পিয়াস মজিদ
আটাশে আগস্ট ছিল কবি শহীদ কাদরীর চলে যাওয়ার দিন। মনটা বিষণ্ন ছিল খুব। এর মধ্যে ফেসবুকে ভেসে এল জ্যেষ্ঠ রম্যলেখক আতাউর রহমানের মৃত্যুসংবাদ; ‘দুই দুগুণে পাঁচ’ নামে তাঁর রম্য-কলামের সূত্রে পাঠক নিশ্চয়ই তাঁকে জানেন। এর একটু পর এল শেখ আবদুল হাকিমের প্রয়াণ-সংবাদ। পল্টনে এক দ্বিপ্রাহরিক আড্ডা বিষাদিত হয়ে গেল মুহূর্তেই; আমরা ক'জন শেখ আবদুল হাকিমের সূত্রেই বলাবলি করছিলাম হাকিম-সখা বুলবুল চৌধুরীর কথা। কালরোগ কর্কট তাঁকে বিধ্বস্ত করে রেখেছে বেশ কিছুদিন। ভাবছিলাম, বুলবুল চৌধুরী কীভাবে গ্রহণ করবেন তাঁর ‘ভাই’ হাকিমের হুটহাট মিসিং রিপোর্ট! ভাবনার পিঠে অন্য ভাবনা আসতে দেরি হতে পারল না; চলে এল বুলবুল চৌধুরীর শেষ শ্বাসের সংবাদ। দুই আড্ডাতো ভাই হাকিম ও বুলবুল তবে একত্রে যাত্রা করলেন অনন্তের রেলগাড়িতে!
দুজনের পরিচিতিটা পড়ে দেখছি-বছর দুয়ের ছোটবড়; শেখ আবদুল হাকিমের ৭৫ আর বুলবুল চৌধুরীর ৭৩ কিন্তু আমাদের সাহিত্যে তাঁরা উভয়েই নট আউট। মানুষী আয়ুসীমার সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে সাহিত্যে তাঁরা যেন অনন্ত আয়ুশীল।
শেখ আবদুল হাকিম কথাসাহিত্যিক, অনুবাদক। মূলত কালের কথক। নামে-বেনামে কত বিচিত্র লেখা লিখে যে আমাদের সাহিত্যের সীমানা তিনি বাড়িয়েছেন-তার ইয়ত্তা নেই কোনো! আজ বাংলাদেশের সাহিত্য নিজের শক্তি ও স্বাতন্ত্র্যে যে পলিময়তা লাভ করেছে, তার পেছনে শেখ আবদুল হাকিমদের অবদান তো কম নয়। অথচ সাহিত্য-গবেষণায় তাঁর মতো লেখক খুব একটা আলোচনা পেয়েছেন কী? এর কারণ বোধ করি আমাদের সাহিত্যচিন্তার স্থূল একগামিতা। হাকিম সাহেব এ নিয়ে যে সচেতন ছিলেন না, তা তো নয়। কিন্তু আমার মনে হয় তাঁর মূল পরিতৃপ্তি ছিল পাঠকের উদার দরবার। তাই হয়তো শেষজীবনে নিজের সুপ্রচুর লেখার স্বত্ব প্রতিষ্ঠায় প্রয়াসী হয়েছেন। এ নিয়ে কপিরাইট অফিসে লড়াই করেছেন এবং জিতেছেনও। তাঁর এ জয়ের ব্যক্তিগত লাভক্ষতির আলোচনায় না গিয়েও বলা যায়, শেখ আবদুল হাকিমের কপিরাইট-কেন্দ্রিক লড়াই আমাদের মতো লেখক অধিকার-হীন সমাজে-দেশে একটি মাইলফলক। লেখকের পাশাপাশি একজন লড়াকু মানুষ হিসেবেও তিনি আমাদের অভিবাদন প্রাপ্য। শেখ আবদুল হাকিমের বিপুল লেখাপত্র নিয়ে গবেষণা হওয়া যেমন প্রয়োজন তেমনি তাঁর নামে-বেনামে প্রকাশিত রচনার সংকলনও প্রকাশিত হতে পারে। তাহলে অনুধাবন করা যাবে কী বিচিত্র সৃষ্টিতে সারা জীবন মগ্ন ছিলেন তিনি। আমি শুধু তার বৈচিত্র্য-পিপাসার উদাহরণ হিসেবে বলব, পাকিস্তানের পারমাণবিক বোমার জনক আবদুল কাদির খানকে নিয়ে লেখা ডগলাস ফ্র্যাঞ্জ এবং ক্যাথরিন কলিন্সের বই ‘দ্য ম্যান ফ্রম পাকিস্তান’ বইয়ের অনুবাদও করেছেন শেখ আবদুল হাকিম। থ্রিলার-অন্বেষায় তিনি যে কত দূর-দূরান্তের জ্ঞান-দ্বীপদেশে যাত্রা করতেন—এটা এমন একটা উদাহরণ মাত্র।
