সুলতান মাহমুদ
কপিরাইট আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে মোবাইল অপারেটর বাংলালিংকের চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নালিশি মামলা করেছিলেন নগর বাউল জেমস এবং মাইলসের হামিদ আহমেদ ও মানাম আহমেদ। পরে উভয়পক্ষের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আপস-মীমাংসা হওয়ায় তাঁরা মামলা প্রত্যাহার করেন।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে পৃথক দুটি মামলায় পৃথক আবেদন করে বাদী মামলা প্রত্যাহার করতে চান। বিচারক শুনানি শেষে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন মঞ্জুর করেন এবং বাংলালিংকের চার কর্মচারীকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন।
জেমস এই মামলা করেন ২০২১ সালের ১০ নভেম্বর। প্রায় একই সময় অপর দুজন পৃথক একটি মামলা করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, জেমসের অসংখ্য জনপ্রিয় গান আছে। কোনো ধরনের অনুমতি না নিয়েই জেমসের গান বাংলালিংক তাদের ওয়েলকাম টিউন, বিজ্ঞাপনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যবহার করে আসছে। বাংলালিংকের এই কর্মকাণ্ড কপিরাইট আইন লঙ্ঘনের শামিল। জনপ্রিয় ব্যান্ড দল মাইলসের কম্পোজার, গায়ক হামিদ আহমেদ ও মানাম আহমেদও একই অভিযোগে বাংলালিংকের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
ওপরের দৃষ্টান্ত থেকে স্পষ্ট যে বাদী চাইলে মামলা প্রত্যাহার করতে পারেন। তবে মামলা ভেদে এই প্রক্রিয়া আলাদা।
ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার
মামলা প্রত্যাহারের অর্থ হচ্ছে মামলা তুলে নেওয়া। একটি মামলা থানা বা আদালতে করার পর পরবর্তী সময় সেই মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া যায়। একটি মামলা কখন ও কীভাবে প্রত্যাহার করা যায় সে সম্পর্কে জানতে হলে আগে জানতে হবে বিভিন্ন মামলার শ্রেণি সম্পর্কে।
ফৌজদারি মামলা সাধারণত দুই ধরনের: এক. কমপ্লেইন্ট রেজিস্ট্রার (সিআর)। দুই. জেনারেল রেজিস্ট্রার (জিআর) মামলা
জিআর মামলা সাধারণত থানায় করা হয়। আর সিআর মামলা করতে হয় ফৌজদারি আদালতে।
জিআর মামলায় বাদীর পক্ষে রাষ্ট্র নিজেই আইনজীবী নিযুক্ত করে, যাদের বলা হয় হয় পাবলিক প্রসিকিউটর তথা রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি)। আর সিআর মামলাগুলোয় নালিশকারীকেই ব্যক্তিগতভাবে আইনজীবী নিযুক্ত করে মামলা পরিচালনা করতে হয়।
কোনো মামলায় পর্যাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমাণের অভাব বা পক্ষদের মধ্যে সমঝোতার কারণে বাদী মামলা প্রত্যাহার করতে পারেন। মামলা প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধিতে দুই ধরনের বিধান রাখা আছে। যেমন:
যেসব জিআর মামলা রাষ্ট্র নিজেই পক্ষ (অনেকে বলেন সরকার-বাদী মামলা), সেসব মামলায় পাবলিক প্রসিকিউটরের পক্ষ থেকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৪ ধারায় আদালতে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করা যায়।
আর সিআর মামলায় নালিশকারী বা তাঁর পক্ষ থেকে নিযুক্ত আইনজীবী আদালতে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করতে পারেন ফৌজদারি কার্যবিধির ২৪৮ ধারার অধীনে।
সরকারি কৌঁসুলির (পিপি) পক্ষ থেকে মামলা প্রত্যাহার
১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৪ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে করা মামলায় বিচারাধীন এক বা একাধিক অপরাধ সম্পর্কে মোকদ্দমা পরিচালনা থেকে সরে যেতে পারেন সরকারি কৌঁসুলি (পিপি)। তবে এর জন্য আদালতের অনুমতি নিতে হবে।
