নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
দেশের বাম দলগুলো দাঁড়ি, কমা, সেমিকোলন নিয়ে ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী নির্বাচনে বিএনপির নেতা কে সেটা জানতে চেয়ে তিনি বলেছেন, ‘জনগণের ভোট কেড়ে নিয়ে ক্ষমতায় থাকতে চাই না, সেটা থাকব না।’ আজ বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বাম দলগুলো তো ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র হতে হতে মানে দাঁড়ি, কমা, সেমিকোলন, দাঁড়ি বসবে না কমা বসবে, কমা বসবে না সেমিকোলন বসবে—এই করতে করতে ভাঙতে ভাঙতে তাদের অবস্থা...তারা এখন বাম হয়ে কখনো ডানে কাইত হয়, কখনো বামে কাইত হয়...তাদের তো এই অবস্থা। আছে কে? আমাকে সেইটা বলেন না। একটা ভালো শক্তিশালী দল করে দেন, মাঠেই দেখা হবে। মাঠে আমরা দেখব।’
আওয়ামী লীগ হচ্ছে এই উপমহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন একটা দল। যে দলটা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল একেবারে গণমানুষের মাধ্যমে। আর বিএনপির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল আইয়ুব খানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
বিএনপি প্রতিষ্ঠার পর থেকে দল ভাঙা-গড়ার খেলা খেলেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দল ভাঙা-গড়া, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের থেকে একে-ওকে নিয়ে, মানে এ গাছের ছাল ও গাছের বাকল সব জোড়া দিয়ে, অর্থাৎ ক্ষমতায় বসে একটা দল তৈরি করা। সেই (বিএনপি) দলটাই হয়ে গেছে মূল দল। আবার পরবর্তীতে জাতীয় পার্টি, সেটাও ওইভাবেই তৈরি। আরেক মিলিটারি ডিক্টেটর, সেও ক্ষমতায় বসে জাতীয় পার্টি তৈরি করেছে। যে দলগুলো তৃণমূল থেকে উঠে আসেনি, সেই দলগুলোর কাছে আপনারা কী আশা করেন?’
বিএনপির নেতৃত্ব কার হাতে জানতে চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কে নেতা? এতিমের অর্থ আত্মসাৎ এবং দুর্নীতির দায়ে একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি, আরেকজন ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা, একুশে আগস্টে গ্রেনেড হামলাসহ দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি। একজন তো ফিউজিটিভ। আরেকজনকে আমি অবশ্য আমার নির্বাহী ক্ষমতাবলে তাঁর সাজা স্থগিত করে বাসায় থাকার সুযোগটা দিয়েছি, বয়সের কথা বিবেচনা করে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন এই (বিএনপি) দলটা যে নির্বাচন করবে, আপনারা বললেন কোনো দল অংশগ্রহণ করেনি, আপনারা কীভাবে বললেন অংশগ্রহণ করেনি? ২০১৮-এর নির্বাচনে বিএনপি একেকটা সিটে কয়জনকে নমিনেশন দিয়েছিল? সেটা কি আপনাদের মনে আছে? এক সিটে একজনকে সকালে দেয়, দুপুরে সেটা পরিবর্তন করে আরেকজন হয়। তারপর দ্বিতীয় দফায় আরেকজনের নাম দেয়। অর্থাৎ যে যত বেশি টাকা দিচ্ছে, তাকে নমিনেশন দিয়ে দিচ্ছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই অবস্থায় একটা দল যখন নির্বাচনে তাদের প্রার্থী দেয়....ঢাকা থেকে তাদের এক নেতা একজনকে দিচ্ছে তো লন্ডন থেকে আরেক নেতা আরেকজনকে দিচ্ছে। যে তাকে টাকা না দেয়, সে নমিনেশন পাবে না। দিনে যদি তিনবার আপনারা নমিনেশন বদলান...তারপর দেখা গেল মাঝখানে নির্বাচন ছেড়ে চলে গেল। এটা কি অস্বীকার করতে পারবে বিএনপি? তাহলে এটা পার্টিসিপেটরি ইলেকশন হয় নাই এ কথা কীভাবে বলেন? আর যখন আপনি নির্বাচনের মাঠ ছেড়ে মধ্যপথে চলে যান, তখন মাঠ ফাকা। তখন বাকিরা যা খুশি তাই করতে পারে। সেই দোষটা কাকে দেবেন? এটা তো আওয়ামী লীগকে দিতে পারেন না। আর এই বাস্তবতা সবাই ভুলে যায়।