অনলাইন ডেস্ক
বিগত তিন দশকে বিশ্ব দরবারে উল্লেখ করার মতো ইতিবাচক অনেক কিছুই অর্জন করেছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে, দারিদ্র্য দূর করেছে এবং ক্ষুদ্রঋণের জন্ম দিয়ে সামাজিক উদ্যোগের সিলিকন ভ্যালিতে পরিণত হয়েছে। নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন আয়োজন করে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর মধ্যে কিছুটা হলেও আস্থার জায়গা তৈরি করেছে।
বিশ্বের কাপড়ের চাহিদা পূরণ করতে তৈরি পোশাকশিল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ লাখো নারীর কর্মসংস্থান তৈরি করেছে, যা শত শত কোটি ডলার বৈদেশিক মুদ্রা আনছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ বিশ্বের অষ্টম জনবহুল দেশের তালিকায় উঠে এসেছে। বিশ্বে যেসব ভাষায় মানুষ সবচেয়ে বেশি কথা বলে, সেগুলোর মধ্যে আমাদের জাতীয় ভাষা বাংলা পঞ্চম।
দুঃখজনকভাবে, গণতন্ত্রকে মুছে ফেলে একনায়কতান্ত্রিক শাসনের জন্যও কুখ্যাতি আমরা পেয়েছি। ২০১৪, ২০১৮ ও সবচেয়ে কুখ্যাত ২০২৪ সালের পাতানো নির্বাচন ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালের প্রাণবন্ত নির্বাচনের কৃতিত্বকে ম্লান করে দিয়েছে। ৩০ বছরের কম বয়সী কোনো বাংলাদেশিই এখন পর্যন্ত সুষ্ঠু নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি। বিগত ১৫ বছরে সরকার আমাদের দেশের অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানকে দুর্নীতিগ্রস্ত করেছে। বিশেষ করে, বিচার ও শিক্ষা বিভাগের আগাগোড়াই নষ্ট করে ফেলেছে তারা।
এর ফলে, বিভিন্ন খাতে আমাদের দেশের সেরা মেধাবী মুখগুলো দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। যাঁরা রয়ে গেছেন, তাঁদের হয় শেখ হাসিনার সামনে মাথা নত করতে হয়েছে, নয়তো নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছেন। আমি দ্বিতীয় পথটি বেছে নিয়েছিলাম এবং সে কারণেই গত সপ্তাহ পর্যন্ত আমার বিরুদ্ধে ১৯০টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমাদের বিরুদ্ধে একটি দায়ের করা মামলার সর্বোচ্চ দণ্ড যাবজ্জীবন। আমার বিরুদ্ধে জালিয়াতি, তহবিল তছরুপ ও অর্থ পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
জরুরি সামাজিক ও পরিবেশগত সমস্যা সমাধানে বাজারভিত্তিক পদ্ধতি ব্যবহার করে সামাজিক ব্যবসার পদ্ধতির রূপরেখার মতো পছন্দের বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করা ছেড়ে আমাকে আইনি প্রস্তুতি নিতে হয়েছে, আদালত কক্ষে সময় কাটাতে হয়েছে। তবে হয়রানির এই চক্রে আমি কেবল একাই পড়িনি। এই বিষয়ে পুরস্কারজয়ী আলোকচিত্রী শহীদুল আলম ও অন্যদের এই ব্যাপারে আপনারা জিজ্ঞেস করে দেখতে পারেন।
গত মাসজুড়ে ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ একনায়কতন্ত্রের হাত থেকে স্বাধীন হয়েছে। যদিও এই আন্দোলন সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থার সংস্কারকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত হয়েছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি গণ-আন্দোলনে রূপ নেয় এবং এক দফার—শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ—আন্দোলনে পরিণত হয়।
৫ আগস্ট আন্দোলনকারীদের দাবির মুখে প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) পালিয়ে গেলে সেই দাবি পূরণ হয়। দেশের সব নাগরিকের মতো আমিও আনন্দিত হয়েছিলাম। এমনকি আমি শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট সহিংসতায় তিন শতাধিক প্রাণহানিতে শোক প্রকাশ করেছিলাম। এখন সেই জীবনগুলো যেন বৃথা না যায়, তা নিশ্চিত করতে আমাদের নিজেদের অঙ্গীকারবদ্ধ হতে হবে এবং বাংলাদেশে গণতন্ত্র, সমৃদ্ধি ও ঐক্যের সোনালি যুগের সূচনা করতে হবে।
পরবর্তী পদক্ষেপটি হওয়া উচিত একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা; যারা রাজনৈতিক বিবেচনায় বন্দী—সবাইকে মুক্তি দেবে এবং একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন নিশ্চিত করবে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে। আমি এই প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করতে আগ্রহী এবং আশা করি অন্যরাও আমার সঙ্গে যোগ দেবেন।
