পারভেজ তৌফিক জাহেদী
আমাদের দেশের ফৌজদারি বিচারব্যবস্থায় পুলিশ রিমান্ড একটি বহুল আলোচিত বিষয়। ফৌ.কা.বি. ৬১ ধারা অনুযায়ী, যেকোনো আমলযোগ্য অপরাধের অভিযোগে পুলিশ অভিযুক্ত যেকোনো ব্যক্তিকে ম্যাজিস্ট্রেট বা আদালতের অনুমতি ছাড়াই বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করতে পারে। পুলিশের এই বিশেষ অধিকারকে নিয়ন্ত্রণ বা ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৭ ধারায় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যা ওই ধারায় পরিষ্কার ও বিস্তারিত উল্লেখ আছে।
ইদানীং আমাদের দেশের বিভিন্ন অধস্তন আদালতে লক্ষ করা যাচ্ছে যে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ফৌজদারি মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণকৃত অভিযুক্ত ব্যক্তিকে জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানো হচ্ছে এবং পরে পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের রিমান্ড মঞ্জুর করা হচ্ছে, যা আমার দৃষ্টিতে সম্পূর্ণভাবে আইনবহির্ভূত।
রিমান্ড অর্থ রিটার্ন ব্যাক, অর্থাৎ সোজা বাংলায় ফেরত দেওয়া বা ফেরত পাঠানো। আমাদের ফৌজদারি আইনানুসারে রিমান্ড দুই ধরনের। একটি পুলিশি রিমান্ড ও অন্যটি জুডিশিয়াল রিমান্ড। পুলিশি রিমান্ড, অর্থাৎ জিজ্ঞাসাবাদ শেষ করার জন্য পুলিশি হেফাজতে ফেরত দেওয়া এবং জুডিশিয়াল রিমান্ড, অর্থাৎ কারাগারে ফেরত পাঠানো। ফৌ.কা.বি.-এর ১৬৭ (২) ধারা ছাড়া কোথাও রিমান্ড বা পুলিশের হেফাজতে দেওয়ার কথা বলা নেই। ফৌ.কা.বি. ৩৪৪-এ শুধু জুডিশিয়াল রিমান্ড বিষয়ে বলা হয়েছে। লেখার পরিধি বৃদ্ধি না করার জন্য আমি ফৌজদারি কার্যবিধির ৬১, ১৬৭ ও ৩৪৪ ধারার হুবহু উল্লেখ করলাম না। ফৌ.কা.বি. ৬১ ধারায় পরিষ্কার বলা আছে যে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিকে ২৪ ঘণ্টার বেশি আটকে রাখা যাবে না। এর পরে ফৌ.কা.বি. ১৬৭ (১) ও ১৬৭ (২) ধারায় সুস্পষ্ট বর্ণনা করা হয়েছে যে, ৬১ ধারামতে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির অপরাধের তদন্ত যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শেষ করা না যায়, তবে কেস ডায়েরিসহ নিকটস্থ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে প্রেরণ বা ফরোয়ার্ড করবেন। সে ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেট সব কাগজপত্র ও মামলার গুণাগুণ বিবেচনায় নিয়ে অনধিক ১৫ দিন পর্যন্ত পুলিশি রিমান্ড মঞ্জুর বা নামঞ্জুর করতে পারবেন। রিমান্ড চাইলে প্রথম দিনেই চাইতে হবে, পরে চাওয়ার সুযোগ নেই। যদিও এই আইনানুগ বিধানটাও আমরা যথাযথভাবে অনুসরণ করতে পারছি না। আমরা ফৌ.কা.বি.