শহীদুল ইসলাম, ঢাকা
নতুন শিক্ষাক্রমে বদলে যাচ্ছে শিক্ষার খোলনলচে। নতুন ধারার এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের আগে প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিকের সব শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। কিন্তু প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। আগামী বছর নতুন শিক্ষাক্রম পরীক্ষামূলকভাবে শুরুর আগেই তাঁদের প্রশিক্ষণ শুরু করবে সরকার।
নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হলে শুধু ক্লাসের পড়া আর মুখস্থ নির্ভর থাকছে। এই কার্যক্রমে শিক্ষকের পাশাপাশি সহপাঠী, অভিভাবক ছাড়াও প্রকল্প অনুসারে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ শিক্ষার্থীদের শিখনকালীন মূল্যায়ন করবেন। তবে মূল্যায়ন বা পড়ানোর সবচেয়ে বড় দায়িত্ব থাকবে শিক্ষকদের। ফলে নতুন শিক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নে শিক্ষকদের প্রস্তুত করাই বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ অধিকাংশ শিক্ষক প্রচলিত ধারার সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে পরিচিত। সেই অভ্যাস থেকে বেরিয়ে নতুন ব্যবস্থার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়াটা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নের আগেই সব শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
করোনা মহামারির মধ্যে সশরীরের পাশাপাশি অনলাইনেও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আগামী বছর থেকে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ শুরু হবে। পাইলটিংয়ে যাওয়ার আগে কারিকুলাম চূড়ান্ত করে পাঠ্যবই ছাপানো হবে।
নতুন শিক্ষাক্রমে সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়া হবে কিনা, সেই সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। চূড়ান্ত শিক্ষাক্রমে প্রশ্নের ধরন, মূল্যায়নের পদ্ধতি এবং শিখনকালীন মূল্যায়নের কৌশল ও মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত বলে দেওয়া হবে বলে জানান অধ্যাপক নারায়ণ।
জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমির মহাপরিচালক মো. শাহ আলম আকজের পত্রিকাকে বলেন, ‘নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী প্রাথমিকের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। এখন তাঁদের যেভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে তাতে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হবে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পেলেই আমরা শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ শুরু করব।’
এ বিষয়ে ব্র্যাকের চেয়ারপারসন ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলছেন, ‘সব শিক্ষককে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা চ্যালেঞ্জ তো হবেই। কারণ শিক্ষকদের প্রশিক্ষণে কোনো জোরালো কার্যক্রম আমাদের নেই। নতুন পাঠ্যক্রম বাস্তবভিত্তিক। সে জন্য সুচিন্তিত কার্যক্রম নিয়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। এ জন্য যা অর্থ লাগবে তা সরকারকে দিতে হবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা অনুষদের অধ্যাপক এসএম হাফিজুর রহমান মনে করেন, সব শিক্ষককে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ হবে। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বিভিন্ন সময় শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হলেও ক্লাসরুম তার ভালো কিছু পাওয়া যায় না। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ শুরুর আগে এ বিষয়ে ছক করে নিতে হবে। কোন শিক্ষকের কোন বিষয়ে প্রশিক্ষণ লাগবে তা চিহ্নিত করে নিতে হবে।