আমাদের জরুরিভিত্তিক নতুন রাজনীতিবিদ ও এগিয়ে যাওয়ার জন্য নতুন নেতৃত্ব প্রয়োজন। সর্বোপরি, আমাদের এমন তরুণদের প্রয়োজন, যারা অতীতের ঘটনার প্রতিশোধ নিতে প্রতিহিংসাপরায়ণ নয়—যেমনটা আমরা অতীতের অনেক সরকারের ক্ষেত্রে দেখেছি। আমাদের এমন নেতা দরকার, যারা আমাদের মহান জাতির ভবিষ্যৎকে কেন্দ্র করে নতুন প্রজন্মের নেতা হওয়ার জন্য আগ্রহী। যে ছাত্রনেতারা আমাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতার অগ্রভাগে ছিলেন—১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতাযুদ্ধের পর—তাদের সর্বক্ষেত্রে নেতৃত্ব প্রদান অব্যাহত রাখতে হবে।
আমি তাদের মঙ্গল কামনা করি এবং উৎসাহের সঙ্গে তাদের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিচ্ছি। আমি তাদের ‘থ্রি জিরো ওয়ার্ল্ড’ বা ‘তিন শূন্যের বিশ্ব’ তৈরির লক্ষ্যে কাজ করতে উৎসাহিত করার চেষ্টা করব। সেই তিন শূন্য হলো—কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনা, সম্পদ এক জায়গায় ঘনীভূত হওয়ার হার শূন্যে নামিয়ে আনা এবং বেকারত্বের হার শূন্যে নামিয়ে আনা।
শেখ হাসিনার অধীনে যে অন্ধকার বছরগুলো আমরা পেরিয়ে এসেছি, সে সময়ও যারা বাংলাদেশি জনগণের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করেছেন—তাদের প্রতি, দেশের জনগণ ও প্রতিষ্ঠানের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। মানবাধিকার সংস্থা যেমন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং ক্লুনি ফাউন্ডেশন ফর জাস্টিস বিশেষভাবে সহায়তা করেছে। তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।
বিশ্বব্যাপী মানুষ আমাদের জনগণের জন্য ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে তাঁদের আওয়াজ তুলেছেন। প্রবাসী বাংলাদেশিরা, বিশেষ করে ছাত্র ও অন্যান্য তরুণ-তরুণীরা তাঁদের জন্মভূমিতে ন্যায়বিচার ও মুক্তি আনতে বিদেশ থেকে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। আমি আশা করি, তাঁদের মধ্যে অনেকেই আমাদের গণতন্ত্রকে পুনরুজ্জীবিত করতে ও আমাদের অর্থনীতি গড়ে তুলতে সাহায্য করবেন।
কিছু দেশ যেমন, ভারত বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশি জনগণের ঘৃণা কুড়িয়েছে। তবে এ ধরনের ক্ষত সারানো সম্ভব এবং শিগগিরই দ্বিপক্ষীয় জোট ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব পুনরায় শুরু করার অনেক সুযোগ আছে। প্রকৃতপক্ষে, আমি আশা করি যে আমাদের মুক্তি আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে স্থগিত দক্ষিণ এশিয়া সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) পুনরুজ্জীবিত করতে সহায়তা করবে এবং এটিকে আমাদের অঞ্চল ও এর বাইরের দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতার ক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী শক্তিতে পরিণত করবে।
দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের রাজনীতি ছিল পশ্চাদ্গামী। আসুন, আমরা ৫ আগস্ট যে দ্বিতীয় মুক্তির স্বাদ পেয়েছি, আজ তার প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে একটি ইতিবাচক ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার দিকে মনোনিবেশ করি। যারা আমাদের এই গুরুত্বপূর্ণ নতুন বিজয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাদের মধ্য থেকে নতুন প্রজন্মের তরুণ নেতাদের এগিয়ে আসা উচিত। জাতির জন্য তাদের শক্তি ও স্বপ্ন নতুন সুযোগ সৃষ্টির জন্য এই আন্দোলনে জীবন উৎসর্গকারীদের আত্মত্যাগকে মহিমান্বিত করতে পারে। এমন সুযোগ আমাদের হেলায় হারানো উচিত নয়।
দ্য ইকোনমিস্টে লিখিত ড. ইউনূসের নিবন্ধটি অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান
বিগত তিন দশকে বিশ্ব দরবারে উল্লেখ করার মতো ইতিবাচক অনেক কিছুই অর্জন করেছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে, দারিদ্র্য দূর করেছে এবং ক্ষুদ্রঋণের জন্ম দিয়ে সামাজিক উদ্যোগের সিলিকন ভ্যালিতে পরিণত হয়েছে। নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন আয়োজন করে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর মধ্যে কিছুটা হলেও আস্থার জায়গা তৈরি করেছে।