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘একটা মিথ্যা আপনি বারবার বলতে পারেন। আর সত্যের শক্তিটা হচ্ছে একবার, সত্যটা একবার। আমি জানি না বিদেশেও তাদের কাছে অপপ্রচার করা হয় যে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না। একটা দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তখনই, যখন মানুষের আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করবে। তখনই তাদের দেখাতে হবে সেই দল নির্বাচন করে জয়ী হলে কে হবে সরকারপ্রধান। এইটা তো মানুষ আগে বিবেচনা করে। করে না? এটা খালি আমাদের দেশে না, পৃথিবীর সব দেশেই। তারা (বিএনপি) যে ইলেকশন করবে, তারা কাকে দেখাবে? সাজাপ্রাপ্ত ফিউজিটিভকে? সে তো এখন এই দেশের নাগরিকত্ব বাতিল করে দিয়ে বিদেশি নাগরিক হয়ে বসে আছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কত টাকা ইনভেস্ট করলে সহজে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পাওয়া যায়? একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি হয়েও কীভাবে ব্রিটিশ নাগরিক হলো সেটা খোঁজ করবেন? সেটা খোঁজ করেন না। সেটা তো আপনারা করেন না। সেটা করলেই তো বেরিয়ে আসে। এই নিয়ে তারা কী ইলেকশনটা করবে সেটাই তো বড় কথা। এখানে গণতন্ত্রের দোষটা কোথায়? আরেকটা দলেরও (জাতীয় পার্টি), সেই তাদের (বিএনপি) মতো অবস্থা। তাদের (জাতীয় পার্টি) ঠিক সাংগঠনিক তৎপরতা নেই।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণের ভোট কেড়ে নিয়ে ক্ষমতায় থাকতে চাই না, সেটা থাকব না। সামরিক শাসকেরা যা করেছে তার বিরুদ্ধে আমিই সংগ্রাম করেছি, আন্দোলন করেছি। জেল-জুলুম, বোমা, গ্রেনেড, গুলির সম্মুখীন আমিই হয়েছি। কিন্তু গণতন্ত্রটা করতে পেরেছি বলেই, এই ধারাবাহিকতাটা আছে বলেই আজকে দেশের এই উন্নতিটা। ওদের (বিএনপি) জন্য তো কান্নাকাটি করে লাভ নাই। ওরা ইলেকশনটা করবে কী নিয়ে? পুঁজিটা কী? সমস্যা তো ওইখানেই। বাংলাদেশে বিএনপির একটাও কি যোগ্য নেতা নেই, যাকে তারা দলের চেয়ারম্যান করতে পারে? তাহলে তো তাদের এই দুরবস্থাটা হয় না।’
পদ্মার ওপারে কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প স্থাপন
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরে ওপারে কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প স্থাপনের ওপর সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘রেডি টু কুক হলে সবারই সুবিধা হবে। বাড়ির গিন্নিরা বেশি খুশি হবে। কষ্ট করে মাছ কাটতে হবে না। তরকারিও কুটতে হবে না। রেডি করে এনে রান্না করে খাবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মার ওপারে কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প যাতে গড়ে ওঠে, সেটার ওপর আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। চামড়াশিল্পের সঙ্গে জড়িত আমার এক আত্মীয়কে আজ সকালেই বলেছি, কৃষিশিল্প করবে, সেই প্রস্তুতি নাও। আমি বলেছি, ওখানে একটি শিল্পকারখানা করতে হবে, যেখানে কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প হয়।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা এখন কৃষিতেই গুরুত্ব দিচ্ছি। কারণ খাদ্যদ্রব্যটাই আমাদের এখন সব থেকে বেশি প্রয়োজন। কারণ, কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্পপণ্য কেবল বিদেশে রপ্তানি নয়, দেশেও বাজার সৃষ্টি হচ্ছে। এ জন্য বলেছি, দক্ষিণাঞ্চলে এ ধরনের শিল্প করার জন্য উদ্যোগ নিতে হবে। সেদিকে আমরা গুরুত্ব দিতে চাই।’
