ফজলুল কবির
‘সাহেব কহেন, “চমৎকার! সে চমৎকার! ”/মোসাহেব বলে “চমৎকার সে হতেই হবে যে!/হুজুরের মতে অমত কার? ” কাজী নজরুল ইসলাম যখন এমনটা লিখছেন, তখন আর অহেতুক হাপিত্যেশ করে কী হবে? ‘যুগের হুজুগ’ আখ্যা না দিয়ে এই অবিরাম হেঁচকি ওঠানো ধারাটি মেনে নিলেই চলে। সেই সাহেব-সুবার আমল থেকে চলছে। ঐতিহ্য বলে তো একটা কথা আছে, নাকি?
বঙ্গ মুলুকে যে কেউ একটু উঁচু আসন পেলেই তার আশপাশে জুটে যায় বহুজন। হুমায়ূন আহমেদ এদের ‘উপগ্রহ’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। গ্রহের চারপাশে আবর্তনের মতো করে এরা উঁচুতলার লোকটির চারপাশে ঘুরপাক খায় অবিরাম। সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি এই শুধু চলে। আর এই উঁচুতলাটি যদি সরাসরি ক্ষমতাকাঠামোর অঙ্গ হন, তবে তো কথাই নেই। এই যুগে এই কালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে সব জায়গায় যেমন সহমত ভাই দেখা যায়, তেমনটা বোধ হয় আগে দেখা যেত না। তা দেখা যাবেই না বা কেন? এখন তো মাধ্যম বেশি। প্রযুক্তির কাল। নিজের সহমত হওয়ার কথাটি জানিয়ে দেওয়া যাচ্ছে ঘরে বসেই। এমনকি ক্ষমতাবানের দরবারে প্রবেশের টিকিটটিও জোগাড় করতে হচ্ছে না। বরং এই প্রাযুক্তিক মোসাহেবি দিয়ে টিকিট বগলদাবা করা যাচ্ছে।
সমাজের সব ক্ষেত্রেই এর চল আছে। তবে সবচেয়ে বেশি নজরে পড়ে রাজনীতির ময়দানে। সেখানে নেতা-তস্য নেতার ছবি দিয়ে প্রথম তৈলমর্দনটি চলে। এই দিয়ে যদি কোনোভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই নেতার বন্ধু তালিকায় জুড়ে যাওয়া যায়, তো কথাই নেই। ‘অনবদ্য’, ‘দারুণ’, ‘অসাধারণ’ ইত্যাকার বিশেষণ ও অতি-বিশেষণ যোগ করে এগিয়ে যায় নেতার আদরপ্রত্যাশীরা। নেতাও বেশ আদর করেন বটে। কখনো পিঠ চাপড়ে, মাথা হাতড়ে। এই চলতে থাকে। আর অলক্ষ্যে বাড়তে থাকে এক নয়ানীতি। এর নাম রাজিনীতি। রাজনীতি থেকে এ একদম আলাদা।
এই ‘রাজি’নীতি কিন্তু শুধু বঙ্গদেশেই নয়। সবখানে সব কালে আছে। সব দেশে যে আছে, তার একটি প্রমাণ তো রেখে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর প্রথম মন্ত্রিসভা বৈঠক এবং সেখানে নব্য মন্ত্রিত্ব পাওয়া ব্যক্তিবর্গের মোসাহেবির যে চিত্র সে সময় উঠে এসেছিল ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টের বর্ণনায়, তার তুলনা নেই। মোসাহেবি সংস্কৃতি ও এমন স্তুতি আসক্তির উদাহরণ হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নামটি কিন্তু অনায়াসেই উল্লেখ করা গেল। দুই কারণে। প্রথমত, তিনি সুদূর মার্কিন মুলুকে থাকেন এবং বাংলা জানেন না। এবং দ্বিতীয়ত ও সবচেয়ে বড় কারণ হলো—আশপাশে যত মোসাহেবই থাক না কেন, তাঁর দেশেই তাঁকে নিয়ে বিস্তর সমালোচনা হয়েছে ও হচ্ছে। মসনদে থাকার সময় বরং বেশি হয়েছে। ফলে সমালোচনা বা খোঁচা সহ্য করার একটা ন্যূনতম সংস্কৃতি তাঁর মধ্যে রয়েছে বলে ধরে নেওয়া যায়।