বিশ্বের কাপড়ের চাহিদা পূরণ করতে তৈরি পোশাকশিল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ লাখো নারীর কর্মসংস্থান তৈরি করেছে, যা শত শত কোটি ডলার বৈদেশিক মুদ্রা আনছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ বিশ্বের অষ্টম জনবহুল দেশের তালিকায় উঠে এসেছে। বিশ্বে যেসব ভাষায় মানুষ সবচেয়ে বেশি কথা বলে, সেগুলোর মধ্যে আমাদের জাতীয় ভাষা বাংলা পঞ্চম।
দুঃখজনকভাবে, গণতন্ত্রকে মুছে ফেলে একনায়কতান্ত্রিক শাসনের জন্যও কুখ্যাতি আমরা পেয়েছি। ২০১৪, ২০১৮ ও সবচেয়ে কুখ্যাত ২০২৪ সালের পাতানো নির্বাচন ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালের প্রাণবন্ত নির্বাচনের কৃতিত্বকে ম্লান করে দিয়েছে। ৩০ বছরের কম বয়সী কোনো বাংলাদেশিই এখন পর্যন্ত সুষ্ঠু নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি। বিগত ১৫ বছরে সরকার আমাদের দেশের অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানকে দুর্নীতিগ্রস্ত করেছে। বিশেষ করে, বিচার ও শিক্ষা বিভাগের আগাগোড়াই নষ্ট করে ফেলেছে তারা।
এর ফলে, বিভিন্ন খাতে আমাদের দেশের সেরা মেধাবী মুখগুলো দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। যাঁরা রয়ে গেছেন, তাঁদের হয় শেখ হাসিনার সামনে মাথা নত করতে হয়েছে, নয়তো নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছেন। আমি দ্বিতীয় পথটি বেছে নিয়েছিলাম এবং সে কারণেই গত সপ্তাহ পর্যন্ত আমার বিরুদ্ধে ১৯০টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমাদের বিরুদ্ধে একটি দায়ের করা মামলার সর্বোচ্চ দণ্ড যাবজ্জীবন। আমার বিরুদ্ধে জালিয়াতি, তহবিল তছরুপ ও অর্থ পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
জরুরি সামাজিক ও পরিবেশগত সমস্যা সমাধানে বাজারভিত্তিক পদ্ধতি ব্যবহার করে সামাজিক ব্যবসার পদ্ধতির রূপরেখার মতো পছন্দের বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করা ছেড়ে আমাকে আইনি প্রস্তুতি নিতে হয়েছে, আদালত কক্ষে সময় কাটাতে হয়েছে। তবে হয়রানির এই চক্রে আমি কেবল একাই পড়িনি। এই বিষয়ে পুরস্কারজয়ী আলোকচিত্রী শহীদুল আলম ও অন্যদের এই ব্যাপারে আপনারা জিজ্ঞেস করে দেখতে পারেন।
গত মাসজুড়ে ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ একনায়কতন্ত্রের হাত থেকে স্বাধীন হয়েছে। যদিও এই আন্দোলন সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থার সংস্কারকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত হয়েছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি গণ-আন্দোলনে রূপ নেয় এবং এক দফার—শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ—আন্দোলনে পরিণত হয়।
৫ আগস্ট আন্দোলনকারীদের দাবির মুখে প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) পালিয়ে গেলে সেই দাবি পূরণ হয়। দেশের সব নাগরিকের মতো আমিও আনন্দিত হয়েছিলাম। এমনকি আমি শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট সহিংসতায় তিন শতাধিক প্রাণহানিতে শোক প্রকাশ করেছিলাম। এখন সেই জীবনগুলো যেন বৃথা না যায়, তা নিশ্চিত করতে আমাদের নিজেদের অঙ্গীকারবদ্ধ হতে হবে এবং বাংলাদেশে গণতন্ত্র, সমৃদ্ধি ও ঐক্যের সোনালি যুগের সূচনা করতে হবে।
পরবর্তী পদক্ষেপটি হওয়া উচিত একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা; যারা রাজনৈতিক বিবেচনায় বন্দী—সবাইকে মুক্তি দেবে এবং একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন নিশ্চিত করবে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে। আমি এই প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করতে আগ্রহী এবং আশা করি অন্যরাও আমার সঙ্গে যোগ দেবেন।
আমাদের জরুরিভিত্তিক নতুন রাজনীতিবিদ ও এগিয়ে যাওয়ার জন্য নতুন নেতৃত্ব প্রয়োজন। সর্বোপরি, আমাদের এমন তরুণদের প্রয়োজন, যারা অতীতের ঘটনার প্রতিশোধ নিতে প্রতিহিংসাপরায়ণ নয়—যেমনটা আমরা অতীতের অনেক সরকারের ক্ষেত্রে দেখেছি। আমাদের এমন নেতা দরকার, যারা আমাদের মহান জাতির ভবিষ্যৎকে কেন্দ্র করে নতুন প্রজন্মের নেতা হওয়ার জন্য আগ্রহী। যে ছাত্রনেতারা আমাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতার অগ্রভাগে ছিলেন—১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতাযুদ্ধের পর—তাদের সর্বক্ষেত্রে নেতৃত্ব প্রদান অব্যাহত রাখতে হবে।
