতিই করে অনেক বেশি। পক্ষান্তরে তা যদি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন হয়ে থাকে, তবে প্রচারকারী যেমন মিথ্যাবাদী বলে সাব্যস্ত হয়, তেমনি সামাজিক বিশৃঙ্খলাও বাড়তে পারে কয়েক গুণ। তাই আল্লাহ তাআলা সত্য কথা বলার নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সঠিক কথা বলো। তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের কাজগুলোকে শুদ্ধ করে দেবেন এবং তোমাদের পাপগুলো ক্ষমা করে দেবেন।’ (সুরা আহজাব, ৭০-৭১)। অপরদিকে কোনো ব্যক্তি যে কথাই শোনেন তাই যদি প্রচার করেন, কিন্তু যাচাই করেন না, হাদিসে তাঁকেও মিথ্যাবাদী বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘একজন ব্যক্তি যা শোনে তাই যদি প্রচার করে, তবে এটি তার মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য যথেষ্ট।’ (মুসলিম)
এ কথা ভুলে গেলে চলবে না যে, আমরা যে কথাই বলি-না কেন, আল্লাহ তাআলা তা সংরক্ষণ করেন এবং আমাদের সঙ্গে তিনি নিয়োজিত রেখেছেন পাহারাদার। আল্লাহ বলেন, ‘যখন ডানে ও বামে বসা দুজন লেখক পরস্পর গ্রহণ করবে। মানুষ যে কথাই উচ্চারণ করে, তার জন্য তার কাছে সদা উপস্থিত রয়েছে তৎপর প্রহরী।’ (সুরা ক্বাফ, ১৭-১৮)
সংবাদ প্রচারিত ও প্রেরিত হয় বলে আমরা দেশ-বিদেশের অবস্থা সম্পর্কে অবহিত হয়ে থাকি। যাঁরা সংবাদ তৈরি করেন, প্রচার করেন ও বিভিন্ন মাধ্যমে প্রেরণ করেন, তাঁদের খেয়াল রাখতে হবে, প্রতিটি সংবাদ সবার জন্য কল্যাণকর নয়। তাই তা যেন বানোয়াট, মিথ্যা, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, উসকানিমূলক ও ভিত্তিহীন না হয়। এমনকি সত্য হলেও তা যদি কোনো সম্প্রদায়ের জন্য স্পর্শকাতর হয়ে থাকে, তবে তা বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার না করে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে অবহিত করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানাতে হবে। তবেই সমাজ থাকবে সংঘাতমুক্ত এবং দেশ হবে নিরাপদ আশ্রয়স্থল।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
আমি দুই মাস আগেই বলেছিলাম, নভেম্বরে পরিস্থিতি খারাপ হবে। আমি সেটা দেশের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লেখার মাধ্যমে তুলে ধরেছিলাম। এবারের ডেঙ্গু পরিস্থিতিটা আগের বছরগুলোর মতো না। অন্যান্য বছরে নভেম্বরের দিকে ডেঙ্গু পরিস্থিতি কমে আসতে শুরু করে।
১২ ঘণ্টা আগেআজ ১৭ নভেম্বর, মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর মৃত্যুদিবস। ১৯৭৬ সালের এ দিনে তিনি এক বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের ইতিহাস পেছনে ফেলে পরলোকগমন করেন। আজীবন সংগ্রামী ভাসানী কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সোচ্চার থাকার পাশাপাশি বাংলাদেশের স্বাধীনতারও ছিলেন প্রথম প্রবক্তা।
১২ ঘণ্টা আগেসকালের আলোয় মনটা অকারণে আনমনা হয়ে যায়। মনের কোণে হঠাৎ বেজে ওঠে চেনা গানের সুর—‘কোন পুরাতন প্রাণের টানে...।’ মন ছুটে যায় সেই ছেলেবেলায়, যখন ঋতুবদল ঘটত গানের সুরেই।
১২ ঘণ্টা আগেজুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশে শেখ হাসিনার দীর্ঘস্থায়ী দুঃশাসনের অবসান হয়েছে। ক্ষমতা পেয়েছে অন্তর্বর্তী এক সরকার, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন অরাজনৈতিক অথচ বিশ্বখ্যাত ব্যক্তি, বাংলাদেশের একমাত্র নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
১২ ঘণ্টা আগে