বুলবুল চৌধুরী আর শেখ আবদুল হাকিমের জগৎ এক নয়। বুলবুলের সাহিত্যে চাঞ্চল্য, উত্তেজনা, ঘটনার ঘনঘটা ইত্যাদি সুবিরল। পল্লি আর প্রকৃতির ঘ্রাণ-মুগ্ধ তিনি। এটা ঠিক ‘টুকা কাহিনি’ গল্পের ভারী সাফল্যের তলায় হালকা-পলকা মানুষটি চাপা পড়ে গিয়েছিলেন। তবে তিনি ‘টুকা’-তেই থেমে থাকেননি। গল্পে তো অসামান্য কিছু কাজ করেছেন; ‘মাছ’-এর মতো আরও বেশ কিছু গল্পের স্রষ্টা তিনি, যেসব পাঠ করলে মানুষ আর তার যাপিত জীবনের যাবতীয় শ্রমঘাম, জয়-পরাজয়ের গন্ধ পাঠকের নাকে এসে লাগে। উপন্যাসে তিনি উচ্চাভিলাষী; ভাওয়াল রাজার পুরোনো আখ্যান পুনর্নির্মাণ যেমন করতে জানেন, তেমনি বাংলাদেশের গ্রামগহীনের টুটাফাটা মানুষ, ঘাটের সরদার, পতিতালয়ের পঙ্কে আটকে পড়া হতভাগিনী মেয়ে—সবার অন্তর-উপাখ্যান যেন দারুণ দরদে আঁকতেন তিনি। তাঁর গল্প-উপন্যাস পড়তে পড়তে মনে হয় সত্যি ‘এই ঘরে লক্ষ্মী থাকে’, ওই তো আগুনে হেঁটে যাচ্ছে ‘জলবউ’, ওই তো ঘন হচ্ছে ‘মাছের রাত’।
বুলবুল চৌধুরী সারা দেশ ঘুরে বেড়াতেন। এক পঙ্খিরাজ বসত করত তাঁর ভেতরে; তিনি সে ঘোড়ায় চড়ে দেখতেন সবার দৃষ্টি প্রদীপের বাইরে থাকা মানুষটার মুখ। সম্ভবত, এ দেখা-শোনারই ফল তাঁর নন-ফিকশন বই ‘মানুষের আঁকিবুঁকি’। শিশুকিশোরদের জন্য লিখেছেন রূপকথা ও লোককথার গল্প মিলিয়ে-মিশিয়ে নতুন ধরনের গল্পগাছা। সম্পাদনা করেছেন নটী বিনোদিনীর রচনাসমগ্র। জীবনে স্থির কোনো পেশা ছিল না। সংবাদপত্রে কাজ করেছেন, প্রেস ব্যবসা করেছেন, আর সাহিত্যে নিমগ্ন থেকেছেন রাতদিন। শেষদিকে তাঁর অকালপ্রয়াত আত্মহনক বন্ধু কথাকার কায়েস আহমদকে নিয়ে একটি বই লেখার কথা ভেবেছেন। কিন্তু তা আর সম্পন্ন হলো না। যেমন শেষ হলো না তাঁর ঘোষণা দেওয়া আত্মকথা ‘আপননামা’। অবশ্য বুলবুল চৌধুরীর মতো লেখকদের সব লেখাই তো আপননামা। কারণ, জীবন ও সাহিত্যে তাঁরা কোনো ফারাকের সাধনা করেন না।
শেখ আবদুল হাকিম ও বুলবুল চৌধুরীর প্রয়াণের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের সাহিত্যজগতে এক যুগ্ম-যুগাবসন ঘটল। এই ঢাকা শহরে গত শতকের ষাটের দশকের বেশুমার আড্ডার স্মৃতিবাহক ছিলেন তাঁরা। রেক্স, ক্যাপিটাল কিংবা বিউটি বোর্ডিংয়ের উন্মাতাল সাহিত্যিক আড্ডার অংশ ছিলেন তাঁরা। পুরোনো আড্ডাধারীদের ক্রম-প্রয়াণে ব্যথিত এই দুজন তবু নিজ গৃহকে একমাত্র গন্তব্য মানেননি। আড্ডার আভায় স্নাত করে রেখেছেন বাংলাবাজার, পুরানা পল্টন, শাহবাগ। তাঁদের প্রয়াণে তাই আমাদের সাহিত্যিক ক্ষতির সমান্তরালে ঢাকার আড্ডা-সংস্কৃতিতেও চলে এল অপরিমেয় শূন্যতা।