-এর ৬১ ও ১৬৭ ধারার আলোকে বলতে পারি যে, শুধু বিনা পরোয়ানায় পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির অপরাধের তদন্ত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শেষ করা না গেলে তদন্ত শেষ করার জন্য ম্যাজিস্ট্রেট আসামিকে সর্বোচ্চ ১৫ দিনের জন্য পুলিশের রিমান্ড মঞ্জুর করতে পারবেন, অন্যথায় নয়। অর্থাৎ আদালতে আত্মসমর্পণ করার পর যখন আসামির জামিন নাকচ করে আদালত জেলহাজত বা জুডিশিয়াল রিমান্ডে দেন, সে ক্ষেত্রে ফৌ.কা.বি. ১৬৭ (১) ও (২) ধারানুযায়ী আর পুলিশ রিমান্ডের কোনো সুযোগ নেই।
এ প্রসঙ্গে এলাহাবাদ হাইকোর্ট কেদার বনাম রাষ্ট্র, ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৭, ১৯৭৭ ক্রি. ল. জার্নাল ১২৩০, ৫৫ ডি. এল. আর. পাতা-৩৬৩ (এইচ. সি.)-এর ২০ নং প্যারা, ২৪ বি. এল. ডি. পাতা-২০৫ (এইচ. সি.), ৯ বি. এল. সি. পাতা-১৫৬ (এ. ডি.) এবং দিল্লি হাইকোর্ট ত্রিলোচন সিং বনাম রাষ্ট্র (দিল্লি প্রশাসন), ১৭ জুলাই ১৯৮১, ২০ (১৯৮১) ডি. এল. টি. ২০ বি, ১৯৫৬ ক্রি. ল. জার্নাল-৬১৯ সিদ্ধান্তগুলোর আলোকে বলা যায় যে, আদালতে আত্মসমর্পণ করা কোনো ব্যক্তিকে রিমান্ডে নেওয়া যাবে না।
ফৌ.কা.বি. ৩৪৪-এ রিমান্ড অর্থ জুডিশিয়াল রিমান্ড বা জেলখানায় প্রেরণ, অপরপক্ষে ফৌ.কা.বি. ১৬৭-এ রিমান্ড পুলিশি হেফাজতে বা জেলখানায় প্রেরণ দুটিই হতে পারে। ফৌ.কা.বি. ১৬৭ ধারায় বলা আছে, ‘ইনভেস্টিগেশন’ শেষ না হলে রিমান্ড হতে পারে, অন্যদিকে ফৌ.কা.বি. ৩৪৪ ধারায় বলা আছে, ‘ইনকোয়ারি’ অথবা ট্রায়ালের প্রয়োজন হলে রিমান্ড হতে পারে। ফৌজদারি কার্যবিধি অনুসারে ইনকোয়ারি ও ইনভেস্টিগেশন সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। ইনভেস্টিগেশন পুলিশের দ্বারা পরিচালিত হবে; অন্যদিকে ইনকোয়ারি ম্যাজিস্ট্রেট বা আদালত দ্বারা পরিচালিত হবে। ইনভেস্টিগেশন পর্যায়ে কোনো ব্যক্তি গ্রেপ্তার হতে পারে, অপরপক্ষে ইনকোয়ারি পর্যায়ে কোনো ব্যক্তি গ্রেপ্তার হবে না। অর্থাৎ ফৌ.কা.বি. ৩৪৪ ধারা অনুযায়ী পুলিশি রিমান্ডের কোনো সুযোগ নেই।
লেখক: সাধারণ সম্পাদক, রাজশাহী অ্যাডভোকেট বার অ্যাসোসিয়েশন
আমাদের দেশের ফৌজদারি বিচারব্যবস্থায় পুলিশ রিমান্ড একটি বহুল আলোচিত বিষয়। ফৌ.কা.বি. ৬১ ধারা অনুযায়ী, যেকোনো আমলযোগ্য অপরাধের অভিযোগে পুলিশ অভিযুক্ত যেকোনো ব্যক্তিকে ম্যাজিস্ট্রেট বা আদালতের অনুমতি ছাড়াই বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করতে পারে। পুলিশের এই বিশেষ অধিকারকে নিয়ন্ত্রণ বা ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৭ ধারায় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যা ওই ধারায় পরিষ্কার ও বিস্তারিত উল্লেখ আছে।