আমি তাদের মঙ্গল কামনা করি এবং উৎসাহের সঙ্গে তাদের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিচ্ছি। আমি তাদের ‘থ্রি জিরো ওয়ার্ল্ড’ বা ‘তিন শূন্যের বিশ্ব’ তৈরির লক্ষ্যে কাজ করতে উৎসাহিত করার চেষ্টা করব। সেই তিন শূন্য হলো—কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনা, সম্পদ এক জায়গায় ঘনীভূত হওয়ার হার শূন্যে নামিয়ে আনা এবং বেকারত্বের হার শূন্যে নামিয়ে আনা।
শেখ হাসিনার অধীনে যে অন্ধকার বছরগুলো আমরা পেরিয়ে এসেছি, সে সময়ও যারা বাংলাদেশি জনগণের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করেছেন—তাদের প্রতি, দেশের জনগণ ও প্রতিষ্ঠানের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। মানবাধিকার সংস্থা যেমন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং ক্লুনি ফাউন্ডেশন ফর জাস্টিস বিশেষভাবে সহায়তা করেছে। তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।
বিশ্বব্যাপী মানুষ আমাদের জনগণের জন্য ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে তাঁদের আওয়াজ তুলেছেন। প্রবাসী বাংলাদেশিরা, বিশেষ করে ছাত্র ও অন্যান্য তরুণ-তরুণীরা তাঁদের জন্মভূমিতে ন্যায়বিচার ও মুক্তি আনতে বিদেশ থেকে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। আমি আশা করি, তাঁদের মধ্যে অনেকেই আমাদের গণতন্ত্রকে পুনরুজ্জীবিত করতে ও আমাদের অর্থনীতি গড়ে তুলতে সাহায্য করবেন।
কিছু দেশ যেমন, ভারত বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশি জনগণের ঘৃণা কুড়িয়েছে। তবে এ ধরনের ক্ষত সারানো সম্ভব এবং শিগগিরই দ্বিপক্ষীয় জোট ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব পুনরায় শুরু করার অনেক সুযোগ আছে। প্রকৃতপক্ষে, আমি আশা করি যে আমাদের মুক্তি আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে স্থগিত দক্ষিণ এশিয়া সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) পুনরুজ্জীবিত করতে সহায়তা করবে এবং এটিকে আমাদের অঞ্চল ও এর বাইরের দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতার ক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী শক্তিতে পরিণত করবে।
দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের রাজনীতি ছিল পশ্চাদ্গামী। আসুন, আমরা ৫ আগস্ট যে দ্বিতীয় মুক্তির স্বাদ পেয়েছি, আজ তার প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে একটি ইতিবাচক ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার দিকে মনোনিবেশ করি। যারা আমাদের এই গুরুত্বপূর্ণ নতুন বিজয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাদের মধ্য থেকে নতুন প্রজন্মের তরুণ নেতাদের এগিয়ে আসা উচিত। জাতির জন্য তাদের শক্তি ও স্বপ্ন নতুন সুযোগ সৃষ্টির জন্য এই আন্দোলনে জীবন উৎসর্গকারীদের আত্মত্যাগকে মহিমান্বিত করতে পারে। এমন সুযোগ আমাদের হেলায় হারানো উচিত নয়।
দ্য ইকোনমিস্টে লিখিত ড. ইউনূসের নিবন্ধটি অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান
দেশে গত ১৫ বছরে ৮২টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দিয়েছে সরকার। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র শুধু ক্যাপাসিটি চার্জই (কেন্দ্রভাড়া) নিয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া বিনা দরপত্রে কেন্দ্র দেওয়ায় বিদ্যুতের দামও পড়েছে বেশি। সেই বাড়তি দাম গিয়ে পড়েছে সাধারণ ভোক্তার কাঁধে।
১ মিনিট আগেরাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে না বসলেও অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে বুদ্ধিজীবী, নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, নারীনেত্রী, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি, নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা, নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা, ইউটিউবারসহ বিভিন্ন অংশীজনের মতামত নিতে সভা করবে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। প্র
৭ ঘণ্টা আগেডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ১০৭ জন রোগী।
১৩ ঘণ্টা আগেপ্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত ‘কনফারেন্স অফ পার্টিস-২৯(কপ২৯)’ শীর্ষক বৈশ্বিক জলবায়ু সম্মেলনে যোগদান শেষে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দেশে ফিরেছেন।
১৩ ঘণ্টা আগে