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদাহরণ যখন এলই, তখন বাড়ির পাশের নরেন্দ্র মোদি বাদ যাবেন কেন? তিনিও স্তুতি-আসক্ত বলা যায়। তাঁর আশপাশেও রয়েছে বিস্তর মোসাহেব। বিশেষত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোতে এই মোসাহেবদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা যায়। একই সঙ্গে তাঁর দেশের সংবাদমাধ্যম থেকে শুরু করে বিভিন্ন পরিসরে এসবের কিছু সমালোচনাও কিন্তু হচ্ছে। এর প্রতিক্রিয়ায় নানা হম্বিতম্বিও অবশ্য হয়।
বাংলাদেশেও কিছুদিন আগে বরিশালে জনপ্রতিনিধির সঙ্গে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের যে সাময়িক বিরোধ দেখা গেল, সেখানেও এই স্তুতি সংস্কৃতিরই একটি নমুনা উঠে এল। ‘স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা’র সঙ্গে সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজ করার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তো বলেই দিয়েছেন, ‘কারও চামচাগিরি এবং তোয়াজ-তোষণ করার প্রয়োজন নেই।’
অর্থাৎ, সেই মোসাহেবির প্রসঙ্গটিই সামনে এল ফের। এবার মন্ত্রীর বক্তব্যের মধ্য দিয়ে। সরকারের উচ্চমহল এরই মধ্যে এই মোসাহেবি প্রবণতার বাড়বাড়ন্ত ও বিপদটি টের পেয়েছে। কিন্তু এর রাশ টানবে কে? আখের গোছাতে ব্যস্ত সবাই। বিভিন্ন পেশাজীবী থেকে শুরু করে রাজনীতির ময়দান—সবখানে এই চর্চা ভীষণ রকম প্রকট হয়ে উঠেছে। নেতার নামে দুই কথা বললে, নেতা ক্ষুব্ধ হন বা না হন, অনুরক্ত অনুসারীটি রাগে ফুঁসে উঠবেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে নানা পরিসরে সেই ফুঁসে ওঠা রাগের প্রতিফলন দেখা যাবে। আর তাতেও কাজ না হলে মামলায় পরিণতি পাবে বিষয়টি। এসব এখন নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নেতার পক্ষে জানাও সম্ভব হয় না যে, তাঁর কোথায় কোন অনুসারী কী কারণে এতটা চটেছেন। কিন্তু ঘটনা চলতে থাকে।
একে বলে ‘সূর্যের চেয়ে বালি গরম’ দশা। রবীন্দ্রনাথ তাঁর ‘দুই বিঘা জমি’ কবিতায় যেমনটা বলেছেন—‘বাবু যত বলে পরিষদ-দলে বলে তার শতগুণ’। এ অবস্থাই যে এখনকার বাস্তবতা, তা তো ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য থেকেই পরিষ্কার।
মুশকিল হলো এই প্রবণতা এখন প্রশাসনসহ সর্বস্তরে সংক্রমিত হয়েছে। মোসাহেবি সংস্কৃতির এটাই সবচেয়ে বড় বিপদ। এই সংস্কৃতি একবার হাওয়া পেলে তা আর থামতে চায় না। বাড়তেই থাকে। মোসাহেবদের ভিড়-ভাট্টায় সমাজ বা রাজনৈতিক নেতারা বিচ্ছিন্ন হতে থাকেন। ফলে যে জনতার কথা বলে ব্যক্তি সামাজিক, রাজনৈতিক প্রতিপত্তি পায়, সেই জনতাই সবচেয়ে বড় নিপীড়নের শিকার হয়। আর এটি ঘটে অতি অবশ্যই মোসাহেবদের তৎপরতার মধ্য দিয়েই।
এই সংস্কৃতির সবচেয়ে বড় বিপদ হলো যে বা যারা এই ‘উপগ্রহ’ পরিবেষ্টিত অবস্থায় থাকেন, তাঁদের ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহনশীলতা ক্রমেই কমতে থাকে। রাজনীতির বদলে রাজিনীতিই হয়ে ওঠে একমাত্র বাস্তবতা। আর রাজিনীতি তো কোনো স্বাভাবিকতার ইঙ্গিত দেয় না।