শিক্ষার্থীদের ওপর থেকে চাপ কমিয়ে পড়াশোনার পরিবেশ আনন্দময় করতে গত সোমবার নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রম অনুমোদন করেছে সরকার। এদিকে আগামী বছর থেকে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু করে ২০২৫ সালের মধ্যে ধাপে ধাপে এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। মাদ্রাসা ও কারিগরির শিক্ষার্থীদেরও নতুন এই শিক্ষাক্রমের আওতায় আনা হয়েছে। তবে ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীরা আগের মতোই ব্রিটিশ কাউন্সিলের সিলেবাস অনুযায়ী পড়বে।
নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী, প্রাক-প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা হবে না। এই চার ক্লাসে শিক্ষার্থীদের শুধু শিখনকালীন মূল্যায়ন করা হবে। চতুর্থ থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ৪০ শতাংশ নম্বরের জন্য পরীক্ষা দেবেন, বাকি ৬০ শতাংশ নম্বর আসবে তাদের শিখনকালীন মূল্যায়নের মাধ্যমে। নবম-দশমে ৫০ শতাংশ নম্বরের জন্য পরীক্ষা, বাকি ৫০ শতাংশ নম্বর শিখনকালীন এবং একাদশ-দ্বাদশে ৭০ শতাংশ নম্বর পরীক্ষা এবং ৩০ শতাংশ নম্বর শিখনকালীন মূল্যায়নে দেওয়া হবে। পরীক্ষার নম্বরের সঙ্গে শিখনকালীন মূল্যায়ন যোগ করে মূল ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম উন্নয়ন ও পরিমার্জন কোর কমিটির সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মোহাম্মদ তারিক আহসান গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নতুন শিক্ষাক্রমে একজন শিক্ষার্থী আরেক শিক্ষার্থীকে মূল্যায়ন করবে। অভিভাবক সন্তানদের মূল্যায়ন করবেন। এ ছাড়া কমিউনিটিভিত্তিক মূল্যায়ন হবে। শিক্ষার্থীদের প্রকল্পভিত্তিক যেসব বিষয় শেখানো হবে, প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা মূল্যায়ন করবেন। শিক্ষার্থীদের শুধু শিক্ষকই মূল্যায়ন করবেন, সেই সুযোগ আর থাকছে না।’
জাতীয় শিক্ষানীতি অনুযায়ী, প্রাক-প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক স্তর এবং নবম থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত মাধ্যমিক স্তর হওয়ার কথা থাকলে নতুন শিক্ষাক্রম সেভাবে হয়নি। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের একজন কর্মকর্তা বলেন, জাতীয় শিক্ষানীতি পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হওয়ায় পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক, ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত মাধ্যমিক এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর ধরে নতুন শিক্ষাক্রম করা হয়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনাকে আরও আনন্দময় করতে তাদের টেক্সট বুক কমিয়ে ওয়ার্ডবুক ও টিচার্স গাইড করা হবে। শিক্ষক কীভাবে ক্লাসে পড়াবেন তা টিচার্স গাইডে বিস্তারিতভাবে বলা থাকবে। কোন বিষয়গুলো পড়াতে হবে তা ওয়ার্ডবুকে নির্দেশক হিসেবে দেওয়া হবে, শিক্ষক সেসব বিষয়ে শিক্ষার্থীদের ধারণা দেবেন। অন্য সোর্সগুলো খুঁজে পেতে সহায়তা করবেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের আগেই সব শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এ জন্য শিক্ষাক্রমের রূপরেখায় শিক্ষকদের স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণের প্রস্তাব করা হয়েছে। আগামী বছর থেকেই শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ শুরু হবে। নতুন করে যারা শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাবেন তাদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণেও নতুন পাঠ্যক্রমের বিষয়টি রাখা হবে। নতুন শিক্ষাক্রমে শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের নাম বদলে ‘ভালো থাকা’ করা হবে। এই বইয়ে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে শিক্ষার্থীদের শেখানো হবে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের একজন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে জানান, নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শুধু দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির আলোকে এসএসসি পরীক্ষা হবে। একাদশ শ্রেণিতে একটি এবং দ্বাদশে আরেকটি পাবলিক পরীক্ষা নেবে সংশ্লিষ্ট বোর্ড। এই দুই পরীক্ষার ফলের সঙ্গে একাদশ ও দ্বাদশের শিখনকালীন মূল্যায়নের ফল যোগ করে এইচএসসির ফল প্রকাশ করা হবে।