দারিদ্র্য বিমোচন হচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা গ্রামে গ্রামে উন্নতি করছি। কেউ তো কাজের লোক পাবে না। কিন্তু ঘরে বসে যেন রেডি টু কুক, রান্নার জন্য প্রস্তুত, খাওয়ার জন্য প্রস্তুত। এ রকম থাকলে পরে সকলেরই সুবিধা হবে। বাড়ির গিন্নিরা বেশি খুশি হবে। কষ্ট করে মাছ কাটতে হবে না। তরকারিও কুটতে হবে না। রেডি করে এনে রান্না করে খাবে।’
কৃষিপণ্য রপ্তানিতে সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষিপণ্য রপ্তানি করতে গেলে অনুমতি লাগে। আমরা বিভিন্ন দেশ থেকে অনুমতি নেওয়ার চেষ্টা করছি। এটা হলে পরে আমাদের কৃষিপণ্যগুলো রপ্তানি করতে পারব। আর আমাদের নিজের দেশে তো বাজার সৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের সবার ক্রয়ক্ষমতা বাড়ছে। কৃষির ওপর আমরা সব সময় গুরুত্ব দিই। কৃষি থেকে শিল্প, আমরা সেদিকেই যাচ্ছি।’
শাহদীন মালিক স্বাধীন কথা বলেন
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধের পরে দেশের রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ ও সুশীল সমাজের করা সমালোচনার জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তিনি বলেন, ‘আইনজীবী শাহদীন মালিক, উনি সব সময় স্বাধীন। স্বাধীনই থাকেন। স্বাধীন মালিক তিনি। তিনি বলেছিলেন, পদ্মা সেতু দেশি অর্থায়নে হবে না, সম্ভব নয়। কিন্তু সম্ভব হয়েছে। তাঁকে দাওয়াত দিচ্ছি, তিনি যেন পদ্মা সেতুতে আসেন।’
২০১১ সালের ৭ অক্টোবর বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেওয়া ‘স্বাধীনতার পর এবারই প্রথম বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের কোনো উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অর্থায়ন বাতিল করল’—এই বক্তব্যের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়া নিজেই ভুলে গেছেন। সিদ্ধিরগঞ্জ পাওয়ার প্ল্যান্টের টাকা বিশ্বব্যাংক বন্ধ করে দিয়েছিল দুর্নীতির কারণে। সেটার সঙ্গে তিনি ও তাঁর পুত্ররাও জড়িত ছিলেন। সিমেন্স এটার সঙ্গে জড়িত ছিল। এটা আমাদের কথা না, এফবিআই তথ্যটা বের করেছিল। ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের টাকা বিশ্বব্যাংক বন্ধ করে দিয়েছিল দুর্নীতির কারণে। কাজেই এটা ভুলে গেছেন। বাঙালি তো এমনিতে ভুলে যায়।’
ড. আকবর আলি খান সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি ’৯৬ সালে যখন সরকারে এসেছিলাম, তখন তিনি অর্থসচিব ছিলেন। তিনি ২০১২ সালের ১ জুলাই বলেছিলেন, বিশ্বব্যাংকের এমন সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের পক্ষে পরবর্তীতে ঋণসহায়তা পাওয়া খুব দুষ্কর হয়ে পড়বে। যখনই কোনো দাতা সংস্থা কোনো নতুন প্রকল্পে অর্থায়নে আগ্রহী হবে, তারা দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশকে ভিন্ন চোখে দেখবে। সরকার যদি বিকল্প অর্থায়নে পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করে, তাহলে খরচ অনেক বেড়ে যাবে, কাজের মান নিয়েও প্রশ্ন থেকে যাবে।’ এই কথার জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আশা করি পদ্মা সেতুর কাজের মান নিয়ে কেউ কখনো প্রশ্ন তুলতে পারবে না। তাই এই কথার কোনো ভিত্তি নেই।’
সরকারের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের গ্রহণযোগ্যতা আন্তর্জাতিকভাবে আছে কি না, আপনারই বিচার করবেন। বাংলাদেশের জনগণ বিচার করবে।’