অভিযোগ গঠনের আগে সরে গেলে ওই এক বা একাধিক অপরাধ সম্পর্কে আসামি অব্যাহতি পাবেন। অভিযোগ গঠনের পর রাষ্ট্রপক্ষ সরে গেলে অথবা এই আইন অনুসারে কোনো অভিযোগ গঠন করার প্রয়োজন না হলে, ওই এক বা একাধিক অপরাধ থেকে আসামিকে খালাস দিতে হবে।
মামলা পরিচালনা থেকে সরে যাওয়ার উপযুক্ত কারণ সম্পর্কে পিপির বক্তব্যে আদালত সন্তুষ্ট হতে হবে। কার্যবিধির ৪৯৪ ধারার অধীনে মামলা প্রত্যাহারে বেশ কিছু বিষয় আদালতের পর্যবেক্ষণে গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে। যেমন:
প্রথমত, মামলা প্রত্যাহারের আবেদন কেবল পাবলিক প্রসিকিউটরের (পিপি) তরফ থেকেই হতে হবে। এজাহারকারী কিংবা আসামির আবেদন কিংবা সরকারের কোনো আদেশের বলে মামলা প্রত্যাহার করা যাবে না।
দ্বিতীয়ত, মামলা প্রত্যাহারের যুক্তিযুক্ত কারণ কৌঁসুলির পক্ষ থেকে আদালতের সামনে ব্যাখ্যা করতে হবে। কেবল সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর ভিত্তি করে আদালত মামলা প্রত্যাহারের আদেশ দেবেন না। মামলা প্রত্যাহার সম্পর্কে আদালতের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
সুতরাং, আদালত যদি মামলা প্রত্যাহারের কারণ সম্পর্কে সন্তুষ্ট না হন, সে ক্ষেত্রে প্রত্যাহারের অনুমতি না দিয়ে মামলা এগিয়ে নেওয়ার আদেশ দেবেন। মামলায় ভুক্তভোগী বা এজাহারকারী যদি মনে করেন রাষ্ট্রপক্ষ অহেতুক তাঁদের মামলাটি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন, সে ক্ষেত্রে ক্ষেত্রবিশেষে দায়রা জজ আদালত কিংবা হাইকোর্ট বিভাগে রিভিশন আবেদন করতে পারবেন।
নালিশকারীর পক্ষ থেকে মামলা প্রত্যাহার
১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধির ২৪৮ ধারায় বলা হয়েছে যে, কোনো মামলার চূড়ান্ত আদেশ হওয়ার আগে পর্যন্ত বিচারপ্রার্থী যদি ম্যাজিস্ট্রেটের সন্তোষ অর্জন করতে পারেন যে তাঁকে নালিশ প্রত্যাহারের অনুমতি দেওয়ার পর্যাপ্ত কারণ রয়েছে, তাহলে ম্যাজিস্ট্রেট তাঁকে সেই নালিশ প্রত্যাহারের অনুমতি দেবেন এবং আসামিকে খালাস দেবেন।
উল্লেখ্য, এই ধারাটি শুধু নিষ্পত্তিযোগ্য মামলার ক্ষেত্রে, যা ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪৫ ধারায় বর্ণনা করা হয়েছে। সে জন্য অভিযোগকারী এই ধারা অনুসারে নালিশ প্রত্যাহার করতে পারেন।
দেওয়ানি মামলা প্রত্যাহার
দেওয়ানি কার্যবিধির ২৩ আদেশের ১ নিয়ম অনুসারে, দেওয়ানি মামলা হওয়ার পর যেকোনো সময়ে বাদী সব বা যেকোনো বিবাদীর বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করতে বা আংশিক দাবি পরিত্যাগ করতে পারেন।
কোনো পদ্ধতিগত ত্রুটির কারণে মামলাটি ব্যর্থ হতে বাধ্য; মামলার বিষয়বস্তুর কারণে কিংবা কোনো দাবির অংশের জন্য নতুনভাবে মামলা করার জন্য বাদীকে অনুমতি দেওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে—মর্মে আদালত সম্মত হলে উপযুক্ত শর্তে বাদীকে মামলা প্রত্যাহার অথবা আংশিক দাবি পরিত্যাগ করার অনুমতি দিতে পারবেন।
এ ক্ষেত্রে ওই মামলার বিষয়বস্তু সম্পর্কে বা ওই রকম আংশিক দাবি সম্পর্কে আবার মামলা করার অনুমতি মঞ্জুর করতে পারেন আদালত।
আদালতের অনুমতি ছাড়া বাদী মামলা প্রত্যাহার করলে অথবা আংশিক দাবি পরিত্যাগ করলে, আদালতের সিদ্ধান্ত অনুসারে সেই বাদী মামলার খরচে জন্য দায়ী থাকবেন। এ ছাড়া ওই বিষয়বস্তু বা আংশিক দাবি সম্পর্কে নতুনভাবে কোনো মামলা করার অধিকার থেকে তিনি বঞ্চিত হবেন।