শেখ আবদুল হাকিমের শেষ শয্যা হলো নন্দীপাড়ায়, বুলবুল চৌধুরীর মিরপুরে। ঢাকার এ মাথা থেকে ও মাথা কিন্তু সমাধি-দূরত্ব চুরমার করে এই দুই অভিন্ন আত্মা তাঁদের স্মৃতি ও সৃষ্টির সুবাসে আমাদের জাগিয়ে রাখবেন নিরবধি। বুলবুল চৌধুরীর বইয়ের শিরোনাম ধার করে বলি, শেখ আবদুল হাকিম আর বুলবুল চৌধুরী তো এই মরচে-পড়া সময়ে আমাদের ‘অপরূপ বিল ঝিল নদী’।
আটাশে আগস্ট ছিল কবি শহীদ কাদরীর চলে যাওয়ার দিন। মনটা বিষণ্ন ছিল খুব। এর মধ্যে ফেসবুকে ভেসে এল জ্যেষ্ঠ রম্যলেখক আতাউর রহমানের মৃত্যুসংবাদ; ‘দুই দুগুণে পাঁচ’ নামে তাঁর রম্য-কলামের সূত্রে পাঠক নিশ্চয়ই তাঁকে জানেন। এর একটু পর এল শেখ আবদুল হাকিমের প্রয়াণ-সংবাদ। পল্টনে এক দ্বিপ্রাহরিক আড্ডা বিষাদিত হয়ে গেল মুহূর্তেই; আমরা ক'জন শেখ আবদুল হাকিমের সূত্রেই বলাবলি করছিলাম হাকিম-সখা বুলবুল চৌধুরীর কথা। কালরোগ কর্কট তাঁকে বিধ্বস্ত করে রেখেছে বেশ কিছুদিন। ভাবছিলাম, বুলবুল চৌধুরী কীভাবে গ্রহণ করবেন তাঁর ‘ভাই’ হাকিমের হুটহাট মিসিং রিপোর্ট! ভাবনার পিঠে অন্য ভাবনা আসতে দেরি হতে পারল না; চলে এল বুলবুল চৌধুরীর শেষ শ্বাসের সংবাদ। দুই আড্ডাতো ভাই হাকিম ও বুলবুল তবে একত্রে যাত্রা করলেন অনন্তের রেলগাড়িতে!
দুজনের পরিচিতিটা পড়ে দেখছি-বছর দুয়ের ছোটবড়; শেখ আবদুল হাকিমের ৭৫ আর বুলবুল চৌধুরীর ৭৩ কিন্তু আমাদের সাহিত্যে তাঁরা উভয়েই নট আউট। মানুষী আয়ুসীমার সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে সাহিত্যে তাঁরা যেন অনন্ত আয়ুশীল।
শেখ আবদুল হাকিম কথাসাহিত্যিক, অনুবাদক। মূলত কালের কথক। নামে-বেনামে কত বিচিত্র লেখা লিখে যে আমাদের সাহিত্যের সীমানা তিনি বাড়িয়েছেন-তার ইয়ত্তা নেই কোনো! আজ বাংলাদেশের সাহিত্য নিজের শক্তি ও স্বাতন্ত্র্যে যে পলিময়তা লাভ করেছে, তার পেছনে শেখ আবদুল হাকিমদের অবদান তো কম নয়। অথচ সাহিত্য-গবেষণায় তাঁর মতো লেখক খুব একটা আলোচনা পেয়েছেন কী? এর কারণ বোধ করি আমাদের সাহিত্যচিন্তার স্থূল একগামিতা। হাকিম সাহেব এ নিয়ে যে সচেতন ছিলেন না, তা তো নয়। কিন্তু আমার মনে হয় তাঁর মূল পরিতৃপ্তি ছিল পাঠকের উদার দরবার। তাই হয়তো শেষজীবনে নিজের সুপ্রচুর লেখার স্বত্ব প্রতিষ্ঠায় প্রয়াসী হয়েছেন। এ নিয়ে কপিরাইট অফিসে লড়াই করেছেন এবং জিতেছেনও। তাঁর এ জয়ের ব্যক্তিগত লাভক্ষতির আলোচনায় না গিয়েও