নিজ অর্থায়নে সরকার পদ্মা সেতু করার যে পরিকল্পনা করেছে, তা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তবে সরকার ইচ্ছা করলে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে পারবে; কিন্তু শেষ করতে পারবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দীনের এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি চাই তাঁকে দাওয়াত দিতে। এটা যে শেষ হয়েছে, তিনি যেন পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে একটু যান। আমরা দাওয়াত দিচ্ছি। সবাইকে দাওয়াত দেব, যারা এ কথা বলেছেন, সবাইকে দাওয়াত দেব।’
পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করতে পারলেও শেষ করার গ্যারান্টি থাকবে না। পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুরের প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কিন্তু শেষ করেছি। তাঁকেও দাওয়াত দিচ্ছি পদ্মা সেতুটা গাড়িতে পাড়ি দিতে।’
এত বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা প্রয়োজন, যার জোগান দিতে বৈদেশিক মুদ্রার ওপর চাপ পড়বে। এর দায় সরকার এড়াতে পারবে না। সিপিডির ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের এমন বক্তব্যের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের রিজার্ভ কিন্তু এখনো ৪২ বিলিয়ন। বৈদেশিক মুদ্রার ওপর চাপ পড়েনি। সঙ্গে অন্য প্রকল্পগুলোও করে যাচ্ছি।’
এই মুহূর্তে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু শুরু করা হলে দেশের অন্য সব অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য যে কাজগুলো করা যেত, সেগুলো আর হবে না। সিপিডির ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানের এমন বক্তব্যের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সব কাজ কিন্তু চলছে। কোনোটা কিন্তু থেমে যায়নি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এইটুকু বললাম এই কারণে, তাঁরা যখন কথা বলেন। আমি জানি না, কেন তাঁদের ভেতরে আত্মবিশ্বাসের অভাব। তারা ভুলে যান জাতির পিতার নেতৃত্বে এই দেশের মানুষ যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন। আমরা বিজয়ী জাতি, কোনো কথা বললে ভেবেচিন্তেই বলি। বিজয়ী জাতি হিসেবে মানসিক শক্তি নিয়েই কথা বলি। কিন্তু ওনাদের ভেতরে একটা পরাজিত মনোভাব। তারা সব সময় আত্মগ্লানিতে ভোগেন, তাই তাদের আত্মবিশ্বাসের অভাব।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মেয়ে। আমি যেটা পারব, সেটাই বলব। যেটা বলব, করব। করে দেখাতে পারি, সেটা করেছি। এই জন্য দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞ।’
বিশ্বব্যাংক সরে যাওয়ার পরে অধ্যাপক জামিলুর রেজাসহ যেসব বিশেষজ্ঞ প্যানেল সরকারকে সহযোগিতা করেছেন, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান প্রধানমন্ত্রী। এই উপদেষ্টা প্যানেল সরকারের পাশে না দাঁড়ালে হয়তো পদ্মা সেতু সম্ভব হতো না বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।
দেশের বাম দলগুলো দাঁড়ি, কমা, সেমিকোলন নিয়ে ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী নির্বাচনে বিএনপির নেতা কে সেটা জানতে চেয়ে তিনি বলেছেন, ‘জনগণের ভোট কেড়ে নিয়ে ক্ষমতায় থাকতে চাই না, সেটা থাকব না।’ আজ বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বাম দলগুলো তো ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র হতে হতে মানে দাঁড়ি, কমা, সেমিকোলন, দাঁড়ি বসবে না কমা বসবে, কমা বসবে না সেমিকোলন বসবে—এই করতে করতে ভাঙতে ভাঙতে তাদের অবস্থা...তারা এখন বাম হয়ে কখনো ডানে কাইত হয়, কখনো বামে কাইত হয়...তাদের তো এই অবস্থা। আছে কে? আমাকে সেইটা বলেন না। একটা ভালো শক্তিশালী দল করে দেন, মাঠেই দেখা হবে। মাঠে আমরা দেখব।’