এই নিয়মের কোনো বিধান বলে আদালত কয়েকজন বাদীর মধ্যে একজনকে অন্যান্য বাদীর সম্মতি ছাড়া মামলা প্রত্যাহার করার অনুমতি দিতে পারেন না।
প্রত্যাহারের পর একই বিষয়ে মামলা করা যায় কি
নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে মামলা প্রত্যাহার করা হলে একই বিষয়ে আবার মামলা করা যায় না। দেওয়ানি মামলার ‘রেস-জুডিকাটা’ বা দোবারানীতি এবং ফৌজদারি মামলার দোবারা সাজা বা ‘ডাবল জিওপারডি’ নীতির আলোকে এ ধরনের মামলা করায় বাধা দেওয়া হয়। তবে উচ্চতর আদালতে রিভিশন আবেদন করে আদালতকে যদি সন্তুষ্ট করা যায়, সে ক্ষেত্রে পুনর্বিচার কিংবা পুনর্তদন্তের নির্দেশ ন্যায়বিচারের স্বার্থে আদালত দিতে পারেন। হাইকোর্ট বিভাগের সহজাত ক্ষমতার অধীনে এ ধরনের আদেশ দেওয়ার সুযোগ আছে।
লেখক: সহসম্পাদক, আজকের পত্রিকা
কপিরাইট আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে মোবাইল অপারেটর বাংলালিংকের চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নালিশি মামলা করেছিলেন নগর বাউল জেমস এবং মাইলসের হামিদ আহমেদ ও মানাম আহমেদ। পরে উভয়পক্ষের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আপস-মীমাংসা হওয়ায় তাঁরা মামলা প্রত্যাহার করেন।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে পৃথক দুটি মামলায় পৃথক আবেদন করে বাদী মামলা প্রত্যাহার করতে চান। বিচারক শুনানি শেষে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন মঞ্জুর করেন এবং বাংলালিংকের চার কর্মচারীকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন।
জেমস এই মামলা করেন ২০২১ সালের ১০ নভেম্বর। প্রায় একই সময় অপর দুজন পৃথক একটি মামলা করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, জেমসের অসংখ্য জনপ্রিয় গান আছে। কোনো ধরনের অনুমতি না নিয়েই জেমসের গান বাংলালিংক তাদের ওয়েলকাম টিউন, বিজ্ঞাপনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যবহার করে আসছে। বাংলালিংকের এই কর্মকাণ্ড কপিরাইট আইন লঙ্ঘনের শামিল। জনপ্রিয় ব্যান্ড দল মাইলসের কম্পোজার, গায়ক হামিদ আহমেদ ও মানাম আহমেদও একই অভিযোগে বাংলালিংকের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
ওপরের দৃষ্টান্ত থেকে স্পষ্ট যে বাদী চাইলে মামলা প্রত্যাহার করতে পারেন। তবে মামলা ভেদে এই প্রক্রিয়া আলাদা।
ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার
মামলা প্রত্যাহারের অর্থ হচ্ছে মামলা তুলে নেওয়া। একটি মামলা থানা বা আদালতে করার পর পরবর্তী সময় সেই মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া যায়। একটি মামলা কখন ও কীভাবে প্রত্যাহার করা যায় সে সম্পর্কে জানতে হলে আগে জানতে হবে বিভিন্ন মামলার শ্রেণি সম্পর্কে।
ফৌজদারি মামলা সাধারণত দুই ধরনের: এক. কমপ্লেইন্ট রেজিস্ট্রার (সিআর)। দুই. জেনারেল রেজিস্ট্রার (জিআর) মামলা
জিআর মামলা সাধারণত থানায় করা হয়। আর সিআর মামলা করতে হয় ফৌজদারি আদালতে।
জিআর মামলায় বাদীর পক্ষে রাষ্ট্র নিজেই আইনজীবী নিযুক্ত করে, যাদের বলা হয় হয় পাবলিক প্রসিকিউটর তথা রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি)। আর সিআর মামলাগুলোয় নালিশকারীকেই ব্যক্তিগতভাবে আইনজীবী নিযুক্ত করে মামলা পরিচালনা করতে হয়।