বলা যায়, শেখ আবদুল হাকিমের কপিরাইট-কেন্দ্রিক লড়াই আমাদের মতো লেখক অধিকার-হীন সমাজে-দেশে একটি মাইলফলক। লেখকের পাশাপাশি একজন লড়াকু মানুষ হিসেবেও তিনি আমাদের অভিবাদন প্রাপ্য। শেখ আবদুল হাকিমের বিপুল লেখাপত্র নিয়ে গবেষণা হওয়া যেমন প্রয়োজন তেমনি তাঁর নামে-বেনামে প্রকাশিত রচনার সংকলনও প্রকাশিত হতে পারে। তাহলে অনুধাবন করা যাবে কী বিচিত্র সৃষ্টিতে সারা জীবন মগ্ন ছিলেন তিনি। আমি শুধু তার বৈচিত্র্য-পিপাসার উদাহরণ হিসেবে বলব, পাকিস্তানের পারমাণবিক বোমার জনক আবদুল কাদির খানকে নিয়ে লেখা ডগলাস ফ্র্যাঞ্জ এবং ক্যাথরিন কলিন্সের বই ‘দ্য ম্যান ফ্রম পাকিস্তান’ বইয়ের অনুবাদও করেছেন শেখ আবদুল হাকিম। থ্রিলার-অন্বেষায় তিনি যে কত দূর-দূরান্তের জ্ঞান-দ্বীপদেশে যাত্রা করতেন—এটা এমন একটা উদাহরণ মাত্র।
বুলবুল চৌধুরী আর শেখ আবদুল হাকিমের জগৎ এক নয়। বুলবুলের সাহিত্যে চাঞ্চল্য, উত্তেজনা, ঘটনার ঘনঘটা ইত্যাদি সুবিরল। পল্লি আর প্রকৃতির ঘ্রাণ-মুগ্ধ তিনি। এটা ঠিক ‘টুকা কাহিনি’ গল্পের ভারী সাফল্যের তলায় হালকা-পলকা মানুষটি চাপা পড়ে গিয়েছিলেন। তবে তিনি ‘টুকা’-তেই থেমে থাকেননি। গল্পে তো অসামান্য কিছু কাজ করেছেন; ‘মাছ’-এর মতো আরও বেশ কিছু গল্পের স্রষ্টা তিনি, যেসব পাঠ করলে মানুষ আর তার যাপিত জীবনের যাবতীয় শ্রমঘাম, জয়-পরাজয়ের গন্ধ পাঠকের নাকে এসে লাগে। উপন্যাসে তিনি উচ্চাভিলাষী; ভাওয়াল রাজার পুরোনো আখ্যান পুনর্নির্মাণ যেমন করতে জানেন, তেমনি বাংলাদেশের গ্রামগহীনের টুটাফাটা মানুষ, ঘাটের সরদার, পতিতালয়ের পঙ্কে আটকে পড়া হতভাগিনী মেয়ে—সবার অন্তর-উপাখ্যান যেন দারুণ দরদে আঁকতেন তিনি। তাঁর গল্প-উপন্যাস পড়তে পড়তে মনে হয় সত্যি ‘এই ঘরে লক্ষ্মী থাকে’, ওই তো আগুনে হেঁটে যাচ্ছে ‘জলবউ’, ওই তো ঘন হচ্ছে ‘মাছের রাত’।
বুলবুল চৌধুরী সারা দেশ ঘুরে বেড়াতেন। এক পঙ্খিরাজ বসত করত তাঁর ভেতরে; তিনি সে ঘোড়ায় চড়ে দেখতেন সবার দৃষ্টি প্রদীপের বাইরে থাকা মানুষটার মুখ। সম্ভবত, এ দেখা-শোনারই ফল তাঁর নন-ফিকশন বই ‘মানুষের আঁকিবুঁকি’। শিশুকিশোরদের জন্য লিখেছেন রূপকথা ও লোককথার গল্প মিলিয়ে-মিশিয়ে নতুন ধরনের গল্পগাছা। সম্পাদনা করেছেন নটী বিনোদিনীর রচনাসমগ্র। জীবনে স্থির কোনো পেশা ছিল না। সংবাদপত্রে কাজ করেছেন, প্রেস ব্যবসা করেছেন, আর সাহিত্যে নিমগ্ন থেকেছেন রাতদিন। শেষদিকে তাঁর অকালপ্রয়াত আত্মহনক বন্ধু কথাকার কায়েস আহমদকে নিয়ে একটি বই লেখার কথা ভেবেছেন। কিন্তু তা আর সম্পন্ন হলো না। যেমন শেষ হলো না তাঁর ঘোষণা দেওয়া আত্মকথা ‘আপননামা’। অবশ্য বুলবুল চৌধুরীর মতো লেখকদের সব লেখাই তো আপননামা। কারণ, জীবন ও সাহিত্যে তাঁরা কোনো ফারাকের সাধনা করেন না।