আওয়ামী লীগ হচ্ছে এই উপমহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন একটা দল। যে দলটা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল একেবারে গণমানুষের মাধ্যমে। আর বিএনপির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল আইয়ুব খানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
বিএনপি প্রতিষ্ঠার পর থেকে দল ভাঙা-গড়ার খেলা খেলেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দল ভাঙা-গড়া, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের থেকে একে-ওকে নিয়ে, মানে এ গাছের ছাল ও গাছের বাকল সব জোড়া দিয়ে, অর্থাৎ ক্ষমতায় বসে একটা দল তৈরি করা। সেই (বিএনপি) দলটাই হয়ে গেছে মূল দল। আবার পরবর্তীতে জাতীয় পার্টি, সেটাও ওইভাবেই তৈরি। আরেক মিলিটারি ডিক্টেটর, সেও ক্ষমতায় বসে জাতীয় পার্টি তৈরি করেছে। যে দলগুলো তৃণমূল থেকে উঠে আসেনি, সেই দলগুলোর কাছে আপনারা কী আশা করেন?’
বিএনপির নেতৃত্ব কার হাতে জানতে চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কে নেতা? এতিমের অর্থ আত্মসাৎ এবং দুর্নীতির দায়ে একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি, আরেকজন ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা, একুশে আগস্টে গ্রেনেড হামলাসহ দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি। একজন তো ফিউজিটিভ। আরেকজনকে আমি অবশ্য আমার নির্বাহী ক্ষমতাবলে তাঁর সাজা স্থগিত করে বাসায় থাকার সুযোগটা দিয়েছি, বয়সের কথা বিবেচনা করে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন এই (বিএনপি) দলটা যে নির্বাচন করবে, আপনারা বললেন কোনো দল অংশগ্রহণ করেনি, আপনারা কীভাবে বললেন অংশগ্রহণ করেনি? ২০১৮-এর নির্বাচনে বিএনপি একেকটা সিটে কয়জনকে নমিনেশন দিয়েছিল? সেটা কি আপনাদের মনে আছে? এক সিটে একজনকে সকালে দেয়, দুপুরে সেটা পরিবর্তন করে আরেকজন হয়। তারপর দ্বিতীয় দফায় আরেকজনের নাম দেয়। অর্থাৎ যে যত বেশি টাকা দিচ্ছে, তাকে নমিনেশন দিয়ে দিচ্ছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই অবস্থায় একটা দল যখন নির্বাচনে তাদের প্রার্থী দেয়....ঢাকা থেকে তাদের এক নেতা একজনকে দিচ্ছে তো লন্ডন থেকে আরেক নেতা আরেকজনকে দিচ্ছে। যে তাকে টাকা না দেয়, সে নমিনেশন পাবে না। দিনে যদি তিনবার আপনারা নমিনেশন বদলান...তারপর দেখা গেল মাঝখানে নির্বাচন ছেড়ে চলে গেল। এটা কি অস্বীকার করতে পারবে বিএনপি? তাহলে এটা পার্টিসিপেটরি ইলেকশন হয় নাই এ কথা কীভাবে বলেন? আর যখন আপনি নির্বাচনের মাঠ ছেড়ে মধ্যপথে চলে যান, তখন মাঠ ফাকা। তখন বাকিরা যা খুশি তাই করতে পারে। সেই দোষটা কাকে দেবেন? এটা তো আওয়ামী লীগকে দিতে পারেন না। আর এই বাস্তবতা সবাই ভুলে যায়।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘একটা মিথ্যা আপনি বারবার বলতে পারেন। আর সত্যের শক্তিটা হচ্ছে একবার, সত্যটা একবার। আমি জানি না বিদেশেও তাদের কাছে অপপ্রচার করা হয় যে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না। একটা দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তখনই, যখন মানুষের আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করবে। তখনই তাদের দেখাতে হবে সেই দল নির্বাচন করে জয়ী হলে কে হবে সরকারপ্রধান। এইটা তো মানুষ আগে বিবেচনা করে। করে না? এটা খালি আমাদের দেশে না, পৃথিবীর সব দেশেই। তারা (বিএনপি) যে ইলেকশন করবে, তারা কাকে দেখাবে? সাজাপ্রাপ্ত ফিউজিটিভকে? সে তো এখন এই দেশের নাগরিকত্ব বাতিল করে দিয়ে বিদেশি নাগরিক হয়ে বসে আছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কত টাকা ইনভেস্ট করলে সহজে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পাওয়া যায়? একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি হয়েও কীভাবে ব্রিটিশ নাগরিক হলো সেটা খোঁজ করবেন? সেটা খোঁজ করেন না। সেটা তো আপনারা করেন না। সেটা করলেই তো বেরিয়ে আসে। এই নিয়ে তারা কী ইলেকশনটা করবে সেটাই তো বড় কথা। এখানে গণতন্ত্রের দোষটা কোথায়? আরেকটা দলেরও (জাতীয় পার্টি), সেই তাদের (বিএনপি) মতো অবস্থা। তাদের (জাতীয় পার্টি) ঠিক সাংগঠনিক তৎপরতা নেই।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণের ভোট কেড়ে নিয়ে ক্ষমতায় থাকতে চাই না, সেটা থাকব না। সামরিক শাসকেরা যা করেছে তার বিরুদ্ধে আমিই সংগ্রাম করেছি, আন্দোলন করেছি। জেল-জুলুম, বোমা, গ্রেনেড, গুলির সম্মুখীন আমিই হয়েছি। কিন্তু গণতন্ত্রটা করতে পেরেছি বলেই, এই ধারাবাহিকতাটা আছে বলেই আজকে দেশের এই উন্নতিটা। ওদের (বিএনপি) জন্য তো কান্নাকাটি করে লাভ নাই। ওরা ইলেকশনটা করবে কী নিয়ে? পুঁজিটা কী? সমস্যা তো ওইখানেই। বাংলাদেশে বিএনপির একটাও কি যোগ্য নেতা নেই, যাকে তারা দলের চেয়ারম্যান করতে পারে? তাহলে তো তাদের এই দুরবস্থাটা হয় না।’
পদ্মার ওপারে কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প স্থাপন
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরে ওপারে কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প স্থাপনের ওপর সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘রেডি টু কুক হলে সবারই সুবিধা হবে। বাড়ির গিন্নিরা বেশি খুশি হবে। কষ্ট করে মাছ কাটতে হবে না। তরকারিও কুটতে হবে না। রেডি করে এনে রান্না করে খাবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মার ওপারে কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প যাতে গড়ে ওঠে, সেটার ওপর আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। চামড়াশিল্পের সঙ্গে জড়িত আমার এক আত্মীয়কে আজ সকালেই বলেছি, কৃষিশিল্প করবে, সেই প্রস্তুতি নাও। আমি বলেছি, ওখানে একটি শিল্পকারখানা করতে হবে, যেখানে কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প হয়।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা এখন কৃষিতেই গুরুত্ব দিচ্ছি। কারণ খাদ্যদ্রব্যটাই আমাদের এখন সব থেকে বেশি প্রয়োজন। কারণ, কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্পপণ্য কেবল বিদেশে রপ্তানি নয়, দেশেও বাজার সৃষ্টি হচ্ছে। এ জন্য বলেছি, দক্ষিণাঞ্চলে এ ধরনের শিল্প করার জন্য উদ্যোগ নিতে হবে। সেদিকে আমরা গুরুত্ব দিতে চাই।’
দারিদ্র্য বিমোচন হচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা গ্রামে গ্রামে উন্নতি করছি। কেউ তো কাজের লোক পাবে না। কিন্তু ঘরে বসে যেন রেডি টু কুক, রান্নার জন্য প্রস্তুত, খাওয়ার জন্য প্রস্তুত। এ রকম থাকলে পরে সকলেরই সুবিধা হবে। বাড়ির গিন্নিরা বেশি খুশি হবে। কষ্ট করে মাছ কাটতে হবে না। তরকারিও কুটতে হবে না। রেডি করে এনে রান্না করে খাবে।’
কৃষিপণ্য রপ্তানিতে সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষিপণ্য রপ্তানি করতে গেলে অনুমতি লাগে। আমরা বিভিন্ন দেশ থেকে অনুমতি নেওয়ার চেষ্টা করছি। এটা হলে পরে আমাদের কৃষিপণ্যগুলো রপ্তানি করতে পারব। আর আমাদের নিজের দেশে তো বাজার সৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের সবার ক্রয়ক্ষমতা বাড়ছে। কৃষির ওপর আমরা সব সময় গুরুত্ব দিই। কৃষি থেকে শিল্প, আমরা সেদিকেই যাচ্ছি।’