কোনো মামলায় পর্যাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমাণের অভাব বা পক্ষদের মধ্যে সমঝোতার কারণে বাদী মামলা প্রত্যাহার করতে পারেন। মামলা প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধিতে দুই ধরনের বিধান রাখা আছে। যেমন:
যেসব জিআর মামলা রাষ্ট্র নিজেই পক্ষ (অনেকে বলেন সরকার-বাদী মামলা), সেসব মামলায় পাবলিক প্রসিকিউটরের পক্ষ থেকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৪ ধারায় আদালতে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করা যায়।
আর সিআর মামলায় নালিশকারী বা তাঁর পক্ষ থেকে নিযুক্ত আইনজীবী আদালতে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করতে পারেন ফৌজদারি কার্যবিধির ২৪৮ ধারার অধীনে।
সরকারি কৌঁসুলির (পিপি) পক্ষ থেকে মামলা প্রত্যাহার
১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৪ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে করা মামলায় বিচারাধীন এক বা একাধিক অপরাধ সম্পর্কে মোকদ্দমা পরিচালনা থেকে সরে যেতে পারেন সরকারি কৌঁসুলি (পিপি)। তবে এর জন্য আদালতের অনুমতি নিতে হবে।
অভিযোগ গঠনের আগে সরে গেলে ওই এক বা একাধিক অপরাধ সম্পর্কে আসামি অব্যাহতি পাবেন। অভিযোগ গঠনের পর রাষ্ট্রপক্ষ সরে গেলে অথবা এই আইন অনুসারে কোনো অভিযোগ গঠন করার প্রয়োজন না হলে, ওই এক বা একাধিক অপরাধ থেকে আসামিকে খালাস দিতে হবে।
মামলা পরিচালনা থেকে সরে যাওয়ার উপযুক্ত কারণ সম্পর্কে পিপির বক্তব্যে আদালত সন্তুষ্ট হতে হবে। কার্যবিধির ৪৯৪ ধারার অধীনে মামলা প্রত্যাহারে বেশ কিছু বিষয় আদালতের পর্যবেক্ষণে গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে। যেমন:
প্রথমত, মামলা প্রত্যাহারের আবেদন কেবল পাবলিক প্রসিকিউটরের (পিপি) তরফ থেকেই হতে হবে। এজাহারকারী কিংবা আসামির আবেদন কিংবা সরকারের কোনো আদেশের বলে মামলা প্রত্যাহার করা যাবে না।
দ্বিতীয়ত, মামলা প্রত্যাহারের যুক্তিযুক্ত কারণ কৌঁসুলির পক্ষ থেকে আদালতের সামনে ব্যাখ্যা করতে হবে। কেবল সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর ভিত্তি করে আদালত মামলা প্রত্যাহারের আদেশ দেবেন না। মামলা প্রত্যাহার সম্পর্কে আদালতের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
সুতরাং, আদালত যদি মামলা প্রত্যাহারের কারণ সম্পর্কে সন্তুষ্ট না হন, সে ক্ষেত্রে প্রত্যাহারের অনুমতি না দিয়ে মামলা এগিয়ে নেওয়ার আদেশ দেবেন। মামলায় ভুক্তভোগী বা এজাহারকারী যদি মনে করেন রাষ্ট্রপক্ষ অহেতুক তাঁদের মামলাটি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন, সে ক্ষেত্রে ক্ষেত্রবিশেষে দায়রা জজ আদালত কিংবা হাইকোর্ট বিভাগে রিভিশন আবেদন করতে পারবেন।
নালিশকারীর পক্ষ থেকে মামলা প্রত্যাহার
১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধির ২৪৮ ধারায় বলা হয়েছে যে, কোনো মামলার চূড়ান্ত আদেশ হওয়ার আগে পর্যন্ত বিচারপ্রার্থী যদি ম্যাজিস্ট্রেটের সন্তোষ অর্জন করতে পারেন যে তাঁকে নালিশ প্রত্যাহারের অনুমতি দেওয়ার পর্যাপ্ত কারণ রয়েছে, তাহলে ম্যাজিস্ট্রেট তাঁকে সেই নালিশ প্রত্যাহারের অনুমতি দেবেন এবং আসামিকে খালাস দেবেন।
উল্লেখ্য, এই ধারাটি শুধু নিষ্পত্তিযোগ্য মামলার ক্ষেত্রে, যা ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪৫ ধারায় বর্ণনা করা হয়েছে। সে জন্য অভিযোগকারী এই ধারা অনুসারে নালিশ প্রত্যাহার করতে পারেন।
দেওয়ানি মামলা প্রত্যাহার