শেষ করার আগে ‘ইন্দু সরকার’ নামের একটি সিনেমার প্রসঙ্গ উল্লেখ করা প্রয়োজন। ভারতে ইন্দিরা গান্ধী সরকারের সময় দেওয়া জরুরি অবস্থার প্রেক্ষাপটে মধুর ভান্ডারকার পরিচালিত এই সিনেমার এক বিশেষ মুহূর্তের সংলাপ হচ্ছে—জরুরি অবস্থায় শুধু দুটি জিনিস চলে—এক. পুলিশম্যান, আর দুই. ইয়েসম্যান।
বাংলাদেশ নিশ্চয় এই দুইয়ের কোনোটিতেই প্রবেশ করেনি। করবেও না। আশঙ্কা সব সময় সব দেশেই থাকে। কিন্তু আশাটা থাকে না। সবাইকে সতর্ক করে ওবায়দুল কাদেরের সাম্প্রতিক বক্তব্যই এই আশার কেন্দ্রে।
লেখক: সহকারী বার্তা সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
‘সাহেব কহেন, “চমৎকার! সে চমৎকার! ”/মোসাহেব বলে “চমৎকার সে হতেই হবে যে!/হুজুরের মতে অমত কার? ” কাজী নজরুল ইসলাম যখন এমনটা লিখছেন, তখন আর অহেতুক হাপিত্যেশ করে কী হবে? ‘যুগের হুজুগ’ আখ্যা না দিয়ে এই অবিরাম হেঁচকি ওঠানো ধারাটি মেনে নিলেই চলে। সেই সাহেব-সুবার আমল থেকে চলছে। ঐতিহ্য বলে তো একটা কথা আছে, নাকি?
বঙ্গ মুলুকে যে কেউ একটু উঁচু আসন পেলেই তার আশপাশে জুটে যায় বহুজন। হুমায়ূন আহমেদ এদের ‘উপগ্রহ’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। গ্রহের চারপাশে আবর্তনের মতো করে এরা উঁচুতলার লোকটির চারপাশে ঘুরপাক খায় অবিরাম। সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি এই শুধু চলে। আর এই উঁচুতলাটি যদি সরাসরি ক্ষমতাকাঠামোর অঙ্গ হন, তবে তো কথাই নেই। এই যুগে এই কালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে সব জায়গায় যেমন সহমত ভাই দেখা যায়, তেমনটা বোধ হয় আগে দেখা যেত না। তা দেখা যাবেই না বা কেন? এখন তো মাধ্যম বেশি। প্রযুক্তির কাল। নিজের সহমত হওয়ার কথাটি জানিয়ে দেওয়া যাচ্ছে ঘরে বসেই। এমনকি ক্ষমতাবানের দরবারে প্রবেশের টিকিটটিও জোগাড় করতে হচ্ছে না। বরং এই প্রাযুক্তিক মোসাহেবি দিয়ে টিকিট বগলদাবা করা যাচ্ছে।
সমাজের সব ক্ষেত্রেই এর চল আছে। তবে সবচেয়ে বেশি নজরে পড়ে রাজনীতির ময়দানে। সেখানে নেতা-তস্য নেতার ছবি দিয়ে প্রথম তৈলমর্দনটি চলে। এই দিয়ে যদি কোনোভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই নেতার বন্ধু তালিকায় জুড়ে যাওয়া যায়, তো কথাই নেই। ‘অনবদ্য’, ‘দারুণ’, ‘অসাধারণ’ ইত্যাকার বিশেষণ ও অতি-বিশেষণ যোগ করে এগিয়ে যায় নেতার আদরপ্রত্যাশীরা। নেতাও বেশ আদর করেন বটে। কখনো পিঠ চাপড়ে, মাথা হাতড়ে। এই চলতে থাকে। আর অলক্ষ্যে বাড়তে থাকে এক নয়ানীতি। এর নাম রাজিনীতি। রাজনীতি থেকে এ একদম আলাদা।