শাহদীন মালিক স্বাধীন কথা বলেন
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধের পরে দেশের রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ ও সুশীল সমাজের করা সমালোচনার জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তিনি বলেন, ‘আইনজীবী শাহদীন মালিক, উনি সব সময় স্বাধীন। স্বাধীনই থাকেন। স্বাধীন মালিক তিনি। তিনি বলেছিলেন, পদ্মা সেতু দেশি অর্থায়নে হবে না, সম্ভব নয়। কিন্তু সম্ভব হয়েছে। তাঁকে দাওয়াত দিচ্ছি, তিনি যেন পদ্মা সেতুতে আসেন।’
২০১১ সালের ৭ অক্টোবর বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেওয়া ‘স্বাধীনতার পর এবারই প্রথম বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের কোনো উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অর্থায়ন বাতিল করল’—এই বক্তব্যের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়া নিজেই ভুলে গেছেন। সিদ্ধিরগঞ্জ পাওয়ার প্ল্যান্টের টাকা বিশ্বব্যাংক বন্ধ করে দিয়েছিল দুর্নীতির কারণে। সেটার সঙ্গে তিনি ও তাঁর পুত্ররাও জড়িত ছিলেন। সিমেন্স এটার সঙ্গে জড়িত ছিল। এটা আমাদের কথা না, এফবিআই তথ্যটা বের করেছিল। ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের টাকা বিশ্বব্যাংক বন্ধ করে দিয়েছিল দুর্নীতির কারণে। কাজেই এটা ভুলে গেছেন। বাঙালি তো এমনিতে ভুলে যায়।’
ড. আকবর আলি খান সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি ’৯৬ সালে যখন সরকারে এসেছিলাম, তখন তিনি অর্থসচিব ছিলেন। তিনি ২০১২ সালের ১ জুলাই বলেছিলেন, বিশ্বব্যাংকের এমন সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের পক্ষে পরবর্তীতে ঋণসহায়তা পাওয়া খুব দুষ্কর হয়ে পড়বে। যখনই কোনো দাতা সংস্থা কোনো নতুন প্রকল্পে অর্থায়নে আগ্রহী হবে, তারা দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশকে ভিন্ন চোখে দেখবে। সরকার যদি বিকল্প অর্থায়নে পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করে, তাহলে খরচ অনেক বেড়ে যাবে, কাজের মান নিয়েও প্রশ্ন থেকে যাবে।’ এই কথার জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আশা করি পদ্মা সেতুর কাজের মান নিয়ে কেউ কখনো প্রশ্ন তুলতে পারবে না। তাই এই কথার কোনো ভিত্তি নেই।’
সরকারের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের গ্রহণযোগ্যতা আন্তর্জাতিকভাবে আছে কি না, আপনারই বিচার করবেন। বাংলাদেশের জনগণ বিচার করবে।’
নিজ অর্থায়নে সরকার পদ্মা সেতু করার যে পরিকল্পনা করেছে, তা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তবে সরকার ইচ্ছা করলে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে পারবে; কিন্তু শেষ করতে পারবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দীনের এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি চাই তাঁকে দাওয়াত দিতে। এটা যে শেষ হয়েছে, তিনি যেন পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে একটু যান। আমরা দাওয়াত দিচ্ছি। সবাইকে দাওয়াত দেব, যারা এ কথা বলেছেন, সবাইকে দাওয়াত দেব।’
পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করতে পারলেও শেষ করার গ্যারান্টি থাকবে না। পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুরের প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কিন্তু শেষ করেছি। তাঁকেও দাওয়াত দিচ্ছি পদ্মা সেতুটা গাড়িতে পাড়ি দিতে।’
