পার্বত্য এলাকায় ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয় নিজ কক্ষে এই হুঁশিয়ারের কথা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়টি সরকার এখন আর হালকাভাবে নিচ্ছে না। এটি পরিকল্পিত কোনো ঘটনা কি না, তা ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। যারাই ঘটনায় জড়িত থাকুক, কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

এর আগে মঙ্গলবার রাতে বান্দরবানের রুমা উপজেলায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা সোনালী ব্যাংক থেকে ১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ও আনসার সদস্যদের ১৪টি অস্ত্র লুট করেছে। এ সময় ব্যাংক ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকেও তুলে নিয়ে যায় তারা। পরদিন বুধবার বেলা সাড়ে ১২টার পর থানচির সোনালী ও কৃষি ব্যাংকের শাখায় কেএনএফে ৩০ জনের সশস্ত্র দল হামলা চালায়। ঘটনার সময় আতঙ্কে উপজেলার সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীসহ স্থানীয়রা পালিয়ে যায়। সেখানে ব্যাংকের টাকা লুট করতে না পারলেও গ্রাহকদের কাছে থাকা টাকা মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে তারা। 

এসব ঘটনায় গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গণমাধ্যমকে বলেন, নতুন সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সদস্যরা এ ঘটনাগুলোর সঙ্গে জড়িত। রুমাতে সোনালী ব্যাংকে ঢোকার আগে বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন বন্ধ করেছিল। 

• রুমায় বিদ্যুতের সাব-স্টেশন বন্ধ করে সোনালী ব্যাংকে লুট করে সন্ত্রাসীরা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মঙ্গলবার হঠাৎ করেই পাহাড়ে ব্যাংক ডাকাতির একটা প্রচেষ্টা হয়েছে। রুমাতে সোনালী ব্যাংকে ঢোকার আগে বৈদ্যুতিক যে সাব-স্টেশন ছিল, সেটাকে বন্ধ করে তারা ব্যাংকের দিকে অগ্রসর হয়। সেখানে পুলিশ মোতায়েন ছিল। পুলিশ ও ব্যাংকের ম্যানেজার সবাই তারাবির নামাজে ছিল। সেই সময় তারা ঢুকে দুই পুলিশকে আহত করে দুটি এসএমজিও, আটটি চায়নিজ রাইফেল লুট করে। উপজেলা কমপ্লেক্সে আনসারদের শটগানগুলোও তারা নিয়ে নেয়।’ 

• রুমায় সোনালী ব্যাংক লুট, ম্যানেজারকে অপহরণ ও ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র ছিনতাই

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘হামলাকারীরা সোনালী ব্যাংকের একটা ভল্ট ভাঙে। আরেকটা ভাঙতে পারেনি। অফিশিয়াল কোনো সংবাদ এখনো পাওয়া যায়নি। সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজারকে জিম্মি করে নিয়ে গেছে। কত টাকা নিয়েছে, সেটা এখনো অফিশিয়ালি জানা যায়নি।’ 

• থানচির সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হানা, ১৭ লাখ টাকা লুট

এসব ঘটনায় কেএনএফ জড়িত উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘ইদানীং কুকি-চিন আবার বিভিন্নভাবে তাদের অবস্থান জানান দিচ্ছে। কুকি-চিন আগেও বান্দরবানে একটি জায়গায় অবস্থান করে জঙ্গি বাহিনীর সঙ্গে আঁতাত করে একটা ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করেছিল। আমাদের র‍্যাব ও আর্মি সেই ঘাঁটি সরিয়ে দিয়েছে।’