ইদানীং আমাদের দেশের বিভিন্ন অধস্তন আদালতে লক্ষ করা যাচ্ছে যে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ফৌজদারি মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণকৃত অভিযুক্ত ব্যক্তিকে জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানো হচ্ছে এবং পরে পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের রিমান্ড মঞ্জুর করা হচ্ছে, যা আমার দৃষ্টিতে সম্পূর্ণভাবে আইনবহির্ভূত।
রিমান্ড অর্থ রিটার্ন ব্যাক, অর্থাৎ সোজা বাংলায় ফেরত দেওয়া বা ফেরত পাঠানো। আমাদের ফৌজদারি আইনানুসারে রিমান্ড দুই ধরনের। একটি পুলিশি রিমান্ড ও অন্যটি জুডিশিয়াল রিমান্ড। পুলিশি রিমান্ড, অর্থাৎ জিজ্ঞাসাবাদ শেষ করার জন্য পুলিশি হেফাজতে ফেরত দেওয়া এবং জুডিশিয়াল রিমান্ড, অর্থাৎ কারাগারে ফেরত পাঠানো। ফৌ.কা.বি.-এর ১৬৭ (২) ধারা ছাড়া কোথাও রিমান্ড বা পুলিশের হেফাজতে দেওয়ার কথা বলা নেই। ফৌ.কা.বি. ৩৪৪-এ শুধু জুডিশিয়াল রিমান্ড বিষয়ে বলা হয়েছে। লেখার পরিধি বৃদ্ধি না করার জন্য আমি ফৌজদারি কার্যবিধির ৬১, ১৬৭ ও ৩৪৪ ধারার হুবহু উল্লেখ করলাম না। ফৌ.কা.বি. ৬১ ধারায় পরিষ্কার বলা আছে যে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিকে ২৪ ঘণ্টার বেশি আটকে রাখা যাবে না। এর পরে ফৌ.কা.বি. ১৬৭ (১) ও ১৬৭ (২) ধারায় সুস্পষ্ট বর্ণনা করা হয়েছে যে, ৬১ ধারামতে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির অপরাধের তদন্ত যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শেষ করা না যায়, তবে কেস ডায়েরিসহ নিকটস্থ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে প্রেরণ বা ফরোয়ার্ড করবেন। সে ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেট সব কাগজপত্র ও মামলার গুণাগুণ বিবেচনায় নিয়ে অনধিক ১৫ দিন পর্যন্ত পুলিশি রিমান্ড মঞ্জুর বা নামঞ্জুর করতে পারবেন। রিমান্ড চাইলে প্রথম দিনেই চাইতে হবে, পরে চাওয়ার সুযোগ নেই। যদিও এই আইনানুগ বিধানটাও আমরা যথাযথভাবে অনুসরণ করতে পারছি না। আমরা ফৌ.কা.বি.-এর ৬১ ও ১৬৭ ধারার আলোকে বলতে পারি যে, শুধু বিনা পরোয়ানায় পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির অপরাধের তদন্ত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শেষ করা না গেলে তদন্ত শেষ করার জন্য ম্যাজিস্ট্রেট আসামিকে সর্বোচ্চ ১৫ দিনের জন্য পুলিশের রিমান্ড মঞ্জুর করতে পারবেন, অন্যথায় নয়। অর্থাৎ আদালতে আত্মসমর্পণ করার পর যখন আসামির জামিন নাকচ করে আদালত জেলহাজত বা জুডিশিয়াল রিমান্ডে দেন, সে ক্ষেত্রে ফৌ.কা.বি. ১৬৭ (১) ও (২) ধারানুযায়ী আর পুলিশ রিমান্ডের কোনো সুযোগ নেই।