এত বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা প্রয়োজন, যার জোগান দিতে বৈদেশিক মুদ্রার ওপর চাপ পড়বে। এর দায় সরকার এড়াতে পারবে না। সিপিডির ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের এমন বক্তব্যের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের রিজার্ভ কিন্তু এখনো ৪২ বিলিয়ন। বৈদেশিক মুদ্রার ওপর চাপ পড়েনি। সঙ্গে অন্য প্রকল্পগুলোও করে যাচ্ছি।’
এই মুহূর্তে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু শুরু করা হলে দেশের অন্য সব অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য যে কাজগুলো করা যেত, সেগুলো আর হবে না। সিপিডির ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানের এমন বক্তব্যের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সব কাজ কিন্তু চলছে। কোনোটা কিন্তু থেমে যায়নি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এইটুকু বললাম এই কারণে, তাঁরা যখন কথা বলেন। আমি জানি না, কেন তাঁদের ভেতরে আত্মবিশ্বাসের অভাব। তারা ভুলে যান জাতির পিতার নেতৃত্বে এই দেশের মানুষ যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন। আমরা বিজয়ী জাতি, কোনো কথা বললে ভেবেচিন্তেই বলি। বিজয়ী জাতি হিসেবে মানসিক শক্তি নিয়েই কথা বলি। কিন্তু ওনাদের ভেতরে একটা পরাজিত মনোভাব। তারা সব সময় আত্মগ্লানিতে ভোগেন, তাই তাদের আত্মবিশ্বাসের অভাব।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মেয়ে। আমি যেটা পারব, সেটাই বলব। যেটা বলব, করব। করে দেখাতে পারি, সেটা করেছি। এই জন্য দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞ।’
বিশ্বব্যাংক সরে যাওয়ার পরে অধ্যাপক জামিলুর রেজাসহ যেসব বিশেষজ্ঞ প্যানেল সরকারকে সহযোগিতা করেছেন, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান প্রধানমন্ত্রী। এই উপদেষ্টা প্যানেল সরকারের পাশে না দাঁড়ালে হয়তো পদ্মা সেতু সম্ভব হতো না বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।
সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত বে অব বেঙ্গল সম্মেলন শুরু হচ্ছে আগামীকাল থেকে। এবারের সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোসহ বিভিন্ন দেশের ৮০০ জন অতিথি। প্রথম দিন অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তা হিসেবে থাকবেন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের
৩ ঘণ্টা আগেকিছু অসাধু ব্যক্তি ও স্বার্থান্বেষী মহল ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহার করে গার্মেন্টসের ঝুট ব্যবসার স্বত্ব প্রদান এবং অন্যান্য প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডের আশ্রয় নিচ্ছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
৫ ঘণ্টা আগেছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের। এর তিন দিন পর দায়িত্ব গ্রহণ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার। সেই সরকারের ১০০ দিন পার হওয়া নিয়ে একটি মূল্যায়ন প্রকাশ করেছে বেলজিয়ামভিত্তিক থিংক ট্যাংক ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ। মূল্যায়নে তারা বলেছে, অন্তর্বর্তী স
৫ ঘণ্টা আগেবিসিএসে উত্তীর্ণ হওয়ার পর চাকরি নিশ্চিত করতে যাচাই-বাছাইয়ের সময় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার তথ্য অনেকে নিজেই পুলিশকে দিয়েছিলেন। কিন্তু ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ায় সেসব তথ্যই এখন তাঁদের জন্য ফাঁস হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রতিবেদনের তথ্য নিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গ
৬ ঘণ্টা আগে