এই ‘রাজি’নীতি কিন্তু শুধু বঙ্গদেশেই নয়। সবখানে সব কালে আছে। সব দেশে যে আছে, তার একটি প্রমাণ তো রেখে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর প্রথম মন্ত্রিসভা বৈঠক এবং সেখানে নব্য মন্ত্রিত্ব পাওয়া ব্যক্তিবর্গের মোসাহেবির যে চিত্র সে সময় উঠে এসেছিল ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টের বর্ণনায়, তার তুলনা নেই। মোসাহেবি সংস্কৃতি ও এমন স্তুতি আসক্তির উদাহরণ হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নামটি কিন্তু অনায়াসেই উল্লেখ করা গেল। দুই কারণে। প্রথমত, তিনি সুদূর মার্কিন মুলুকে থাকেন এবং বাংলা জানেন না। এবং দ্বিতীয়ত ও সবচেয়ে বড় কারণ হলো—আশপাশে যত মোসাহেবই থাক না কেন, তাঁর দেশেই তাঁকে নিয়ে বিস্তর সমালোচনা হয়েছে ও হচ্ছে। মসনদে থাকার সময় বরং বেশি হয়েছে। ফলে সমালোচনা বা খোঁচা সহ্য করার একটা ন্যূনতম সংস্কৃতি তাঁর মধ্যে রয়েছে বলে ধরে নেওয়া যায়।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদাহরণ যখন এলই, তখন বাড়ির পাশের নরেন্দ্র মোদি বাদ যাবেন কেন? তিনিও স্তুতি-আসক্ত বলা যায়। তাঁর আশপাশেও রয়েছে বিস্তর মোসাহেব। বিশেষত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোতে এই মোসাহেবদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা যায়। একই সঙ্গে তাঁর দেশের সংবাদমাধ্যম থেকে শুরু করে বিভিন্ন পরিসরে এসবের কিছু সমালোচনাও কিন্তু হচ্ছে। এর প্রতিক্রিয়ায় নানা হম্বিতম্বিও অবশ্য হয়।
বাংলাদেশেও কিছুদিন আগে বরিশালে জনপ্রতিনিধির সঙ্গে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের যে সাময়িক বিরোধ দেখা গেল, সেখানেও এই স্তুতি সংস্কৃতিরই একটি নমুনা উঠে এল। ‘স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা’র সঙ্গে সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজ করার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তো বলেই দিয়েছেন, ‘কারও চামচাগিরি এবং তোয়াজ-তোষণ করার প্রয়োজন নেই।’
অর্থাৎ, সেই মোসাহেবির প্রসঙ্গটিই সামনে এল ফের। এবার মন্ত্রীর বক্তব্যের মধ্য দিয়ে। সরকারের উচ্চমহল এরই মধ্যে এই মোসাহেবি প্রবণতার বাড়বাড়ন্ত ও বিপদটি টের পেয়েছে। কিন্তু এর রাশ টানবে কে? আখের গোছাতে ব্যস্ত সবাই। বিভিন্ন পেশাজীবী থেকে শুরু করে রাজনীতির ময়দান—সবখানে এই চর্চা ভীষণ রকম প্রকট হয়ে উঠেছে। নেতার নামে দুই কথা বললে, নেতা ক্ষুব্ধ হন বা না হন, অনুরক্ত অনুসারীটি রাগে ফুঁসে উঠবেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে নানা পরিসরে সেই ফুঁসে ওঠা রাগের প্রতিফলন দেখা যাবে। আর তাতেও কাজ না হলে মামলায় পরিণতি পাবে বিষয়টি। এসব এখন নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নেতার পক্ষে জানাও সম্ভব হয় না যে, তাঁর কোথায় কোন অনুসারী কী কারণে এতটা চটেছেন। কিন্তু ঘটনা চলতে থাকে।
একে বলে ‘সূর্যের চেয়ে বালি গরম’ দশা। রবীন্দ্রনাথ তাঁর ‘দুই বিঘা জমি’ কবিতায় যেমনটা বলেছেন—‘বাবু যত বলে পরিষদ-দলে বলে তার শতগুণ’। এ অবস্থাই যে এখনকার বাস্তবতা, তা তো ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য থেকেই পরিষ্কার।