নতুন শিক্ষাক্রম চালু হলে শুক্র ও শনিবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। প্রাক-প্রাথমিকে ৫০০ ঘণ্টা, প্রথম-তৃতীয় শ্রেণিতে ৬৩০ ঘণ্টা, চতুর্থ-পঞ্চম শ্রেণিতে ৮৪০ ঘণ্টা, ষষ্ঠ-অষ্টম শ্রেণিতে ১০৫০ ঘণ্টা, নবম-দশম শ্রেণিতে ১১১৭.৫ ঘণ্টা এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে ১১৬৭.৫ ঘণ্টা শিখন সময় (বছরে) নির্ধারণ করা হয়েছে।
আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বলেন, সময় উপযোগী শিক্ষাক্রম ঘোষণা করেছে সরকার। এখন ১৬ বছর পর্যন্ত সব শিক্ষার্থী সমান জ্ঞান অর্জনের সুযোগ পাবে। একমুখী শিক্ষার জন্য এ ধরনের শিক্ষাক্রমের প্রয়োজন ছিল।
নতুন শিক্ষাক্রমে বদলে যাচ্ছে শিক্ষার খোলনলচে। নতুন ধারার এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের আগে প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিকের সব শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। কিন্তু প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। আগামী বছর নতুন শিক্ষাক্রম পরীক্ষামূলকভাবে শুরুর আগেই তাঁদের প্রশিক্ষণ শুরু করবে সরকার।
নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হলে শুধু ক্লাসের পড়া আর মুখস্থ নির্ভর থাকছে। এই কার্যক্রমে শিক্ষকের পাশাপাশি সহপাঠী, অভিভাবক ছাড়াও প্রকল্প অনুসারে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ শিক্ষার্থীদের শিখনকালীন মূল্যায়ন করবেন। তবে মূল্যায়ন বা পড়ানোর সবচেয়ে বড় দায়িত্ব থাকবে শিক্ষকদের। ফলে নতুন শিক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নে শিক্ষকদের প্রস্তুত করাই বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ অধিকাংশ শিক্ষক প্রচলিত ধারার সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে পরিচিত। সেই অভ্যাস থেকে বেরিয়ে নতুন ব্যবস্থার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়াটা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নের আগেই সব শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
করোনা মহামারির মধ্যে সশরীরের পাশাপাশি অনলাইনেও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আগামী বছর থেকে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ শুরু হবে। পাইলটিংয়ে যাওয়ার আগে কারিকুলাম চূড়ান্ত করে পাঠ্যবই ছাপানো হবে।
নতুন শিক্ষাক্রমে সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়া হবে কিনা, সেই সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। চূড়ান্ত শিক্ষাক্রমে প্রশ্নের ধরন, মূল্যায়নের পদ্ধতি এবং শিখনকালীন মূল্যায়নের কৌশল ও মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত বলে দেওয়া হবে বলে জানান অধ্যাপক নারায়ণ।
জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমির মহাপরিচালক মো. শাহ আলম আকজের পত্রিকাকে বলেন, ‘নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী প্রাথমিকের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। এখন তাঁদের যেভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে তাতে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হবে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পেলেই আমরা শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ শুরু করব।’