এ প্রসঙ্গে এলাহাবাদ হাইকোর্ট কেদার বনাম রাষ্ট্র, ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৭, ১৯৭৭ ক্রি. ল. জার্নাল ১২৩০, ৫৫ ডি. এল. আর. পাতা-৩৬৩ (এইচ. সি.)-এর ২০ নং প্যারা, ২৪ বি. এল. ডি. পাতা-২০৫ (এইচ. সি.), ৯ বি. এল. সি. পাতা-১৫৬ (এ. ডি.) এবং দিল্লি হাইকোর্ট ত্রিলোচন সিং বনাম রাষ্ট্র (দিল্লি প্রশাসন), ১৭ জুলাই ১৯৮১, ২০ (১৯৮১) ডি. এল. টি. ২০ বি, ১৯৫৬ ক্রি. ল. জার্নাল-৬১৯ সিদ্ধান্তগুলোর আলোকে বলা যায় যে, আদালতে আত্মসমর্পণ করা কোনো ব্যক্তিকে রিমান্ডে নেওয়া যাবে না।
ফৌ.কা.বি. ৩৪৪-এ রিমান্ড অর্থ জুডিশিয়াল রিমান্ড বা জেলখানায় প্রেরণ, অপরপক্ষে ফৌ.কা.বি. ১৬৭-এ রিমান্ড পুলিশি হেফাজতে বা জেলখানায় প্রেরণ দুটিই হতে পারে। ফৌ.কা.বি. ১৬৭ ধারায় বলা আছে, ‘ইনভেস্টিগেশন’ শেষ না হলে রিমান্ড হতে পারে, অন্যদিকে ফৌ.কা.বি. ৩৪৪ ধারায় বলা আছে, ‘ইনকোয়ারি’ অথবা ট্রায়ালের প্রয়োজন হলে রিমান্ড হতে পারে। ফৌজদারি কার্যবিধি অনুসারে ইনকোয়ারি ও ইনভেস্টিগেশন সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। ইনভেস্টিগেশন পুলিশের দ্বারা পরিচালিত হবে; অন্যদিকে ইনকোয়ারি ম্যাজিস্ট্রেট বা আদালত দ্বারা পরিচালিত হবে। ইনভেস্টিগেশন পর্যায়ে কোনো ব্যক্তি গ্রেপ্তার হতে পারে, অপরপক্ষে ইনকোয়ারি পর্যায়ে কোনো ব্যক্তি গ্রেপ্তার হবে না। অর্থাৎ ফৌ.কা.বি. ৩৪৪ ধারা অনুযায়ী পুলিশি রিমান্ডের কোনো সুযোগ নেই।
লেখক: সাধারণ সম্পাদক, রাজশাহী অ্যাডভোকেট বার অ্যাসোসিয়েশন
দলীয় রাজনৈতিক সরকারের সঙ্গে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের তুলনা হতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন পাশে রেখেই ইউনূস সরকারের কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে এর ১০০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার সময়টায়। তবে সাধারণ মানুষ মনে হয় প্রতিদিনই তার জীবনে সরকারের ভূমিকা বিচার করে দেখছে।
৬ ঘণ্টা আগেশেখ হাসিনা সরকারের পতনের ১০০ দিন পার হয়ে গেছে। ১০০ দিনে অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা কিছু যে হয়নি, তা নয়। তবে দেশ পরিচালনার দায়িত্বে যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্যে অস্থিরতার লক্ষণ অস্পষ্ট নয়। এর মধ্যেই তিন দফায় উপদেষ্টার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
৬ ঘণ্টা আগেবাংলা ভাষায় অতিপরিচিত একটি শব্দবন্ধ হলো ‘খোলনলচে’। যাপিত জীবনে কমবেশি আমরা সবাই শব্দবন্ধটি প্রয়োগ করেছি। বাংলা বাগধারায় আমরা পড়েছি ‘খোলনলচে পালটানো’। বাংলা অভিধানে খোল শব্দের একাধিক অর্থ রয়েছে।
৬ ঘণ্টা আগেঅফিসে যাতায়াতের সময় স্টাফ বাসে পরিচয়ের সূত্রে ফারজানা আক্তার আজিমপুরে নিজের বাসায় সাবলেট দিয়েছিলেন ফাতেমা আক্তার শাপলা নামের এক নারীকে। কিন্তু ফাতেমা যে একটি প্রতারক চক্রের সদস্য, সেটা তাঁর জানা ছিল না।
৬ ঘণ্টা আগে