মুশকিল হলো এই প্রবণতা এখন প্রশাসনসহ সর্বস্তরে সংক্রমিত হয়েছে। মোসাহেবি সংস্কৃতির এটাই সবচেয়ে বড় বিপদ। এই সংস্কৃতি একবার হাওয়া পেলে তা আর থামতে চায় না। বাড়তেই থাকে। মোসাহেবদের ভিড়-ভাট্টায় সমাজ বা রাজনৈতিক নেতারা বিচ্ছিন্ন হতে থাকেন। ফলে যে জনতার কথা বলে ব্যক্তি সামাজিক, রাজনৈতিক প্রতিপত্তি পায়, সেই জনতাই সবচেয়ে বড় নিপীড়নের শিকার হয়। আর এটি ঘটে অতি অবশ্যই মোসাহেবদের তৎপরতার মধ্য দিয়েই।
এই সংস্কৃতির সবচেয়ে বড় বিপদ হলো যে বা যারা এই ‘উপগ্রহ’ পরিবেষ্টিত অবস্থায় থাকেন, তাঁদের ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহনশীলতা ক্রমেই কমতে থাকে। রাজনীতির বদলে রাজিনীতিই হয়ে ওঠে একমাত্র বাস্তবতা। আর রাজিনীতি তো কোনো স্বাভাবিকতার ইঙ্গিত দেয় না।
শেষ করার আগে ‘ইন্দু সরকার’ নামের একটি সিনেমার প্রসঙ্গ উল্লেখ করা প্রয়োজন। ভারতে ইন্দিরা গান্ধী সরকারের সময় দেওয়া জরুরি অবস্থার প্রেক্ষাপটে মধুর ভান্ডারকার পরিচালিত এই সিনেমার এক বিশেষ মুহূর্তের সংলাপ হচ্ছে—জরুরি অবস্থায় শুধু দুটি জিনিস চলে—এক. পুলিশম্যান, আর দুই. ইয়েসম্যান।
বাংলাদেশ নিশ্চয় এই দুইয়ের কোনোটিতেই প্রবেশ করেনি। করবেও না। আশঙ্কা সব সময় সব দেশেই থাকে। কিন্তু আশাটা থাকে না। সবাইকে সতর্ক করে ওবায়দুল কাদেরের সাম্প্রতিক বক্তব্যই এই আশার কেন্দ্রে।
লেখক: সহকারী বার্তা সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
শেখ হাসিনার পতিত স্বৈরাচারী সরকার সাড়ে ১৫ বছর ধরে এ দেশের জনগণের মাথাপিছু জিডিপি প্রশংসনীয় গতিতে বাড়ার গল্প সাজিয়ে শাসন করেছে। মাথাপিছু জিডিপি প্রকৃতপক্ষে একটি মারাত্মক ত্রুটিপূর্ণ কনসেপ্ট। এটার সবচেয়ে মারাত্মক সীমাবদ্ধতা হলো, এটা একটা গড়, যেটা স্বল্পসংখ্যক ধনী এবং বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ নিম্ন-মধ্যবিত্ত
১ ঘণ্টা আগেআমাদের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস পৃথিবীকে জলবায়ু-বিপর্যয় থেকে রক্ষার জন্য ‘শূন্য বর্জ্য ও শূন্য কার্বন’-এর ওপর ভিত্তি করে একটি নতুন জীবনধারা গড়ে তোলা প্রয়োজন বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন।
১ ঘণ্টা আগেআমেরিকার ১৩২ বছরের পুরোনো রেকর্ড ভেঙে একবার হেরে যাওয়ার পর দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রথম মেয়াদে ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ট্রাম্প।
১ ঘণ্টা আগেজগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বড্ড কষ্ট বুকে নিয়েই ‘সব শালারা বাটপার’ স্লোগানটি দিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরেই তাঁরা দ্বিতীয় ক্যাম্পাস পাচ্ছেন না। ঠিকাদারেরা ভেলকিবাজি করছেন।ক্যাম্পাসের জন্য জমিও অধিগ্রহণ করা হয়নি।
১ ঘণ্টা আগে