দেওয়ানি কার্যবিধির ২৩ আদেশের ১ নিয়ম অনুসারে, দেওয়ানি মামলা হওয়ার পর যেকোনো সময়ে বাদী সব বা যেকোনো বিবাদীর বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করতে বা আংশিক দাবি পরিত্যাগ করতে পারেন।
কোনো পদ্ধতিগত ত্রুটির কারণে মামলাটি ব্যর্থ হতে বাধ্য; মামলার বিষয়বস্তুর কারণে কিংবা কোনো দাবির অংশের জন্য নতুনভাবে মামলা করার জন্য বাদীকে অনুমতি দেওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে—মর্মে আদালত সম্মত হলে উপযুক্ত শর্তে বাদীকে মামলা প্রত্যাহার অথবা আংশিক দাবি পরিত্যাগ করার অনুমতি দিতে পারবেন।
এ ক্ষেত্রে ওই মামলার বিষয়বস্তু সম্পর্কে বা ওই রকম আংশিক দাবি সম্পর্কে আবার মামলা করার অনুমতি মঞ্জুর করতে পারেন আদালত।
আদালতের অনুমতি ছাড়া বাদী মামলা প্রত্যাহার করলে অথবা আংশিক দাবি পরিত্যাগ করলে, আদালতের সিদ্ধান্ত অনুসারে সেই বাদী মামলার খরচে জন্য দায়ী থাকবেন। এ ছাড়া ওই বিষয়বস্তু বা আংশিক দাবি সম্পর্কে নতুনভাবে কোনো মামলা করার অধিকার থেকে তিনি বঞ্চিত হবেন।
এই নিয়মের কোনো বিধান বলে আদালত কয়েকজন বাদীর মধ্যে একজনকে অন্যান্য বাদীর সম্মতি ছাড়া মামলা প্রত্যাহার করার অনুমতি দিতে পারেন না।
প্রত্যাহারের পর একই বিষয়ে মামলা করা যায় কি
নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে মামলা প্রত্যাহার করা হলে একই বিষয়ে আবার মামলা করা যায় না। দেওয়ানি মামলার ‘রেস-জুডিকাটা’ বা দোবারানীতি এবং ফৌজদারি মামলার দোবারা সাজা বা ‘ডাবল জিওপারডি’ নীতির আলোকে এ ধরনের মামলা করায় বাধা দেওয়া হয়। তবে উচ্চতর আদালতে রিভিশন আবেদন করে আদালতকে যদি সন্তুষ্ট করা যায়, সে ক্ষেত্রে পুনর্বিচার কিংবা পুনর্তদন্তের নির্দেশ ন্যায়বিচারের স্বার্থে আদালত দিতে পারেন। হাইকোর্ট বিভাগের সহজাত ক্ষমতার অধীনে এ ধরনের আদেশ দেওয়ার সুযোগ আছে।
লেখক: সহসম্পাদক, আজকের পত্রিকা
সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত বে অব বেঙ্গল সম্মেলন শুরু হচ্ছে আগামীকাল থেকে। এবারের সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোসহ বিভিন্ন দেশের ৮০০ জন অতিথি। প্রথম দিন অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তা হিসেবে থাকবেন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের
১ ঘণ্টা আগেকিছু অসাধু ব্যক্তি ও স্বার্থান্বেষী মহল ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহার করে গার্মেন্টসের ঝুট ব্যবসার স্বত্ব প্রদান এবং অন্যান্য প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডের আশ্রয় নিচ্ছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
৩ ঘণ্টা আগেছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের। এর তিন দিন পর দায়িত্ব গ্রহণ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার। সেই সরকারের ১০০ দিন পার হওয়া নিয়ে একটি মূল্যায়ন প্রকাশ করেছে বেলজিয়ামভিত্তিক থিংক ট্যাংক ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ। মূল্যায়নে তারা বলেছে, অন্তর্বর্তী স
৩ ঘণ্টা আগেবিসিএসে উত্তীর্ণ হওয়ার পর চাকরি নিশ্চিত করতে যাচাই-বাছাইয়ের সময় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার তথ্য অনেকে নিজেই পুলিশকে দিয়েছিলেন। কিন্তু ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ায় সেসব তথ্যই এখন তাঁদের জন্য ফাঁস হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রতিবেদনের তথ্য নিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গ
৪ ঘণ্টা আগে