এ বিষয়ে ব্র্যাকের চেয়ারপারসন ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলছেন, ‘সব শিক্ষককে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা চ্যালেঞ্জ তো হবেই। কারণ শিক্ষকদের প্রশিক্ষণে কোনো জোরালো কার্যক্রম আমাদের নেই। নতুন পাঠ্যক্রম বাস্তবভিত্তিক। সে জন্য সুচিন্তিত কার্যক্রম নিয়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। এ জন্য যা অর্থ লাগবে তা সরকারকে দিতে হবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা অনুষদের অধ্যাপক এসএম হাফিজুর রহমান মনে করেন, সব শিক্ষককে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ হবে। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বিভিন্ন সময় শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হলেও ক্লাসরুম তার ভালো কিছু পাওয়া যায় না। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ শুরুর আগে এ বিষয়ে ছক করে নিতে হবে। কোন শিক্ষকের কোন বিষয়ে প্রশিক্ষণ লাগবে তা চিহ্নিত করে নিতে হবে।
শিক্ষার্থীদের ওপর থেকে চাপ কমিয়ে পড়াশোনার পরিবেশ আনন্দময় করতে গত সোমবার নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রম অনুমোদন করেছে সরকার। এদিকে আগামী বছর থেকে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু করে ২০২৫ সালের মধ্যে ধাপে ধাপে এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। মাদ্রাসা ও কারিগরির শিক্ষার্থীদেরও নতুন এই শিক্ষাক্রমের আওতায় আনা হয়েছে। তবে ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীরা আগের মতোই ব্রিটিশ কাউন্সিলের সিলেবাস অনুযায়ী পড়বে।
নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী, প্রাক-প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা হবে না। এই চার ক্লাসে শিক্ষার্থীদের শুধু শিখনকালীন মূল্যায়ন করা হবে। চতুর্থ থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ৪০ শতাংশ নম্বরের জন্য পরীক্ষা দেবেন, বাকি ৬০ শতাংশ নম্বর আসবে তাদের শিখনকালীন মূল্যায়নের মাধ্যমে। নবম-দশমে ৫০ শতাংশ নম্বরের জন্য পরীক্ষা, বাকি ৫০ শতাংশ নম্বর শিখনকালীন এবং একাদশ-দ্বাদশে ৭০ শতাংশ নম্বর পরীক্ষা এবং ৩০ শতাংশ নম্বর শিখনকালীন মূল্যায়নে দেওয়া হবে। পরীক্ষার নম্বরের সঙ্গে শিখনকালীন মূল্যায়ন যোগ করে মূল ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম উন্নয়ন ও পরিমার্জন কোর কমিটির সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মোহাম্মদ তারিক আহসান গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নতুন শিক্ষাক্রমে একজন শিক্ষার্থী আরেক শিক্ষার্থীকে মূল্যায়ন করবে। অভিভাবক সন্তানদের মূল্যায়ন করবেন। এ ছাড়া কমিউনিটিভিত্তিক মূল্যায়ন হবে। শিক্ষার্থীদের প্রকল্পভিত্তিক যেসব বিষয় শেখানো হবে, প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা মূল্যায়ন করবেন। শিক্ষার্থীদের শুধু শিক্ষকই মূল্যায়ন করবেন, সেই সুযোগ আর থাকছে না।’
জাতীয় শিক্ষানীতি অনুযায়ী, প্রাক-প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক স্তর এবং নবম থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত মাধ্যমিক স্তর হওয়ার কথা থাকলে নতুন শিক্ষাক্রম সেভাবে হয়নি। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের একজন কর্মকর্তা বলেন, জাতীয় শিক্ষানীতি পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হওয়ায় পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক, ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত মাধ্যমিক এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর ধরে নতুন শিক্ষাক্রম করা হয়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনাকে আরও আনন্দময় করতে তাদের টেক্সট বুক কমিয়ে ওয়ার্ডবুক ও টিচার্স গাইড করা হবে। শিক্ষক কীভাবে ক্লাসে পড়াবেন তা টিচার্স গাইডে বিস্তারিতভাবে বলা থাকবে। কোন