শেখ আবদুল হাকিম ও বুলবুল চৌধুরীর প্রয়াণের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের সাহিত্যজগতে এক যুগ্ম-যুগাবসন ঘটল। এই ঢাকা শহরে গত শতকের ষাটের দশকের বেশুমার আড্ডার স্মৃতিবাহক ছিলেন তাঁরা। রেক্স, ক্যাপিটাল কিংবা বিউটি বোর্ডিংয়ের উন্মাতাল সাহিত্যিক আড্ডার অংশ ছিলেন তাঁরা। পুরোনো আড্ডাধারীদের ক্রম-প্রয়াণে ব্যথিত এই দুজন তবু নিজ গৃহকে একমাত্র গন্তব্য মানেননি। আড্ডার আভায় স্নাত করে রেখেছেন বাংলাবাজার, পুরানা পল্টন, শাহবাগ। তাঁদের প্রয়াণে তাই আমাদের সাহিত্যিক ক্ষতির সমান্তরালে ঢাকার আড্ডা-সংস্কৃতিতেও চলে এল অপরিমেয় শূন্যতা।
শেখ আবদুল হাকিমের শেষ শয্যা হলো নন্দীপাড়ায়, বুলবুল চৌধুরীর মিরপুরে। ঢাকার এ মাথা থেকে ও মাথা কিন্তু সমাধি-দূরত্ব চুরমার করে এই দুই অভিন্ন আত্মা তাঁদের স্মৃতি ও সৃষ্টির সুবাসে আমাদের জাগিয়ে রাখবেন নিরবধি। বুলবুল চৌধুরীর বইয়ের শিরোনাম ধার করে বলি, শেখ আবদুল হাকিম আর বুলবুল চৌধুরী তো এই মরচে-পড়া সময়ে আমাদের ‘অপরূপ বিল ঝিল নদী’।
আমি দুই মাস আগেই বলেছিলাম, নভেম্বরে পরিস্থিতি খারাপ হবে। আমি সেটা দেশের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লেখার মাধ্যমে তুলে ধরেছিলাম। এবারের ডেঙ্গু পরিস্থিতিটা আগের বছরগুলোর মতো না। অন্যান্য বছরে নভেম্বরের দিকে ডেঙ্গু পরিস্থিতি কমে আসতে শুরু করে।
২ ঘণ্টা আগেআজ ১৭ নভেম্বর, মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর মৃত্যুদিবস। ১৯৭৬ সালের এ দিনে তিনি এক বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের ইতিহাস পেছনে ফেলে পরলোকগমন করেন। আজীবন সংগ্রামী ভাসানী কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সোচ্চার থাকার পাশাপাশি বাংলাদেশের স্বাধীনতারও ছিলেন প্রথম প্রবক্তা।
২ ঘণ্টা আগেসকালের আলোয় মনটা অকারণে আনমনা হয়ে যায়। মনের কোণে হঠাৎ বেজে ওঠে চেনা গানের সুর—‘কোন পুরাতন প্রাণের টানে...।’ মন ছুটে যায় সেই ছেলেবেলায়, যখন ঋতুবদল ঘটত গানের সুরেই।
২ ঘণ্টা আগেজুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশে শেখ হাসিনার দীর্ঘস্থায়ী দুঃশাসনের অবসান হয়েছে। ক্ষমতা পেয়েছে অন্তর্বর্তী এক সরকার, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন অরাজনৈতিক অথচ বিশ্বখ্যাত ব্যক্তি, বাংলাদেশের একমাত্র নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
২ ঘণ্টা আগে