বিষয়গুলো পড়াতে হবে তা ওয়ার্ডবুকে নির্দেশক হিসেবে দেওয়া হবে, শিক্ষক সেসব বিষয়ে শিক্ষার্থীদের ধারণা দেবেন। অন্য সোর্সগুলো খুঁজে পেতে সহায়তা করবেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের আগেই সব শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এ জন্য শিক্ষাক্রমের রূপরেখায় শিক্ষকদের স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণের প্রস্তাব করা হয়েছে। আগামী বছর থেকেই শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ শুরু হবে। নতুন করে যারা শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাবেন তাদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণেও নতুন পাঠ্যক্রমের বিষয়টি রাখা হবে। নতুন শিক্ষাক্রমে শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের নাম বদলে ‘ভালো থাকা’ করা হবে। এই বইয়ে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে শিক্ষার্থীদের শেখানো হবে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের একজন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে জানান, নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শুধু দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির আলোকে এসএসসি পরীক্ষা হবে। একাদশ শ্রেণিতে একটি এবং দ্বাদশে আরেকটি পাবলিক পরীক্ষা নেবে সংশ্লিষ্ট বোর্ড। এই দুই পরীক্ষার ফলের সঙ্গে একাদশ ও দ্বাদশের শিখনকালীন মূল্যায়নের ফল যোগ করে এইচএসসির ফল প্রকাশ করা হবে।
নতুন শিক্ষাক্রম চালু হলে শুক্র ও শনিবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। প্রাক-প্রাথমিকে ৫০০ ঘণ্টা, প্রথম-তৃতীয় শ্রেণিতে ৬৩০ ঘণ্টা, চতুর্থ-পঞ্চম শ্রেণিতে ৮৪০ ঘণ্টা, ষষ্ঠ-অষ্টম শ্রেণিতে ১০৫০ ঘণ্টা, নবম-দশম শ্রেণিতে ১১১৭.৫ ঘণ্টা এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে ১১৬৭.৫ ঘণ্টা শিখন সময় (বছরে) নির্ধারণ করা হয়েছে।
আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বলেন, সময় উপযোগী শিক্ষাক্রম ঘোষণা করেছে সরকার। এখন ১৬ বছর পর্যন্ত সব শিক্ষার্থী সমান জ্ঞান অর্জনের সুযোগ পাবে। একমুখী শিক্ষার জন্য এ ধরনের শিক্ষাক্রমের প্রয়োজন ছিল।
রাষ্ট্র পরিচালনায় স্থায়ী সমাধানের জন্য নতুন সংবিধান দরকার বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রচিন্তাবিদ অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক। তিনি বলেন, ‘বর্তমান যে সংবিধান চলছে, তা কোনোমতে চালানোর জন্য সংস্কার চাইছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। এটা দিয়ে কোনোমতে জোড়াতালি দিয়ে চলতে পারবে, কিন্তু একটি স্থায়ী সমাধানের জন্য
১ ঘণ্টা আগেরাজধানীর শাহ আলী মাজারের কাছে একটি কাঠের দোকান ছিল ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেনের। ২০১৯ সালের ১৯ জুন দুপুরে সেই দোকান থেকে তিনি বাসার দিকে যাচ্ছিলেন দুপুরের খাবার খেতে। পথে নিখোঁজ হন। তাঁর স্ত্রী নাসরিন জাহান জানিয়েছেন, নিখোঁজ হওয়ার আগে মিরপুরে র্যাব-৪ অফিসের কাছে তাঁর সর্বশেষ অবস্থান ছিল। ৫ বছর পেরিয়ে গে
২ ঘণ্টা আগেফ্যাসিবাদের দোসরেরা এখনো বিভিন্ন জায়গায় বহাল তবিয়তে রয়েছে। তাদের পরিহারের ঘোষণা দিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী (নাসির আব্দুল্লাহ) বলেছেন, ‘খুনি ও খুনের হুকুমদাতারা যদি তাদের স্কিলের কারণে থেকে যায়, তাহলে আমরা আরেকটি যুদ্ধ করতে বাধ্য হব।
৬ ঘণ্টা আগেসেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত বে অব বেঙ্গল সম্মেলন শুরু হচ্ছে আগামীকাল থেকে। এবারের সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোসহ বিভিন্ন দেশের ৮০০ জন অতিথি। প্রথম দিন অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তা হিসেবে থাকবেন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের
১২ ঘণ্টা আগে